Natun Bangla Kabita 2023 | মোহিত ব্যাপারী | Top New Poetry

Sharing Is Caring:

Natun Bangla Kabita 2023 – মোহিত ব্যাপারী – সূচিপত্র

অপ্রকাশিত ক্রোধ – মোহিত ব্যাপারী

পৃথিবীটা জ্বলন্ত গনগনে আঁচ।
জীবনের শরীরকে উষ্ণতা দেয়না আর।
সে তপ্ত লোহা টকটকে লাল।
পুড়িয়ে ছাই করে দেয় অথবা
জীবনের শরীরে ক্ষত রেখে যায়।
পৃথিবীটা জ্বলন্ত গনগনে আঁচ।

মাথার ভিতর সারাক্ষণ অস্বস্তি কাজ করে।
মেজাজটা সর্বদাই সপ্তমে চড়ে থাকে।
রাজনীতি হিংসা প্রতিহিংসার রেষারেষি চলে।
সামাজিক অবক্ষয়ের পথে প্রতিযোগিতা বাড়ে।

সারাদিন ঝিম মেরে পড়ে থাকি।
মাথাটাকে শান্ত করতে চেষ্টা করি।
কিছুতেই শান্ত হয়না সে।
অন্তরের রাগটা গুমরে ফুঁসে ওঠে।
তবু তাকে জোর করে দমিয়ে রাখি।
চোখ কান সবই তো খোলা।
দুনিয়ার সবকিছুই দেখতে হচ্ছে।
ইচ্ছে থাকলেও এড়িয়ে যেতে পারছি কই?

সবকিছু সহজে মেনে নিতে পারছি কই।
মেনে নিতে পারলেই ভালো হত।
মেনে নিতে পারছিনা বলেই ক্রোধ বাড়ছে।
অপ্রকাশিত ক্রোধ গুমরে গুমরে ফুঁসছে ।

দেখব না মায়া চাঁদ – মোহিত ব্যাপারী

আকাশে উজ্জ্বল মায়াবী চাঁদ।
গোলাকার রুপোলি চাঁদ।
হাজার স্বপ্ন আঁকা পূর্ণিমা রাত।
আলো ঢাকা ছায়া রাতে
বাঁকা ঠোঁটে প্রেম আর মায়া জাগে।
বিবশ মন অবশ শরীরের আধারে
মদিরার হিন্দোল জাগে।
তবুও আমি চেয়ে দেখব না
আকাশের রাতে ওই পূর্ণিমার চাঁদে।
পূর্ণিমার চাঁদ তো সকলেই দেখে।
আমি হেঁটে যাব আঁধারের কাছে।
আঁধারের মাঝে তারাদের ভিড়।
মিটিমিটি কথা বলে চুপিচুপি একসাথে।
একসাথে বেঁচে থাকে হাত ধরে।
আঁধার ভেদ করে চেয়ে থাকি চুপ করে
তুমি আমি একসাথে পাশাপাশি বসে।

কুমিরের কান্না – মোহিত ব্যাপারী

কুমিরের কান্না দেখেছ কখনো ?
আমি দেখেছি বহুবার।
যেথাসেথা আজও দেখি বারবার।
রাজনীতির নেতাদের চোখের জল
অঝোরে ঝরে পড়ে বারবার।
চোখ মেলে চেয়ে থাকি আমি।
সাধারণ মানুষ ভোগে নিজের জ্বালায়।
সাধারণের বেদনায় নেতার হৃদয় বিহ্বল হয়।
গণতান্ত্রিক দেশে গণতন্ত্রেরই জয়।
সাধারণকে তাই সকলেই পাশে চায়।
গণতান্ত্রিক উৎসবে ভোট বড় বালাই।
ক্ষমতার পথে তাই ভোটে জেতা চাই।
ভোটের বৈতরণীতে নেতা মানুষের সমব্যথী হয়।
ভোটের শেষে সে আপন বাসায় ফিরে যায়।

