Bengali Story Viewer – Asgar Ali Mandal
সবার উপরে মানুষ সত্য – আসগার আলি মণ্ডল
সামীম খুবই মেধাবী ছাত্র। বাৎসরিক পরীক্ষায় প্রতি বছরই প্রথম হয়।হাই স্কুলেও তাই। মাধ্যমিক পরীক্ষাতে চারটি বিষয়ে লেটার সহ ফাস্ট ডিভিশনে পাশ করে কলেজে ভর্তি হয়েছে। ওর আশা ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার হবে।বাবা সরকারি অফিসের কেরানী।বেতন খুবই সামান্য।তবে যা বেতন পায় স্বচ্ছন্দে সংসার চলে যায়। সামীমের দুই দিদির বিয়ে হয়ে গেছে।বাবার প্রভিডেন্ট ফান্ডের পুরো টাকাটাই প্রায় শেষ।আশা পূরণ করার মতো আর্থিক অবস্থা ওর বাবার নেই।এই সব ভাবতে ভাবতে সামীমের চোখে জল এসে যায়। নিজেকে খুব অসহায় বোধ করে।তবুও কেমিস্ট্রিতে অনার্স নিয়ে পড়াশোনা করতে থাকে। কয়েক মাসের মধ্যেই সামীম ক্লাসে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ওর মেধা দেখে সকল অধ্যাপকও খুব খুশি। ক্লাসের কিছু ছেলে মেয়ে হিংসা করলেও বাকিরা খুব সমীহ করে।
একদিন অফ পিরিয়ডে কলেজ ক্যান্টিনে চা খেতে এসে দেখলো ওরই ক্লাসের কয়েকজন ছেলে মেয়ে নিজেদের মধ্যে জমিয়ে গল্প করছে। ফাঁকা জায়গা দেখে বসতে যাবে এমন সময় তাদের মধ্যে একটি মেয়ে সামীমকে ডাকলো ওদের কাছে বসার জন্য। সামীম এসে বসতেই চা-এর অর্ডার করে দিলো। মেয়েটির নাম সুমনা। বাবার একমাত্র মেয়ে। আর্থিক অবস্থা খুব ভালো। প্রতিদিন ক্যান্টিনের বিল ও-ই মেটায়। অন্য কেউ বাধা দিলেও শোনে না। একদিন সুমনা সামীমকে বললো-আমার মায়ের কাছে তোমার মেধার কথা বলতেই মা তো অবাক হয়ে গেল। তোমাকে দেখতে চেয়েছেন।বাড়িতে নিয়ে যেতে বলেছেন। তুমি কবে যেতে পারবে বলো ? সামীম কোন কথা দিতে পারলো না তবে বললো সময় পেলে যাবো।
দেখতে দেখতে প্রথম বর্ষ শেষ করে সকলেই দ্বিতীয় বর্ষের জন্য পড়াশোনা আরম্ভ করে দিলো। সেই সঙ্গে সামীমের প্রতি সুমনার দুর্বলতাও সকলের চোখে ধরা পড়তে লাগলো। সুমনা মেধাবী না হলেও পড়াশোনায় খারাপ নয়। দেখতেও সুন্দরী। সামীমের ইচ্ছা না থাকলেও সুমনা জোর করে ভালো রেস্তোরাঁয় নিয়ে যায়। মাঝে মাঝে সিনেমায় নিয়ে যায়। সুমনা যে সামীমকে ভালোবেসে ফেলেছে একথা মুখে প্রকাশ করতে পারতো না। তবে ব্যাপারটা সামীমের বুঝতে অসুবিধা হয়নি। সামীম মনে মনে ভাবলো একটু দূরে-দূরে চলাই ভালো। প্রথমতঃ দু’জন দুটি সম্প্রদায়ের। তার উপর সুমনার বাবা আর্থিক অবস্থা সম্পন্ন। তিনি এসব মেনে নেবেন না। জানতে পারলে হয়তো আমাকে পুলিশে দেবে। এসবের থেকে দূরেই থাকা ভালো। সামীম দূরে দূরে থাকতে চাইলেও সুমনা কিন্তু ওকে কাছছাড়া করতে চাই না। একদিন সুমনা বলেই ফেললো-সামীম তোমাকে আমি ভালোবাসি। সারা জীবনের জন্য তোমাকে কাছে পেতে চাই। এক মুহূর্ত তোমাকে না দেখলে আমি থাকতে পারি না। তুমি দূরে দূরে থেকে আমাকে কষ্ট দিও না সামীম। কি বলবে সামীম বুঝে উঠতে পারে না। শেষমেশ সুমনার দুটি হাত ধরে সামীম শান্ত ভাবে বললো-সুমনা আমরা দু’জন দুটি সম্প্রদায়ের। বাবা অফিসের সামান্য কেরানী। থাকার মতো আমাদের ভালো জায়গা নেই। পরে তোমার অসুবিধা হবে। তুমি মানিয়ে নিতে পারবে না। তাছাড়া আমাদের সম্পর্ক তোমার বাবা-মা মেনে নেবেন না। সমাজ মেনে নেবে না। আমরা দু’জন ভালো বন্ধু হয়ে থাকলে অসুবিধা কোথায়? সেদিন ছলছল চোখে সুমনা বাড়ি ফিরে গেল। সামীমের খুব কষ্ট হলো। নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলো না। রাতে মোবাইল ফোন-এ সুমনাকে বলতে বাধ্য হলো-আমিও তোমাকে ভালোবাসি সুমনা।
