শিখা কর্মকার – সূচিপত্র [Bengali Story]
মোক্ষদাপিসী – শিখা কর্মকার [Mokkhada Pishi]
বাগান থেকে হারিয়ে যায় বাঁধাকপি, ফুলকপি, গাজর, টমেটো প্রতি রাতে, জেনেও সবকিছু চুপ করে থাকি। ভোর তিনটেতে ঘুম ভাঙ্গে; ব্রাশ ক’রে, স্নানের পরে চুপচাপ বসে থাকতে থাকতে শুনি রাতের নড়াচড়া। বাগানে শেয়ালের যাতায়াত। বেড়ার তলা দিয়ে আসে যায় কচি খরগোশ, পিঠে রঙ্গের আলপনা দেওয়া কচ্ছপ, দুএকটা বুনো ইঁদুর। সকালে ভোরের আকাশ রঙ্গা চা। সহজ, সাধারণ, আরাম ও স্বস্তিদায়ক। মাচায় দোলে লাউ, বৃত্তাকারে বড় হতে থাকে সাদা, কমলা, সবুজ, হলুদ কুমড়ো, রাশি রাশি আঙুর। পাশেই বিশাল তরমুজের ভারি দেহ।
পাশের বাড়ির চার বছরের বাচ্চা উৎসাহে পরির মত উড়ে আসে তার হাতে বসা প্রজাপতি দেখাতে। তার ঝকঝকে নীল চোখ আমাকে ছোটবেলার মার্বেলের কথা মনে করায় । সাধের নীল চুড়ি, রোদ নামা শখের ডিজাইন দেওয়া কাঁচের জানালা। হারমোনিয়াম ছিল তাদের বাড়িতে। সে বাড়ির একজনের জাদুকন্ঠ ছিল। প্রতিটি গাছ পাতা, আকাশের মেঘ, বয়ে যাওয়া বাতাস স্তব্ধ হয়ে শুনত তার ভোরের গান। অপরাজিতা, মালতী, স্বর্ণ চম্পা, তরুলতা, টগর ফুলেরা ফুটে মুগ্ধ হয়ে থাকত। মাঝেমধ্যে ভাবি, ব্রাহ্মমুহূর্তে সেই জাদুকণ্ঠ কি রেওয়াজ করে, সুরের জাদুতে ভরে রাখে পৃথিবীর হৃদয় এখনও ?
প্রতিবেশীদের মধ্যেই কেউ সকালেই গায়া ঘিয়ে ফোড়ন দিয়েছে তেজপাতা, দারুচিনি, লবঙ্গ, আর এলাচ। সেই ঘিয়েই ভেজে নিয়েছে কাজুবাদাম, কিসমিস, দেরাদুনের সুগন্ধী বাসমতী চাল; তারপর দই ও সামান্য নুন-মিষ্টি দিয়ে দমে বসিয়ে রেখেছে সেই সামান্য উপকরণের দইভাত। বাড়ির কর্তা বাচ্চাদের মত অভিমান করে “কিছুই খাবনা” বললে ভুলিয়ে ভালিয়ে “এটি পোলাও” বলে খাইয়ে পরে গল্পের বই নিয়ে বসে কন্যাসমান বধূ । দইভাতের পাশে থাকে কাঁঠাল ও কুমড়ো বীজের তরকারি, আলু – ঝিঙ্গে – বেগুনভাতে। মুড়িকাকীমা এসে এসবের গল্প করলে আমি সবকিছু দেখতে পেতাম। আমি শুধু চা পান করে স্নান করতে যেতাম বাস আসার সময় হয়ে গেলে। লক্ষ্য করে দেখেছি যে সকালের শান্ত অনুভূতি, ঠাণ্ডা বাতাস, থেমে থাকা স্নিগ্ধতা হারিয়ে যায় বাস এলেই। কি হুড়মুড় করে দুটো নাকে মুখে গুঁজে সবার ছুটে যাওয়া বাসের দিকে। সিট না থাকলেও “ভেতরে যান, সিট আছে” বলতে বলতে কন্ডাকটর যাত্রীদেরকে ঠেসে দেয় ভেতরের দিকে। প্রচন্ড ভিড়ে, “হালকা, হালকা” বলে চেঁচাতে চেঁচাতে বাস বাঁক নেয়।
