Golpo Lekhan in Bengali | Best Bengali Story

Sharing Is Caring:

লোকটা আমার বাবা – জয়দেব সাঁতরা

“ড্যাডি, হু ইজ দ্যাট ওল্ড ম্যান?” –– ছোট্ট জনি তার বাবাকে প্রশ্ন করে। বিদেশে থেকে সেখানকার আদব-কায়দা রীতিমতো আয়ত্ত করেছে সে। চলনে বলনে সাহেবিয়ানার ছাপ সুস্পষ্ট। কথার মধ্যে কোন জড়তা নেই। ‌লিজা লোকটাকে দ্যাখে আর মুচকি মুচকি হাসে। লোকটার সঙ্গে তার আলাপ অবশ্য অনেক আগেই। তবে সেটা বাই টেলিফোন।

‘ওল্ড ম্যান’’ – কথাটা খুব মনে ধরে সুব্রতবাবুর। ওল্ড ম্যানই তো। বয়স কি আর কম হলো? প্রায় সত্তর ছুঁইছুঁই। ঘরের মানুষ ঘরে ফিরছে; চোখে মুখে তাই পরম তৃপ্তির আবেশ। আনন্দে আত্মহারা। আবেগে আপ্লুত হয়ে ছোট ছেলেটিকে জড়িয়ে ধরতে গেলে এক বিপত্তি ঘটে। ছেলেটি ভূত দেখার মতো সঙ্গে সঙ্গে খানিকটা পিছিয়ে দূরে সরে যায়। বলে ওঠে -– ওঃ হোয়াট এ ডার্টি ম্যান!

‘হোয়াট এ ডার্টি ম্যান’ –– কথাটি শুনে সুব্রতবাবু কেমন যেন হকচকিয়ে যান। নিজের কানকেই তাঁর বিশ্বাস হয় না।আপন নাতির মুখ থেকে এ কি শুনছে? আর আগাতে সাহস হয় না। মনমরা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন দূরে।

এতক্ষণ সকল কাণ্ডকারখানা একটু দূরে দাঁড়িয়ে দেখছিল অমিত। জনি, লিজা ও সুব্রতবাবুদের কথোপকথন শুনছিল সে। বাড়ি ফিরে প্রথম সাক্ষাতেই যে এরকম একটা বিচ্ছিরি ঘটনার সম্মুখীন হতে হবে তা সে ভাবতেই পারেনি। অমিত প্রাথমিক জড়তা কাটিয়ে সুব্রতবাবুর মুখের দিকে তাকিয়ে বলে –– ওর কথাই কিছু মনে করো না। আসলে তোমার সম্পর্কে ও তেমন কিছুই জানে না। তাই হয়তো এই ধরনের আচরণ।

ঠিক আছে তোরা সব বাড়ির ভেতরে চল, আর বাইরে থাকিস না। এই বলে আগেভাগেই হন হন করে সুব্রতবাবু বাড়ির ভেতরে চলে গেলেন। আর তার চলে যাওয়া পথের দিকে তাকিয়ে অমিত ভাবতে থাকে অতীত দিনের অনেক কথা। অমিত থেকে অমিতবাবু হয়ে ওঠার নানান বৃত্তান্ত।

অমিত তখন খুবই ছোট। বয়স চোদ্দো পনেরোর বেশি হবে বলে মনে হয় না। নবম শ্রেণীর ছাত্র। পড়াশোনায় অবশ্য প্রথম থেকেই খুব ভালো। ক্লাসে এক নম্বর স্থানটা পাকাপাকিভাবেই ছিল তার দখলে। পড়াশোনায় গাফিলতি করেনি সে কোনদিন। ভাই বোন মিলে তারা চারজন। দুই দিদির কোলে দুই ভাই। অমিত আর সুমিত। তাদের চার ভাই বোনকে মানুষ করতে কি হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমই না করতে হয়েছে তার বাবাকে! সারাদিন কর্ম ক্লান্তির পরেও তেমনভাবে বিশ্রাম নেয়নি কোনোদিন। দাদুর সংসারে বাবা কাকা মিলে মিশে ভালোই ছিলেন। টানা কয়েক দিনের জ্বরে দাদু দেহ রাখলেন। ঠাকুমা গত হয়েছেন তারও পাঁচ বছর আগে। তবুও দাদু শক্ত হাতে ধরে রেখেছিলেন তার এই সংসার নামক তরণীর হাল। কারো কোনো ত্রুটি হতে দেননি কোনোদিন। দাদু মারা যাওয়ার পরেই সংসারের অবস্থা ক্রমশ বেহাল হতে থাকে। মাঝেমাঝেই মা কাকিমার মধ্যে সামান্য বিষয় নিয়েই খুঁটিনাটি ঝগড়া লেগে যায়। একটা সময় যাদের দুই বোনের মতো মনে হতো আজ তারা পরস্পর কেউ কাউকে সহ্য করতে পারে না। একেবারেই সাপে নেউলে অবস্থা। যখন-তখন দ্বন্দ্ব লেগে যায়। সংসারে টাকা দেওয়া নিয়ে কাকিমা একদিন বলেই ফেলল, তারা আর বাড়তি বোঝা বয়তে পারবে না। ফলে যা হবার তাই হল। একান্নবর্তী পরিবার ভেঙে চুরমার হয়ে গেল।

