অতনু দাশ গুপ্ত – সূচিপত্র [Bengali Novel]
ড্রাইভিংয়ের যত কেচ্ছা (কানাডা পর্ব – ৯) – অতনু দাশ গুপ্ত [Driving Experience Canada 2023]
ওয়ালমার্টের চৌমুহনীতে পৌঁছার কিছুটা আগেই ইমার্জেন্সি লাইট অফ করে দিলাম। অনবরত ঝড়ে পড়ছে শ্বেতশুভ্র হিমবৃষ্টি, পুরো রাস্তায় বরফ সরানোর কাজে নিয়োজিত ভারী ট্রাকগুলো কাজ করে যাচ্ছে। ফ্রন্ট এন্ড লোডার, গ্রিটার, স্নো ব্লোয়ার ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় কাজ করে চলেছে। এখানের রাস্তা তাও অনেক ভালো লাগছে সেটা মোড় নেওয়ার পর বুঝলাম। বাসায় পৌঁছে কিভাবে এ ভয়ংকর রাস্তা আজকে পাড়ি দিলাম সেটা ভাবতে ভাবতে খেয়ে ক্লান্ত শরীর বিছানায় এলিয়ে দিলাম।
শীতকালে আরও একটা ব্যাপার বেশ মাথাচাড়া দিয়ে উঠে সেটা হল গাড়ির কলকব্জার উৎপাত! আমার গাড়িতেও সেটাই হল। কথা নেই, বার্তা নেই, হঠাৎ দেখি গাড়ির ব্রেক এ সমস্যা হচ্ছে! তখন আবার বাসে চেপে ওয়ালমার্টের কাজে যেতে লাগলাম। কোন পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় কোথায় দেখাবো, খরচ কেমন, সাশ্রয়ী থাকার কৌশল কি – এসব যখন মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে তখন ওয়ালমার্টের এক সহকর্মী বন্ধুকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারলাম, গ্যারেজে গাড়ি সারাতে দিলেও কোন পার্টস ওদের কাছ থেকে নেওয়া যাবে না। পার্টসগুলো বাইরের কোন অটো রিপেয়ার দোকান থেকে কিনে নিতে হবে। তাহলে অনেক সস্তায় ম্যানেজ করা যাবে। ওর কথার যথার্থতা বুঝতে আমি গ্যারেজে গাড়ি নিয়ে গেলাম। ওরা ফোন করার কথা থাকলেও ফোন আসলো না। তখন নিজেই নক দিয়ে যা কথা বলে জানতে পারলাম সেটা আমার সহকর্মীর কথার সাথে মিলে গেল। সবকিছু মিলিয়ে প্রায় চারশ ডলারের কথা বললো ওই মেকানিক। আমি যন্ত্রাংশের লিস্ট চাইলাম। সে অনুযায়ী চলে গেলাম নাপা অটো পার্টস এ। বেশকিছু যন্ত্রপাতি কেনার পর আমাকে ট্যাক্সি ডাকতে হল। রীতিমতো এতই ভারি যে এসব বহন করে নিয়ে যাওয়া অসম্ভব। অথচ ওই গ্যারেজ থেকে দোকানের মাত্র দশ মিনিটের দূরত্ব! ট্যাক্সি ড্রাইভারেরও আমাকে সাহায্যে হাত বাড়াতে হল। জিনিসপত্র বুঝিয়ে দিয়ে বাসায় চলে আসার কয়েকদিন পর আবার কল দিয়ে অবস্থা জেনে নিলাম। কোন কারণে আমার কাছে গ্যারেজ থেকে কোন আপডেট আসেনি। কেন? সেটা আজও বোধগম্য নয় কারণ এরা কাজের ব্যাপারে খুবই পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়ে থাকে। সঠিক কতদিন পরে গাড়ি আনতে গিয়েছি সেটা হলফ করে বলতে পারবো না। তবে যখন গিয়ে খরচাপাতি দিতে হলো তখন বিল পেলাম আনুমানিক একশ পঁচানব্বই ডলারের মতো! খরচের পার্থক্য দেখে আমার তো চক্ষু চরাক। বেশ ভালো মনেই বাসায় ফিরে আসলাম।
