বন্দনা পাত্র – সূচিপত্র [Bangla Kobita]
নীড় বেঁধো না আর – বন্দনা পাত্র
ভালোবাসা ছিল এক মুখোশের আড়াল কিংবদন্তী-কল্পনার জাল
ঈর্ষায় হিংসায় বিশাল বিশ্বাস ভেঙে দেয় যে কল্পনা
সে তো এক আসুরিক ভাবনা…
নীড়হারা পাখিটা গাছের ডালে বসে বৃষ্টির জল মাখছে,
চোখ দুটি আকাশের দিকে একবার
আর একবার ভাঙা নীড়ের দিকে তাকিয়ে,
বৃথা নীড় গড়া ঐ গাছের ডালে
বৃথা কেন হবে … ?
গাছটা তো ঠিক আগের মতোই দাঁড়িয়ে
তাহলে কে? কিভাবে? পাখির চোখ ছলছল…
আঁধার নামে, শাখে বসে ভিজতে ভিজতে
দ্যাখে ছানা আর ডিম ভালো আছে..
শুধু তার নিজের ভালো থাকা হল না
বাসা নেই যে, তার এক অংশ ভেঙেছে
অন্য দিকে নতুন প্রজন্ম ঘুমাচ্ছে…
পাখি-মন বলে ওঠে, নীড় বেঁধো না আর
উড়তে উড়তে কেবল ওড়ার আনন্দে ভেসে যাও।।
ওদিক থেকে – বন্দনা পাত্র
ঐ যে ধানক্ষেতের ওদিক থেকে একটা শব্দ আসছে
কে যেন কাঁদছে,
না,না ও তো,শেয়ালের ডাক।
চারিদিক ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক শোনা যাচ্ছে
আলপথ দিয়ে হেঁটে চলেছে ওরা কারা?
ওদের হাতে ধারালো অস্ত্র
আমি এদিক থেকে জানালা বন্ধ করে দিলাম
ঘরের ভিতর বসে মন ছটফট করে উঠল…
কারোর কিছু হয়নি তো…?
সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই শুনলাম
এক মহিলার মৃতদেহ পড়ে আছে
ধানক্ষেতের ওদিকে শসা বাগানে,
তাকে শেয়ালেরা খুবলে খুবলে খেয়েছে
মাথা আর দেহ আলাদা হয়েছে…
পাঁচ বছর বয়সী শিশুর কান্না এল
আমার কানে ঐ যে ওদিক থেকে।।
যেমন করে তুমি কাঁদো – বন্দনা পাত্র
মুহূর্তের ক্লান্তি নির্জন দ্বীপে মধ্যরাতের বিষন্নতায়
হলুদ চাঁদের কঠিন আলোতে তোমাকে ভেবেছি…
আকাশের দীর্ঘশ্বাস আর তোমার মনোবেদনা নিস্তব্ধ
বৃষ্টির বেদনা শুনে আকাশের জুপিটারে দৃষ্টি রেখেছিল
সময়ের পদক্ষেপ।
তুমি নির্ভীক উদাসীন কান্নার গভীরতা স্থির
প্রেমহীন বন্দুক হাতে শুধুই লড়াই
আর তোমার জটিলতার এক সংসার।
তুমি কি বৃষ্টির মত কাঁদো …. ?
বিবাহিত প্রেমিক তুমি…?
তোমার উদাসীনতা বলে যায়
কেমন করে তুমি কাঁদো…?
