সুবল দত্ত – সূচিপত্র [New Bengali Story 2023]
হ্যালো বেবী এনিম্যালস [Hello Baby Animals] – সুবল দত্ত
বিদেশে এসে না চাইতেও একটা কুকুর বাচ্চার হত্যা হয়ে গেল। কুকুরটা এমন ঘাড় নেতিয়ে পড়ে রয়েছে যে অজিতেশের মত পেশাদার অভিজ্ঞ চোখ বুঝে গেছে এটা আর ইহলোকে নেই। এমন অন্ধ রাগ,কেন যে নিজেকে সামলাতে পারেনা অজিতেশ। অথচ তার মতন সাদামাটা মানুষ আর দ্বিতীয় নেই। ইন্ডিয়ায় দেশে পাড়ার এমন কোনো বাড়ি নেই যে, কাজে ঘরে তার ডাক পড়ে না। কিন্তু জনান্তিকে কী যে মারাত্মক কাজ করে বসে সে নিজেও ভেবে পায় না। গত সন্ধেবেলায় নির্জন ডগ পার্কে একটা গ্রে হাউন্ড কালো বাচ্চা কুকুর মাঝরাস্তায় পু পু করে দিল। এই ঘটনা আজ কয়েকদিনই হলো রোজ ঘটছে। একটা থলথলে মোটা লেডি তাকে টানতে টানতে নিয়ে আসে। আর অজিতেশের কাছে ঘুর ঘুর করে। একসময় তার আশেপাশেই কুকুরটার খালাস করিয়ে নির্বিবাদে চলে যায়। কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। দেখেও না যে ওখানে বিষ্ঠা কারোর মনে ঘৃণা ও ক্রোধ জাগাতে পারে। এই বিদেশী মহিলার পরিচয় সে পেয়েছে। ইরানিয়ান বা প্যালেস্টাইন রিফিউজি। সেই মতো তার ড্রেস। কালো ওড়না দিয়ে আদ্দেক মুখ ঢাকা। কিন্তু কুকুরদের একটা বিশেষ স্থানে পটি করানোর ডিসিপ্লিন তো এ দেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে আছে? এখানে এসব বলে দিতে হয়না। এটা অলিখিত নিয়ম। পোষ্যদের পু পু করালে সেটা কুড়িয়ে নিয়ে বাস্কেটে ফেলতে হয়।
অবশ্য আমাদের দেশে এটা খুব সাধারণ ব্যাপার। যেখানে সেখানে মানুষই তো পেচ্ছাপ পায়খানা করে। কুকুরের কি দোষ। কিন্তু ও তো আমাদের দেশের নয়? ও তো বিদেশী? সহবত জানেনা না কি? তবু অজিতেশের সমাজ দরদী ভাব উথলে ওঠে। একটা ব্ল্যাক পলিথিন ব্যাগ নিয়ে সেই বিষ্ঠা তুলে নিয়ে পার্কের কোণায় রাখা বিন এ ফেলে দেয়। অজিতেশ এই ধরনের কাজ দেশে থেকেও স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে করে। রাস্তায় যেতে যেতে কলার খোসা, দড়ি ভাঙা কাঁচের বোতল,টুকরো লোহা বা বড় পাথর পড়ে থাকলে পায়ে করে কিনারে সরিয়ে দেয়। কিন্তু এখন? সন্ধে হয়েছে। চারদিকের অন্ধকার হু হু করে ঘনিয়ে আসছে। উজ্জ্বল গোলাপী চেরী ব্লসমের গাছ কালো ছায়া ফেলে মৃত কালো বাচ্চা কুকুরটাকে ঢেকে দিয়েছে। কালচে রঙের ঘাসে মিশে আছে। খুব কাছ দিয়ে এক-দুজন পথচারী মাস্ক পরে পেরিয়ে গেল, কেউ দাঁড়াল না। দেখলো না। কু-কীর্তি এক আজব ঘটনা। খুব দ্রুত ঘটে যায়। যদিনা তাকে কবর খোঁড়ার মত না খোঁড়া হয় সেটা চাপাই থাকে। অথচ ওর অন্ধ ক্রোধ ওই বাচ্চা কুকুরের মালিকের উপরে, সেটা বুঝেও কেন এই অপরাধ? আফসোস।