কাকার পরিবারে সদস্য সংখ্যা কম। এক ছেলে আর এক মেয়ে নিয়ে তার সংসার। আর অমিতরা সেখানে চার ভাই বোন ও তাদের বাবা মা। ফলে অমিতের বাবার পক্ষে সংসার চালানো একটু চাপই হয়ে পড়ে। কাকার অবশ্য কোনদিন তেমন সমস্যা হয়নি। বাপুতি সম্পত্তির বাইরেও ছিল তার প্রাইমারি স্কুলের চাকরি। ফলে তার সংসারে সচ্ছলতা ছিল সব সময়। কেবল বেকায়দায় পড়তে হতো অমিতের বাবাকে। কোনদিন কারো প্রতি অভিযোগ ছিল না সুব্রতবাবুর। মুখ বুজে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই চালিয়ে যেতে থাকেন তিনি। কখনো উদ্যম হারিয়ে ফেলেননি। কঠোর জীবন সংগ্রাম কাকে বলে তা হাড়ে হাড়ে প্রত্যক্ষ করেছে অমিত। তার বাবার বেশ কিছু ঘটনা অমিত আজও ভুলতে পারেনি।

প্রচন্ড চাপের মধ্য দিয়ে চলতে থাকে সুব্রতবাবুর সংসার। ছেলেদের পড়াশোনার খরচ চালাতে গিয়ে বাড়ির লোকজন বিশেষ করে অমিতের মায়ের প্রতি যতটা যত্ন নেওয়া দরকার ছিল তা নিতে পারেননি। ক্রমশ পুষ্টিহীনতার অভাবে অমিতের মা আশালতাদেবী এক সময় খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্ত্রীর অসুস্থতায় দিশেহারা হয়ে পড়লেন সুব্রতবাবু। এই দুর্দিনে কি করা উচিত কিছুতেই ভেবে উঠতে পারলেন না। কোনরকমে এক অভিজ্ঞ কোয়াক ডাক্তার দেখিয়ে এ যাত্রা রেহাই পেলেও অসুস্থতা আশালতাদেবীর নিত্য সঙ্গী হয়ে রইলো। ফলে সংসারে সুব্রতবাবুর চাপ আরো বেড়ে গেল। বাইরের কাজ সামলে গৃহস্থালির কাজেও তাকে সময়ে সময়ে হাত লাগাতে হলো। বিশেষ করে যখনই আশালতা দেবী একটু অসুস্থ বোধ করতেন তখন সমস্ত রকম কাজ সুব্রতবাবুকেই করতে হতো। রান্নাবান্না থেকে শুরু করে ছেলেমেয়েদের খাওয়া-দাওয়া, তাদের স্কুল কলেজে পাঠানো, –– সবদিকেই তাকে নজর রাখতে হয়। এ এক কঠিন জীবন সংগ্রাম।

