New Bengali Story | গল্পগুচ্ছ | বিপাশা চক্রবর্তী

Sharing Is Caring:

প্রেমের মোহ [Bengali Story]

এই বিশ্ব মাঝারে সকলেই আমরা প্রেমের বশে আত্মহারা। আর তাই প্রেম মানুষকে অমানুষ করে তোলে। মলিনা খুব সুন্দর একটি মেয়ে। সে তার বাবাকে ভীষণ ভালোবাসে। আর এই আদুরে মেয়ের জন্য সুন্দর দেখে তার বাবা তাকে একটি দামী মোবাইল ফোন কিনে দেয়। আর হাতে তুলে দেন সর্বনাশের আগুন। সেই আগুনে ঝাঁপ দিল মলিনা। পড়াশোনা মাথায় রেখে সে দিন রাত মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত। বাবা মা জানে মেয়ে আমার মোবাইল নিয়ে সবসময় পড়াশোনা করছে। আর রাজ্য সরকার সেই ব্যবস্থাই করে দিয়েছেন অনলাইনে পড়াশোনার জন্য। তিনি প্রতিটি ছেলে মেয়ের হাতে তুলে দিয়েছেন মোবাইল কেনার টাকা যাতে তাদের পড়াশোনা করতে অসুবিধা না হয় সেই কারণে। কিন্তু সেই সুন্দর সুযোগের অপব্যবহার করে ছেলে মেয়েরা স্বেচ্ছাচার হয়ে উঠেছে। আর তারই নিদর্শন হলো মলিনা। সে পড়াশোনার বদলে ম্যাসেজ করায় মেতে গেল। পেয়ে গেল বয়ফ্রেন্ড। সেই বয়ফ্রেন্ড প্রেমের জালে জড়িয়ে ফেলল মলিনা নিজেকে। মলিনা বিভোর হয়ে বাড়ি ছাড়ল প্রেমিকের কথায়। চেনে না জানে না এমনকি চোখেও দেখিনি তার প্রেমিকটিকে। তবুও প্রেমের মোহে বিভোর হয়ে মলিনা চলে গেল ছেলেটির হাত ধরে বাবা মাকে কিছু না বলে। অনেক খোঁজ খবরের পর জানা গেল মেয়েটি ভিন জেলায় ভিন গাঁয়ে চালচুলাহীন একটি ঘরে গিয়ে উঠেছে ছেলেটিকে বিয়ে করে। তার বাবা মা যখন খোঁজ করে সেখানে পৌঁছলেন তখন মলিনা মুখের উপর জানিয়ে দিল, তার বাবা মা কেউ নেই সবাই মারা গেছে।সে অনাথ। তার বাবা মা আদরের মেয়েকে ফিরিয়ে আনতে পারলেন না। অসহায় অবস্থায় বাড়ি ফিরে এলেন। বাবা মায়ের মেয়ের প্রতি প্রেম মাঝ মাঠেই মারা গেল চিরজীবনের তরে। ধনী ঘরের মেয়ে মলিনা যে বাইক ছাড়া এক পা চলতে পারতো না সে আজ নিজের ভুলে কোনো খোঁজ খবর না নিয়ে ফেসবুকে পরিচিত আকাট বেকার ছেলেটিকে বিশ্বাস করে বাবা মা ও বাড়ির সকলকে ছেড়ে চলে গেল।

আজ তাকে সংসারের সব কাজ করতে হয়। এমনকি চাষবাসের কাজও সময় অবসরে করতে হয়। কিন্তু মনে কষ্ট হলেও সে ফিরতে পারে না তার বাবা মায়ের কাছে। তাদের আদরের মেয়েকে হারিয়ে তার বাবা মা আজ বেঁচে থাকার আনন্দটুকুও ভুলে গেছে। কিন্তু মলিনা বুঝলো না তার বাবা মায়ের কষ্ট, সে ভাবলো না যাকে বিশ্বাস করে ঘর ছেড়েছে সেতো তাকে বিদেশে বিক্রি করেও দিতে পারতো!বা তাকে ধর্ষণ করে রাস্তাতে মেরে রেখে দিতেও পারত কিন্তু এসব প্রশ্ন তার মনে কখনও আসেনি। প্রেমের মোহ এমনই এক জিনিস যা মানুষকে এক মুহূর্তেই সবার কাছ থেকে এমনকি নিজের স্বাচ্ছন্দ্য বোধ স্বাধীনতার কাছ থেকেও আলাদা করে দেয়। আর তার ফলে সে যা পেতে চায় তা যদি না পায় তখন তার মনে অশান্তির বাসা বাঁধে আর সে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। তাই প্রেমে পড়ার আগে মেয়েদের কে সতর্ক হতে হবে। নিজ আত্মমর্যাদায় বিশ্বাস রেখে বাবা মায়ের সাথে আলাপ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে সে যে কাজটা করছে সেই কাজটা করা উচিত হচ্ছে কিনা। কেননা বিবাহ মানেই হলো একে অপরকে বহন করা মতের মিল রেখে পথ চলা এবং সুন্দর সন্তানের জন্ম দেওয়া। কিন্তু মনের মিল মতের মিল যদি না থাকে সংসারে যদি অশান্তি থাকে তাহলে সু -সন্তান পাওয়া অসম্ভব হয়। তবুও মলিনার মতো মেয়েরা এসব বোঝে না। তারা নিজ সিদ্ধান্ত নিয়ে ভুল করে। তাদের আত্মমর্যাদা বোধকে হারিয়ে ফেলে। এবং নিজের দোষে নিজেরা বিপদে পড়ে। তখন দোষ হয় পুরুষ সমাজের। মেয়েদের দোষেই যে মেয়েরা বিপদে পড়ে সেটা কেউ বিচার করে না।। আর এটাই হলো শিক্ষিত সমাজ।।