রাঙা প্রভাত – বন্দনা পাত্র
সূর্য দেখি অনেক দূরে
লাল হয়েছে আকাশ জুড়ে,
শিশির ফোঁটা একটু খানি
ঘাসের উপর মুক্তো দানি।
ঐ দূরে এক পাখির ঝাঁক
যাচ্ছে উড়ে রাঙা প্রভাত …
কাশফুলে সেই রাঙা আলো
কেমন করে বাসছে ভালো…
সন্ন্যাসী ঐ আকাশ মহান
ঐ গগনে পাখির গান…
শান্ত ডানায় নেমে আসে
চিঠি পায়ে ওড়ার অভ্যাসে
কাব্য-জলে স্নান করে সে
জয়ের আগে চিঠি লিখে।
শালুক ফুল সব সরোবরে
পুজোর গন্ধ আনে ঘরে ঘরে।।
নিঃসঙ্গ শ্রুতি – বন্দনা পাত্র
চোখের মধ্য দিয়ে আসছে নির্বাক বিদায়
প্রাক্তন সময় শর্বরীর আশ্বিন শুনেছে…
কখনও দেরি হলে হেমন্তের শ্রুতি
নিঃসঙ্গ শ্রুতি সংকল্প করেছে…
মৌখিক বিদ্রোহ করবে না,নির্বাক স্পন্দন
নির্বাণ নিশীথে রুদ্ধ আয়ু রোমন্থন করে চলেছে।
নিঃসঙ্গ মনে সঙ্গোপনে লালন করেছে
তার অদম্য এক চৈতন্য…
শুভ্র প্রবাল অধর সিক্ত হয়
অশ্বিনী-বৃষ্টিতে,
শব্দদ্বীপ গড়ে ওঠে ঐ অধরে যেখানে
নির্বাক কথাদের নিঃসঙ্গ শ্রুতি
একাকী কর্ণপাত অসীম জ্ঞানে
ঐ দূর মহাবেদীর যজ্ঞাসন থেকে
শ্রুতিধর হয়েছে প্রাক্তন সময়।।
মৃত্যু হবে জেনেও [Bengali Poetry]
একটি মৃত্যু ডাকে আর একটি মৃত্যুকে
জন্ম হয়েছে তাই;
শান্তি নেই, স্বস্তি নেই, পৃথিবী বড় নিরাশ্রয়।
দুঃখ কষ্ট মানুষকে লোভী করে দেয়
তবে কেন ভগবান এতো এতো জন্ম দেয়
মৃত্যু হবে জেনেও…
ঈর্ষার সিংহাসনে হিংস্র মানব খেলা করে
সুখ আর শান্তির সাথে
নিরীহ শব্দেরা শুধুই মরে আর মরে
জগৎ সত্য, জন্ম সত্য, মৃত্যু সত্য
তবু কেন ঋতু আসে ছয়বার?
হোক তবে নবতর মন্বন্তর —
যেথা ঈর্ষার মৃত্যু হয়।
এখানে শুধু যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা
চক্রান্তকারীদের সুদীর্ঘ চক্রান্ত
আর কিছু মানুষের দীর্ঘশ্বাস!
স্বর্গ কোথায়—?স্বর্গ কোথায়—?
দেখি শুধু নরকের ফুটপাত।।
অনুসূর্য [Bengali Poetry]
এক অন্ধকার যুগ তার ভাগ্য চক্রাকারে আবর্তিত
সরলতা নেই,
বৃহত্তর চেতনা এলেই অন্ধকার মুক্ত হবে এ যুগ।
আঁধার-ক্ষণে হাজার হাজার অনুসূর্য চাই
কোথায় সেই দৃষ্টিবিন্দু, জ্যোতিষ্কশিখা?
কেউ যেন একটা আলোর কপাট খুলছে
আবার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে……
জীবনের আশ্চর্য প্রদীপ আঁধার মোছে না
আরও আরও আঁধার এনে দেয়
যুগের প্রসাধনী আকাশ আর পলাশ ফুলে
রাঙা রাঙা দৃশ্য
দেখি না কেন একটি অনুসূর্য,
সব জটিলতা ছিঁড়ে ফেলে
গড়ে যাবে স্বর্গ।
দুঃসময় [Bengali Poetry]
আয়ুর সীমানা জানিনা সময়ের
উত্তাল জনগণের প্রবল স্রোত
প্রেম কাঁদে,ভালোবাসা কাঁদে
নেশার ধোঁয়া উড়ছে….
সময় উল্লাসে নিরাশার ছাড়পত্র
সহজ মৃত্যুকে সহজ করে।
আনমনা সময় সময়ের হাত ধরে
অগ্নিস্নাত হয় বারবার,
কালের নৈবেদ্য সাজায় একফালি চাঁদ
কোজাগরী রাতে লক্ষ্মীপেঁচার ডাক নেই
কতকগুলো নারী বারবণিতা সাজে
যে শহর নিয়ে এত গর্ব
সেই গর্বিত শহরের মেয়েরা
কঠিন সময়ের কবলে পড়ে কাঁদছে
সময় কেন এতো অ-সচেতন।
কোজাগরী [Bengali Poetry]
রাত গভীর—
কেউ আছো—?