দেখতে দেখতে ভাগীরথীর জল অনেক দূরে গড়িয়ে গেল। তৃতীয় বর্ষ শেষ হলো। সামীম চমৎকার রেজাল্ট করলো। সুমনার রেজাল্ট সামীমের মতো না হলেও খারাপ বলা যাবে না। দুটি বিষয়ে লেটার পেয়েছে। এদিকে সামীমের বাবা রিটায়ার্ড করেছেন।পেনশন খুবই সামান্য। জমানো টাকা আগেই শেষ হয়ে গেছে মেয়ে দুটির বিয়ে দিতে। সামীমের উপর চাপ বাড়তে লাগলো। সংসারের দায়িত্ব এবার নিজের কাঁধে নিতে হবে। বিভিন্ন অফিসে ইন্টারভিউ দিতে লাগলো। অবশেষে কপাল খুলে গেল। মেধার ভিত্তিতে খাদ্য দপ্তরে বড়ো অফিসারের পদে নিয়োগ হয়ে গেল। এদিকে সুমনার বাবা একটি ইঞ্জিনিয়ার পাত্রের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে প্রায় পাকা করে ফেলেছেন।সুমনা এই বিয়েতে রাজি না থাকলেও ভয়ে বাবাকে কিছুই বলতে পারে না।সাত পাঁচ ভেবে সামীমকে ফোন করে ওর অফিসে পৌঁছে গেল।আজ একটা হেস্তনেস্ত করেই তবে ছাড়বে। সামীম ওকে দেখে খুশি হলেও মনে মনে ভয় পেয়ে গেল।
ঘড়ির কাঁটা তখন ঠিক বিকাল পাঁচটা ছুঁই ছুঁই। সামীম ওকে নিয়ে কাছাকাছি একটা রেস্তোরাঁয় গিয়ে ফাঁকা জায়গা দেখে বসে পড়লো। সুমনার দু’চোখ থেকে জলের ধারা গড়িয়ে পড়ছে গাল বেয়ে। সামীম কিছু বলার আগেই সুমনা সামীমের দুটি হাত চেপে ধরে বলতে লাগলো-সামীম আমার বিয়ে প্রায় ঠিক হয়ে গেছে।আমি এ বিয়েতে সুখী হতে পারবো না। তুমি একটা কিছু করো।আমি আর বাড়ি ফিরে যাবো না। আজই আমরা রেজিস্ট্রি বিয়েটা সেরে ফেলবো। সামীম শুধু একটাই কথা বললো-আমাদের জাত-ধর্ম বাধা হয়ে দাঁড়াবে সুমনা! একথা শুনেই সুমনা চিৎকার করে বলে উঠলো-জাত, ধর্ম আমি কিছু মানি না।আমরা শুধুই মানুষ। তুমি যদি আজকে আমার কথা না শোনো, তাহলে বাড়ি পৌঁছনোর আগেই আমার মৃত্যুর খবরটা পেয়ে যাবে। সামীমও কাঁদছে, সুমনাও কাঁদছে। রেস্তোরাঁ থেকে বের হবার আগে সামীম সুমনাকে কথা দিলো আমরা আগামীকাল একটা উকিলের কাছে রেজিস্ট্রি বিয়েটা সেরে ফেলবো।তুমি এখন বাড়ি ফিরে যাও।
রাত তখন দু’টো দু’চোখের পাতা এক করতে পারছেনা সামীম। মা-বাবার কাছে কি জবাব দেবে! প্রতিবেশী, আত্মীয়দের কাছে কি জবাব দেবে! বাবা-মা কোন দিনই সুমনাকে পুত্রবধূ হিসাবে মেনে নেবেন না। এই সব ভাবতে ভাবতে সামীম এক সময় ঘুমিয়ে পড়লো। পরের দিন যথা সময়ে অফিসে বেরিয়ে পড়লো মনটা শক্ত করে। অফিসে পৌঁছে দেখে সুমনা অনেক আগে থেকেই বাইরের চেয়ারে বসে আছে। সামীম কয়েক দিনের ছুটি চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে একটা ছুটির আবেদন লিখে জমা দিয়ে সুমনাকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো। দেখতে দেখতে প্রায় এক বছর ভাড়া বাড়িতে কেটে গেল। লজ্জায়, দুঃখে, অপমানে, সমাজের ভয়ে বাবাও আশ্রয় দিলেন না সামীমকে।সুমনার বাবা আইন-আদালত, পুলিশ কেশ করলেও মেয়ের জেদের কাছে হার মানতে বাধ্য হলেন।