পাহাড়ের কোলে সূর্য হাসে – মোহিত ব্যাপারী

পাহাড়ের কোলে সূর্য ওঠে,
সোনার থালায় ডিমের কুসুম।
ধীরে ধীরে ভোরের আলো ফোটে।
কুসুমটা ভেঙে যায় সূর্যের জন্ম হতে।
দূর থেকে দেখা যায় নদীটাকে,
শুয়ে আছে এঁকেবেঁকে।
পাখি ডাকে, হায়নাটা ছুটে যায়।
পৃথিবীতে সবুজের রং লাগে।
কুলকুল ধ্বনি ওঠে ঝরনার জলে।
আপন খেয়ালে সে বয়ে চলে।
বুক ভরে শ্বাস নিই সবুজের মাঝে।
ঘুম ভাঙে বনমোরগের ডাকে।
পাহাড়ি মেয়ে বোঝা নিয়ে উঠে আসে।
সূর্যের আলো সোনা হয় বরফের গায়।
ঘাসের আগায় জলের বিন্দু চিকচিক করে।
চায়ের পেয়ালা হাতে সূর্যের মুখোমুখি দাঁড়াই।

আমার বৃষ্টি হবি? – মোহিত ব্যাপারী

তুই যদি হোস আমার মান অভিমান,
সারাজীবন আঁকড়ে থাকব তোকে।
তুই কি আমার বৃষ্টি হবি?
তুই যদি হোস আমার শিলাবৃষ্টি,
আমার সব মান অভিমান ভেঙে দিস।
শিলগুলি সব কুড়িয়ে রাখব যত্ন করে।
রাগগুলো সব গলে গিয়ে জল হবে।
বৃষ্টি শেষে দেখব তোকে নতুন চোখে।
অঙ্কুরিত চারা যেমন অবনীকে দেখে।
তুই কি আমার কালবোশেখি ঝড় হবি?
তুই যদি আমার কালবোশেখি ঝড় হোস
ডানা মেলে উড়ে যাব তোর সাথে।

তামাশা – মোহিত ব্যাপারী

আর কত দেখব বল ভোটের রঙ তামাশা।
প্রতি মুহূর্তেই টানটান উত্তেজনা আর চমক।
ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদল আর ভোল বদলের পালা।
গিরগিটিরও লজ্জায় মাথা হেট হয়ে যায়।
মুখোশের আড়ালে পৈশাচিক দানবের বাস।
ভোট আসে ভোট চলে যায়।
পালাবদলের ভিড়ে মানুষ হারিয়ে যায়।
ভোট আসে ভোট চলে যায়।
প্রতিশ্রুতির বন্যায় মানুষ ভেসে যায়।
ভোট আসে আবার ভোট চলেও যায়।
আমন্ত্রিত জনতার উপহারে ঘর ভরে নেতা নেত্রীর।
সমারোহ শেষে পড়ে থাকে উচ্ছিষ্ট পাতা গ্লাস।
ভোটের শেষে বাতাসে ভাসে শুধু বারুদের গন্ধ
আর কিছু সন্তানহারা অসহায় জননীর ক্রন্দন।
ভোট আসে আবার ভোট চলেও যায়।
জনগণ যে তিমিরে সেই তিমিরেই রয়ে যায়।

শুরু থেকে শুরু – মোহিত ব্যাপারী

বৈশাখী ঝড়ে ভেঙে গেছে ঘর।
বৃষ্টির ছাঁটে আমি ভেজা কাঁক।
বন্যার জলে ভেসে গেছে সব।
খড়কুটো ধরে বেঁচে আছি আজ।
জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গেছে যত অনুতাপ।
শীতল হৃদয় শান্ত হয়েছে আজ।
ঝড়ের দাপটে ভেঙেছে কোমর।
উঠে দাঁড়াবার অবলম্বন খুঁজি বারবার।
অবলম্বন গুলো মরচে ধরেছে অব্যবহারে।
শুরু থেকে শুরু করতে হবে ফের।

নিত্য যাত্রী (ছড়া) – মোহিত ব্যাপারী

বোঝাই করা রেলগাড়ি।
মানুষ বোঝাই হাজার হাজার।
চিড়ে চ্যাপ্টা বেহাল দশা।
প্রতিদিনের নিত্য যাত্রী।
মেজাজটা তাই খিটখিটে।
ঘামে ভেজা শরীরগুলো
সবার সাথে লেপ্টে থাকে।
নামবে তারা শিয়ালদহ দমদম।
খেয়ে নিয়ে লুচি আলুর দম
ছিটকে যাবে যে যার মতন।
প্রতিদিনের নিত্য যাত্রী
কাজ করে যায় আপন মনে।