ওই বাসের সীটে বসে কলেজে পড়াতে যাবার পথে কতবার দেখেছি এক বেতের ঝুড়িতে পোকা লাগা বেগুন নিয়ে বসে আছে মোক্ষদাপিসী। সংসারহীন শক্তপোক্ত মানুষটি কারুর পিসী নয় তবু কি করে যেন একদিন সারা মফস্বলের সবার পিসী হয়ে গেছে। সে তার ঝুড়ির শেষ কটি বেগুন জলের দামে বিক্রি করে, কচুওলার সাথে সব্জী দেওয়া নেওয়া করে; বেলা বাড়লে ঘরের দিকে পা বাড়ায়; সবজান্তা লোকেরা বলে ওর নাকি পয়সার অভাব নেই, কিন্তু ঘরে কেউ নেই বহুবছর। কি হয়েছে, কেউ বলেনা বা বলার মত তেমন কিছু নেই, তাই চুপ করে থাকে। আমি শুধু জানি পিসী একা সারাদিন কাটাতে পারেনা বলে প্রথম প্রথম প্রতিবেশীদের বা আত্মীয়বাড়িতে যেত। তাদের হাবেভাবে সে বুঝে গেছে তার উপস্থিতি তাদের কাছে কাম্য নয় । সে তাই হাতে গড়া প্রদীপ, কানির, পাটের, চটের, শণের, বোতলের পুতুল, মাচার চালকুমড়ো, পুকুরের পাশ থেকে তুলে আনা কচু শাক এনে বসত বাজারে।
তার অকালে মরে যাওয়া মেয়েটির মত পনের ষোল বছরের মেয়েদেরকে দেখলে স্নেহভরা চোখে চেয়ে থাকত। তাদের কেউ কেউ কাছে এলে সে পাঁচ দশ পয়সায় শিয়াকুল, কদবেল, জামির সব প্ল্যাস্টিকের ব্যাগ ভরে দিত। যেন নিজের মেয়েকেই দিচ্ছে। ওই পাঁচ দশপয়সাও না নিলে বরং তার ভালো লাগত। যাবার পথে পুকুরে ডুব দিয়ে ঘরে গিয়ে বারবার মনে করত মেয়েগুলির মুখ। কল্পনা করত সে ওদের মুখে ভরে দিচ্ছে ডাঁসা জাম, পেকে তুলতুলে হয়ে যাওয়া আমের টুকরো। সদ্য ভাজা আলু। মেয়েটা আলুভাজা খাবার জন্য মরে যেত। কি যে ভালোবাসতো আলুভাজা, সে সকালে রুটি দিয়ে, দুপুরে ভাত, রাত্তিরে পরোটা মুড়ি বা চিঁড়ের ফলারের সাথে। সেই মেয়ে স্কুল ফাইনাল পাশ করতে না করতে ওর বাবা বিয়ের কথা তুলল। কত কাঁদল সে, জিদ করে পাঁচদিন অনাহারে রইল। বিয়ে করব না বলল। তবু জোর করে ওর বাবা দেনাপাওনা সব ঠিক করে এল। অভিমান করে সে মেয়ে পুকুরে স্নান করতে গিয়ে আর ফিরল না। সাত গাঁ খুঁজেও, তার সইয়ের ঘরে গিয়েও তাকে পাওয়া গেলনা। পরের দিন সেই সোনার মেয়ের ফ্যাকাশে দেহ ভেসে উঠল মাঝপুকুরে। আঙ্গুলগুলি মাছে খাওয়া, একটা চোখের পাতাও। কতজন কত কি কথা বলল। মেয়ের উপর রাগে মোক্ষদা পিসীর বর ঘর ছেড়ে সেই যে চলে গেল আর ফিরল না। শ্বশুরবাড়িতে তার যত্নেই বেঁচে থাকা রোগজীর্ণ, হাড় মুড়মুড়ি শাশুড়ি, পেত্নীর মত খ্যানখ্যানে গলায় তাকে দোষ দিতে দিতে এক মাঝরাতে মারা গেল। তখন থেকে পিসী একেবারে একা