অমিত তখন ক্লাস ইলেভেনের ছাত্র। তার দুই দিদি রেখা আর সুলেখা। রেখা বড়ো, সুলেখা ছোট। তারাও কিন্তু পড়াশোনায় বেশ ভালো। সুলেখা কলেজ ছাত্রী। আর রেখা মাস্টার্সে পড়ে। কাছাকাছি কলেজে পড়ার সুবাদে সুলেখার বাড়ি থেকে যাতায়াত করা সম্ভব হলেও রেখাকে হোস্টেলে থাকতেই হয়। মাসে মাসে হোস্টেল খরচ চালানো অমিতের বাবার পক্ষে খুবই কঠিন হয়ে পড়ে। পরপর কয়েক মাস হোস্টেল ফিজ দিতে না পারার কারণে রেখাকে বেশ সমস্যায় পড়তে হয়। সমস্ত টাকা মেটাতে না পারলে তাকে আর হোস্টেলে রাখা যাবে না –– এরকমই হোস্টেল সুপার জানিয়ে দেয়। মেয়ের এই অবস্থায় সুব্রতবাবু কি করবেন ভেবে কুলকিনারা পেলেন না। খুবই বিচলিত হয়ে পড়লেন। কি করবেন ভেবে উঠতে পারলেন না। অমিতের মায়ের যে কটা গয়না ছিল তা কবেই দেনার দায়ে বিক্রি হয়ে গেছে। এখন একেবারেই সহায় সম্বলহীন নিঃস্ব।

যে কোনোদিন কারো কাছে হাত পাতেনি, তাকেই আজ নিরুপায় হয়ে ভাইয়ের কাছে হাত পাততে হলো। রেখার হোস্টেলের সমস্ত বৃত্তান্ত জানিয়ে এক রকম নিরুপায় হয়েই ভাইয়ের কাছে কিছু টাকা চেয়ে বসে। টাকা চাওয়ার বিষয়টা ভাইয়ের স্ত্রীর কানে যেতেই সে তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে। টাকা দিতে অস্বীকার করে। ফলে টাকার প্রসঙ্গ নিয়ে ভাইয়ের সঙ্গে ভাইয়ের স্ত্রীর বিবাদ চরমে ওঠে। এমত অবস্থায় ভাইয়ের কাছ থেকে টাকা নেওয়া সমীচীন নয় বলেই মনে করে অমিতের বাবা। মনে মনে স্থির করে যদি তার মেয়ের পড়াশোনা নাও হয় তবু সে আর কখনো তার ভাইয়ের কাছে টাকা চায়বে না। বাধ্য হয়েই তার ফসলসমেত একটা জমি অন্যের কাছে কিছু টাকার বিনিময়ে বাঁধা দিয়ে সেই যাত্রা রেহাই পেলেন । এরপর রেখাও বাবাকে সাহায্য করার জন্য দু একটা টিউশন ধরে। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলতে থাকে তাদের পড়াশোনা। যখন তাদের সংসার এরকম ডামাডোল পরিস্থিতি, ঠিক তখনই ঘটলো অন্য একটা ঘটনা।

সুলেখার রূপে মুগ্ধ হয়ে এক কলেজ শিক্ষকের বাবা তাকে পুত্রবধূ করার জন্য সুব্রতবাবুর কাছে প্রস্তাব নিয়ে এলেন। যার সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা তার পক্ষে মেয়ের বিয়ে দেয়া এখন কোনভাবেই সম্ভব নয়। সুব্রতবাবু পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন সেই কথা। মেয়ে এখন পড়াশোনা করুক‌, তারপর দেখা যাবে। কিন্তু পাত্রের বাবা নাছোড়বান্দা। তিনি সুব্রত বাবুকে বোঝাতে লাগলেন মেয়ের বিয়ের জন্য তাকে কোনরকম দুশ্চিন্তা করতে হবে না। টাকা পয়সা, গয়না গাটি কিছুই লাগবে না। তারা বিনা পণেই ছেলের বিয়ে দেবেন। অনেক সাত পাঁচ ভেবে সুব্রতবাবু রাজি হয়ে গেলেন। এক প্রকার নিরানন্দ ভাবেই বিয়ের কাজ সমাপ্ত হলো। কিন্তু মেয়েকে গয়নাগাটি দিতে না পারার যে কি যন্ত্রণা তা ভোগ করতে দেখেছে অমিত তার বাবাকে। লোকচক্ষুর আড়ালে লুকিয়ে লুকিয়ে কাঁদতে দেখেছে কতবার।