অধিকাংশ সময়ই এখানকার সবাই যে সমস্ত গাড়ি কেনেন সেগুলো ব্যবহৃত। আমারটাও তেমন গোছের ছিল। তবে অন্যান্য যে কোন গাড়ির তুলনায় একে নিতান্তই উৎপাতহীন বলা যায়। আমাদের হোস্টেলে সবচেয়ে বেশি গাড়ি সারাতে হয়েছিল রাহুলকে। ওর ছোট্ট লাল রঙের হায়উন্ডাই আই টেন নিয়ে কাঠখড় পোহাতে হয়েছে মোটামুটি। একবার সামনের হেড লাইটের পাশের জায়গাটা কিভাবে যেন দেবে গেল। ওইটা কখনোই পুরোপুরি সারিয়ে তোলা যায়নি কারণ এর জন্য ওকে পুরো কাঠামোর অনেকটাই পরিবর্তন করতে হতো। এরপর গাড়ির ইঞ্জিনে ত্রুটি দেখা দিল। প্রায়ই ওকে আমার গাড়ি থেকে প্লাগ নিয়ে জাম্পার ক্যাবলের সহায়তায় ব্যাটারি অন ব্যাটারি মেথডে চার্জ দিয়ে গাড়ির স্টার্ট নিতে হতো। আর যেদিন আমি থাকবো না সেদিন হয়তো ও জুয়েলকে বলত। এছাড়া ওর গাড়ি সকালে স্টার্ট নেয় না। জাম্পার ক্যাবল এক বিশেষ তার যেটার লাল ও কালো দুটো প্রান্ত গাড়ির ভেতরের ব্যাটারির মধ্যে লাগিয়ে একে বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হয়। অনেকটা আমাদের ফাস্ট এইড বক্সে থাকা ডি-ফিব্রিলেটরের মত। এর কাজ হৃৎপিন্ডের কম্পন ফিরিয়ে আনা। তখন আরেকটা গাড়ির সহায়তার প্রয়োজন হয় বলে একে বলা হয় ব্যাটারি অন ব্যাটারি মেথড। ও প্রায়ই সকালে কাজে যাওয়ার সময় এসে দরজায় নক করে গাড়ির চাবিটা চাইতো। বোঝো হ্যাপা কাকে বলে? সকালে কাজের জন্য দৌড়াদৌড়ি করবো না গাড়ির জন্যে?? দুটো নিয়েই চলতে হবে, কিছু করার নেই।
আবার গাড়ির চাকার হাওয়া ফুরিয়ে গেলে সেটা ঠিক করে নিতে হয়। ঠিক যেমন আমরা সাইকেলের চাকায় হাওয়া দিই। বাসার কাছেই একটা গ্যাস স্টেশনের পেছনে বিনামূল্যে এ কাজ সারা যাবে। হোস্টেলের ছেলেপেলেরা ওখানেই যায়। প্রতিদিন লক্ষ রাখতে হয় চাকার যে কোন ধরণের সংকোচনের দিকে। কারণ বাতাস ফুরিয়ে গেলে বা ঠিকঠাক না থাকলে মধ্যপথে যখন তখন বিগড়ে যাবে আপনার চর্তুচক্রযান। হাইওয়ের মাঝামাঝি পথে কোন কিছুই পাওয়া যায় না। এক্ষেত্রে যদি কেউ দয়া পরবেশ হয়ে লিফট দেয় আর কি! না হলে কি হবে সেটা আপাতত না ভাবলেও চলবে। গাড়ির বায়ুসেবনের কাজটা প্রথম খুব সম্ভবত জুয়েল করে দেখিয়ে দিয়েছিল। এরপর আরও অনেকদিন এর প্রয়োজন না হওয়ায় পরেরবার যখন সময় এলো ততদিনে সব বেমালুম ভুলে বসে আছি। তবে পরেরবার গিয়েই মূলত বিষয়টা ভালোভাবে রপ্ত হলো। কৃতিত্ব রাহুলের। রাতে ওকে বলাতে ও নিয়ে গেল কাছাকাছির সেই নিডস এর গ্যাস স্টেশনে। চাকায় কতটা বাতাস লাগবে সেটা গ্যাস মাপার মেশিনে দেখে নিতে হবে। বেশ কয়েক রকমের হয় – আমারটা ছিল অ্যানালগ আর ওরটা ডিজিটাল। আমরা আগেই দেখে নিয়েছিলাম কতোটা বর্তমানে আছে। জায়গায় পৌঁছে রাহুল কালো লম্বা পাইপটা চাকার হাওয়ার নজলের কাছাকাছি নিয়ে ওখানে চেপে ধরতেই একটা শব্দ হলো। এর অর্থ হলো গ্যাস ভর্তি করার পাইপ থেকে বাতাস চাকায় প্রবেশ করছে। কতটা প্রয়োজন হবে সেটা প্রাথমিকভাবে ধারণা করে নিতে হবে। রাহুলের পূর্ব অভিজ্ঞতার কারণে ওর বুঝতে কোন সমস্যা হলো