আজ পড়ন্ত বিকেলে সেই থলথলে মোটা শ্বেত মহিলাটি এদিক ওদিক ঘুরে এসে পার্কের এই নির্জন কোণায় অজিতেশকে খুঁজে পেয়ে বেশ কিছুক্ষণ অজিতেশের সামনে ঘুরঘুর করছিল। অজিতেশ চুপচাপ নিজের চিন্তায় মগ্ন। তিনদিন পর তার রিটার্নিং টিকিট কাটা। ভারতে ফিরতে হবে। পার্কের বেঞ্চে বসে সেটাই তার ভাবনা। তন্ময় হয়ে একটু হেলান দিয়ে ঝিমিয়ে পড়ে ছিল। বাচ্চা কুকুরটা বেঞ্চে উঠে পড়ে ওর কাছ ঘেঁষে বসেছিল। হঠাত্ ‘ভ্যাট’ শব্দে চোখ খুলে বসে দেখে সেই বিদেশী লেডি চোখ বড় বড় করে বিদ্রুপের হাসি হেসে তার দিকে তাকিয়ে, আর মিশমিশে কালো কুকুরটা প্রায় তার গায়ের উপরই বিষ্ঠা ত্যাগ করেছে। পার্কের এই কোণায় ডেফোডিল ফুলের মধুর গন্ধ ছাপিয়ে উগ্র দুর্গন্ধে গা গুলিয়ে যাচ্ছে। অজিতেশের জামা প্যান্টের সেই থকথকে পু পু কাপড় ভেদ করে ভিতরে ঢুকে গেছে ও চামড়া জ্বালা করছে। তাকিয়ে দেখে তার মুখের খুব কাছে ওই মহিলার মুখ। নাক মুখ মাথা কালো ওড়নায় ঢাকা। চোখ বড় বড়। নিঃশব্দে অট্টহাসি হাসছে চোখ। ওই মহিলা তখন হাত উঠিয়ে কুর্নিশ করছে। আদাব। কি ভাবছে আমাকে? ভিনদেশী রোহিঙ্গা? বিদ্রুপ করছে? সহ্য হলো না ওর? ঘৃণা? অজিতেশের গা রি রি করে উঠলো। চোখ নামিয়ে প্রাণপণে হজম করতে চেষ্টা করল রাগ। কয়েক মুহূর্ত। আবার মাথা উঠিয়ে চিত্কার করে কিছু বলতে যাবে, অজিতেশ দেখল সেই মহিলাটি গায়েব। কুকুরটার গলার বকলস বেঞ্চের ফাঁকে আটকে রয়েছে। প্রাণপণে যাবার জন্যে লাফ দিচ্ছে, ছটফট করছে, ভুকছে। অজিতেশের সারা শরীর হঠাত্ গরম হয়ে গেল। রাগে অন্ধ হয়ে কুকুরটার মুখ চেপে ধরল। তারপর গলা ধরে বেঞ্চের উপর ঠেসে ধরে থাকল। বেশিক্ষণ নয়, একটু পরেই কুকুরটা শিথিল হয়ে গেল।
অজিতেশ টের পেল তার হাত পা পেট অল্প অল্প কাঁপছে। এবার শীত করছে। খুব খিদে পেয়ে গেল। একটা বড় মাপের অপরাধ করার পর এরকমটাই হয়, অজিতেশ জানে। দেশের বাড়িতে একটা অসুস্থ ঢ্যামনা সাপকে অনেক লোকের সামনে কাটারি দিয়ে দু-খন্ড করে দিয়ে ছিল। কেবলমাত্র দর্শকের সামনে বাহবা পেতে। অজিতেশ জানতো,প্রতিবেশী ওই মুমূর্ষু সাপটাকে ইচ্ছে করে ছুঁড়ে দিয়েছে ওর বাড়িতে। আবার ওই দর্শকেরাই যারা রসিয়ে রসিয়ে উপভোগ করছিল, তারাই নিন্দা করতে করতে পালিয়ে গেল। তখন একা নিহত সাপের সামনে বসে নিজেকে হত্যাকারী মনে হচ্ছিল আর এইরকমই উপসর্গ দেখা দিয়েছিল। আচ্ছা? সাপটা যে নিজে নিজেই ঘরে ঢোকেনি কেউ মজাক করে ওটাকে নিয়ে এসেছিল জেনেও অজিতেশ কেন ওটাকে আধমরা করে বলি দিল? ও কি দোষ করেছিল? আর সেই অনুশোচনা শেষ হতে না হতে আবার? আবার? কেন কেন ওরকম করি আমি? আমি কী মারাত্মক স্যাডিষ্ট? নাকি এক সাইকো কিলার হয়ে পড়লাম?