ছোট ভাই সুমিতের পড়াশোনায় তেমন একটা বিশেষ আগ্রহ ছিল না। খেলাধুলা দৌড়াদৌড়ি করতেই খুব ভালবাসত। বাবার এই কষ্টের সংসারে বেশি দূর পড়াশোনা না করে বাবাকে কিভাবে সাহায্য করা যায় সে বিষয়ে আগ্রহী হয়ে পড়ে। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পরেই ডিফেন্স লাইনে চাকরি করার প্রস্তুতি নিতে থাকে। সকাল বিকাল নিয়ম করে রুটিন মাফিক দৌড়াদৌড়ি খেলাধুলায় নিজেকে ব্যস্ত রাখে। এরই মাঝে ঘটে এক দুর্ঘটনা। ফুটবল খেলতে গিয়ে পায়ে জোর চোট পায় সুমিত। একে সাংসারিক দুরবস্থা তার উপর সুমিতের পায়ে চোট –– এ যেন গোদের উপর বিষফোঁড়া। সুমিত সবার ছোট হওয়ায় সবাই তাকে খুব আদর যত্ন করে। স্বাভাবিকভাবেই প্রথম থেকেই সে একটু আদুরে। তার উপরে পায়ে চোট পাওয়ায় আদুরেপোনা আরো বেড়ে যায়। এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ার ক্ষমতা তার নেই।

মায়ের শরীর অসুস্থ। এমত অবস্থায় ছেলের সেবা শুশ্রূষায় বাবা ছাড়া কোন উপায় নেই। ফলে সুব্রতবাবু সব সময়ই ছেলের পিছনে পড়ে থাকেন। ছেলেকে দ্রুত সুস্থ করার লক্ষ্যে তিনি অবিচল। কিন্তু সুমিতের পায়ের ব্যথা কিছুতেই কমছে না দেখে ঠিক করলেন সরকারি হসপিটালে তাকে নিয়ে যাবেন। কিন্তু যাবেন কিভাবে? ক’দিন যাবত বাস বন্ধ। পশ্চিম বাংলার এক অদ্ভুত ট্রেডিশন। যখন তখন বনধের কারণে গাড়ি-ঘোড়া বন্ধ হয়ে যায়। যাক সে এক অন্য কথা। বাধ্য হয়েই ছেলেকে একটা সাইকেলে বসিয়ে হাঁটতে হাঁটতে দশ কিলোমিটার দূরে হাসপাতালে গিয়ে ছেলের চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেন। দীর্ঘ চিকিৎসার পর সুমিত সুস্থ হয়ে ওঠে।

এদিকে সংসারের চাপ দিনে দিনে আরো বাড়লো। ছেলে মেয়েদের মানুষ করতে ক্রমশ কপর্দক শূন্য হয়ে পড়লেন। উপায় নেই বাঁচতে হবে। সুব্রতবাবু নিজের সামান্য জমির চাষ সেরে অন্যের জমিতে জনমজুরের কাজ নিতেও কুণ্ঠাবোধ করেননি। এই ভাবেই চলতে থাকে তার জীবন। আস্তে আস্তে ছেলেরা সব বড় হয়ে ওঠে। ছেলেমেয়েরা আজ সবাই প্রতিষ্ঠিত। রেখা স্কুলের শিক্ষিকা। বিয়ে হয়েছে তার এক প্রতিষ্ঠিত ব্যবসাদারের সঙ্গে। সুমিত সেনাবাহিনীর উচ্চ পদস্থ কর্মচারী। আর অমিত ভালো কলেজ থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করার সুবাদে সে এখন থাকে আমেরিকার ওয়াশিংটনে। সকলেই তাদের পরিবার নিয়ে নিজের নিজের জায়গায় সুখে শান্তিতে আছে। তাদের এই সুখে থাকার পিছনে যে লোকটার অবদান সব থেকে বেশি তিনি হলেন সুব্রতবাবু, তাদের বাবা।

যিনি ছেলে-মেয়েদের সুখী করতে এত পরিশ্রম করলেন তিনি আজও তেমন সুখের মুখ দেখলেন না। টাকা পয়সার অভাব হয়তো তাঁর অনেকটাই মিটেছে কিন্তু মানসিক শান্তি আজও তাঁর অধরাই রয়ে গেছে। ছোট্ট সংসারে এখন এই বুড়ো আর বুড়ি। ঈশ্বরের কি অপূর্ব লীলা। যাদের জন্য জীবনপাত করলেন, তারাই এখন কেউ তাঁর কাছে নেই। মাঝে মাঝে অবশ্য রেখা এবং সুলেখা আসে। তবে তা দু একদিনের জন্য। ছেলেমেয়েদের নিয়ে তারাও খুব ব্যস্ত। মাঝে মাঝে বড় ছুটি পেলে সুমিত অবশ্য কয়েকদিনের জন্য হলেও বাবা মায়ের কাছে কাটিয়ে যায়। আর অমিত দু-পাঁচ বছরে একবার।

