
অতনু দাশ গুপ্ত – সূচিপত্র [Bengali Novel]
ড্রাইভিংয়ের যত কেচ্ছা (কানাডা পর্ব – ৭) – অতনু দাশ গুপ্ত [Driving Experience Canada 2023]
আপাতত উপায়ন্তর না দেখে সোজা রাস্তা ধরে যাচ্ছি। এ নির্জন জায়গায় একটু নিশ্চিন্তে গাড়ি চালাবো সেটারও জোগাড় নেই। পেছন পেছন একটা গাড়ি বেশ কিছুক্ষণ হলো ফলো করে চলেছে। কোথাও থামিয়ে যে আশেপাশের জায়গাগুলো একটু ম্যাপে দেখবো সেটাও সম্ভব নয়। পরে ভেবে নিলাম কোন জায়গায় মোড় পেলে ওদিকেই গাড়ি সাইড করে নিতে হবে। এভাবে বেশ কয়েকটা মোড় এলেও আমি ইন্ডিকেটর লাইট দিতে ভুলে যাচ্ছিলাম বারবার। আর পেছনের গাড়িটা সেই কখন থেকে পুলিশের গাড়ির মতো অনুসরণ করে চলার জন্যে সামনে তাকিয়ে চালানো ছাড়া আর অন্য কোন পথ ছিল না। এভাবে পনের মিনিট চলার পর পেছনের গাড়ি কোথায় যেন মিলিয়ে গেল আর আমি কিছুটা হাপ ছেড়ে বাঁচলাম। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই আরেকটা গাড়িকে রেয়ার ভিউ উইন্ডোতে দেখতে পেলাম। ক্রমাগত বিশ মিনিটের পথ এগিয়ে যাওয়ার পর হঠাৎ রাস্তার বাঁদিকের এক জায়গায় একটা কনভেনশন সেন্টার দেখতে পেলাম যেটা আমার চেনা। বাসে নর্থ সিডনি যাওয়ার পথে এটা চোখে পড়েছে। এতক্ষণ পরে সুবিশাল সমুদ্রে ডুবন্ত নাবিকের ভেলা পাওয়ার মতো নিজের বাড়ি যাওয়ার মূল পথ খুঁজে পেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিলাম ! এটা সিডনি রিভার ওয়ালমার্টের একদম কাছাকাছি। কয়েক সপ্তাহ আগেই আমি, শাহরুখ এখানে এসেছিলাম। গত পর্বের আগের পর্বে লিখেছি। ওখানে পৌঁছানোর পর বাকি রাস্তা বেশ সহজে পাড়ি দেবো মনে করলেও বিপত্তি বাঁধলো নর্থ সিডনির রাস্তা থেকে সিডনি রিভারের রাস্তায় আসার সময় মোড় নিতে গিয়ে। খুব সম্ভবত আমার গাড়ি পথ বদলে এক দিকের রাস্তা থেকে অন্য দিকের পথে মোড় নিয়েছে। এবারও পেছনের গাড়ির বেশ সজোরে হর্ণ হাঁকানোর শব্দে টনক নড়লো! ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গেছে। আমি চলে গেছি নিজ পথে আর ওই গাড়ি ও খুব সম্ভবত আমার পেছন পেছন আসছিল। ড্রাইভিংয়ের মূল সমস্যাটা এখানেই- কোথায় ভুল হলো, কেন হলো কিছুই বুঝতে পারিনি। যতটা পারলাম পুরোটাই আন্দাজের উপর। মুহূর্তের মধ্যেই সব ঘটে গেল, এর আগে নর্থ সিডনি যাওয়ার সময়ও একই ঘটনা ঘটেছিল। নিশ্চয়ই মনে আছে সবার। পেছনের গাড়িটা একইভাবে হর্ণ কশিয়ে সর্তক করেছিল। যা- ই হোক এভাবেই এক রাতে সহজ গন্তব্যে বাসায় ফেরার পরিবর্তে কোন এক অজানা পথে হারিয়ে গিয়েছিলাম।
এরপরের ঘটনা আরও রোমাঞ্চকর –
আরেক রাতে আমার গাড়িতে সিডনির বেশ কয়েকজন ছেলেমেয়েকে লিফ্ট দিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। ওই রাতে গাড়ি সংকট। আমার পাশের সিটে আকিব আর পেছনের সিটে জেরিন, আসলিন, নন্দানা আর সিবু। এর মধ্যে জেরিন, আসলিন এক জায়গায় থাকে। নন্দানার জন্য একটু ঘুরে যেতে হবে আর পথেই বাকিদের জায়গা করে নামিয়ে দিতে পারবো। আমি রাস্তা মনে মনে আগেই ঠিক করে নিয়েছি। যে রাস্তায় এর আগে পথ হারানোর গল্প শোনালাম একই পথ ধরে যেতে হবে আমাদের। জেরিন আর আকিব পূর্ব