
অতনু দাশ গুপ্ত – সূচিপত্র [Bengali Novel]
ড্রাইভিংয়ের যত কেচ্ছা (কানাডা পর্ব – ৫) – অতনু দাশ গুপ্ত [Driving Experience Canada 2023]
সুমনকে বলাতে ও সাথেসাথেই রাজি হয়ে গেল। বরাবরই যখনই বিপদে ওকে জানিয়েছি, ও কখনো না করেনি পারতপক্ষে। ঠিক হলো, পার্কিংয়ের জায়গায়ই ট্রনিং সেশন চলবে। আপাতত রাত দশটার দিকে। অন্য সময় পরে ঠিক করে নেওয়া যাবে। কবে নাগাদ শুরু করলাম সেটা মনে নেই। তবে আমার চেয়েও বেশি টেনশনে ছিল সুমন নিজেই। গাড়ি চালানোর সময় কি কারণে ঠিক জানা নেই তবে আমি বেশ কয়েকটা ভুল করে বসলাম। সোজা চালিয়ে যাচ্ছিলাম গাড়ি, একটা জায়গায় লেইন চেঞ্জ করে বা পাশ থেকে ডানে আসার সময় রেয়ার উইন্ডোতে দেখলেও পাশে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখা যাকে বলে ‘চেক দ্যা ব্লাইন্ড স্পট’ করতে ভুলে যাওয়ায় পাশের গাড়িটা দেখতে পাইনি। ওই গাড়ির ড্রাইভার আচমকা আমার এমন অবস্থা দেখে বেশ সজোরে হর্ণ বাজালো!! কানের পাশ ঘেঁষে তীর চলে গেল। একবার ওই গাড়ির সাথে লেগে গেলে কত যে ঝক্কি ঝামেলা হতো তার কোন ইয়ত্তা নেই। ইনসুরেন্স, পুলিশ, এরপর গ্যারেজে ঠিক করতে দাও, অপেক্ষায় থাকো কবে ফেরত পাবে, এরপর অনেক ক্ষেত্রে ওরকম দাগ পড়ে গেলে ওই গাড়ি আবার বিক্রি করাও কঠিন হয়ে যায়। মোটা দাগে অনেক লম্বা লিস্ট।
সুমনের হতাশা মিশ্রিত ভীতু চেহারা দেখার মতো অবস্থায় ছিলাম না! তবে ও পাশ থেকে অনেকরকম শব্দ -“হায় খোদা, কি যে হবে??” এসব শুনতে পাচ্ছি। ড্রাইভিংয়ের শুরু থেকেই একটা বিষয় সবসময় সমস্যা হয়েছিল – আমাকে ভীষণরকম মনোযোগ দিয়ে গাড়ি চালাতে হতো। কোনদিকেই তাকানোর জো ছিল না। একদৃষ্টে রোবটের মতো সোজা হয়ে বসে একটা দম বন্ধ হয়ে আসা পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে ড্রাইভিং করতাম! অথচ আমাদের অন্য ছেলেরা কত অনায়াসেই এই চতুর্চক্র যানটিকে টেনে নিয়ে যেত যেখানে যখন মন চাইতো সেখানে।
আমার ভুলের পরিপ্রেক্ষিতে সুমনের আরও সর্তক অবস্থান – ও হ্যান্ড ব্রেকে হাত দিয়ে বসে রইলো। যে কোন ধরণের দূর্ঘটনা এড়াতে হ্যান্ড ব্রেকের প্রয়োজন আছে। এতে হাত রেখে উপরে হ্যাচকা টান দিলেই খেল খতম – গাড়ি আর কোন অবস্থাতেই সামনে এগুবে না! তবে যদি হ্যান্ড ব্রেক পুরনো হয় তাহলে হয়তো না দাঁড়ালেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। আমরা বাসা থেকে একসেস নোভা স্কসিয়ার পথে যাচ্ছিলাম। এসব টুকটাক বেগতিক কান্ড ঘটে যাওয়ার পরে ওখানে গিয়ে পৌঁছলাম। গাড়ি পার্কিং-এ দাঁড় করিয়ে নিতে বললো ও। মূল ভবনের পেছনে একটা নিদিষ্ট জায়গায় গাড়িটা নিয়ে গিয়ে ওখান থেকে সামনের ওই জায়গায় পার্কিং করলো যেমনটা মূল ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষায় করতে হবে। রিভার্স পার্কিংও দেখিয়ে দিল। এবার আমার পালা। ওই চত্বরে দুই ধরণের গতিসীমায় গাড়ি চালাতে হয়। সামনে -পেছনে ১৫-২০ কি.