আশালতা দেবী একদিন আক্ষেপ করে স্বামী সুব্রত বাবুকে বললেন – শেষ জীবনে আমরা বোধহয় ছেলেমেয়েদের সকলকে একসঙ্গে কোনদিনই পাব না! তারা যে যার নিয়ে ব্যস্ত। তুমি কিছু একটা ব্যবস্থা কর সবাইকে একসঙ্গে দেখতে খুব ইচ্ছা করছে।
সুব্রতবাবুরও যে ইচ্ছা করেনা তা নয়। মনটা তারও ক’দিন ধরে খুব বিচলিত। কি করে ছেলেমেয়েদের একসঙ্গে পাওয়া যায় সেই নিয়ে ভাবতে লাগলেন। ভাবতে ভাবতে একটা বিশেষ দিনের কথা তাঁর মনে এলো। তাঁদের জন্মদিন।

কাকতালীয় হলেও সত্য। দুজনের জন্ম মাস এবং তারিখ একই দিনে। উনিশে অক্টোবর। সুব্রত বাবুর জন্ম ১৯৫৫ সাল আর আশালতা দেবীর জন্ম ১৯৬০। কি অদ্ভুত মিল এই দুজনের জন্মদিনে। সুব্রতবাবু ভাবলেন এতদিন তো ছেলেমেয়েদের জন্মদিন পালন করে এসেছেন। এবার নিজেরাই নিজেদের জন্মদিন পালন করলে কেমন হয়। যেমন ভাবনা তেমনি সিদ্ধান্ত। ঠিক করে নিলেন তাঁরা তাঁদের জন্মদিন পালন করবেন। আশালতা দেবীকে কথাটা জানাতে ভুললেন না। এখন ফেব্রুয়ারি মাস। অক্টোবর এখন অনেক দেরি। তাই যাতে ছেলেমেয়েদের কর্মক্ষেত্রে কোনরকম অসুবিধা না হয়, তাই আগেভাগেই সকলকে বিষয়টা জানিয়ে দিলেন। একটা একটা করে মাস পেরিয়ে গেল। অবশেষে সেই কাঙ্ক্ষিত অক্টোবর মাস এসে গেল। ছেলে-মেয়েরা সকলেই আগে থেকেই জানিয়ে দিয়েছে, যত অসুবিধাই থাক ওই দিন তারা অবশ্যই আসবে। কথা মতো কাজ। ছেলেমেয়েরা দু-চার দিন আগে থেকেই আসতে শুরু করলো। পরিবার পরিজন নিয়ে সবার শেষে এলো অমিত। শূন্য ঘর পূর্ণ হয়ে উঠলো। আশালতা দেবীর আনন্দ আর ধরে না। একটা ঘোরের মধ্যে দিয়ে কাটতে লাগল তাঁর দিন।

আনন্দের দিন বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না। নির্দিষ্ট দিনে জন্মদিন পালিত হলো। খুব আনন্দ করলো। তারপর আবার ছেলেমেয়ে নিয়ে যে যার বাড়ি ফিরে যেতে লাগলো। বাড়ি ফিরে যাওয়ার সময় ছোট্ট জনি দেখল সকলেই ওই বৃদ্ধ লোকটার কাছে শ্রদ্ধা এবং ভক্তিতে মাথা নত করছে। লোকটা কে তাহলে? মনের প্রশ্ন চেপে রাখতে না পেরে বাবা অমিতের কাছে বলেই ফেললো, – তুমি,মা, কাকা-কাকিমা পিসিমণিরা সবাই মিলে লোকটাকে এত শ্রদ্ধা ভক্তি করছো; লোকটা কে তাহলে? আপন ছেলের মুখ থেকে প্রশ্নটা শুনে অমিত আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারল না। সে বলে চললো আজ আমরা যে এত বড় হয়েছি, আমাদের এত ঠাট বাট, তোমরা বিদেশে পড়াশোনা করছো সবের পিছনেই রয়েছেন উনি। ওই লোকটা আর কেউ নয়। ওই লোকটা আমার বাবা।