না। আমি অবশ্য প্রথমবার বুঝতেই পারলাম না। পরেরবার নিজে ওর কাছ থেকে নিয়ে ওখানে চেপে ধরলাম, কাজ হলো না। ও নিজেই করে ফেললো। আমরা দুটো চাকারই হাওয়া ভর্তি হওয়ার পরের রিডিং দেখে নিলাম। একেক গাড়ির চাকার অবস্থা ভেদে বুঝে কাজ সারতে হবে। পরেরবার আমি নিজেই কাজটা সারলাম। ও আইডিয়া করে থামতে বললো আমাকে। বাতাস বেশি হয়ে গেলেও কিন্তু সমস্যা হবে। সবকিছুই পরিমিত পরিমাণে হওয়া চাই। ওই রাতেই চাকার বায়ু সেবনের পদ্ধতি রপ্ত হয়ে গেল।
গাড়ি চালানোর সময় আরও খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে শারীরিকভাবে সুস্থ থাকা। বিশেষ করে পিঠের ব্যথা আর হাতে বা পায়ে যদি কোন আঘাত পান, সাবধানে থাকাই উত্তম। এক রাতে হয়তো কাজ করতে ডান পায়ের বুড়ো আঙুল মচকে গিয়েছিল বা ঠিক কখন ব্যথা পেয়েছি সেটা অতোটা ঠাহর করতে পারিনি। তখন ছিল শীতকাল। বাইরে থাকলে হাত,পা অধিকাংশ সময়ই ঠান্ডায় জমে থাকে। রাতে বাসায় তেমন কিছু বুঝতে পারিনি। সকালে ঘুম থেকে উঠে স্যান্ডেলে পা রাখতেই পুরো আঙ্গুলের জয়েন্টে ভয়ংকর তীব্রভাবে কনকনে ব্যাথা হতে লাগলো। এতোটাই যে বুড়ো আঙুলটা মাটিতে স্পর্শ করতে পারছি না! এমন ব্যথা আজ পর্যন্ত কখনোই হয়নি। ছোটকালে প্রতিদিন এত ক্রিকেট খেলেছি, বর্ষাকালে ফুটবলের পেছনেও দৌড়েছি আর শীতকালে তো দিনে ক্রিকেট আর রাতে ব্যাডমিন্টন। কখনো হলে নিশ্চয়ই মনে থাকতো। অনেক সাবধানে উপর থেকে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামলাম, ওয়াশরুমের কাজ সেরে আবার শুয়ে পড়েছি। কপাল জোরে ওই দুইদিন চাকরির ডিউটি ছিল না। পরে যখন ঠিকঠাক ঘুম ভেঙেছে তখন বুঝলাম পরিস্থিতি ভয়াবহ। এ পায়ে আঙ্গুল মাটিতে ঠেকিয়ে কিছুই করা যাবে না। খোঁড়াদের মতো কাজকর্ম সারতে লাগলাম। পরে হোস্টেলের ছেলেপেলেদের সাথে কথা বলতে লাগলাম কারও হয়েছে কি না এমন কিছু। প্রথমে ভেতরে হাড়গোড় কিছু ভেঙে গেছে কি না কারণ আঙ্গুলের চারপাশে হালকা লালচে হয়ে ফুলে গেছে আর কোনকিছুর স্পর্শে তীব্র ব্যথা! ডাক্তারের কাছে যাবো কি না ভাবতে ভাবতে রাহুল বললো, “আরে দাদা! এসব কিছুই না। আপনি ব্যথার ওষুধ খান, আর কিচ্ছু লাগবে না।” কথাটা ও আন্দাজে বললেও এতে কাজ হলো। ওকে নিয়ে বাসার কাছেই ফার্মেসীতে গিয়ে ব্যথানাশক ওষুধ আর একটা অ্যামালজেল নিলাম। ব্যথা সারাতে নানাবিধ গবেষণা চলতে লাগলো। কতোটা সেরেছে এটা নিয়ে দ্বিধাবোধ করছি। এদিকে চাকরির ডিউটির সময় হয়ে এল। তখন হোস্টেলের ছেলেদেরকে অনুরোধ করলাম কেউ যদি একটু নামিয়ে দিয়ে আসে। রাহুল নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব নিল আর আসার সময় রাতে নূর। নিজের গাড়ি থাকা স্বত্বেও ড্রাইভ করলো রাহুল আর নূর অবশ্য ওর গাড়ি চেপেই গিয়েছিল। কাজেই নিজের গাড়ি থাকলেও অনেক সময় পরিস্থিতি ভিন্ন দৃশ্যের অবতারণা ঘটাবে না তা কি হলফ করে বলা যায়??