মি. এর বেশি না। যদি মূল পরীক্ষায় এর বেশি হয়ে যায় তো পয়েন্ট কর্তন শুরু। প্রতি ভুলের মাশুলে আপনার পাঁচ নাম্বার করে কাটা পড়বে আর আপনি পাঁচবারের বেশি ভুল করলে আবার কেঁচে গন্ডুষ! সুমন বলে যাচ্ছে এসব তথ্য। ওর কথায় মনোযোগী হওয়ায় গাড়ির গতি গেল কমে। তাতেও ফেল করিয়ে দেবে পরিদর্শক। গতি নির্দেশক চিহ্নে উল্লেখিত সীমা হুবহু না হলে পয়েন্ট কর্তন বা ফেল! কাজেই বিষয়গুলো খুব সোজাসাপ্টা। জলের মত পরিষ্কার! সেটা পাস হোক বা ফেল। তখন মনে হচ্ছিল আমি সত্যি সত্যিই পরীক্ষা দিচ্ছি। তবে ওই সময় গাড়ি চালানো ঠিক ছিল। প্রথমে ভুলভালের কারণে হয়তো। আমরা আধ ঘন্টার মত ওখানে গাড়ি চালিয়ে বাসার পথে রওয়ানা দিলাম। ঘড়িতে প্রায় রাত বারোটা বাজে। পথে তেমন একটা গাড়ি না থাকায় আর কোন সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়নি।
সপ্তাহ খানেক চাকরি চালিয়ে যাওয়ার পর ভেবে দেখলাম এভাবে অনুশীলন চললেও যে মূল উদ্দেশ্যে গাড়ি কিনেছি সেটা থেকে অনেক দূরে আছি। লক্ষ অবশ্যই ছিল গাড়ি চালিয়ে বাসা থেকে ওয়ালমার্টের পঁচিশ কিলোমিটার দূরের পথ ডিঙানো। প্রথমদিকে সুমন বা জুয়েল আমাকে ড্রাইভ করে দিয়ে এসেছিল কয়েকদিন। এরপর যথারীতি কারও দৈনন্দিন রুটিন কারও সাথে মিলবে না। একদিন রবিবারের দুপুরে দেখলাম আমাকে দিয়ে আসার মতো থাকলেও যে যার কাজে ব্যস্ত। সাত পাঁচ না ভেবে নেমে পড়লাম গাড়ি নিয়ে একদম সিডনি থেকে নর্থ সিডনির মেইন হাইওয়েতে! অনেকটা দুঃসাহসী অভিযানের মতো। পুরোপুরি প্রস্তুত হওয়া থেকে আমি তখনো অনেক ক্রোশ দূরে। কিন্তু এতদিনের যাতায়াতের কারণে রাস্তা চেনা লাগবে জানতাম। আগে মাথায় ভেবে নিলাম কোথায় শুরু করে কতদূর গিয়ে কোন জায়গায় মোড় নিতে হবে, বা কোথায় অন্য রাস্তার এক্সিট পয়েন্ট আসবে। পুরো ম্যাপ চোখের সামনে না এলেও ধারণা নিয়েই স্টার্ট দিলাম গাড়িতে।

ড্রাইভিংয়ের যত কেচ্ছা (কানাডা পর্ব – ৬) – অতনু দাশ গুপ্ত [Driving Experience Canada 2023]
আমাদের বাসার সামনের জায়গায় আগে দুটো গাড়ি পার্ক করা থাকতো। এখন আমারটা সহ তিনটে করতে হয়। কাজেই ওখান থেকে গাড়ি বের করে রাস্তায় নিয়ে যাওয়াটাও একটা পরীক্ষা রীতিমতো। জায়গার সংকুলান হয় না। এখানকার অধিকাংশ ভাড়া বাড়ির সামনে দুটো গাড়ি পার্ক করার জায়গা থাকে। বেশ সাবধানে গাড়িটাকে রিভার্স গিয়ারে রেখে বের করে নিয়ে ড্রাইভ শুরু করলাম তেইশ কিলোমিটার দূরের নর্থ সিডনির পথে।
কেমন একটা অজানা রোমাঞ্চ কাজ করছিলো! সত্যিই পারবো তো? বাসা থেকে মূল সড়কে বের হয়ে প্রথমে ডানে মোড় নিয়ে সোজা কিছুদূর গিয়ে সিডনির মেইন রোডে একটা ইন্টারসেকশন আসে যেটা থেকে সিডনি ওয়ালমার্ট দেখা যায়। আবার ডানে মোড় নিতে হবে। আগে ভালোভাবে নিশ্চিত হতে হবে অপর পাশ থেকে অন্য কোন গাড়ি আসছে কি না কারণ যেখানটায় আমার গাড়ি মোড় নেবে ওটা আসলে অপর পাশের সোজা রাস্তার বর্ধমান পথ। যা বিস্তৃত পেয়েছে সোজা হয়ে। এক্ষেত্রে যিনি গাড়ির মোড় নিচ্ছেন তাকে নিশ্চিত হতে হবে তিনি অন্য গাড়িকে সোজা পথে যাওয়ার অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। সেটাই ড্রাইভিং আইন। কিছুক্ষণ দেখে নিশ্চিত হয়ে সোজা রাস্তায় নেমে গেল হায়উন্ডাই এক্সেন্ট ২০১০। এরপর আর কোন জায়গায় মোড় নিতে হয় না একটা জায়গা বাদে, নর্থ সিডনির মূল প্রবেশপথে – এক্সিট চার। ব্যাপারটা আমাকে অনেক