Poetry of Gobinda Modak
Natun Kobita Guccho | Online Collection of Poetry
এক দুই তিন চার এবং
তোমার মূল্যবোধের সাদা মেঘে
আমার ভালোবাসার
দো-ভেঁজে ঘুড়ি উড়ে যায়,
উড়ে যায় তোমার মনের আকাশের
সামিয়ানায়;
সূর্য-রঙা কোনও টিপ
আজও প্রতীক্ষা করে
তোমার কপাল ছোঁয়ার।
এখানেই শেষ নয় –
কাঞ্চন-বর্ণ কিছু নাম না জানা ফুল
তোমার কেশরাশির স্বপ্ন দেখে
আর একটা অবুঝ বালক
নামতার বই পড়তে পড়তে
শিখে যায় প্রতীক্ষার এক দুই তিন চার …
চুলে পাক ধরে যায় একসময়
তবুও শেষ হয় না গণনার প্রহর।
বেপথু-পথ
সময়কে ছুঁয়ে থাকি,
তবুও আজন্ম একটা পিপাসা
নিশ্চিন্তে পুড়িয়ে চলে
কামনার রডোডেনড্রন বৃক্ষসমূহ;
নির্ভার স্বপ্নেরা ভেসে যায়
পেঁজা তুলোর মতো,
আকাশ জুড়ে চাঁপা ফুলের গন্ধ,
ঘুম আসে না উন্মনা মন নিয়ে।
ভাবনার সাত-পাঁচে হাওয়া বদল হতেই
মদির কামনার ক্যাসানোভা প্রাণ পায়;
তারপর অবগাহন, আত্মানুসন্ধান
আর ক্রমান্বয়ে চিৎ-উপুড় খেলা।
একসময় শেষ হয় পরিমিত অধ্যায়
মিলে যায় সমূহ প্রশ্নের সদুত্তর,
শুধু বোঝা যায় না রাজপথের লোক
কেন ভুল করে নেমে পড়ে ঘাটের পথে!
ওদিকে আবহমান একটা পতাকা
পত্ পত্ করে উড়তেই থাকে
কালের বাতাসে।
দৃষ্টির আড়ালে
মাটির ওপরে তুমি
কোনও গাছের কাণ্ডকেই মাত্র
দেখতে পাও।
অথচ মাটির ঠিক নিচেই যে
কিলবিল করে
তার অজস্র মূল,
শাখামূল, মূলত্র, মূলরোম
তা কারও চোখে পড়ে না!
দুনিয়াদারির এটাই নিয়ম।
পৃথিবীটা বেশ তো চলছে,
কিন্তু প্রদীপ জ্বালাবো আগে
সলতে পাকাবার সমূহ কাজগুলো
কারও নজরে পড়ে না।
ভাগ্যপাথর
বন্ধুসকল —
অনুগ্রহ করে শুনবেন —
আমি একটি অত্যুজ্জ্বল পাথর
কুড়িয়ে পেয়েছি।
বিজ্ঞজনে তাকে পরশপাথর বলছেন,
জ্যোতিষার্ণব বলছেন জন্মপাথর,
ভাগ্যবিদ আঁক কেটে বলেছেন —
পুরুষাকার পাথরেরই
কোনও রূপভেদ এটি,
ভাগ্য ফিরে যাবে অচিরেই!
আমি পাথরটি হাতছাড়া করিনি
বরং খুঁজে চলেছি
বাংলা ভাষার একজন কবিকে
যাঁর হাতে তুলে দেবো
এই পুরুষাকার পাথর,
যদি ভাগ্য ফেরে কবিতার …!
ভাবনার জাহাজ
ভাবনার জাহাজ
ভেসে গেলে স্রোতের অনুকূলে
তাকে ফিরে আসার কথা
শোনায় মাঝি।
তবু ফেরা আর হয়ে ওঠে না
অনিবার্য এক অনিবার্যতায়,
জলে ধরে ভাটির টান,
তবুও সে জানে
ঘোলা জলেই তার সুখ
আর কে কবে ফিরেছে টানের টানে!