ড্রাইভিংয়ের যত কেচ্ছা (কানাডা পর্ব – ১০) – অতনু দাশ গুপ্ত [Driving Experience Canada 2023]
গাড়ি কেনা নিঃসন্দেহে যে কোন ব্যক্তির সামাজিক মর্যাদা বাড়ায়। বঙ্গদেশে তো বটেই, এখানে প্রবাসে মাটিতেও দৃশ্যের কোন হেরফের হয়নি। যিনি আপনাকে কোনদিনও পাত্তাই দিতেন না, তিনিও আপনার সাথে বেশ সমীহ করেই কথা বলবেন। অনেককেই তখন লিফট দিতে হতো। সেটা বাসায় হোক আর কাজের জায়গায় হোক। বিষয়টা কখনো কখনো অস্বস্তিকর। যতটা পারা যায় মানিয়ে নিতে হয়। আমার ক্ষেত্রে কখনোই গাড়িতে কাউকে নিয়ে যাওয়া বা নামিয়ে দিয়ে আসা নয় বরং কিভাবে লিফট দেবো সেটাই ভাবনার হতো। এক্ষেত্রে স্ব-ইচ্ছা থাকলেও গাড়ি চালানোর জড়তার কারণে কখনো কখনো মনোমালিন্যের ঘটনাও ঘটেছে যা সত্যিই অনভিপ্রেত।
একদিন রাতে সহপাঠিনী উলফাতকে নিয়ে কাজ থেকে ফেরত আসছি। ওর সাথে সবকিছু নিয়েই কথা চললো। এক পর্যায়ে গাড়ির প্রসঙ্গ উঠতেই আমি তো সটান জানিয়ে দিলাম আমার লাইসেন্স টেস্ট এখনো দেওয়া হয়নি। ও কিছুটা অবাক হলেও চুপ করে গেল। খানিকটা ভয়ও পেয়েছিল হয়তো। কারণ এরপর আর কখনো ও আমাকে নামিয়ে দিয়ে আসতে বলেনি। যদিও সবই ঠিকঠাক ছিল ওই রাতে। আমার লাইসেন্স নেই, এটা সমস্যার কারণ ছিল বা টেস্ট দিইনি এখনও – আমার এখনও জানার খুব ইচ্ছে হয়।
আরেকদিন বাসার ছেলেপুলেদের গ্রুপ জেঁকে ধরলো ওদের নিয়ে বেরুতে। প্রথমে আমি ভাবলাম ওরা নিতান্তই ফাজলামোর ছলে কথা বলছে। পরে বুঝলাম ওরা ডাউনটাউনে যেতে চায়। কোন সঠিক উপলক্ষ নেই। হঠাৎই রাতের দশটা বা সাড়ে দশটা নাগাদ সবার ঝোঁক উঠলো পিৎজা খাবে! আর ড্রাইভিংয়ের দায়িত্ব দেওয়া হলো আমাকে। অবশেষে ওদের মনোভাব বুঝতে পেরে বের হলাম। সামনে আমি, জুয়েল আর পেছনে আকিব, নূর, রাহুল। আলেকজান্দ্রা’স পিৎজায় হবে আজকে রাতের পার্টি। বাসা থেকে বের হয়ে মেইন রোডে নেমে গেলাম বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই। পাশ থেকে গাড়ির দিকনির্দেশনা দিয়ে কাজটা অনেক সহজ করে দিল জুয়েল। প্রথমে আমি যে জায়গায় ওরা থামাতে বললো ওখানে না থামিয়ে একটু এগিয়ে চলে গিয়েছিলাম। পরে পুরো রাস্তাটা ইউটার্ন নিয়ে আবার বৃত্তাকার পথে ঘুরে ডাউন টাউন হয়ে একই জায়গায় হাজির হলাম। ওই দোকান বন্ধ ছিল। পরে আলেকজান্ডা’স পিৎজায় পৌঁছে গেলাম সদলবলে। ওইদিনের পরে কাকতালীয় ভাবে আর কখনোই ওদেরকে নিয়েও ড্রাইভ করা হয়নি!! আর ওরা কতটা মজা পেয়েছিল সেটাও অজান্তেই রয়ে গেল।