আজকের শৈশব – মোহিত ব্যাপারী

আজকের শৈশব হারিয়ে গেছে
যান্ত্রিকতার ভিড়ে।
আজকের শৈশব হারিয়ে গেছে
চার দেয়ালের ছোট্ট কুঠুরিতে।
আজকের শৈশব বাঁধা পড়ে আছে
আমরা দু’জন আমাদের দু’ জনের মাঝে।
আজকের শৈশব শুয়ে আছে
অতি আধুনিক পৃথিবীর কোলে।
আজকের শৈশব পড়ে আছে একপাশে
এক’শ রকম একাকীত্বের ভিড়ে।
খোলা মাঠ নেই, আত্মীয় পরিজন নেই
চারিদিকে কেবল কংক্রিটের ভিড় আছে।
আজকের শৈশব বসে আছে
প্রাচীনতার ধ্বংসস্তূপের উপরে।
আজকের শৈশব জন্ম নেয়
দামি খেলনা আর রোলারকোস্টারে করে।

ছেলে মানুষী – মোহিত ব্যাপারী

প্রস্ফুটিত ফুলের কুড়ি দেখতে দেখতে
আকাশ পাতাল ভাবি।
অবাক চোখে উদাস চেয়ে থাকি।
এইটুকু পাগলামি থাক আমার গোপনে।

সাগরের বুকে ঢেউ আঁকি।
যতদূর চোখ যায় দিগন্ত দেখি।
বালির বুকে আলপনা আঁকি।
এইটুকু ছেলেমানুষি থাক আমার গোপনে।

মেঘেদের মাঝে ডানা খুঁজি উড়ব বলে।
বৃষ্টি নামলে হাত বাড়িয়ে জড়িয়ে ধরে ভিজি।
খালি গায়ে ঘাসের সাথে মাটির গন্ধ মাখি।
এইটুকু পাগলামি থাক জীবনে আমার।

মন খারাপের কালে পথের মাঝে পথকে ভালোবাসি।
পথের গতি ভোলায় জীবনের ক্ষত।
যখন তখন পথের মাঝেই আনন্দ খুঁজি।
ছেলেমানুষির আদরে জড়িয়ে জীবন ভাল থাকুক।

অরণ্যের কচি পাতারা হৃদয় আগলে রাখে।
পাতার ফাঁকে আলোর সাথে খেলায় মাতে।
বন্য জন্তুর বন্য ভালোবাসা চাই আমার একটুখানি।
একটুখানি ছেলেমানুষির অবাধ্যতায় স্বপ্ন দেখি।

একলা হেঁটে মরুভূমিতে তোমায় খুঁজি।
তৃষিত নয়নে মরীচিকায় তোমায় দেখি ।
কতশত ক্যাকটাস হেঁটে যায় আমার পাশে।
এইটুকু ছেলেমানুষি অবাধ্যতায় আমি স্বপ্ন দেখি।

মনের ক্যানভাসে আজগুবি সব ছবি আঁকি।
মাথাহীন কারো হাত নেই কারো পা নেই।
মনের সব রঙ ঢেলে আকাশকে সাজাই।
পাগলামি ভালোবেসে ছেলেমানুষ হয়ে যাই।

যুগ্মক – মোহিত ব্যাপারী

খেলার পুতুল খেলাচ্ছলে খেলছ সারাবেলা।
মাটির পুতুল কাচের পুতুল পুতুল হরেক রকম।
ইচ্ছেমত সাজিয়ে রাখ মন চায় যখন যেমন।
মনের মত না হয় যদি দু’চোখ ডলে কাঁদতে জানো।
মনের আশ মিটলে পরে সরিয়ে রাখ এক কোণেতে।
তোমরা ভালো ভালোবাসতে জানো।
ইচ্ছে যদি হয় আছড়ে ফেলে ভাঙতে জানো।
যখন মন ভালো হয় নতুন করে জুড়তে জানো।
জুড়তে বসে কতই না সাধ সাধনা।
ভাবতে যদি ভাঙার আগে যত্ন নিতে একটুখানি।
ভাঙত না সে জোড় কখনো আলটোকাতে।
ভাঙলে তাতে জোর কমে যায় জোড়েও যদি আবার।
জোড় কলমে জোড় থেকে যায় দাগ থেকে যায় অন্তরে,
যতই আসুক নবকিশলয়।
ভাঙলে তাতে ফাঁক থেকে যায় পুতুল হোক বা মন।
পুতুল খেলা সাঙ্গ হলে জীবন কাটে আস্তাকুড়ে।