হয়ে গেল। বনে-বাগানে-পুকুরপাড়ে যা পায় তাই নিয়ে পিসী চলে আসে বাজারে। একটা পেট, কত আর লাগে। প্রথমদিকে হাটে কেউ পিসীকে জায়গা দিতে চাইত না। একদিন আলু-পেঁয়াজওয়ালা তার দেওয়া জলখাবারের বহর আর যত্ন করে মানুষকে খাওয়ানো দেখে বুঝল পিসীমা লাভক্ষতির জন্য বাজারে আসেনা, আসে সে বড় একা ব’লে; তাই তো খুচরা দিলে কোনদিন গুনেও দ্যাখে না। মায়ায় পড়ে সেও তখন থেকে পয়সা না নিয়ে এমনি এমনি আলু পেঁয়াজ, ঘর থেকে আনা জলখাবার, পিসীকে দেয়। তার দেখাদেখি আস্তে আস্তে গোটা বাজার তাকে পিসী বলে মান্যি করে। পিসীকে তাদের সব্জীর ঝুড়ি, ডাল-চালের বস্তা, দেখতে দিয়ে ঘরে গিয়ে নেয়েখেয়ে আসে, সময়ে অসময়ে এটা ওটা নিয়ে যায় তার ঝুড়ি থেকে, এনে দেয় পিসীর যা দরকার। বৃষ্টিদিনে জলের ছাটে পিসী ভিজে গেলে তারা দেয় শুকনো কাচা গামছা হাত-পা- মুখ মুছে নেবার জন্য, হি হি করে কাঁপতে থাকা পিসীর গায়ে জড়িয়ে দেয় পুরনো চাদর। চাঁদা নিতে এসে ছেলেছোকরারা জুলুম করলে সবাই মিলে পিসীর হয়ে লড়ে। শাশুড়ি, বর আর মেয়ে হারিয়ে এই হাটের সবাই এখন পিসীর আপনজন হয়েছে, তাই পিসী দিন এসে বসে বাজারে, শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা-বন্ধ-পুজো-উৎসব বলে কিছু মানামানি নেই।
পিসীর দাওয়ায় থেকে থেকে, জল- বাতাস- রোদ খেয়ে খেয়ে বুড়িয়ে যায় এর তার দেওয়া টমেটো, মুলো, ঝিঙ্গে। গায়ে কালো ফুটকি লাগা ডাঁসা পেয়ারার রং ম্লান হতে থাকে, অঙ্কুরিত হয়ে যায় গাদ করে রাখা আলু- পেঁয়াজ- রসুন আর তাই বড় আদর করে নিতে আসে পাশের গ্রামের দুঃখী এক মেয়ে। সেও নাকি একা। মোক্ষদা পিসী তাকে কোনদিন জিজ্ঞেস করেনি কেন সে একা। দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে সে ভাবে কি হবে আর শুধিয়ে। এ পোড়া দেশে আইনকানুন বলে কিছু আছে নাকি নীতিনিয়ম মানে কেউ। পুরুষ মানুষ কারণে-অকারণে কি সহজেই ঘর ছেড়ে চলে যায়, আর আমরা লজ্জা-সরম-অপমান বুকে নিয়ে পড়ে থাকি পরিত্যক্ত ঘরে। করুণ মুখের শ্যামলা মেয়েটির ভাঙ্গা বুক আবার ভেঙ্গে দেওয়া কেন। তার বদলে পিসী যত্ন করে রেখে যায় ঘরে করা পরটা, বাড়তি আলু-পেঁয়াজ-রসুন-পেয়ারা-কুল- খেজুর, যতটুকু পারে সেই মেয়ের জন্য। রেখে যায় ঝুড়ি ও থলি, তারপর মোক্ষদা পিসী বেরিয়ে যায় তার কাজে। ফিরে এসে দেখে ছোট শিশি ভর্তি আচার এবং কাসুন্দি দিয়ে গেছে সেই মেয়ে। নিয়ে গেছে যা ছিল