অথচ একটা ঘাট অপেক্ষা করে ….
অপেক্ষা করতেই থাকে
কোনও এক ফিরে আসা নোঙরের
শব্দের জন্য।
বিকেলের কাছাকাছি
মাঝে মাঝে ভর-দুপুরবেলা
ছাতের এই কার্নিশটার কাছে দাঁড়িয়ে
একটা বিকেলের কথা ভাবি
এলোমেলো স্বপ্নের কাঠকুটো দিয়ে
একটা স্বপ্নের কাঠামো গড়ে তুলতে
একটা নিশ্চিত ব্যর্থ চেষ্টা করি;
ভাবতে ভাবতে বিকেল এসে গেলে টের পাই —
আমার স্বপ্নের ভঙ্গুর কাঠামোটা থেকে
বিকেলটা সম্পূর্ণ আলাদা।
আমি প্রতিনিয়ত হতাশ হই
তবু নতুন উদ্যমে আবার এসে দাঁড়াই
সেই কার্নিশটার কাছে
যে আমাকে উপহার দেয়
অনিবার্য একটা বেঁচে থাকবার অবিরত স্বপ্ন।
জরু কা গোলাম!!
বউ মানে – সহধর্মিণী, বউ মানে স্ত্রী;
বউ মানে – অর্ধেক আকাশ, সংসারের শ্রী।
বউ মানে – অর্ধাঙ্গিনী, বউ মানে প্রিয়া;
বউ মানে – Better-Half, বুকের মাঝে হিয়া।
বউ মানে – ‘ওগো’ ‘হ্যাঁগো’, বউ সংসারের কর্ত্রী;
বউ মানে – মেয়ে হিটলার, মিথ্যে নয় একরত্তি!
বউ মানে – সন্তানের জননী, বউ ঘরের লক্ষ্মী;
বউ মানে – পয়মন্ত, সামলায় সব ঝক্কি!
বউ মানে – হিমালয় পর্বত, টপকায় কার সাধ্যি!
বউয়ের কথা না শুনলে বাজে রণবাদ্যি!!
আমার ঘাড়ে একটাই মাথা – বউ তোমাকে সেলাম!
নাক মুলছি, কান মুলছি, আমি “জরু-কা-গোলাম”!!
বাধ্যতামূলক বিদায়
আর কয়েক সপ্তাহ পরেই ফিরে যাবো
যেতে যেতে দেখা হবে
চিরহরিৎ বনভূমির সঙ্গে
নদী হাত নেড়ে ডেকে বলবে —
ফিরে এসো!
নিরিবিলিতে ঘোর লাগা স্বরে
হাওয়া বলে উঠবে —
এসো, দিয়ে যাও শেষ আলিঙ্গন!
অথচ আমি জানি —
সময় এলেই ত্যাগ করতে হয় মায়া।
তাই মমতা-মাখা স্বরে ওদেরকে বলবো —
আমি আজ্ঞাবহ মাত্র,
নই বর্ষার প্রথম কোনও মেঘ,
অদৃশ্য নিয়তি
আমাকে ভাসিয়ে দিয়েছে অকাতরে …
অতএব, বৃথা কালক্ষেপ নয়
চলে যাওয়াটাই এখন দস্তুর।
প্রশ্ন, না দ্বন্দ্ব!
ছয় বাই সাতের এই লোভনীয় বিছানায়
যখন তুমি আমাকে পুরুষ
কিংবা পুরুষ মানুষ ভাবছো
তখন আমি তোমাকে চিনছি নারী শরীরে …
কখনও স্তন, কখনও যোনি, কখনও নিতম্ব।
অথচ সঙ্গমের প্রতিটি ক্ষেত্রেই
তুমি আমাকে একজন পুরুষ মানুষই ভাবছো!