বাড়তি সুবিধা জোগাতো। তবে মাঝখানের একটা জায়গায় বাধ্যতামূলক লেইন পরিবর্তন করতে হতো। কারণ ওই পথ পরে অন্য পথের সাথে মিশেছে। এটা আমি জানতাম না। জায়গাটা সিডনির রিজিওনাল হাসপাতালের ডাক্তারদের আবাসিক এলাকার ঠিক বাইরের দিকটায়। প্রথমদিন কোন বিপত্তি ঘটেনি। পরেরদিনই সেটা বুঝতে পারি যখন পেছনের গাড়ি বেশ বড়সড় হর্ণ বাজিয়ে দিল!! অধিকাংশ সময় আপনার পেছনের গাড়ি তখনই ভেঁপু বাজাবে যখন কোন ভুল হয়েছে। বিষয়টা এখানে বেশ অপমানের চোখে দেখা হয়। রাস্তায় এত শতশত যানবাহন চলছে কিন্তু কোন গাড়ি টুঁশব্দটিও করছে না। আমাদের দেশের ট্রাফিকের কথা ভাবলে দৃশ্যটা একদম বিপরীতমুখী। যেখানে আমরা এক নাগাড়ে বিরতিহীনভাবে হর্ণ বাজিয়ে একে অপরের কান ঝালাপালা করে দিতে কোন দ্বিধাবোধ করি না!
পৌঁছানো পর্যন্ত আর কোন সমস্যার মুখোমুখি হইনি। কিন্তু সেই রোবট হয়ে বসে চালানোর যে সমস্যা যার কোন সতঃস্ফূর্ততা কাজ করছে না, সেই বৃত্ত থেকে বেরুতে পারলাম না! তখন বলতে গেলে আমাকে প্রায় প্রতিদিনই ড্রাইভ করতে হতো। শনি ও রবিবার নর্থ সিডনির পঁচিশ কিলোমিটারের পথ পাড়ি দিতাম। আর সোম থেকে শুক্রবার চলে যেতাম গ্লেস বে-র অফিসে আঠার কিলোমিটারের রাস্তা পেরিয়ে। এত ড্রাইভিং করার পরেও কেন আমার জড়তা কাটেনি সেটা অবশ্য রহস্যজনক! প্রথমে যখন শুরু করেছিলাম তখন যেমন যবুথবু হয়ে বসে চালাতাম, এরপরে প্রায় মাস চারেক কেটে গেলেও ড্রাইভিংয়ের ধাঁচে কোন পরিবর্তন আসলো না! এটার উপলব্ধি তখন পর্যন্ত আমার হয়নি। তবে কিছু কিছু অকস্মাৎ ঘটনা সবসময় আপনার মনে একটা স্হায়ী দাগ রেখে যায়। এক রাতে কাজ সেরে ফেরার পথে গাড়িতে গান শুনে ড্রাইভ করছি। এভাবে প্রায়ই তখন আমি গ্লেস বে যাই! বেশ ভালোই লাগছিল। সিডনির কাছাকাছি একটা জায়গায় এসে রাতের অন্ধকার বা কিছুটা হয়তো নিজের বেখেয়ালিপনা থেকেই ভুল এক্সিটে ঢুকে পড়ি। এরপর গাড়ি সম্পূর্ণ ভিন্ন একটা জায়গায় গিয়ে হাজির হয়। কোথায় আছি বুঝতে পারছি না। আশেপাশে তাকিয়েও কিছু বুঝতে পারছি না। হাত ক্রমশ ঘামছে। কপালে চিন্তার ভাজ! ফোনে গুগল ম্যাপে শুনে দক্ষিণ পশ্চিম দিকের কোন রাস্তায় মোড় নেওয়ার কথা বলছে যা আমি বুঝতে পারছি না। পুরোপুরি আক্কেলগুড়ুম হলো। ইমার্জেন্সি লাইট জ্বালিয়ে রাস্তার এক পাশে গাড়ি সাইড করিয়ে বসে আছি। আর ম্যাপ বোঝার বৃথা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তখন ঘড়িতে সময় প্রায় রাত সাড়ে এগারোটারও বেশি। আরও একটা ব্যাপারে আমার আগ্রহ ছিল না মোটেও – সেটা হচ্ছে ম্যাপ দেখে গাড়ি চালানো। ড্রাইভ করবো কিভাবে? ম্যাপ দেখে চালানোর সময় ডানদিকের রাস্তা আর বামদিকের পথ প্রায়ই সময় গুলিয়ে ফেলতাম বা নির্দেশনা ধরতেই নাকানিচুবানি অবস্থা হতো আমার। এটা নিজে প্র্যাকটিস কারার সময় থেকেই হয়ে আসছিল। পরে সিদ্ধান্ত নিই, কোন জায়গায় যাওয়ার আগে সে জায়গাটার ম্যাপ পুরো দেখে মোটামুটি রাস্তার একটা ভালো ধারণা নেওয়া যায়। তবে সেই দুর্বল দিকটাই এখন বুমেরাং হয়ে আসলো নিজের দিকেই! ম্যাপ ফলো করতে না পারলে এ নির্জন জায়গা থেকে উদ্ধার হওয়ার অন্য কোন পথও দেখছি না আপাতত! তখন নিজের সাধ্যমত