দাওয়ায়। বুক থেকে বড় একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে তার। ভাবে, ‘বলব তাকে, আমার ঘরেই না হয় মেয়ে হয়ে ঘর আলো করে থাক’। কিন্তু বলতে গিয়ে মুখে আটকায়। ভাবে, সে যদি আবার অন্য কিছু ভেবে বসে, যদি আর আসতে না চায়। তার চেয়ে আসুক বরং। পিসী ঘরে গিয়ে নাড়ুগোপালকে ভোগ দিতে দিতে বলে, “আমার দিন যে কিছুতেই কাটে না গোপাল, এমন করে সব্বস্য কেড়ে নিয়ে, আমাকে জীবনে মেরে দিয়ে পরাণে কেন বাঁচিয়ে রেখেছ তুমিই জানো অনেক ভোগান্তি হল, এবার টেনে নাও তাই। আমার মত কত হতভাগিনী আছে কে জানে যারা চিতায় না যেয়েও দিনরাত পুড়তে থাকে যাতনায়। না পারি মরতে আমরা, না পারি বাঁচতে । আত্মহত্যাও যে মহাপাপ, নইলে মেয়ের মত আমিও গলায় পাথর বেঁধে জলে ডুবে মরতাম। আমি পারছি না, তুমিই না হয় একটা উপায় করে দাও”। সে শুধু মেয়ের কথা ভাবে এখনও, তার দুচোখের ধারার জল ভাসায় তার মুখবুক, তার মাটির ঘরের মেঝে শুষে নেয় সেই অশ্রুজল। স্বামীর কথা সে ভাবে না, ভাবতে চায়না। যে সংসার ছেড়ে ইচ্ছে করে চলে যায় একে-তাকে দোষ দিয়ে সে আর যাই হোক সত্যিকারের মরদ নয় । সে কাপুরুষ গেছে যাকগে, আবার মন গেলে হয়ত আসবে। কিন্তু মেয়েটির বিয়ে জোর করে ঠিক না করলে সে থাকতো কাছটিতে। মায়ের বালিশের ওয়াড়ে এমব্রয়ডারির ফুল তুলতে তুলতে একদিন বলেছিল, “আমাকে বিয়ে দিও না মা, আমাকে পড়াশুনা করতে দাও। আমি ভবিষ্যতে তোমাদেরকে দেখবো । তোমাদের ছেলে হয় নি বলে কত দুঃখ। সব দুঃখ ভুলিয়ে দেব, দেখো”। মোক্ষদা পিসীর স্বামী লোকের কথা শুনে সিংহের মত গর্জন করে গায়ের জোরে বিয়ে দিতে গেল, আর মেয়ে পালিয়ে গেল চিরকালের জন্য। এখনো রাতের হাওয়ায় কেঁপে ওঠা লম্ফের আলো শোনে মোক্ষদা পিসীর অন্তরের কথা, শোনে বুকফাটা আর্তনাদমাখা কান্না। সারারাত কাদের এক নয়ন ভুলানো হৃষ্টপুষ্ট বাছুর এসে বসে থাকে দাওয়ায় কে জানে। প্রতিদিন মোক্ষদা পিসীর সাথে সাথে সেও বাজারে যায়, তারপরে কোথা যায় কে জানে। পরের দিন সে আবার আসে। বালতি করে জল ধরে দিলে চোঁ চোঁ করে সব জলটি খেয়ে নেয়। তার সঙ্গেই বকবক করতে করতে মোক্ষদা পিসী বাজারের দিকে যায়। তখনও লজ্জায় কুয়াসায় মুখ ঢেকে রেখেছে মাঠ, না চাইলেও সূর্যকে উঠতে হয়, তাকে দেখতে হয় অনাচারে ভরা দেশে, মোক্ষদা পিসীর মত মানুষগুলিকে ভাঙ্গা সংসারের যাতনা আর ছেঁড়াফাটা আশা নিয়ে কেমন করে বেঁচে থাকে।