ছেড়ে রাখা জামাকাপড়গুলোর মনে
তাই ঘাই মারছে
সেই আদিমতম প্রশ্ন —
শরীর, না রিপু? রিপু, না ভালোবাসা?
কোনটা সত্যি?
মা’কে আমার মনে পড়ে না
মা’কে আমার মনে পড়ে না।
মা যে আমার হারিয়ে গেছে
কত্তো বছর আগে,
বুকের ভেতর স্মৃতির পাথর
ভেজা কান্নার দাগে।
চেষ্টা করেও মায়ের মুখটা
পড়ে নাকো মনে,
মা যে তাই কেমন দেখতে ছিল
শুধাই জনে জনে!
মা কি ছিল রূপসী খুব,
হাসলে পড়তো টোল,
মা মা গন্ধ মায়ের গায়ে
শীতল তার কোল!
এসব কিছুই জানি নাকো
কিছুই যে জানি না,
শুধু জানি আমার ছিল
মিষ্টি একটি “মা”।।
পল্লবিত সময়ের হাত ধরে
এভাবে একদিন ঠিক চলে যাবো …
চলে যাবো পল্লবিত সময়ের হাত ধরে
রণভূমির বাইরে কোনও শস্য-মুখর প্রান্তরে
যেখানে রোদের অক্ষরে লেখা থাকবে
সবুজের গান;
কচিপাতা জুড়ে নবান্নের গন্ধ
দোলা দেবে হৃদয়ের খাঁচায়;
একবুক তাজা শ্বাস নিয়ে বলবো –
বাঁচার মতো বাঁচতে হবে!
একদিন ঠিক জিতে যাবো …
জিতে যাবো সাপ-লুডু খেলায়
পল্লবিত সময়ের হাত ধরে ধরে …
অসম্পূর্ণ শৃঙ্গার
ঘুমের আর দোষ কি বলো!
ঘুমের আর দোষ কি বলো!
কাক ভোরে সেই যে ওঠা –
তারপরে বেদম ছোটা!
কখন যে গড়ায় বেলা –
বয়ে যায় সময় ভেলা!
তার কোনও হদিস না পাই –
দু’হাতে মাথা চাপড়াই!
তারপরে রাত্রি নামে –
তবু যদি একটু থামে!
রাতেতেও আছে যে কাজ –
বিছানাতে শৃঙ্গার সাজ!
সারাদিনের ক্লান্তি শেষে –
চলে যাই ঘুমের দেশে!
প্রিয়া ডাকে- একটু এসো –
কাছে এসে বুকে-ই মেশো!
চোখের পাতা ভারী ভারী –
প্রিয়া দেয় জোরসে আড়ি!
চোখ দু’টি তার ছলোছলো –
তবু —
ঘুমের আর দোষ কি বলো!!
বেদুইন ভাবনা
একটা দুরন্ত ঈগল
নীল-নীল ছায়া ফেলে
উড়াল দিয়েছে আকাশের দেশে
চোখে তার আগামীর স্বপ্ন
দিন যায় … রাত যায় …
দিন আসে … আবার রাত …
আমি বসে থাকি অসম প্রতীক্ষায়;
ভাবি — একদিন সে ফিরে এসে
আমাকে দেবে তারকা সংবাদ
আর বেদুইন মন আমার
ভাবনার উটে চড়ে
পাড়ি দেবে
সোনালী মরুভূমি ছেড়ে
অন্য কোন গ্রহে … গ্রহান্তরে …
ছাত্রধারা
আজন্মকাল যারা পিছনের বেঞ্চে বসে
যাদের জন্য শুধু কটু-কথা আর প্রহার
তিরস্কার আর অবহেলার মালা
বছরের পর বছর যাদের আসন
কুক্ষিগত থাকে একই কক্ষে
শিক্ষাদানকারীরা তাদেরকে করুণা করেন।
আর এক দল
যারা সামনের সারি আলোকিত করে
যারা সবুজ, যারা চৌকস
যাদের জন্য শিক্ষালয় গর্বিত হয় মার্কশিটে
কাগজে স্বর্ণাক্ষরে নাম ছাপা
কিংবা কিঞ্চিৎ মিষ্টিমুখ
শিক্ষালয়ের তারা সুসন্তান।
অথচ পালাবদলের পালা শেষ হতে দেখি
সুসন্তান চলে গেছে বিদেশের টানে
আর করুণার পাত্ররা দেশ চালাচ্ছে!