অভিজ্ঞতার সূত্রে আমার ড্রাইভিংয়ের হযবরল-এর ব্যাপারে ওয়াকিবহাল, বাকিরা অতোটা না। আমি আগেই সবাইকে নিজের অনভিজ্ঞতার কথা জানালাম। যাতে নিজে মানসিকভাবে স্বস্তিতে থাকি। তবে অন্যরা এটা শোনার পরে কতোটা স্বস্তিতে ছিল তা বলা মুশকিল। এক্সিট ফাইভে এর আগে রাস্তা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাই নিজের পাশাপাশি যেন সর্তক থাকে ওরাও। প্রতিদিন একই রাস্তায় এলেও ওই রাতে এতো যাত্রী নিয়ে ড্রাইভিং এই প্রথমবার। বারবার কেন যেন অজানা শংকা মনের কোণে উঁকি দেয়। ভাবছিলাম গতকালও তো এলাম, আজ আর বিশেষ কি? ওরা টুকটাক কথা বলছিল। কাছাকাছি আসার পর আমি সজাগ থাকা স্বত্বেও জেরিনকে আগেই বলেছিলাম আরেকটু সর্তক করে দিতে। জানি না ও কি ভাবছিল। আমরা সবাই মোটামুটি এলার্ট ছিলাম। সামনের দিকে মূলত একটা পর্যায়ে এসে ডানদিকের রাস্তা থেকে কিছুটা সরে এসে সোজা চালাতে হবে গাড়িটা। কিন্তু তখন এগোতে এগোতে হঠাৎই সামনে হলুদ রঙের বিভাজক দেখতে পেয়ে আচমকা ভ্যাবাচেকা খেয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে ডানে রাস্তায় নিয়ে পরিস্থিতির সামাল দিই! পাশের সিটে বসা আকিব বলে উঠলো,” আরেকটু হলে আপনার গাড়ি উল্টে যেত!” পেছন থেকে জেরিন বেশ ভালোভাবেই টের পেলো ভুলটা মূলত ওর কারণেই হয়েছে। ও বারবার বলে যাচ্ছিল কোন সমস্যা নেই। এখান থেকে রাস্তা ওর জানা আছে। রাস্তার দিক পালটে গেলেও কেন অসুবিধা হবে না। হলোও সেটা। ওর দেওয়া ডিরেকশন ফলো করে এগিয়ে গেলাম সবাইকে নিয়ে। এরপর সিডনির এক্সিট ফাইভ খুঁজে পেলাম। মোটামুটি একটা উলটে যাওয়া গাড়িকে ওইদিন কিভাবে রাস্তায় রেখেছিলাম সেটা আজও আমার কাছে আশ্চর্যজনক! সেকেন্ডের মধ্যেই ঘটে যাওয়া ওই ঘটনা মনে হয় না গাড়িতে যারা ছিল কেউ কখনো ভুলতে পারবে।
কখনো আমরা কোন বিষয়ে অন্য কারও উপরে নির্ভর করে বসলে বিপদে পড়তে পারি। ওই রাতের ঘটনায় সেটা চাক্ষুষ প্রত্যক্ষ করার সুযোগ দিয়েছিল। একটা পর্যায়ে বুঝতে পারছিলাম কাছাকাছি চলে এসেছি তখন নিজে থেকেই আরেকটু সজাগ হলেই হয়তো কিছুই হতো না। কিন্তু ওই যে নির্ভরশীলতা আর তা যদি হয় বিশ্বস্ত তাহলে তো আর কোন কথাই নেই!
এর মধ্যে বেশ কয়েকবার অসম্ভব বৈরী আবহাওয়ার মাঝেও ড্রাইভিং করেছি। যখন সামনে রাস্তা দেখা যায় না,তারপরও ড্রাইভিং করেছি।

ড্রাইভিংয়ের যত কেচ্ছা (কানাডা পর্ব – ৮) – অতনু দাশ গুপ্ত [Driving Experience Canada 2023]
এতদিনের অভিজ্ঞতায় যা বলেছি সব গ্রীষ্মের সময়কার। গাড়ি শীতের শেষে কেনা হলেও রাস্তায় নেমে যখন চালিয়েছি তখন বসন্ত পেরিয়ে গ্রীষ্মকাল। তবে শীতের সময়ে গাড়ি চালানোর পাশাপাশি এর দেখভালের দায়িত্বও বেশ কষ্টের, পরিশ্রমের। সকালে উঠে গাড়িতে জমে থাকা পুরু বরফের আস্তরণ সরাতে অনেক সময়ের প্রয়োজন হয়। ক্যানাডিয়ানরা এই একটা কাজকে যথেষ্ট বিরক্তির চোখে দেখেন! মনে পড়ে একদিন সকালে ওয়ালমার্টে গিয়ে টেবিলে বসে সকালের জলখাবার খাওয়ার সময় হেদারকে জিজ্ঞেস করেছিলাম সকালের শুরুটা কেমন? উনি উত্তরে বলেছিলেন, ওনার বরফ সরাতে অসহ্য লাগে। তবে একই কথা আরও অনেকরই মুখে শুনেছি!