ভক্ষণ সর্বস্ব – মোহিত ব্যাপারী

রাজাই রক্ষক রাজাই ভক্ষক।
প্রহসন শুধু রাজ্য শাসন।
রক্ষক নামটা তার বাইরের বর্ম।
ভক্ষণই তার জীবনের সর্বস্ব।
ক্ষমতাহীন ক্ষমতার বিরুদ্ধে লড়াই করে।
ক্ষমতায় এসে সে-ই মানুষের রক্ত চোষে।
ক্ষমতাহীনেরও লোভ আছে সাধ আছে।
কিন্তু সাধ পূরণের ক্ষমতা নেই।
ক্ষমতার দম্ভে অন্ধ যে রাজা,
দুর্নীতিপরায়ণ বিকৃত সমাজ, শরীর পচাগলা।
বেপরোয়া ক্ষমতায় অত্যাচারী রাবণ।
ইতিহাস সাক্ষী তার অনিবার্য পতন।

রক্তের স্বাদ – মোহিত ব্যাপারী

ক্ষমতার অলিন্দে ক্ষমতাই শুধু কথা বলে।
আর সবে চুপ থাকে হাত জোড় করে।
কারো অতিভক্তি প্রভুপদে সুবিধা ভোগে।
বঞ্চিত নিপীড়িত চুপ থাকে ক্ষমতা নেই বলে।
ব্যাঘ্র শাবকও শিকার ধরে পুঁটিমাছ ভেবে।
ক্ষমতার কাছে পরাজিত বিবেক মনুষ্যত্ব আদর্শ নীতি।
ক্ষমতা পেলে পৈতৃক সম্পত্তি ভাবে।
শোষণ নিপীড়নহীন ক্ষমতা তো ক্ষমতাই নয়।
দেওয়ালে ঠেকলে পিঠ শোষিতও জেগে ওঠে।
তারও সেই ক্ষমতা দখলেরই লড়াই।
ক্ষমতা পেলে শোষিতও শোষক হয়ে ওঠে।
একদল চিরকাল শোষিতই থেকে যায়।
যে হাতে একবার রক্তের স্বাদ পায়,
সে তো কেবল রক্তেরই স্বাদ চায়।

উন্মুলক – মোহিত ব্যাপারী

জীবনের ধর্মে অগ্রগতির জোয়ারে মানুষ ছুটে চলেছে অবিরাম।
পরিবর্তন পরিবর্ধন উদ্বর্তনের নিয়মে আজকের দুরন্ত গতি।
লক্ষ কোটি মানুষের সম্মিলিত সাধনার ফল।
বিন্দু বিন্দু পরিশ্রমের ফসলে আজকের বৃক্ষ মহীরুহ।
তবুও তা পরিণত আজ বিষবৃক্ষে।
মানুষ ক্রমাগত নিজেকে এগিয়ে দিয়েছে উন্নতির পথে।
আধুনিক হয়েছে যত পিছিয়ে পড়েছে জীবনের কাছ থেকে।
ধ্বংসের দিকে নিজেকে ফেলেছে ধাপে ধাপে।
নিজেরই স্বার্থে অসুস্থ করেছে ধরণীকে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ দিয়ে।
ধরণীর স্বাস্থ্য ফেরাবার দায় ছিল আমাদেরই।
তবু আপন স্বার্থে দূষিত করেছি তাকে বারেবারে।
পৃথিবীকে দূষিত করেই কেবল ক্ষান্ত থাকিনি আমরা।
পাড়ি জমিয়েছি ভিন গ্রহের সন্ধানে,
সেখানেও দূষণ ছড়াব বলে।