আমি নির্বোধের মতো
তাদের দু‘দলকেই আসন পেতে দিই
আমার মনের শিক্ষালয়ে।
কথা দাও
যাচ্ছ যাও,
কিন্তু রোদ হলদে হবার আগেই ফিরে আসবে
এই কথা দিয়ে যাও
তোমার কথায় আমি প্রত্যয়ী হবো।
যেমন আকুল হয়ে বকুল বৃক্ষ ঝরিয়ে দেয়
তার এক একটি সুগন্ধি ফুল
কিংবা দগ্ধ-দিনের কৃষ্ণচূড়া
আগুন ঝরায় আকাশে
তেমনই গোলাপি খামে
প্রথম প্রেমের চিঠির মতো
আমাকে দিয়ে যাও
বিরহ সহ্য করবার দিনলিপি
অথবা ভাঙা কোনও খঞ্জনি
যাতে এককালে সুর বাজলেও
আজ নিজেই বাজে বেসুরো হয়ে
কথা দাও –
ফিরে আসবে রোদ্দুর হলদে হবার আগেই!
অপ্রিয় কোন সত্যের কাছে
অপ্রিয় সত্যের কাছে যেতে যেতে
লিখে ফেলি
কিছু কাম-বিষয়ক কবিতা
কিছুটা দীর্ঘশ্বাস
আর নিবিড় সমর্পণের গল্পকথা।
অস্থির মন স্বাবলম্বী হতে সময় নেয়
ততক্ষণ নদীর ভাঙা তীর জুড়ে
খেলা করে নৈঃশব্দ্যের বাতাস
ডাহুকের ডাক আর পাতা ঝরার শব্দ,
বিরহের রূপকথা ছাড়া
এসময় আর কোন সত্য জেগে নেই।
অথৈ জীবনের ধারাভাষ্য
পৃথিবীতে নিজের বলে কিছু নেই
নেই একান্ত মুহূর্ত
কিংবা ছায়াঘেরা কোন গ্রামের রূপকথা।
তবু জীবন-নদী নৌকা বায়
গোধূলির অন্ধকার নেমে আসে
পাড়-ভাঙা অন্তরাকাশে,
কালের পাখি নিশ্চিন্তে রচনা করে চলে
অথৈ জীবনের ধারাভাষ্য …
কোথাও কোন ফাঁকির অবকাশ নেই।
সাত পাঁচ ভাবনা
সাত পাঁচ ভাবনা জুড়ে
হয়েছে একটা ‘বারো’,
হয়নি কেন ‘তেরো’ সেটা
ভাবছি না একবারও!
সাতচল্লিশেই পেয়ে গেছি
একটা স্বাধীনতা,
একটিবারও ভাবছি নাকো
তার স্বাদ-হীনতা!
বিস্কুট যে তৈরি হলো
বিশ আর কূট মিলে,
ভাবি কি আমরা এটি নিয়ে
একটু সময় পেলে!
ঠক্ করে বই রাখলেই
হয় কি যে বৈঠক,
টক-মিষ্টি-ঝাল কথাতে
বৈঠক-এর টক! (Talk)
মান আর হুঁশ থাকলে
তবেই নাকি মানুষ,
খুঁজে দেখো মান নেইকো
নেইকো কোনো হুঁশ!
এভাবেই যাহাই উনিশ
তাহাই বিশ নয়,
মনে রাখতে হবেই হবে
উনিশ বিশ হয়!