ডেফোডিল ফুলের গুচ্ছ এবার খুলতে শুরু করেছে। বহুদূর থেকে বয়ে আসা পাঁজর কাঁপানো আলাস্কার হিমেল হাওয়া। নিসর্গের চিত্রপটে হলুদ কমলা ম্যাপল গাছগুলো বড় মনোহারী লাগছে। এসময় দেশে বাড়ির পিছনে জঙ্গলের শুরুতে পলাশে আগুন রঙ ধরে। এখন সেই দৃশ্য মনের চোখে ভাসতেই বুকের ভিতরে হাহাকার জেগে উঠল। একটেরে চোখে দেখে নিলো কোলের পাশেই সিটের নিচে ঝুলে থাকা মৃত কালো কুকুরটা। মনের ভিতর কেন প্রশ্নের উত্তর হঠাত্ করে জাগতেই অজিতেশের মাথা একেবারেই পরিষ্কার হয়ে গেল। যতগুলো হত্যা করেছে,ওই সাপ আর এই কুকুর, সব সবগুলো তো উপলক্ষ। সে উপলক্ষগুলোকে হত্যা করেছে আর কারণগুলো তার উদোম রাগ দেখে আড়ালে হা হা করে হাসছে। নিশ্চয়ই। এটাই ঘটনা। ইস কী বোকা আমি? এই কুকুরটা ওই রিফিউজি মহিলাটার যদি পোষ্য হতো, তো ভালোবাসার টানে কবেই ও এখানে উপস্থিত থাকতো। এই দেশে তো আমি দেখতেই পাচ্ছি? নিজের সন্তানের মতই পেট ডগ ভালোবাসে। একমুহূর্ত কাছ ছাড়া করে না। তাহলে? ওর কোনো পাত্তা নেই কেন? ওর যাওয়া তো আধঘন্টার উপর হয়ে গেল? অন্ধকার ঘনিয়ে আসছে। আচ্ছা? ওর কোনো বদ মতলব নেই তো? আমাকে ফাঁসিয়ে দেওয়ার মতলব?
অজিতেশ চারদিকে ভালো করে চোখ বোলালো। নাঃ আশেপাশে কেউ নেই। সবাই নিজের নিজের পোষ্য কুকুর নিয়ে ঘরে ফিরছে এতো জানা কথা। এক্ষুনি সিকিউরিটি আসবে। তার আগেই পালাতে হবে। অজিতেশ উঠে দাঁড়িয়ে আবার বসে পড়ল। যাবার আগে যাকে বিনা দোষে হত্যা করে দিলাম, নিছক অন্ধরাগে, তার কাছে একটু ক্ষমাভিক্ষা চাইতে হবে। একটু ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি। মাত্র কয়েক সেকেন্ড। অজিতেশ দেখল, তার জামাতে অনেকটাই কুকুরের বিষ্ঠা লেগেছিল, সেটা শুকিয়ে এসেছে। আর আশ্চর্য, কোনো গন্ধও নেই। অজিতেশ ভীষণ অনুশোচনায় বাঁ হাত কুকুরের মাথায় রেখে ফুঁপিয়ে কেঁদে ফেলল। সঙ্গে সঙ্গে যেন তড়িত্পৃষ্ট হয়েছে এমনভাবে তার সারা শরীর কেঁপে উঠলো। সে লাফ দিয়ে একটু তফাতে দাঁড়াল। কুকুরটা যেন নড়ে উঠলো? মরা কুকুর? জ্যান্ত হয়ে গেল, নাকি প্রেতাত্মা প্রতিশোধ নিতে এল? পরিবেশ আবছা হয়ে আসছে। এখানেও জোনাকি উড়ছে। কয়েক সেকেন্ড হতবুদ্ধি হয়ে দাঁড়িয়ে থেকে অজিতেশ আর পারলো না। এগিয়ে গিয়ে নিচু হয়ে কুকুরটার মুখ দুহাতে তুলতেই বুঝল কুকুরটা মরেনি। মুমূর্ষু হয়ে আছে। ধুঁকছে। তাড়াতাড়ি সে কুকুরটার চেন খুলে পাঁজাকোলা করে তুলে দৌড় মারলো ডগপার্কের একটা সীমানায় জলাশয়ের দিকে। এখানে কুকুরদের সাঁতার শেখানো হয়। হাঁসফাঁস করতে করতে অজিতেশ কুকুরটাকে ধরে সোজা নেমে পড়ল জলে। কুকুরটার মুখে একটু একটু রক্ত লেগে রয়েছে। যদি মরেও যায়,কম সে কম সেটা যেন কেউ না দেখে। পুরো চুবিয়ে