কেউ আছেন—?
জেগে আছেন?
মূর্তির পিছনে কি কেউ ঘুমিয়েছে?
অদৃশ্য লক্ষ্মী সে ডাকছে
শাঁখের ফুঁ তে সন্তুষ্ট হয়ে এসেছে।
না,কেউ নেই, ঘুমিয়েছে ভক্তগণ
চিৎকার আসছে পূর্ণিমার আলোর
ভিতর থেকে, ‘বাঁচাও—বাঁচাও—‘
লক্ষ্মী কোথায়-?
ওরা তুলে নিয়ে গ্যাছে বোধহয়!
জোছনা আড়ি নিয়েছে
ভোর হয়েছে
লক্ষ্মী বাড়ি ফিরেছে।।
ফেরারী [Bengali Poetry]
আগুন যখন জ্বলছিল
শিমুল তুলো উড়ছিল,
ভবেশ তখন ফিরছিল
ওর মা কাঁদছিল।
ক’দিন আগেই পালিয়েছিল
পেটেতে খিদের আগুন জ্বলছিল
কোন্ খানে সে গিয়েছিল—-?
মা কেন নীরব ছিল—?
ছেলের শোকে পাথর হল।
কতরকম আগুন ছিল
আগুন রঙা খিদেও ছিল
শূন্য গ্রহে শূন্য হয়ে
খাবার সে তো এনেছিল
মা খেলো আর ছেলে খেলো
বাবা খিদেয় আগুন খেলো
ভবেশ আবার কোথায় গেল?
মা এসেছে [Bengali Poetry]
মা এসেছে,
পদ্ম ফোটা মন নিয়ে তাই
খুশির আঁচল ঝরেছে—,
শরতের হিমেল হাওয়ায়
কত না শালুক ফুটেছে।
মায়ের আশীষ নিয়ে সবাই
দৌড়ে গিয়ে শিউলি ছুঁয়েছে।
হঠাৎ করেই সূয্যিমামা হারিয়ে গিয়েছে
আকাশ মেঘে দারুণ সেজেছে —
কাশ ফুলেরা মন খারাপে দুমড়ে গ্যাছে
ঢাকের শব্দে মনে হল–
মা এসেছে,মা এসেছে—।
সহ্য [Bengali Poetry]
শরৎ-মেঘের আলটুসী ঢঙ
চরণ ছুঁলো মায়ের আলতা রঙ,
আমি আকাশ দেখি শরৎ-শারদ
মেঘটা কেমন বৃষ্টি-সনদ—
বৃষ্টি হয়ে চরণ ছুঁয়ে
রোদ উঠল দারুণ হেসে,
প্রাণ জুড়িয়ে শিউলিরা সব ভালোবেসে
ছড়িয়ে আছে শিউলি তলায়
ঘর বাঁধা মন আজ এই অবেলায়
সাজবে কেমন অষ্টমী সাজ,
সব কিছু তো সয়ে যাওয়া আজ
মায়ের মুখ চেয়ে—।।
দর্শক [Bengali Poetry]
পুরুষ, ভগবান হতে চায়-
প্রতিবাদ না করে কাপড় দিয়ে
করুণা করে,
যেমন,কৃষ্ণ ভগবান হয়েছিলেন।
দ্রৌপদীর সম্মান রক্ষা করে
পুরুষতন্ত্র ভাঙেন নি।
ভারতবর্ষে নতুন শতাব্দী ঘাসে
মুখ গুঁজে থাকে না-!
কোনো দুর্যোধনী পুরুষের গালে
চড় মারতে জানে–
পুরুষ শুধু দর্শকের ভূমিকায়
যেমন,কৃষ্ণ দর্শক হয়েছিলেন।
একা থাকা ভালো [Bengali Poetry]
একা থাকতে কারোর ভালো লাগে না
কিন্তু,আমার ভীষণ ভালো লাগে-,
নিজের সাথে নিজের কথা বলা হয়
ক’জনই বা নিজের সাথে কথা বলেছে
আমি সেই সুযোগ পাই
ভালো না থাকার দেশে।
একা থাকা ভালো,ভিড়ের মধ্যেও একা
এর মতো আর কিছু আছে?