ভাবলে পরে এদিক ওদিক
দেখবে কতো মজা,
রাজায় রাজায় হচ্ছে যুদ্ধ
প্রাণ দিচ্ছে প্রজা!!
কবি ও বেলকুঁড়ি
বেল কুঁড়ি
এক ঝুড়ি
কাঁখে নিয়ে এক বুড়ি
ভোরবেলা হাটেতে চললো,
সুন্দর গন্ধ
লাগে নাতো মন্দ
কতো নেবে এর দাম
এক ক্রেতা এ কথাটা বললো!
নিয়ে নাও
কিছু দাও
নেই এতে কোনও ফাও
ফুল-বুড়ি এ প্রস্তাব রাখলো,
বেশ কটা
বড়ো নোট
বুড়িটাকে দিয়ে দাম
ক্রেতাটি গন্ধ সব মাখলো!
এর দাম
বেশ কম
ভেবে নিয়ে ক্রেতাটি
কবিতার খাতাখানি খুললো,
এরপর
মন তার
সুগন্ধে ভরে আর
বাকি সব ছন্দ ভুললো!
ফুল-বাস
এক রাশ
তার মনে বসবাস
মন তার আকাশেতে উড়লো,
যত ব্যথা
যত কথা
সব মিলে আকুলতা
কবিতার ছন্দেতে ঘুরলো!
হাসি খুশি
কবি খুশি
ছড়া লেখে বেশি বেশি
নাম তার হলো নাকো মন্দ,
এক ডাকে
তাকে চেনে
সব্বাই-ই তাকে মানে
কবি মানে বেল ফুল গন্ধ!!
মনে রেখো বন্ধু
বাড়ি নারী গাড়ি
রাখতে দিও না কাউকে রে ভাই
ফেরত পাবে ভারী!
টাকা আনা পাই
ধার দিও না কাউকে রে ভাই
শোধটা দেবে ছাই!
সিডি ক্যাসেট বই
অন্যে নিলেই ফসকে গেল
না পাওয়ার-ই সই!
থাকলে তোমার টাকা
ইয়ার বন্ধু জুটবে অনেক
করতে পকেট ফাঁকা!
সম্মান থাকলে পরে
একবারটি চলে গেলে
আর পাবে না ফিরে!
তাই রাখতে তোমার নাম
ভেবেচিন্তে কথা দিও
রেখো কথার দাম!
ভাই! এ পৃথিবীটাই ধোঁকা
একটু এদিক-ওদিক হলেই
বানিয়ে দেবে বোকা!
তাই বাঁচতে গেলে ‘পরে
কথাগুলো স্মরণ রেখো
সারা জীবন ধরে!
মাশুল
তোমার জীবন হবে যখন
স্তব্ধ ঘড়ির কাঁটার মতন
পারবে না কো চলতে,
সঠিকভাবে বুঝবে তখন
কে যে পর কে যে আপন
সঠিক করে বলতে!
সারাজীবন ভাববে ভুল-ই
আঁকাবাঁকা রেখাগুলি
মনে হবে নকশা,
অর্থ যশ প্রতিপত্তিও
কিছুই তো নয় একরত্তি-ও
সব কিছুই ফরসা!
তবু জীবন মানেই পথচলা
নিজের সাথেই কথা বলা
কেউ পায় না শুনতে,
ভাঙা ডিঙি কিংবা নাও
যাতেই তুমি যেতে চাও
মাশুল হবে গুনতে!!
ঋতু অথবা দাগ
ভোরবেলাতেই গ্রীষ্ম ছিল
হাঁস-ফাঁসানো গরম
ঘামে আর ঘামাচিতে
দুর্ভোগটা চরম!
বেলা ন’টায় বর্ষা এলো
ঝুপঝুপানো বৃষ্টি
মনের মাঝে কদম ফুল
ভেজা ভাষার সৃষ্টি।
দুপুর হতেই এলো শরৎ
শিউলি পড়লো ঝরে
মনটা ভরে গেল সবার
আগমনীর সুরে!