পরের গল্পটা কনসেনট্রিকস-এর অফিসে যাওয়ার পথে হয়েছিল। বরাবরই আমার সমস্যা ছিল রাস্তায় গাড়ি চালাতে গিয়ে হঠাৎই যদি কোন কারণে গতিপথ বদলে যায় বা অন্য কোন পথে গিয়ে পড়ি তখন বেসামাল হয়ে পড়া। এক্ষেত্রে রাস্তায় সাইন কোথায় আছে সেসব লক্ষ্য রেখে চালানো দুষ্কর মনে হত আমার। কারণ গাড়ি সামাল দেবো, না নিজেকে, না সাইনের প্রতি খেয়াল করবো। নিয়ম হচ্ছে সবকিছুই আপনাকে লক্ষ্য করে চলতে হবে। জুয়েল একবার বলেছিল গাড়ি চালানোর সময় আপনার দৃষ্টি তিনটে রেয়ার ভিউ উইন্ডোতেই রেখে চালাবেন। আর লেইন চেঞ্জ করার সময় অবশ্যই ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনে দেখে তারপর পরিবর্তন করুন। সময়ের সাথে সাথে মানুষের এসব অভ্যাসে চলে আসে। আমার ক্ষেত্রে পুরো বিষয়টাকেই মানিয়ে নিতে না পারা, গাড়ি চালানোর সিটে বসে চরম অস্বস্তি বোধ করা, মাল্টি টাস্ককিং করতে না পারা এসব মিলিয়েই সমস্যার পথে এগিয়েছে। বরাবরের মতোই স্বাভাবিক ভাবে ওই দিনেও অফিসে পৌঁছে গেছি প্রায়। এমন সময় দেখলাম অফিসের ঠিক সামনের রাস্তাটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ওখান থেকে অন্য আরেকটা পথে ঘুরে যেতে বলেছে। কিন্তু ওই পথে ঘুরে যাওয়ার সাথে সাথেই রাস্তা হারিয়ে ফেললাম। কারণ সঠিক কোন পথে আমি অফিসে ফেরত আসবো সেটা জানা নেই। হঠাৎই ওরকম একটা সাইন দেখে অন্য গাড়ির দেখাদেখি আমিও নির্দেশনা দেখানো পথে ঢুকে গেলাম কিন্তু কোথায় কি? এরপর শুধু গলির বিভিন্ন রাস্তায় শুধু চরকির মত ঘুরেই যাচ্ছি কিন্তু অফিসে ফেরার পথ কোনভাবেই বের করতে পারলাম না। এভাবে বেশ কিছুক্ষণ ঘোরার সময় লক্ষ্য করলাম পেছনের গাড়ির ড্রাইভাররা বেশ কটু ভাষায় কথা বলছে। তাই আমি অন্য একটা রাস্তায় ঢুকে অজানাই একটা খালি জায়গায় গাড়িটা পার্ক করে দিলাম ভোঁ দৌড় অফিসের দিকে। তখন মনে হয় আর মাত্র কয়েক মিনিট বাকি আছে কল রিসিভ করার। পরে ব্রেকে ম্যানেজারকে পুরো ঘটনার আদ্যোপান্ত খুলে বললাম। উনি বেশ সায় দিয়ে বললেন আমি তোমাকে দেখিয়ে দিবো। লাঞ্চ ব্রেকের সময় ওনাকে ডেকে নিতে বললেন। তা-ই করলাম। উনি আমাকে নিয়ে অফিসের পেছনের দিকে চলে গেলেন। মূলত অন্য পথটা পেছনের দিকে। ওখান থেকে আমাকে নিয়ে হেঁটে সোজা চলে গেলেন ওই জায়গায় যেখানে আমি গাড়ি পার্ক করে রেখে এসেছি। মোটামুটি একবার দেখিয়ে দেওয়ার সাথে সাথেই পথটা বুঝলাম। এর আগেও আমি এখান দিয়ে গেছি। ওই পথ থেকে কিছুটা কাছাকাছির মধ্যেই বাস নামিয়ে দিয়ে যায়। উনি আমাকে এটাও দেখিয়ে দিলেন ফিরবো কোন পথে। এরপর বাসার দিকে চললেন। জীবনে এতটা ধৈর্যশীল মানুষ আমি খুব কমই দেখেছি। যেখানেই থাকুন, রইলো আমার বিশেষ শ্রদ্ধা।
আমি গাড়ি চালিয়ে অফিসের পেছনের দিকে গাড়িটা পার্ক করলাম। এ ঘটনায় রাস্তা হারিয়ে ভ্যাবাচেকা খাওয়ার পাশাপাশি সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় ছিল, যখন আমি রাস্তা হারিয়ে দিশেহারা অবস্থায় কোথায় পার্ক করবো সেটা খুঁজে ফিরছি তখন অন্য ড্রাইভাররা ভাবছিল আমার কৃতকাজ নিতান্তই ফাজলামো! গাড়ির ভেতর থেকে তো আর ওদেরকে আমার করুণ অবস্থার জানান দেওয়া সম্ভব না। অনেক গালিগালাজ শুনেছি তবে ঘাবড়ে যাইনি মোটেও। এক্ষেত্রে শাহরুখের একটা কথা স্মরণে এসেছিল, “যা-ই ঘটুক, কখনো প্যানিক করবেন না!”