এমনও সময় গেছে যখন কয়েক ধাপে বরফ সরিয়ে পরিষ্কার করতে হয়েছে আমাদের। সকালে কিছুটা, বিকেলে বাকিটা। আশেপাশের বরফের পাহাড় সরিয়ে দিতে মালিকের ভাড়া করা গাড়ি এসে পরিষ্কার করে যাবে। কিন্তু পাশাপাশি রাখা গাড়িগুলোর দায়িত্ব নিজেদের। তবে সকালে যদি কেউ স্বশরীরে উপস্থিত থেকে গাড়ি সরিয়ে জায়গা করে দেয় তাহলে ওই জায়গাও গাড়ি পরিষ্কার করে দেয়। প্রশ্ন হচ্ছে, এত সকালে ঘুম ভেঙে উঠবে কে? পরে ওই বরফ সরাতে অনেক কসরতের প্রয়োজন হয়। পুরো এক সপ্তাহের ব্যায়াম একদিনেই হয়ে যায়!
একদিন বিকালে পরিষ্কার আকাশ দেখে কাজে চলে গেছি। ওই রাতে ভয়ংকর তুষার ঝড়ের আভাস দেওয়া হয়েছিল। সেটা খেয়াল করলেও ভেবেছিলাম অতোটা আর কি হবে?? পূর্ব অভিজ্ঞতার কমতি থাকলে যা হয়! তবে এসমস্ত ক্ষেত্রে কাজে একবার বের হয়ে গেলে ফেরার পথের দায়িত্ব সম্পূর্ণ নিজের। অধিকাংশ সময়ই সবাই যা করে সেটা হলো অফ ডিউটি বা কল অফ। ঝামেলা শেষ! ওই রাতে কাজের কারণে অন্য কিছু ভাবিনি। কাজ শেষে বের হবো তখন ওই রাতের ডিউটি ম্যানেজার গাসি বললো, বাইরের অবস্থা বেশ খারাপ। খুব সাবধানে, যতটা ধীর গতিতে পারা যায় গাড়ি চালাতে। ওর কথায়ও ততটা ভয় পাওয়ার মতো কিছু হবে বলে একদম মনে হয়নি। মেইন গেটের সামনে এসে দেখলাম চারপাশে তুষারের কার্পেট বিছানো, অনবরত হিম বৃষ্টি ঝড়ে পড়ছে। গতি ধীরে ধীরে বাড়ছে। গাড়িতে চড়ে বসলাম। সামনের গ্লাসের উইন্ডশীল্ড ওয়াইপারের গতি বাড়িয়ে দিলাম। পতপত শব্দে ওয়াইপার চলতে লাগলো। গাড়িতে স্টার্ট দেওয়ার পরও ভাবছিলাম কিভাবে পাড়ি দেবো এই দুর্লঙ্কা সাগর? দুগ্গা দুগ্গা বলে প্যাডেলে চাপ দিয়ে রওয়ানা হলাম। রাস্তায় নেমে আশেপাশে কোন গাড়ি দেখছি না। চারিদিকে বরফ বৃষ্টি চলছে আর গতি আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। সামনে কিছুই দেখা যায় না। শুধুই সাদা সাদা তুলোর মত বরফ ঝরে পড়ছে। রাস্তায় কোন দাগ, নির্দেশনা কিছুই দেখছি না। এভাবে চলতে থাকলে নির্ঘাত দুর্ঘটনায় পড়বো। উপয়ান্তর না দেখে ইর্মাজেন্সি লাইট জ্বালিয়ে দিলাম। এতে সুবিধা এই হয় যে আশপাশের কোন গাড়ি আপনার কাছে ঘেঁষবে না। সবাই পাশ কাটিয়ে চলে যাবে। গাড়ির গতি তখন ষাট- সত্তরের মধ্যে ওঠানামা করছে। শুধু সোজা চলেছি। পুরো এতক্ষণের রাস্তায় দুটো গাড়ির দেখা পেলাম। ওগুলো বেশ সর্তকতার সাথেই আমার গাড়িকে পাশ কাটিয়ে চলে গেল। অনেকটা অন্ধের মতো গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছি আর ভাবছি কবে শেষ হবে এ দুর্গম পথ?? যখন আমরা বিপদে পড়ি তখন প্রতি সেকেন্ডকে মনে হয় এক এক ঘন্টা! সময়ের গতি শ্লথ হয়ে আসে। ক্রমাগত সামনের দিকে এগিয়েই যাচ্ছি। সবই অস্পষ্ট, বলতে গেলে প্রতিদিনের চালানো থেকে আন্দাজ করতে পারছিলাম আশপাশের পরিবেশ। এদিকে পুলিশের ভয়ও ছিল। ইর্মাজেন্সি লাইটের সুবিধার পাশাপাশি অসুবিধা এই যে পুলিশ এই লাইট দেখলে আপনার গাড়ি থামিয়ে অবশ্যই কারণ জানতে চাইবেন। আপনি সুস্থ শরীরে আছেন কি না, আপনার