চেষ্টার পর এক শুভাকাঙ্ক্ষী ভাইয়ার কথা মাথায় আসলো। উনি বলেছিলেন, কখনো পথ হারিয়ে ফেললে সোজা রাস্তায় চলবেন। কোথাও মোড় নেওয়ার প্রয়োজন নেই। এক জায়গায় গিয়ে কোন না কোন পরিচিত নির্দেশনা পেয়ে যাবেন! ঠিক করলাম সোজা চালিয়ে নিয়ে যাই, দেখি কোথায় যাওয়া যায়। নিজের উপর ভরসা রেখে গাড়িকে বামে ঘুরিয়ে রাস্তায় নেমে সোজা চলতে লাগলাম। আমার গাড়ির পেছন দিকে অন্য গাড়িও অনুসরণ করে চলছে। তখন গাড়ির গতি কম ছিল কারণ আত্মবিশ্বাস তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। কোথায় চলেছি জানি না। কাল সকালে আবার কাজেও যেতে হবে।
অতনু দাশ গুপ্ত | Atonu Das Gupta
Shankhakshetra Puridham and Madala Panji | শঙ্খক্ষেত্র পুরীধাম ও মাদলা পাঁজির রাজবৃত্তান্ত
City and nature | শহর ও প্রকৃতি | New Bengali Article 2023
Natun Bangla Kabita 2023 | রূপশঙ্কর আচার্য্য | Top New Poetry
Natun Bangla Kabita 2023 | প্রতিম ঘোষ | Top New Poetry
ড্রাইভিংয়ের যত কেচ্ছা | ড্রাইভিংয়ের যত গল্প | পথ ও প্রবাসের গল্প | ড্রাইভিংয়ে পেট্রোল খরচ কমানোর উপায় | ড্রাইভিং সিটে নারী | নতুন ড্রাইভারদের জন্য সেরা ১০ ড্রাইভিং টিপস | সেরা ১০ ড্রাইভিং টিপস | শব্দদ্বীপের লেখক | শব্দদ্বীপ | সেরা বাংলা গল্প | গল্প ও গল্পকার | সেরা সাহিত্যিক | সেরা গল্পকার ২০২৩ | বাংলা বিশ্ব গল্প | বাংলা গল্প ২০২৩
Trip to Canada from India | Canada trip cost from India | Canada trip package from India | 7 Days Canada tour package | Canada family Tour Package | Canada Tour Packages with visa from India | USA and Canada Tour packages from India | Canada tour Package Price | snow driving experience | performance driving experience | f1 driving experience near me | bmw i4 driving experience | mosport driving experience | porsche driving experience | bmw m4 driving experience | bmw driving school | Driving license in Canada | Driving in Canada for Visitors | Young Drivers of Canada | Shabdodweep Founder | Shabdodweep Web Magazine | Shabdodweep Story | Shabdodweep Writer | Driving Experience Canada 2023 | Pdf guide – Driving Experience Canada 2023 | Driving Experience Canada 2023 guide download | Driving Experience Canada 2023 full book | Driving Experience Canada 2023 video download | travel guide – Driving Experience Canada 2023 | guide book – Driving Experience Canada 2023 | Trending video – Driving Experience Canada 2023 | Trend topic – Driving Experience Canada 2023 | Recent video – Driving Experience Canada 2023 | Driving Experience Canada 2023 – Shabdodweep Novel | Driving Experience Canada 2023 – Atonu Das Gupta | 2023 | Driving Experience Canada 2023 – Shabdodweep Novel | Driving Experience Canada – top guide pdf | 2023 | Driving Experience Canada 2023 – Shabdodweep Novel | Driving Experience Canada