বাস ফিরিয়ে আনে আমাদেরকে বিকেল হলে। বাগান জুড়ে প্রজাপতি ওড়ে। সোনালী আলোয় ওড়ে কাপাস তুলোর আর আঁশের মত কত নতুন বীজ। পরি মেয়েটি উড়ে বেড়ায় তাদের পিছুপিছু। তাদের বাবা মা আবার হাসপাতালে গিয়ে ফোন করে জানায় যে সে রাতে তারা আর ফিরবে না। তাদের দু বছরের ছেলের আবার একটা অপারেশন হবে। যদি আমি মেয়েকে রাখি রাতের বেলায় তাহলে খুব ভালো হয়। বিদেশের রূপকথার গল্প শুনতে শুনতে কোলে বসেই ঘুমিয়ে পড়ে মেয়ে। তাকে শুইয়ে দিতেই তার মুখ দেখে কেন জানিনা মোক্ষদা পিসীর কথা মনে পড়ে। একটা মেয়ের জন্য পিসীর বুকের ছাতি ফেটে যাওয়া । রাশি রাশি ভালোবাসা বরফ হয়ে জমে থাকা তার বুকে। মনে পড়ে তার বরের কথা। সে এখন কোথায়, কি করছে একা একা নাকি দূরে গিয়ে আবার বিয়ে সাদি করে সংসার করছে। নাকি অপরাধবোধ মুছতে পারেনি বলে, পিসীর চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারবেনা বলে, সারাজীবন দুরেই রয়ে যাবে।
দূর থেকে চোখে পড়ে হাট বন্ধ গেল আজকের মত। ছায়া কালো মানুষগুলি রিক্সা, টেম্পো বা মাথায় করে ফেরত নিয়ে যাচ্ছে যা কেউ তুলে নিয়ে যায়নি। কাল সকালে আবার অন্য এক দিন। অন্য এক গল্প। ততক্ষণ কচি মেয়েটির দুচোখ ভরে থাকুক স্বপ্নে।সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরুক অসুস্থ ভাই। মোক্ষদাপিসী বিশ্রাম নিক। স্নিগ্ধ বাতাসে ভরে থাকুক সন্ধের গা।
শিখা কর্মকার | Sikha Karmakar
Bengali Story 2023 | ভবতোষ মাস্টার | গল্পগুচ্ছ ২০২৩
New Bengali Story | বুড়ো দাদুর মন্দির | শুভাঞ্জন চট্টোপাধ্যায়
History of Bengali Poetry | কবিতা কি ও কেন এবং তার ইতিহাস
Bengali Article 2023 | সুভাষচন্দ্রের আত্মজীবনীঃ বিভিন্ন মনীষী প্রসঙ্গ
Mokkhada Pishi | Mokkhada Pishi 2023 | Bengali Story – Mokkhada Pishi | Shabdodweep Story – Mokkhada Pishi | Mokkhada Pishi – Bangla Galpo | Web series – Mokkhada Pishi | Short Film – Mokkhada Pishi | Bangla Natak – Mokkhada Pishi | Full video – Mokkhada Pishi | Full video – Mokkhada Pishi | New story – Mokkhada Pishi | Mokkhada Pishi – natun natak | Mokkhada Pishi – natun bangla galpa | Mokkhada Pishi – Best story | Best selling story – Mokkhada Pishi | Shabdodweep Founder | Shabdodweep Web Magazine | Shabdodweep Story | Shabdodweep Writer