অন্য কোন শারীরিক সমস্যা হচ্ছে কি না এসবের খোঁজ খবর নেবেন অফিসার। তাই ভাবছিলাম প্রায় পুরো রাস্তায় লাইট জ্বালিয়ে এসেছি। অবশ্য দুটো গাড়ি ছাড়া আর কিছুর আভাস পাইনি। তখনও ঠিক করিনি কোথায় গিয়ে লাইট অফ করবো। এক্সিট ফাইভ পার হওয়ার পর বেশ লম্বা রাস্তা পাড়ি দিতে হয়। এরপরই সিডনির ওয়ালমার্টের রাস্তা। ঠিক ওখানে কাছাকাছি চলে যাওয়ার আগেই লাইট অফ করে দেবো। ওই চৌমাথায় প্রায়শই পুলিশের গাড়ির আনাগোনা থাকে।
অতনু দাশ গুপ্ত | Atonu Das Gupta
Natun Bangla Kabita 2023 | তালাল উদ্দিন | Top New Poetry
Natun Bangla Kabita 2023 | রঞ্জনা বসু | Top New Poetry
Sunglass and our friendship | সানগ্লাসেই সৃষ্টি আমাদের বন্ধুত্ব | Bangla Galpo 2023
Do not let the towel sink | গামছাটা ডুবতে দিও না | Bangla Galpo 2023
ড্রাইভিংয়ের যত কেচ্ছা | ড্রাইভিংয়ের যত গল্প | পথ ও প্রবাসের গল্প | ড্রাইভিংয়ে পেট্রোল খরচ কমানোর উপায় | ড্রাইভিং সিটে নারী | নতুন ড্রাইভারদের জন্য সেরা ১০ ড্রাইভিং টিপস | সেরা ১০ ড্রাইভিং টিপস | শব্দদ্বীপের লেখক | শব্দদ্বীপ | সেরা বাংলা গল্প | গল্প ও গল্পকার | সেরা সাহিত্যিক | সেরা গল্পকার ২০২৩ | বাংলা বিশ্ব গল্প | বাংলা গল্প ২০২৩
Trip to Canada from India | Canada trip cost from India | Canada trip package from India | 7 Days Canada tour package | Canada family Tour Package | Canada Tour Packages with visa from India | USA and Canada Tour packages from India | Canada tour Package Price | snow driving experience | performance driving experience | f1 driving experience near me | bmw i4 driving experience | mosport driving experience | porsche driving experience | bmw m4 driving experience | bmw driving school | Driving license in Canada | Driving in Canada for Visitors | Young Drivers of Canada | Shabdodweep Founder | Shabdodweep Web Magazine | Shabdodweep Story | Shabdodweep Writer | Driving Experience Canada 2023 | Pdf guide – Driving Experience Canada 2023 | Driving Experience Canada 2023 guide download | Driving Experience Canada 2023 full book | Driving Experience Canada 2023 video download | travel guide – Driving Experience Canada 2023 | guide book – Driving Experience Canada 2023 | Trending video – Driving Experience Canada 2023 | Trend topic – Driving Experience Canada 2023 | Recent video – Driving Experience Canada 2023 | Driving Experience Canada 2023 – Shabdodweep Novel | Driving Experience Canada 2023 – Atonu Das Gupta | 2023 | Driving Experience Canada 2023 – Shabdodweep Novel | Driving Experience Canada – top guide pdf | 2023 | Driving Experience Canada 2023 – Shabdodweep Novel | Driving Experience Canada