সুমনা এখন অন্তঃসত্ত্বা। সামীম ওকে খুব চোখে চোখে রেখেছে। দশ মাস হতে চলেছে আর কয়েকদিন পরেই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নার্সিংহোমে ভর্তি করতে হবে।বাড়ির কাজের মেয়েই সব কাজ করে দেয়। সুমনাকে কিছুই কব্যথায়রতে দেয় না। দিন দুয়েক পর ঠিক দুপুরে সামীম অফিসের ফাইল-কাগজপত্র নিয়ে বসেছে এমন সময় মোবাইল ফোনটা জানান দিচ্ছে কেউ ফোন করেছেন। রিসিভ করতেই ওপার থেকে বাড়ির কাজের মেয়েটির গলা ভেসে এলো। দাদাবাবু-তাড়াতাড়ি বাড়ি আসুন বৌদি ব্যথায় ছটফট করছেন। সামীম কালবিলম্ব না করে সঙ্গে সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্স ডেকে নার্সিংহোমে নিয়ে গেল।বেলা চারটে নাগাদ ফুটফুটে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দিলেন সুমনা। মা, বাচ্চা দুজনেই ভালো আছে, সুস্থ আছে।
সামীম সুমনার মাথার কাছে বসে সদ্যোজাত পুত্রের হাত-পা নাড়া দেখছে।এমন সময় সামীমের বাবা-মা হুড়মুড়িয়ে রুমে প্রবেশ করলেন। যা দেখে সামীম সুমনা অবাক হয়ে গেল।মা কাঁদতে কাঁদতে বলতে লাগলেন-আমাদের একবার খবরটাও দিতে নেই? প্রতিবেশীদের কাছ থেকে এসব খবর শুনতে হবে আমাদের! তুই কি অমানুষ। আমার বংশের প্রদীপ, দাদুভাইকে আমার কোলে দে।তোরা আমাদের খবর না রাখলেও আমরা তোদের খবর নিয়মিত রাখি। সামীম মাথা হেট করে অঝোরে কেঁদে চলেছে।সুমনাও চোখের জল মুছছে। এরই মাঝে সামীমের বাবা বলে উঠলো-বৌমা তোমার বাবাকে একরার ফোন করে এখানে আসতে বলো। জাতপাত, ধর্ম নিয়ে বাঁচতে গেলে হবে না।”সবার উপরে মানুষ সত্য”।
সুমনা কাঁপা কাঁপা গলায় ফোন করে বাবাকে নার্সিংহোমে আসতে বললেন। মিনিট পনেরো কেটে যাবার পর সুমনার বাবা-মা নার্সিংহোমে হাজির হলেন। সামীমের বাবা এগিয়ে গিয়ে বেহাই মহাশয়ের হাত দুটি ধরে বললেন-ওরা তো ভুল করেছে।আমরা কেন ওদের কষ্ট দিতে থাকবো আর আমরাও কেন কষ্ট নিয়ে বাঁচবো।ওদের কি ক্ষমা করা যায় না? নার্সিংহোম ছুটি দিলে আমি ওদেরকে বাড়ি নিয়ে যাবো। আপনি যদি অনুমতি দেন। আমার ছেলে, ছেলের বউ, নাতি আমি অবহেলা করতে পারি না।বৌমা সুস্থ হয়ে উঠলে আপনি আপনার মেয়েকে অবশ্যই কিছুদিনের জন্য নিয়ে যেতে পারেন। সুমনার বাবা মাথা হেঁট করে সব কথা শুনলেন।ঝাপসা চোখে কান্না কোন রকমে দমন করে সামীমের বাবাকে জড়িয়ে ধরে বললেন-ধর্ম মনুষ্যত্বের ঊর্ধ্বে নয়।আমাকে আপনি ক্ষমা করে দেবেন। এদিকে সুমনার মা কান্না থামিয়ে নাতিকে কোলে নিয়ে খুশির হাসি হাসতে লাগলেন।
আসগার আলি মণ্ডল | Asgar Ali Mandal
Adonis | অ্যাডোনিসঃ আধুনিক আরবি কবিতার রূপকার | 2023 Article
Andaman Cellular Jail | আন্দামানের কুখ্যাত সেলুলার জেল
Odisha Goddess Durga | ওড়িশার পটচিত্রে দেবী দুর্গা
দেবতা ৩৩ কোটি | 33 Crore Gods | প্রবোধ কুমার মৃধা