শিক্ষার অন্ধকার – মোহিত ব্যাপারী

মানুষ যদি মানুষের জন্যে
তবে মানুষে মানুষে কেন এত বিভেদের বেড়াজাল।
ধর্মের জন্যে মানুষ নয়
মানুষের জন্যেই যদি ধর্ম হয়
তবে কেন ধর্মের নামে এত ভাগাভাগি !
এত প্রতিরোধ প্রতিশোধ প্রতিহিংসা কিসের তরে?
সকল ধর্মই মানুষের কথা বলে।
মানুষ যেখানে গৌণ, অবহেলিত, নিষ্পেষিত
ধর্ম সেখানে কোন অমরত্বের সন্ধান দেয় ?
ধর্ম আমাদের চেতনায় থাক, শরীরে নয়।
ধর্মের নামে চেতনাকে কলুষিত করে চলেছি অনবরত।
ধর্ম যেন এক বৃহত্তম ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান।
যেখানে পারছি যেভাবে পারছি ধর্মকে ব্যবহার করছি।
মানুষকে ঘোল খাইয়ে ভুল বুঝিয়ে
বুঝেই হোক কিংবা না বুঝেই হোক
আপন স্বার্থ চরিতার্থ করছি।
আমরা সবাই জ্ঞানীগুণী ধর্মের ধ্বজাধারী।
আমরা হলাম উপরওয়ালার প্রতিনিধি।
তাই আমাদের কথাতেই ধর্ম চলে, সমাজও চলে।
আপন স্বার্থের বাইরে বাকি সবই ফিকে লাগে।
চোখের দৃশ্যমানতাও কমে আসে।
ধর্মের নামে যারা মানুষকে ভড়কায়, ভয় দেখায়,
ধর্মের নামে যারা মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে,
ধর্মের নামে যারা মানুষের বর্বরতাকে উৎসাহ দেয়,
দেবতার মুখোশের আড়ালে তারা রাক্ষসগণ।
পৃথিবী জুড়েই এরা বর্বরতার স্বাক্ষর রেখে যাবে চিরকাল।
শিক্ষা এদের চেতনাকে কেবলই অন্ধকার দেয়।

নরকের পথে – মোহিত ব্যাপারী

জীবনের সাথে খেলছি প্রতিনিয়ত।
জীবনের খেলায় মত্ত।
হারছি কিংবা জিতছি।
হারটাকে জিত ভেবে ভুল করছি।
নীতিবোধে জল ঢেলেছি।
অর্থ ক্ষমতার দম্ভে চোখ দুটো অন্ধ।
জীবনকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছি।
একটু একটু নরকের পথে পা বাড়িয়েছি।
জীবনের সাথে ছিনিমিনি খেলছি।
জীবনকে দাঁড়িপাল্লায় তুলছি।
জীবনকে জোর করে নরকের দ্বারে ফেলছি।
জীবন ঠিক প্রতিশোধ নেবে একদিন।

ধীর বিষ – মোহিত ব্যাপারী

মানুষে মানুষে হিংসা হানাহানি
কাল থেকে কালে বহমান প্রবহমান খরস্রোতায়।
চিরকালীন এক রক্ত নদীর ধারা।
ফুসফুস ধমনী শিরা উপশিরা অতিক্রম করে
সমস্ত শরীর জুড়ে জাঁকিয়ে বসেছে দূরারোগ্য ব্যাধি।
রাজনীতি দলাদলি মাঠে ময়দানে,
হোক না সে ভালোবাসা কিংবা মনের কাছাকাছি।
কোথাও অস্ত্রের জবাবে অস্ত্র ধেয়ে আসে,
কোথাও মনের বদলে মন।
কোথাও সশব্দ বুলেটের তীব্র চিৎকার ধ্বনি,
কোথাও নিঃশব্দ অভিমানী মন।
দুই ই ধ্বংস করে।
কেউ তীব্র গর্জনে, কেউ নিঃশব্দে।
তুমি যত সৎ হবে ততই অবিশ্বাসী হবে।
অসততার চূড়ায় বসে তুমি মহৎ হবে ।
মানুষ মহৎ আজ সুচতুর শৃগাল শাবক।
সততার ছায়া ডিঙিয়ে অসততার রথের সারথি।
যে যা বলে বলুক লোকে,
তাতে আমার যায় আসে কি।
আমি আছি রাজার হালে বেজায় বেশে।
বুদ্ধি আর ক্ষমতার জোরে আমি তো সাকসেসফুল।
ওরা সবাই নিন্দা রটায় বস্তা পচা বুলি আওড়ায়
ওদের কিছুই হয়নি বলে।
প্রতিযোগিতা ! সেও তো সুস্থ নয়।
যুদ্ধ আর প্রতিযোগিতা কেবলই হিংসার জন্ম দেয়।
অন্তরের রাক্ষসটাকে জাগিয়ে তোলে বারবার।
ক্ষুধার্ত হায়নার মত সময়ের স্রোতে
এগিয়ে যায় প্রতি মুহূর্তে।
বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের দোলাচলে গোটা শহরটাই
কখন যেন তলিয়ে গেছে আটলান্টিকের অতল তলে।
হিমশীতল জলের তীব্র চাপে সে আজ
হিমায়িত শবদেহ হয়ে আছে।