একা হয়ে বিবর্তনের ইতিহাস পাঠ করি,
সুধীন্দ্রনাথ,রবিঠাকুর,সমর সেন
আরও কত–ও বই পড়ি-
এইরকম সুযোগ একা থাকলেই হয়।
যুদ্ধ চাই না [Bengali Poetry]
যারা যুদ্ধ করতে চেয়েছে তাদের সাথে
বাস করেছি—
অথচ,এক মুহূর্ত যুদ্ধের বাসনা জাগেনি,
চুপ থেকে যুদ্ধের অবয়ব দেখেছি।
যুদ্ধ করার ডাক দেয়,হুংকার ছাড়ে
আমি শুধু চুপ—!
বোবা হয়ে যুদ্ধের ভাষা বোঝা সহজ
কঠিন কেবল এই জীবন।
যুদ্ধ করতে মন চায় না,শান্তি চায়-
আমি প্রণাম করি সূর্য,চন্দ্র,আকাশকে
দুভাগ হতে বলি মাটিকে
অশান্তির ধরিত্রী থেকে
দূরে যেতে চাই—
যুদ্ধ চাই না।
আলাপ [Bengali Poetry]
সেই জ্যোৎস্নায় মুঠো মুঠো আলো ভ’রে
বাজিয়েছিলে বেহালা তুমি কেমন করে?
বিষাদ সে তো সপ্তমে সুর তুলেছিলে
প্রেমের নামে উষ্ণ বালু দিয়েছিলে-
সে কেমন আলাপ তোমার আমার তরে?
জ্যোৎস্না-হাওয়া রোজ বয়ে যায়—
আলাপ-ফুলের প্রেমের তোড়ায়,
পুলক জাগে তোমার কোমল গান্ধারে।
পুরাতন কথারা সব যায় গো বয়ে –
শূন্য কথা আমার হৃদয়ে যায় রয়ে।
অগভীর সন্ধ্যা এলে এই মর্ত্য ধামে
পরমাণু শব্দরা সব তোমার নামে
আলাপ জমায় আমার মন গহীনে,
কেন যে স্রোতের জলে নাও ভাসিয়ে
করলে আলাপ জ্যোৎস্না ভরা অঙ্গনে?
মুঠো ভ’রে জ্যোৎস্না ধরো দুহাত দিয়ে।।
শূন্য তবু শূন্য নয় [Bengali Poetry]
অনুভব কি শূন্য হয়?
শূন্য তবু শূন্য নয়,
অনুভবেই যদি কল্পনা
মনেই আঁকে আল্পনা-
ঐ কল্পনাতেই আবিষ্কার
শূন্য আকাশ পরিষ্কার,
ভান করা মেঘ মেঘ নয়
অভিমান কি নাটক হয়?
শূন্য হলেও মূল্য কত
যদি লেখো হাজার শত
ছিন্ন ভাবের প্রকাশ শুধু
শূন্য খাতায় কান্না ধূ ধূ –
শূন্য তবু শূন্য নয়
অনুভবে কথা হয়।।
স্বপ্ন ভুবন [Bengali Poetry]
আগ্নেয়গিরি থেকে বহুদূরে নির্বাসনে
গোলাপ ফুটেছে
রমণী সেথা ঘরণী সেজেছে,
আশ্চর্য পদ্মরা সব সোনার পদ্ম হয়েছে
ঐ ভুবনে রূপকথাদের স্বপ্ন ফুটেছে-
সূর্য আবার সমুদ্দুরে নাইতে নেমেছে
ভোরের বেলার সূর্য ওঠা ঐ পারেতে
অন্তরালে সে কি জলের নীচে?
মনের মধ্যে প্রশ্ন জেগেছে,
এ কেমন কথা সে কি পাগলি হয়েছে?
স্বপ্ন দেখা ভুবন তোমার আবিষ্কারের
নেশা চেপেছে—
আমি দেখি রূপকথার পরী গল্প ফেঁদেছে
তারপরেতে স্বপ্ন ভুবন বিশ্ব-ভুবন হয়েছে।।
আজ কি তুমি তেমন আছো? [Bengali Poetry]
তুমি কি ঠিক তেমনি আছো
যেমন ছিলে আগে?