কুকুরটাকে তুলে নিয়ে ফিরে এসে সেই পার্কের বেঞ্চে শুইয়ে দিল। কুকুরটা জিভ বার করে হ্যা হ্যা শব্দে হাঁপাচ্ছে। অজিতেশ পাশে বসে ওর মাথাটা কোলে তুলে নিল। বেঁচে যাওয়ার পর অসম্ভব মায়া টান হলো। এমনিতে কুকুর একদম পছন্দ করেনা সে। কুকুর দেখলেই তার ছোটোবেলাকার কথা মনে পড়ে যায়। অজিতেশের বাবাকে একটা পাগলা কুকুরে কামড়ে ছিল। কুকুরটা পাগল ছিল উনি বুঝতে পারেননি। তার কদিন পর ভয়ানক জলাতঙ্ক রোগ হলো। সে যে কি মারাত্মক খিঁচুনি, যে দেখে সে মুখ ফিরিয়ে নেয়। পেটে বেশ কয়েকটা ইনজেকশন আর যমে মানুষে টানাটানির পর বাবা বাঁচলেন ঠিকই কিন্তু মাত্র বছর পাঁচেক অসুস্থ থেকে। তারপর থেকে অজিতেশ বড় বেশি কুকুর বৈরী। কিন্তু এখন এই নির্জন নিস্তব্ধ পরিবেশে অজিতেশ যেন দুটো হৃৎপিণ্ডের শব্দ শুনতে পেল। একটা নিজের ও আরেকটা কুকুরের। দুটো সমান তালে। একে অপরের পরিপূরক। অজিতেশ তবুও মনের গভীরে হাতড়ে হাতড়ে খুঁজতে লাগল কেন এই ভিনদেশী পার্কে একটা অন্যের পোষ্য জীবকে কোলে নিয়ে বসে আছে। যার কুকুর সে আসছে না কেন সেটাও একটা চিন্তার বিষয়। সে যে কি মুড নিয়ে আসবে সেটাও উদ্বেগের বিষয়। কেন এই কাজটা করলো সে? ফাঁসিয়ে দিচ্ছে না তো?
এইসব থেকে নিষ্কৃতি পেতে কুকুরটাকে এখানে রেখে পালিয়ে যাওয়া উচিত। এই ভেবে অজিতেশ কোল থেকে ওটাকে নামিয়ে সোজা হাঁটা দিল।
বেশ কিছুদূর যাওয়ার পর অজিতেশ যখন দেখল ওর দাদার গাড়িটা দূর থেকে দেখা যাচ্ছে, খুব আশ্বস্ত হলো। মনে হলো যেন তার নিজের দেশের মাটিতেই ফিরলো। কিন্তু মন বড়ই খচখচ করছে। সুদূর অতীতের অন্ধ রাগের কুকীর্তি গুলো সব এই স্বপ্নময় আলো আঁধারি রাজ্যে ছবির মত ভেসে আসছে। একবার বই না ছাপানোর জন্যে প্রেসে পাবলিশারের ঠকবাজিতে রাগে তার বাগান বাড়িতে গিয়ে সবার অলক্ষ্যে সুন্দর পোষা বিড়ালটাকে পাথরে আছড়ে মেরে এসেছিল। সেই যে তার প্রথম প্রেমিকা এমন বিশ্বাসঘাতকতা করলো যে আত্মহত্যা করেও বেঁচে গেল অজিতেশ। তারপর একদিন তক্কে তক্কে থেকে ওর বাড়ি ফাঁকা পেয়ে টিয়াপাখিটার ঘাড় মুচড়ে দিয়ে এসেছিল। এরকম আরো বেশকিছু কেস। কিন্তু আগে এমন করে কোনদিন সেসব তার স্মৃতিপটে আসেনি। অজিতেশ নিজেই নিজেকে বলত, কিল এন্ড ফরগেট। আগে এমন করে আফসোস হয়নি। কুকুরটা বেঁচে গিয়ে অজিতেশকে যেন বড় বেশি অপরাধী করে দিল। অজিতেশ ল্যাম্পপোস্টের নিচে একটা গ্রানাইট স্টোনের নিচে ঘাসের উপর বসে পড়ল। দুহাতে নিজের মাথা জাপটে ধরে বরফ সাদা গ্রানাইট পাথরে মাথা ঠুকল কয়েকবার। ওইসব অবলা জীবগুলোর মৃত্যুর আগে কেমন যন্ত্রণা পেয়েছে সেটা বোঝার চেষ্টা করল। আচ্ছা? যে দোষী, যাদের জন্যে তার মনে কষ্ট, কই তাদের তো শাস্তি হয়নি? তাদেরকে মারার মুরোদ তো তোমার হলো না, হে ভীতু হন্তা? উল্টে কয়েকটা অবলা জীবকে হত্যা করে পাপী হলে? তোমাকে দিব্যি একটা রিফিউজি চ্যালেঞ্জ করে তার কুকুরটাকে জবরদস্তি গায়ের উপরে পু পু করিয়ে দিয়ে দনদনিয়ে পালিয়ে গেল? কই কিছু করতে পারলে?