Anandabazar Bengali Short Story | Bengali Short Story | Pratilipi Horror Stories in Bengali | Lifestyle Web Stories in Bangla | Trending online bangla golpo pdf free download | Short bengali story | Bengali story pdf | pratilipi bengali story | Short Stories for Children | English Stories for Kids | Moral Stories for Kids | story in english | story hindi | story book | story for kids | short story | story for girls | short story in english | short story for kids | Bengali Story Viewer pdf | Bangla golpo pdf | Bangla golpo story | bangla romantic golpo | choto golpo bangla | bengali story | Sunday suspense golpo | sunday suspense mp3 download | suspense story in hindi | suspense story in english 200 words | Bengali Story Viewer in english | Trending online bangla golpo pdf download
suspense story in english 300 words | Suspense story examples | suspense story in english 100 words | suspense story writing | very short suspense stories for students | Bengali Story Viewer | Top Bangla Golpo Online Reading | New Read Online Bengali Story | Top Best Story Blogs | Best Story Blogs in pdf | Sabuj Basinda | High Challenger | Famous Bangla Golpo Online Reading | Shabdodweep Read Online Bengali Story | Shabdodweep Writer | Bangla Golpo Online Reading pdf | Famous Story – Trending Bengali Story Viewer | Pdf Bengali Story Viewer | Bengali Story Viewer App | Full Bengali Story Viewer Reading | Bangla Golpo Online Reading Blogs | Trending online bangla golpo pdf
Best Story Blogs in Bengali | Live Bengali Story in English | Bangla Golpo Online Reading Ebook | Full Bangla Galpo online | Bengali Story Viewer 2024 | New Bengali Story Viewer – Episode | Golpo Dot Com Series | Bengali Story Viewer Video | Story – Bengali Story Viewer | New Bengali Web Story Audio | New Bengali Web Story Video | Bengali Story Viewer Netflix | Audio Story – Bengali Story Viewer | Video Story – Bengali Story Viewer | Shabdodweep Competition | Story Writing Competition | Bengali Writer | Bengali Writer 2024 | Trending Bangla Golpo Online Reading | Top Bengali Story Viewer | Bengali Story Viewer Web Story | Best Read Online Bengali Story | Read Online Bengali Story 2024 | Trending online bangla golpo book pdf
Shabdodweep Bangla Golpo Online Reading | New Bengali Story Viewer | Bengali Famous Story in pdf | Modern Online Bangla Galpo Download | Bangla Golpo Online Reading mp3 | Horror Adult Story | Read Online Bengali Story Collection | Modern Online Bangla Galpo mp4 | Modern Online Bangla Galpo Library | New Bengali Web Story Download | Full Live Bengali Story | Bengali Famous Story 2023 | Shabdodweep Bengali Famous Story | New Bengali Famous Story | Bengali Famous Story in pdf | Bengali Famous Story – video | Bengali Famous Story mp3 | Full Bengali Famous Story | Bengali Literature | Shabdodweep Magazine | Shabdodweep Web Magazine | Live Bengali Story Writer | Shabdodweep Writer | Trending online bangla golpo free download