অতনু দাশ গুপ্ত | Atonu Das Gupta
Gaai | গাই | শওকত নূর | New Bengali Story 2023
Natun Bangla Kabita 2023 | জয়িতা ভট্টাচার্য | Top New Poetry
New Bengali Novel 2023 | খুঁজে ফিরি বিশল্যকরণী (পর্ব ১২) | উপন্যাস
Aged chicken meat | বুড়ো মোরগের মাংস | 2023 New Story
ড্রাইভিংয়ের যত কেচ্ছা | ড্রাইভিংয়ের যত গল্প | পথ ও প্রবাসের গল্প | ড্রাইভিংয়ে পেট্রোল খরচ কমানোর উপায় | ড্রাইভিং সিটে নারী | নতুন ড্রাইভারদের জন্য সেরা ১০ ড্রাইভিং টিপস | সেরা ১০ ড্রাইভিং টিপস | শব্দদ্বীপের লেখক | শব্দদ্বীপ | সেরা বাংলা গল্প | গল্প ও গল্পকার | সেরা সাহিত্যিক | সেরা গল্পকার ২০২৩ | বাংলা বিশ্ব গল্প | বাংলা গল্প ২০২৩
Trip to Canada from India | Canada trip cost from India | Canada trip package from India | 7 Days Canada tour package | Canada family Tour Package | Canada Tour Packages with visa from India | USA and Canada Tour packages from India | Canada tour Package Price | snow driving experience | performance driving experience | f1 driving experience near me | bmw i4 driving experience | mosport driving experience | porsche driving experience | bmw m4 driving experience | bmw driving school | Driving license in Canada | Driving in Canada for Visitors | Young Drivers of Canada | Shabdodweep Founder | Shabdodweep Web Magazine | Shabdodweep Story | Shabdodweep Writer | Driving Experience Canada 2023 | Pdf guide – Driving Experience Canada 2023 | Driving Experience Canada 2023 guide download | Driving Experience Canada 2023 full book | Driving Experience Canada 2023 video download | travel guide – Driving Experience Canada 2023 | guide book – Driving Experience Canada 2023 | Trending video – Driving Experience Canada 2023 | Trend topic – Driving Experience Canada 2023 | Recent video – Driving Experience Canada 2023 | Driving Experience Canada 2023 – Shabdodweep Novel | Driving Experience Canada 2023 – Atonu Das Gupta | 2023 | Driving Experience Canada 2023 – Shabdodweep Novel | Driving Experience Canada – top guide pdf | 2023 | Driving Experience Canada 2023 – Shabdodweep Novel | Driving Experience Canada | New novel – Driving Experience Canada | Bengali Novel – Driving Experience Canada