অজিতেশ কয়েকবার মাথা ঠুকে ক্লান্ত হয়ে পাথরটার উপরে এলিয়ে পড়ল। কতক্ষণ ওইভাবে পড়েছিল তার মনে নেই। এটুকু জানতো, ওর দাদা গাড়িটার কাছে আসতে আরো ঘণ্টা দুই সময় নেবে। অদূরে পার্কের গেটের কাছে রাখা আছে গাড়িটা। সিকিউরিটি অফিসার ওর বন্ধু। ওখানে কতক্ষণ বসবে দাদা। একটু ড্রিংক্স নেবে। দাদার একটা ছোট্ট মত পিকিনিজ কুকুর আছে। সেটা এখানে চরাতে নিয়ে আসে ঠিকই কিন্তু বেশিক্ষণের জন্যে নয়। অজিতেশের আবার মনে পড়ল ফেলে আসা ওই বাচ্চা কালো কুকুরটার কথা। কি জানি কেন বুকের মাঝে আবেগ উথলে উঠল। চোখ বেয়ে অশ্রু ঝরতেই জোরে জোরে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল। অজিতেশ নিজেই অবাক হয়ে গেল। কেন? কেন এমনটা হচ্ছে? ভেবে কূল কিনারা পেল না। নিঃশব্দে কাঁদতে কাঁদতে একসময় কখন যে চোখ লেগেছে, মনে নেই। হঠাত্ গায়ের উপর ভারী চাপ ও গালে ভেজা কিছুর স্পর্শ পেতে চমকে গা ঝাড়া দিতেই দেখল সেই কালো কুকুরটা ছিটকে পড়ে কুঁই কুঁই করে আওয়াজ করছে। তাহলে ওটা এসে অজিতেশের কোলে চড়ে গাল চাটছিল? ওর সারা গায়ে এতো বেশি উজ্জ্বল হলুদ পরাগ রেণু লেগে রয়েছে কী সুন্দর একটা খেলনা মনে হচ্ছে না? অজিতেশ হাত বাড়তেই কুকুরটা ছোটো ছোটো আদুরে লাফ দিয়ে ওর কোলে চড়ে বসল। অজিতেশ খুব নরম হাতে ওর গা থেকে হলুদ গুঁড়ো পরিষ্কার করতে করতে বলতে লাগল, ‘কিরে? তোর ভয় ডর নেই? যে তোকে খুন করতে চাইছিল, তার কাছেই আশ্রয় চাইতে চলে এলি? আমি ভিনদেশী এক সাইকো কিলার। বদ লোকদের উপর প্রচণ্ড আক্রোশে অসহায় ছোটো ছোটো প্রাণীদের হত্যা করি। আমি মহাপাপী। হ্যাঁ, আমি যে কী তা তো তুইই দেখিয়ে দিলি রে? কত বড় নরাধম আমি, মৃতপ্রায় তোকে একা ওখানে ফেলে রেখে চলে এসেছি, সেটাও তুই এখানে এসে মনে করিয়ে দিলি? বাহ রে’।
অজিতেশ কুকুরটাকে জড়িয়ে ধরল। ঠিক সেইসময় ওর মুখে তীব্র ফ্ল্যাশ লাইট পড়তে চোখ ধাঁধিয়ে গেল। একটা আলো নয়, বেশ কয়েকটা। খসখসে বুটের শব্দ যখন তার কাছে এল অজিতেশ বুঝল ওরা সিকিউরিটি গার্ড। ওদের মধ্যে আমেরিকান টোনে কথাবার্তা শুনেই বুঝল ওরা এই কুকুরটার খোঁজেই বেরিয়েছে। ওরা কিছুক্ষণ চুপচাপ হয়ে দেখতে লাগলো কুকুরটা কেমন আদর করে অজিতেশের গাল চেটেই যাচ্ছে।
সুবল দত্ত | Subal Dutta
The legend of Jagannath | জগন্নাথের কিংবদন্তি
Andaman Cellular Jail | আন্দামানের কুখ্যাত সেলুলার জেল | 2023
পতিতাবৃত্তি ও চন্দননগর | Bengali Article 2023