ছোট্ট জনি অবাক বিস্ময়ে ওই লোকটার দিকে তাকিয়ে থাকে। তার দাদু এত বড়ো মাপের মানুষ? নিজের ভুল নিজে বুঝতে পারে। ছোট্ট জনি আছড়ে পড়তে চায় দাদুর বুকে। নোংরা কাপড় পরা লোকটা হাত দুটো বাড়িয়ে দেয় নাতির দিকে। আশালতাদেবীর চোখে আনন্দের অশ্রু। অমিত ক্রমশ হারিয়ে যেতে থাকে স্মৃতির অতলে।

জয়দেব সাঁতরা | Joydev Santra

Lost music and culture in Bengali wedding ceremonies | Bengali Article

19 types of Mashan Thakur | মাসান ঠাকুর | Ranabir Chanda

Mangal Kabya Katha | Best Bengali Puran Katha

100 questions and answers about Ramakrishna Mission | রামকৃষ্ণ মিশন সম্পর্কে প্রশ্ন ও উত্তর

Anandabazar Bengali Short Story | Bengali Short Story | Pratilipi Horror Stories in Bengali | Lifestyle Web Stories in Bangla | Trending online bangla golpo pdf free download | Short bengali story | Bengali story pdf | pratilipi bengali story | Short Stories for Children | English Stories for Kids | Moral Stories for Kids | story in english | story hindi | story book | story for kids | short story | story for girls | short story in english | short story for kids | Golpo Lekhan in Bengali pdf | Bangla golpo pdf | Bangla golpo story | bangla romantic golpo | choto golpo bangla | bengali story | Sunday suspense golpo | sunday suspense mp3 download | suspense story in hindi | suspense story in english 200 words | English Golpo Lekhan in Bengali | Trending online bangla golpo pdf download

suspense story in english 300 words | Suspense story examples | suspense story in english 100 words | suspense story writing | very short suspense stories for students | Best Golpo Lekhan in Bengali | Top Bangla Golpo Online Reading | New Read Online Bengali Story | Top Best Story Blogs | Best Story Blogs in pdf | Sabuj Basinda | High Challenger | Famous Bangla Golpo Online Reading | Shabdodweep Read Online Bengali Story | Shabdodweep Writer | Bangla Golpo Online Reading pdf | Famous Story – Trending Golpo Lekhan in Bengali | Pdf Golpo Lekhan in Bengali | Golpo Lekhan in Bengali App | Full Golpo Lekhan in Bengali Reading | Bangla Golpo Online Reading Blogs | Trending online bangla golpo pdf

Best Story Blogs in Bengali | Live Bengali Story in English | Bangla Golpo Online Reading Ebook | Full Bangla Galpo online | Golpo Lekhan in Bengali 2024 | New Golpo Lekhan in Bengali – Episode | Golpo Dot Com Series | Golpo Lekhan in Bengali Video | Story – Golpo Lekhan in Bengali | New Bengali Web Story Audio | New Bengali Web Story Video | Golpo Lekhan in Bengali Netflix | Audio Story – Golpo Lekhan in Bengali | Video Story – Golpo Lekhan in Bengali | Shabdodweep Competition | Story Writing Competition | Bengali Writer | Bengali Writer 2024 | Trending Bangla Golpo Online Reading | Top Golpo Lekhan in Bengali | Golpo Lekhan in Bengali Web Story | Best Read Online Bengali Story | Read Online Bengali Story 2024 | Trending online bangla golpo book pdf

Shabdodweep Bangla Golpo Online Reading | New Golpo Lekhan in Bengali | Bengali Famous Story in pdf | Modern Online Bangla Galpo Download | Bangla Golpo Online Reading mp3 | Horror Adult Story | Read Online Bengali Story Collection | Modern Online Bangla Galpo mp4 | Modern Online Bangla Galpo Library | New Bengali Web Story Download | Full Live Bengali Story | Bengali Famous Story 2023 | Shabdodweep Bengali Famous Story | New Bengali Famous Story | Bengali Famous Story in pdf | Bengali Famous Story – video | Bengali Famous Story mp3 | Full Bengali Famous Story | Bengali Literature | Shabdodweep Magazine | Shabdodweep Web Magazine | Live Bengali Story Writer | Shabdodweep Writer | Trending online bangla golpo free download

Leave a Comment