শিক্ষার অন্ধকার – মোহিত ব্যাপারী

মানুষ যদি মানুষের জন্যে
তবে মানুষে মানুষে কেন এত বিভেদের বেড়াজাল।
ধর্মের জন্যে মানুষ নয়
মানুষের জন্যেই যদি ধর্ম হয়
তবে কেন ধর্মের নামে এত ভাগাভাগি !
এত প্রতিরোধ প্রতিশোধ প্রতিহিংসা কিসের তরে?
সকল ধর্মই মানুষের কথা বলে।
মানুষ যেখানে গৌণ, অবহেলিত, নিষ্পেষিত
ধর্ম সেখানে কোন অমরত্বের সন্ধান দেয় ?
ধর্ম আমাদের চেতনায় থাক, শরীরে নয়।
ধর্মের নামে চেতনাকে কলুষিত করে চলেছি অনবরত।
ধর্ম যেন এক বৃহত্তম ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান।
যেখানে পারছি যেভাবে পারছি ধর্মকে ব্যবহার করছি।
মানুষকে ঘোল খাইয়ে ভুল বুঝিয়ে
বুঝেই হোক কিংবা না বুঝেই হোক
আপন স্বার্থ চরিতার্থ করছি।
আমরা সবাই জ্ঞানীগুণী ধর্মের ধ্বজাধারী।
আমরা হলাম উপরওয়ালার প্রতিনিধি।
তাই আমাদের কথাতেই ধর্ম চলে, সমাজও চলে।
আপন স্বার্থের বাইরে বাকি সবই ফিকে লাগে।
চোখের দৃশ্যমানতাও কমে আসে।
ধর্মের নামে যারা মানুষকে ভড়কায়, ভয় দেখায়,
ধর্মের নামে যারা মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে,
ধর্মের নামে যারা মানুষের বর্বরতাকে উৎসাহ দেয়,
দেবতার মুখোশের আড়ালে তারা রাক্ষসগণ।
পৃথিবী জুড়েই এরা বর্বরতার স্বাক্ষর রেখে যাবে চিরকাল।
শিক্ষা এদের চেতনাকে কেবলই অন্ধকার দেয়।

পালাচ্ছি – মোহিত ব্যাপারী

পালাচ্ছি পালাচ্ছি আর পালাচ্ছি।
সবাই সবার থেকে কেবল পালাচ্ছি।
সবাই আমরা পালাতে চাইছি।
বাড়ি থেকে স্কুল, স্কুল থেকে খেলার মাঠ।
অফিসে বসের ভয়, বাড়িটা জেলখানা মনে হয়।
রাজনীতি করব না নোংরামি মনে হয়।
আর্ত পীড়িতকে পাশ কাটিয়ে চলে যাই,
কে পোহাবে ঝক্কি পুলিশের টানাটানি।
আমরা পালাচ্ছি পালাচ্ছি আর পালাচ্ছি।
এটা চাই ওটা চাই, এই কাজ সেই কাজ,
সবই ছাই বাজে কাজ।
কোনটা যে আসল আর কি যে চাই,
তা কি আমি জানি ভাই !
খুঁজেছি নিরন্তর।
ছুটছি আর ছুটছি অবিরাম অবিরত।
ওটা ছেড়ে এটা, এটা ছেড়ে ওটা।
একটা হিংস্র হায়না তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে সারাক্ষণ।
ভয় থেকে পালাচ্ছি লজ্জা থেকে পালাচ্ছি।
দুঃখ আর কষ্টের বোঝা ঝেড়ে ফেলতে চাই।
পালাচ্ছি আমরা অভিমান অনুভূতি থেকে।
দায়িত্ব থেকে পালাচ্ছি দায়িত্বের চাপে।
নিজের থেকে পালাচ্ছি, পালাচ্ছি অন্যের থেকেও।
আমরা কেবল ছুটছি ছুটছি আর ছুটছি।
আমরা পালাচ্ছি পালাচ্ছি আর পালাচ্ছি।
জীবনের থেকে পালাচ্ছি।
পালাতে পালাতে খাদের কিনারে পৌঁছেছি।
অবশেষে নিরুপায় আত্মসমর্পণ।
মৃত্যুর আলিঙ্গনে হিমাঙ্কের অনুভূতি।