বুকের ভিতর একশো শ্রাবণ
শীত বেলাতেও জাগে।
কে করেছে হৃদয় দখল?
মনের থেকে বের হয়েছে
হাজার প্লাবন।
কোন্ দৃশ্যের স্বপ্ন-চতুরালি
ঠিক তেমনই আছো কলম-কালি?
এবার বুঝি ফুরায় পাতা
থামে না যে আর-
বুক ভরা সেই সাহস কথা
এখন কি আর অন্ধকার?
নীল কালি তো তেমন আছে
যেমন ছিল আগে
শব্দ ঠাসা বাক্য আছে
বুকের ভেতর জাগে।
ভেতর থেকে শব্দদের ঐ বাসা
লিখেছিল অনেক ভালোবাসা,
আজ কি তুমি তেমন আছো
যেমন ছিলে আগে?
উপবাসী [Bengali Poetry]
দিনগুলো পুড়ছে দুরারোগ্য বীজাণু
বুক ফাটে রোগটাকে রুখতে-
আগুন জ্বালে জীবিত মৃতের ভিড়ে
খিদে যেন সোনার কাঠি,
পৃথিবীটা অলৌকিক হাসি হাসছে-
জোয়ান ছেলেরা রাস্তায় কাজ খুঁজছে।
মানুষ মারছে কি মানুষকে?
কাদের জন্য খিদেয় পেট জ্বলছে
মধ্য রাতের ঘুম উড়ে যায়।
মানুষের–
কি জানি কাল কি হবে?
কাল কি একটা সুখের হাসি থাকবে
শত্রু হবে কুপোকাত?
জীবনের উত্তরায়ণ থেকে দক্ষিণায়ন
পারবে কি রোগটাকে মারতে?
উপবাসে মরবে না কেউ।
অন্বিষ্ট [Bengali Poetry]
ঘর খুঁজেছি একলা হয়ে
একলা চলার পথে,
সময়-বধূ গল্প বলে পান চিবিয়ে
তাদের মতো হতে—
নির্জনেতে আবেগ চেপে
আগুন হলাম নিজে।
ব্যর্থ জীবন বেনোজলের পারে
চাঁদ খুঁজে তাই পরিহাসে
ব্যঙ্গ করে মানুষ দেবতারে-
একলা কথা এক মনে আসে
নিজের হৃদয় খুঁড়ে,
মেঘের পাশে কল্পনা চোখ
পাণ্ডুলিপির দ্বীপের নীড়ে
কেবল আমার দুঃখ শোক।
শিকল পরে মরণ ফাঁদে
হা-হা করি কেবল কেঁদে-
বলশালীর অত্যাচারের বন্ধনীতে
প্রেম আসে না বসন্ত রাতে-
খুঁজেই চলি একলা থাকার
আমার একলা ঘর।।
গোপন বেদনা [Bengali Poetry]
বল্গাছাড়া মন দেখি আজ কোথায় বাস
উড়ছে কতো পাখপক্ষী আর বালুহাঁস—
আবেগ যখন মাথার ভিতর,হৃদয় যেন
লাগাম টানে অদৃশ্য এক অভিযান।
বেদনা-বিহ্বল বুকের মাঝে পাখির খাঁচা
নিকট জনের কঠিন কথা দেয় বড্ড খোঁচা,
কোথায় যে জল বেঁকবে কোন্ দেশে?