হেমন্ত এলো বিকেল-বিকেল
নবান্নটা সাথে
মাঠ ভরা ধান উঠলো গোলায়
উৎসবে সব মাতে!
সন্ধ্যাবেলায় এলো যে শীত
কম্বলখানা নিয়ে
গাছেরা সব পাতা ঝরালো
শীতের নোটিশ পেয়ে!
রাত্রিবেলায় এলো বসন্ত
কতো না যুগ পরে
গাজনেরই বাজনা বাজে
চড়কতলার মোড়ে!
এভাবেই চাকার মতো
ঘুরছে ঋতুগুলো
জীবন পথে উড়ছে সময়
যেন পেঁজা তুলো!
থাকতে সময় কাজ করে যাও
রেখে যাও রে দাগ
নইলে যোগ-গুণ সব হারিয়ে যাবে
রইবে বিয়োগ-ভাগ!
এক যে ছিল ইঁদুর
এক যে ছিল ইঁদুর
তার গায়ে হাতির বল
রোজ সকালে খেতো সে
তিনশো পাকা ফল!
দুপুরবেলায় খেতে বসে
আড়াই মণ ছোলা
রাত্রিতে খেতো ধান
গোটা একটা গোলা!
খেতে খেতে তার চেহারা
হাতির মতো হলো
হাতি একদিন তাকে দেখে
ভীষণই ভয় পেলো!
বাঘ সিংহও দাঁত দেখে তার
ভীষণই পেলো ভয়
ভাবলো এমন জন্তু আবার
কেমন করে হয়!!
এভাবেই গর্তের ইঁদুর
বনের রাজা হলো
অবশেষে একদিন সে
পেটটি ফেটে ম’লো॥
জীবনপ্রবাহ
শিশুবেলা! শিশুবেলা! কাঁদো কেন ওঁয়া ওঁয়া,
মাতৃদুগ্ধ খাও খাও, ক্ষীর – ননী – মোয়া!
ছেলেবেলা! ছেলেবেলা! করো কেন হইচই,
রোজ খেলো মাঠে গিয়ে, সেই সাথে পড়ো বই!
কিশোরবেলা! কিশোরবেলা! আদর্শ ঠিক করো,
শরীর গঠন করো আর বড়ো মন গড়ো!
তরুণবেলা! তরুণবেলা! এই বেলা তৈরি হও,
চরিত্রগঠনের কাজে নিজ নিজ মন দাও!
যুবকবেলা! যুবকবেলা! তোমরা দেশের ধন,
তোমরা আগামী দিনের নাগরিক, তৈরি কর মন!
প্রৌঢ়বেলা! প্রৌঢ়বেলা! তোমাদেরও কাজ আছে,
তোমাদেরই ছত্রছায়ায় শিশু তরুণ বাঁচে!
বৃদ্ধবেলা! বৃদ্ধবেলা! তোমরা আসল ত্রাতা,
সবার সাথে ভাগ করে নাও অর্জিত অভিজ্ঞতা!
বাঙালি ও বাংলা ভাষা
পড়তে বসতে বললেই যে
জ্বর এসে যায় গায়ে,
তবুও বসিয়ে পড় পড় পড়
করেই যাবে মায়ে!
ভূগোলটা যে ভালো লাগে না
নীরস লাগে মনে,
মালভূমি আর পাহাড় পর্বত
কি হবে সব জেনে!
তার চেয়ে যে ইচ্ছে করে
জম্মু-কাশ্মীর যাই,
কিংবা বাছি কুলু-মানালি
অথবা দার্জিলিংটাই!
ইতিহাসটাও ভালো লাগে না
যুদ্ধ রাজায় রাজায়,
সালতামামি মুখস্থ আর
কার্যকারণ খোঁজায়!