স্বপ্ন ছোঁয়ার নেশা – মোহিত ব্যাপারী

ঊষসী ভুবন সুকুমার এ জগৎ সংসার।
আমরা সুন্দরের পূজারী চিরকাল।
প্রেম প্রীতি আর মায়া দিয়ে বেঁধেছি বারেবার।
দায়িত্ব ছিল অনেক, দায়িত্ববোধও।
দায় ছিল সকলের।
কখনো পালন করেছি, কখনো বা উদাসী থেকেছি।
জন্ম হয়েছে যবে সুদীর্ঘ মৃত্যু পদযাত্রায়
দু’ধারে তার হাজারো স্বপ্ন সারি বেঁধে আছে।
ছোঁয়া যায়না কাউকেই। তবু ছুঁতে চাই।
ছোঁয়ার নেশায় মত্ত হস্তির ন্যায় ছুটছি ক্রমাগত।
যাকে পিছনে ফেলে গেলাম, জানিনা কি ফেলে গেলাম।
সামনে যা আছে, জানিনা কি আছে।
মহুয়ার নেশায় উন্মত্তের ন্যায় কেবল ছুটে চলা।
বাহারি স্বপ্নভরা পথ জমকালো আলোর মাঝেও
অন্ধকারের ছাঁয়া নেমে আসে মাঝে মাঝে।
বিষন্নতার কালো মেঘে ছেঁয়ে যায় সমস্ত আকাশ।
জানি এ পথ শুধু মরণেই তার শেষ হয়।
জানিনা কেবল রঙ্গমঞ্চে আগামী আমার ভূমিকা।

বেকার – মোহিত ব্যাপারী

ওরে সব হারা বেকারের দল
আর কি তোরা হারাবি বল।
জীবনের মূল্যবান সময় পেরিয়ে গেছে
তবু যেটুকু আছে সেটুকুই সম্বল।
এবার তোরা পথে নাম।
সরকার বলছে গণতন্ত্র।
সরকার বলছে উন্নয়ন।
সরকার বলছে চুপ বেয়াদপ।

ওরে শিক্ষিত বেকারের দল
সরকার তোদের ভিক্ষা দেবে,
কাজ দেবেনা।
মাসে মাসে ভাতা দেবে।
বিনা পয়সায় চাল দেবে।
তোরা তাই কি নিবি বল ?

না! না! না!
আমরা ভিক্ষা চাইনা।
ভাতা চাইনা, চাল চাইনা।
আমরা আমাদের অধিকার চাই।
সুশিক্ষা চাই, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা চাই।
আমরা কাজ চাই।

তবে এবার তোরা পথে নাম।
শাসকের রক্তচক্ষু উপড়ে ফেল।
নিজের অধিকার ছিনিয়ে আন।
উদ্ধত যৌবন আর যোগ্যতার কাছে
পরাজিত রাইফেলের গুলি।

ওরে সব হারাদের দল
আর কি তোরা হারাবি বল।
এবার তোরা পথে নাম।
অধিকারটুকু শুধু ছিনিয়ে আন।