Bengali Article 2023 | পরিবেশবাদী দৃষ্টিকোণ ও রবীন্দ্রনাথের ‘মুক্তধারা’ নাটক
Shabdoweep Founder | Shabdodweep Magazine | Shabdodweep Web Magazine | Shabdodweep Writer | Shabdodweep Poetry | Natun Bangla Galpo 2023 | Natun Bangla Galpo 2023 book | Natun Bangla Galpo 2023 pdf book | Writer – Natun Bangla Galpo 2023 | Top Writer – Natun Bangla Galpo 2023 | Top poet – Natun Bangla Galpo 2023 | Poet list – Natun Bangla Galpo 2023 | Hello Baby Animals | Hello Baby Animals Filpkart | Top poetry – Natun Bangla Galpo 2023 | Best seller – Natun Bangla Galpo 2023 | Full pdf book – Natun Bangla Galpo 2023 | Free download pdf – Natun Bangla Galpo 2023 | Audio book – Natun Bangla Galpo 2023 | Video book – Bangla Kabita 2023 | Video poetry – Bangla Kabita 2023 | New Story – Hello Baby Animals | Hello Baby Animals in pdf | Hello Baby Animals Images | Hello Baby Animals Wallpaper | Audio poetry – Natun Bangla Galpo | New Poetry book | Shabdodweep poetry book | Shabdodweep International Web Magazine | International Bengali poetry | Hello Baby Animals Story | Shabdodweep Story – Hello Baby Animals | Hello Baby Animals video | Bengali Poetry publisher | Shabdodweep Publisher | Shabdodweep Publisher 2023 | Shabdodweep Video Publisher | Shabdodweep Audio Book | Shabdodweep Video Book | Shabdodweep Mp3 poetry | Hello Baby Animals audio | Audio story – Hello Baby Animals | Viral video – Hello Baby Animals | Audio live – Hello Baby Animals | Hello Baby Animals – Subal Dutta | Audio Poetry mp3 | Audio Poetry wmv | Video poetry mp4 | Natun Bangla Galpo 2023 video series | Natun Bangla Galpo 2023 – web series | Natun Bangla Galpo 2023 – Latest version | Natun Bangla Galpo 2023 pdf book | web video – Natun Bangla Galpo 2023 | web reader – Natun Bangla Galpo 2023 | pdf reader – Natun Bangla Galpo 2023 | pdf publisher – Natun Bangla Galpo 2023 | Pdf story – Hello Baby Animals | Top story – Hello Baby Animals | Best selling story – Hello Baby Animals | New video – Hello Baby Animals | Sad story – Hello Baby Animals | True Story – Hello Baby Animals | Best web series – Natun Bangla Galpo 2023 | new pdf book – Natun Bangla Galpo 2023 | New story book – Natun Bangla Galpo 2023