বর্তমানের কর্ম নিয়ে মন দিই অবশেষে,
মনের গোপন ঘরে কর্তব্যের কঠিন শ্রমে
জীবন চলে চোখের জলে ব্যর্থ কামে।
ব্যথা যখন দ্বিগুণ হল বুকের মধ্যেতে
আমি তখন কলম চালাই নানা পদ্যেতে।।
সুখের খাঁচা [Bengali Poetry]
সুখের বাসর গোপন ছিল নীরব ভাষায়
কন্ঠজলে প্রদীপ শিখা কষ্ট ভাবায়—।
নীল শরতে পেঁজা মেঘের নৌকো ভেলায়
আকাশ-চাঁদে গর্ত ছিল কলঙ্ক রেখায়—।
অন্ধ বিবেক ছুরি মারে কষ্ট ঘরে—-
নির্যাতনের চাবুক ছিল ভীষণ গলার জোরে
সুখ-বাসরের বহ্নিশিখা আগুন জ্বালায়
মনের জোরে বুকের ভিতর চুপটি করে।
ওজন বুঝে চলে না তো শত্রুগুলো
মুখ ঘেঁষে দেয় মিষ্টি করে তেঁতো তুলো
বহ্নিশিখা,অভিমানী বড় শান্ত মেজাজ
কষ্টগুলোর,তবুও তো হার মানে না
নীরব ব্যথা,চোখের জলও বশ মানে না।
স্বপ্ন চোখে কলম তুলে কবিতা লেখা
লজ্জা ছিল বাসর রানীর দুমড়ে মারে আত্মরেখা।।
মন চাঁদ প্রেমে [Bengali Poetry]
আকাশ ভাঙা বন্দী চাঁদে আলো ছায়া
যায় দেখা ঐ কিছুক্ষণের ভগ্ন মায়া,
বিসর্জনের কি সুর শুনে কাঁদলে আবার
আকাশ-গাঙে মুক্ত চাঁদে শিশির-সাগর ।
কল্পনাতে জাল বুনেছ শূন্য ঘরে—-
আটক প্রেমের দোয়াত খুলে মেঝেয় পড়ে।
শ্রাবণ আকাশ বদলেছে তো শরৎ পূর্ণিমাতে
দুঃখ ভাঙা সুখের স্পর্শ আটকে আছে চাঁদটাতে।
আধখানা চাঁদ দুঃখ ভোলায় একলা পেয়ে
শিশির বিন্দু সাগর রচে সুখ-সমুদ্রে চেয়ে ,
যুগ্ম-ঋতু শরীর নিয়ে হাস্য করে যেন?
চাঁদ প্রেমেতে কাব্য লেখা তোমায় নিয়ে জেনো?
মনে মনে জোছনা বুনি আলো আশা ভুলে
অপূর্ণ সব আশাগুলি পূর্ণ হল চাঁদ-ফুলে।।
নারী কথা [Bengali Poetry]
চোখের জল
বড্ড ছল—!
মায়া হীনা
আমার বীণা
বাজছে যখন
হচ্ছে মরণ—
নারীর জ্বলন
নারীই হয়,
কথার জয়
তর্কে রয়
বাক্যে সয়।
সবই যখন
কথার কথা
মায়া ভরা
আঁচল পাতা
গুণের ঘড়া
থাকলে কি
আমি নারী
ঘোমটা টানি।
আমি নারী
পরের বাড়ি
যাচ্ছি চলে
বৌ সেজে
কথার ছলে
বড্ড লাজে।।
বন্দনা পাত্র | Bandana Patra
New Bengali Article 2023 | মূল্যহীন, তবুও : পুস্তক প্রসঙ্গে
New Bengali Story 2023 | ভালো লাগে | শওকত নূর
New Bengali Story 2023 | খোঁজ | কুহেলী দাশগুপ্ত
New Travel Story 2023 | লাচুং-নাথালু’র সীমান্ত ছুঁয়ে | জয়ন্ত কুমার সরকার
bee poem | poem about self love | story poem | poetry angel | narrative poetry examples | poetry reading near me | prose poetry examples | elegy poem | poetry reading | the tradition jericho brown | poetry websites | protest poetry | prayer poem | emotional poetry | spoken word bengali poetry | poem about god | percy shelley poems | jane hirshfield | spiritual poems | graveyard poets | chapbook | poems about life | poems to read | found poem examples | poems about life and love | elizabeth bishop poems | poems about women | sister poems that make you cry | famous quotes from literature and poetry | mothers day poems from daughter | poem about community | 8 line poem | inspirational poetry quotes | poem about life journey | positive poems | short poem about life struggles | toni morrison poems | good bones poem | google poem | funny poems for adults | inspirational poems about life | friendship poem in english | paul laurence dunbar poems | freedom poem | sad poetry about life | poems about hope in hard times | allama iqbal best poetry | black female poets | african american poets | poems to comfort the grieving | poems about loneliness | romantic poetry in english | encouraging poems | joy harjo poems | best poetry lines | short poems on values of life | female poets | poetry quotes about life | poem about faith | dark poems | uplifting poems | new poetry | Shabdodweep Founder