মোহিত ব্যাপারী | Mohit Bapari

New Bengali Poetry 2023 | তৌহিদুল ইসলাম | কবিতাগুচ্ছ

New Bengali Poetry 2023 | প্রতিম ঘোষ | কবিতাগুচ্ছ

New Bengali Poetry 2023 | গোবিন্দ মোদক | কবিতাগুচ্ছ

New Bengali Poetry 2023 | কবিতাগুচ্ছ | নীলমাধব প্রামাণিক

ধীর বিষ | শিক্ষার অন্ধকার | পালাচ্ছি | স্বপ্ন ছোঁয়ার নেশা | বেকার | কবিতাগুচ্ছ | বাংলা কবিতা | সেরা বাংলা কবিতা | কবিতাসমগ্র | বাংলার লেখক | কবি ও কবিতা | শব্দদ্বীপের কবি | শব্দদ্বীপের লেখক | শব্দদ্বীপ | বেকারত্ব | বেকার জীবন | আমি বেকার | বেকার নিয়ে উক্তি | বেকারত্বের কারণ | বেকার কবিতা | শিক্ষার নীচে অন্ধকার | স্বপ্ন ছোঁয়ার গল্প | বিষ ফলের ছবি | বিষের নাম | বিষের ছবি | গন্ধহীন বিষ | বিষ ফলের নাম | ভালো বাংলা কবিতা | ছোটদের বাংলা কবিতা | জনপ্রিয় বাংলা কবিতা | ১৮+ বাংলা কবিতা | বাংলা কবিতা স্ট্যাটাস | বাংলা কবিতা রোমান্টিক | প্রেমের কবিতা | কবিতা অঞ্চল | সেই নিখোঁজ মানুষটা | মানুষটা কবিতা | মানুষটা – শ্রীজাত | নতুন বছর নিয়ে কবিতা | রোমান্টিক বাংলা কবিতা | নতুন বছরের কবিতা ২০২২ | নতুন বছরের কবিতা 2023 | ও নতুন বছর কবিতা | বাংলা নতুন বছরের কবিতা | নতুন বছর নিয়ে প্রেমের কবিতা | নতুন বছরের কবিতা শ্রীজাত | নতুন দিনের কবিতা | নতুন বছর কবিতা সুকুমার রায় | উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা কবিতা সাজেশন 2023 | বিশেষ কবিতা সংখ্যা | নতুন কবিদের কবিতা | নতুন প্রজন্মের লেখকদের কবিতা | শ্রীজাতের নতুন কবিতা | কলকাতার নতুন কবিদের কবিতা | নতুন লেখকদের কবিতা | আধুনিক কবিতা | অনামী বাংলা কবিতা | নতুন কবিতা 2023 | নতুন কবিতা ২০২১ | এক নতুন কবির কবিতা | বাংলার সেরা কবিতা | শেষের কবিতা | সেরা প্রেমের কবিতা | খ্যাতিমান কবিদের প্রেমের কবিতা | আবৃত্তির সেরা কবিতা | আবৃত্তির জন্য সেরা কবিতা | পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কবিতা | ভালো বাংলা কবিতা | সেরা কবিতার লাইন | জীবনমুখী কবিতা | বিরহের কবিতা | রবীন্দ্রনাথের সেরা কবিতা

freedom poem | sad poetry about life | Shabdoweep Founder | Shabdodweep Magazine | Shabdodweep Web Magazine | Shabdodweep Writer | Shabdodweep Poetry | Natun Bangla Kabita 2023 | Natun Bangla Kabita 2023 book | Natun Bangla Kabita 2023 pdf book | Writer – Natun Bangla Kabita 2023 | Top Writer – Natun Bangla Kabita 2023 | Top poet – Natun Bangla Kabita 2023 | Poet list – Natun Bangla Kabita 2023 | Top poetry – Natun Bangla Kabita 2023 | Best seller – Natun Bangla Kabita 2023 | Full pdf book – Natun Bangla Kabita 2023 | Free download pdf – Natun Bangla Kabita 2023 | Audio book – Natun Bangla Kabita 2023 | Video book – Bangla Kabita 2023 | Video poetry – Bangla Kabita 2023 | Audio poetry – Natun Bangla Kabita | New Poetry book | Shabdodweep poetry book | Shabdodweep International Web Magazine | International Bengali poetry | Bengali Poetry publisher | Shabdodweep Publisher | Shabdodweep Publisher 2023 | Shabdodweep Video Publisher | Shabdodweep Audio Book | Shabdodweep Video Book | Shabdodweep Mp3 poetry | Audio Poetry mp3 | Audio Poetry wmv | Video poetry mp4

Leave a Comment