তার চেয়ে যে ইচ্ছা করে
রাজস্থানটা ঘুরি,
নিজের চোখে তাজমহল দেখে
কবিতা একটা গড়ি!
অংক আমার কষতে দিলেই
মাথাটাই যায় ধরে,
যোগ-বিয়োগ তো ঢের শিখেছি
কি লাভ অংক করে!
তার চেয়ে ভালো অংকবিদদের
জীবনীটা পড়ে ফেলা,
দুষ্টুমি ভরা তাদের জীবন
দুরন্ত ছেলেবেলা!
পদার্থবিদ্যাও ভালো লাগে নাকো,
গতিশক্তি আর বল,
কায়দা কানুন প্যাঁচ-পঁয়জার
যতো কলা কৌশল!
তার চেয়ে যে ঢের ভালো লাগে
চড়তে মেট্রোরেলে,
মহাকাশযানে ছুটে চলে যেতে
পৃথিবী পিছনে ফেলে!
ইংরাজিটাও কেমন যেন
বিদেশ-বিদেশ গন্ধ,
লাভ কি পড়ে ইংরেজি ভাষা
মনে লেগে যায় দ্বন্দ্ব!
তার চেয়ে ভালো বুট-হ্যাট-কোটে
বর্ণাঢ্য পথচলা,
মনে প্রাণে শুধু বাঙালি থেকেই
বাংলায় কথা বলা!!
দক্ষিণে মুখোমুখি
কম্বল ছাতে পেতে, শীত-রোদ খুব খেতে
রোদের হিসাবগুলো কষি,
দিন যতো চলে যায় প্রেম ততো গাঢ় হয়
দক্ষিণে মুখোমুখি বসি।
কতো কথা মনে পড়ে শেষ বিকেলের ঝড়ে
উড়ে গেছে কতো কতো রোদ,
নস্ট্যালজিক মনে – তুমি আমি দুইজনে
মুখোমুখি বসি, সব শোধ।
কলেজ লাইফ জুড়ে শান্তিনিকেতন ঘুরে
বইমেলা, ভরা ময়দান,
দুইজনে মৃদুস্বরে – পড়া করা বড়ো ঘরে
একই সুরে গাওয়া সেই গান।
নীল আকাশের বুকে আগুন জ্বালায় সুখে
কৃষ্ণচূড়া, পলাশ, শিমুল,
দক্ষিণের বারান্দার – মুখোমুখি বসে তাই
খুঁজে ফিরি স্মৃতির সে ফুল।
ভৌতিক!!
তখন রাত্রি একটু বেশিই হবে
মাঝ রাত —
জানলা দিয়ে কে যেন ডাকছে
কাটা হাত!
চমকে উঠে পিছন ফিরে দাঁড়াই
উরি বাবা —
কঙ্কালসার একটা হাত মস্ত
বড়ো থাবা!
নাকি সুরে বললো করুণভাবে
দে খেতে দে —
খেতে না দিলে আজকে তুই
ছাড় পাবিনে!
আমি তখন রান্নাঘরেই গেলাম
দুদ্দাড়িয়ে —
ভূতটাও পিছন পিছন এলো
হাত বাড়িয়ে!
উনুন থেকে নিয়েই জ্বলন্ত কয়লা
আগুন —
ভূতের হাতে তুলে দিতেই রাগল
তেলে বেগুন!
কাঁইমাঁই শব্দ করে ভূত গেল
দূরে সরে —
আমি ভয়ে কেঁপে দিলাম জানলা
বন্ধ করে!!
গোবিন্দ মোদক | Gobinda Modak
দেবতা ৩৩ কোটি | 33 Crore Gods | প্রবোধ কুমার মৃধা
New Bengali Article 2023 | কবিতার অন্তরাত্মা
Chandannagar Jagadhatri | চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পূজার প্রবক্তা কে ??
Best Bengali Story 2020 | কিছু নই | শওকত নূর
Shabdodweep Web Magazine | Natun Kobita Guccho | Gobinda Modak
Natun Kobita Guccho is a remarkable platform for poetry lovers, offering a rich Bengali collection of poetry that reflects the beauty and depth of Bengali literature. Poetry has always been an integral part of Bengali culture, and Natun Kobita Guccho continues this tradition by featuring classic and modern poetry by talented poets. Shabdodweep Web Magazine is proud to publish some of the finest literary works, including those written by renowned author Gobinda Modak, whose contributions have enriched the Bengali literary landscape.
The Essence of Natun Kobita Guccho
Natun Kobita Guccho is more than just a collection of poems – it is a reflection of emotions, culture, and heritage that embodies the soul of Bengali literature. This platform bridges the gap between traditional and modern poetic expressions, making it a haven for poetry enthusiasts.
What Makes Natun Kobita Guccho Unique?
Diverse Poetry Collection – It features both traditional and modern Bengali collection of poetry, appealing to a broad audience.
Renowned Writers – Distinguished authors like Gobinda Modak have contributed extensively, enhancing the richness of the content.
Authenticity and Creativity – Every poem in Natun Kobita Guccho is carefully curated to showcase deep emotions and literary excellence.
The Evolution of Bengali Poetry in Natun Kobita Guccho
The transition from classical poetry to modern poetic styles has been fascinating. Bengali literature has evolved over centuries, embracing new themes, perspectives, and artistic expressions. Natun Kobita Guccho represents this evolution by publishing works that range from traditional verse to contemporary free-form poetry.
Modern Bengali poetry delves into themes like urban struggles, existential reflections, and human relationships, offering a fresh outlook while preserving the classic charm. Shabdodweep Web Magazine plays a crucial role in bringing such literary treasures to a wider audience.
Why Should You Read Natun Kobita Guccho?
If you love poetry, Natun Kobita Guccho is the perfect destination. Here’s why:
Wide Range of Poems: Explore a variety of poetic styles from renowned and emerging poets.
Authentic Literary Pieces: Every poem is carefully selected to maintain the richness of Bengali literature.
Regular Updates: Fresh and thought-provoking poetry is added frequently to keep readers engaged.
Platform for Emerging Poets: Natun Kobita Guccho provides a space for new writers to showcase their talent to a larger audience.
At Shabdodweep Web Magazine, we are committed to bringing the best of Bengali literature to our readers. Natun Kobita Guccho plays a key role in fulfilling this mission.
FAQ Section
What is Natun Kobita Guccho?
Natun Kobita Guccho is a dedicated platform that features an exclusive Bengali collection of poetry from classic and modern poets, making it a must-read for literature enthusiasts.
Where Can I Read the Works of Gobinda Modak?
You can explore the outstanding poetry and stories of Gobinda Modak on Shabdodweep Web Magazine, where his contributions have captivated readers.
Why is Natun Kobita Guccho Important for Bengali Literature?
Natun Kobita Guccho serves as a bridge between traditional and modern Bengali literature, preserving the essence of poetic expressions while embracing contemporary themes.
How Frequently is Natun Kobita Guccho Updated?
The collection is regularly updated with fresh poetry from renowned and emerging poets, ensuring a continuous stream of high-quality content.
Can I Submit My Poetry to Shabdodweep Web Magazine?
Yes! If you are a passionate poet, Shabdodweep Web Magazine provides a great platform to share your work with a wider audience.
Conclusion
Natun Kobita Guccho is a literary paradise for those who appreciate Bengali literature. Whether you are drawn to classical poetry or fascinated by modern poetic expressions, this platform offers something special for every reader.
With contributions from good writers like Gobinda Modak, Shabdodweep Web Magazine continues to promote and celebrate the beauty of Bengali collection of poetry.
If you love poetry, don’t miss out on Natun Kobita Guccho – visit Shabdodweep Web Magazine today and immerse yourself in the enchanting world of Bengali poetry!
Sabuj Basinda | Follow our youtube channel – Sabuj Basinda Studio