চরম শিক্ষা [Bengali Story]

সত্য ঘটনার উপলব্ধিতে লেখা এই গ্রাম্য গল্প। গ্রাম্য জীবন যেন অপূর্ব সুন্দর এক জীবন। এখানে মানুষের মনে থাকে অফুরন্ত ভালোবাসা আর স্নেহের পরশ। পশুপাখি থেকে আরম্ভ করে সকলের প্রতি থাকে অনাবিল প্রেম। শত্রুর বিপদ হলেও গ্রামের মানুষ বিশেষ করে মা বোনেরা আগে ছুটে যায় তার কাছে, তার পাশে থেকে চেষ্টা করে তাকে বিপদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য। থেমে থাকতে পারে না সে তার মানবিকতার কাছে। পরাজিত করে সে ক্রোধকে নিজ হিংসাকে। যদি কখনও সে কারো ক্ষতি করে পরে প্রতিটি মুহূর্তে অনুতাপে দগ্ধ হয়।সরলতা তার মনুষ্যত্বকে জাগিয়ে তোলে।

সরলতা গ্রাম্য মনুষ্য জীবনের এক অহংকার। যার ফলে কুচক্রী মানুষ তাদের ঠকায় এবং বিপদের মুখে ঠেলে দেয়। তারা সহজেই যেকোনো মানুষ থেকে পশু পর্যন্ত সকলকেই বিশ্বাস করে এবং আবেগ বশত তাদের উপকার করার চেষ্টা করে নিজেই বিপথগামী হয়।

একদিন এই সরলতা দেখাতে গিয়ে এক হনুমানের কাছে মার খেল এক চাষির বউ। সে জমিতে বসে নিড়ানির কাজ করছিল। এমন সময় দুপাশ থেকে দুটো হনুমান এসে তার জমিতে বসে রাঙাআলু গাছের পাতা খাচ্ছিল। এটা দেখে চাষি-বউয়ের খুব দয়া হলো হনুমানের প্রতি। সে ভাবল সারাদিন হনুমানের নিশ্চয়ই কিছু খাওয়া হয়নি তাই গাছের পাতা খাচ্ছে। তাই দেখে বউটির ভীষণ কষ্ট হলো। তাই সে মাটি খুঁড়ে রাঙাআলু বের করে হনুমানটিকে যেমনি দিতে গেল আর হনুমান বাবু খুশি হওয়ার জায়গায় রেগে গিয়ে তার কাঁধে বসে মাথায় চটাচট তবলা বাজানোর মতো মারতে থাকলো। মেয়েটিতো উঃ আঃ মাগো মেরে ফেললগো বলে চিৎকার করতে লাগল। সবাই ছুটে গেল কিন্তু কেউ তাকে হনুমানের কাছ থেকে ছাড়াতে পারলো না সেই সময়েই এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটে গেল।সকলে দেখল আরেকটি হনুমান যে দূরে বসে পাতা খাচ্ছিল সে তখন একলাফে ঘাড়ে বসে থাকা হনুমানটিকে ঠেলে নিচে নামালো। তারপর দুজনের মধ্যে ধাক্কা ধাক্কি চলতে লাগলো। ওদের এই কাণ্ড দেখে মনে হলো দ্বিতীয় হনুমানটি বোঝাতে চাইছে প্রথম হনুমানটিকে, যে তোর উপকার করলো তাকেই তুই মারছিস! বিবেক বোধ তোর জেগে উঠলো না? উপকারীর উপকার স্বীকার করলি না? দেখে মনে হয় যেন কতরকম প্রশ্ন হনুমানটির মনে বাসা বেঁধেছে।

সত্যি কথা বলতে তাদের ভাষাতো আর বোঝা যায় না কিন্তু তাদের আচার ব্যবহার দেখে অনেককিছু ভাবা যায় তারা কি বলতে চাইছে বা বোঝাতে চাইছে।তাই ধারণা বশত মনে হলো, দ্বিতীয় হনুমানটি বুঝতে পেরেছে যে প্রথম হনুমানটি বউটিকে মেরে ভুল করেছে তাই বোধহয় সে তাকে ধাক্কা দিয়ে ঠেলে নামিয়ে চাষির বউকে প্রথম হনুমানের হাত থেকে বাঁচালো।

আর চাষির বউ ধীরে ধীরে পিছপা হতে হতে বাড়ি ফিরে এলো। তার চরম এক অভিজ্ঞতা হলো। না জেনে শুনে সে আর কারো বিপদে এগিয়ে যাবে না বলে মনে মনে এই ঠিক করে নিল। সে বুঝল এক জন্তু তাকে চরম শিক্ষা দিল। আগ বাড়িয়ে কখনও কারো উপকার করা উচিত নয়। তাহলে নিজেকেই বিপদে পড়তে হবে।

আর সকলেই সত্য ঘটনার সম্মুখীন হয়ে বুঝলো পশুদেরও বিবেকবোধ আছে। সেও বুঝতে পারে কে তার ভালো চায় আর কে ক্ষতি চায়।।

অতীত বড়ো বেদনার [Bengali Story]

জীবনে চলার পথ যে ভীষণ কঠিন তা উপলব্ধি করল মুন নিজের জীবন দিয়ে। সে বুঝতে পারল জীবনে কেউ কোনোদিনও কারও নিজের হয়না। কারোর না কারোর সাথে নিজের মানুষ কে ভাগ করে নিতে হয়।আর অতীতকেও কখনও ভোলা যায় না।

ভাস্করের সাথে একদিন হঠাৎ করে মুনের দেখা হয়ে গেলো। মুন কখনও ভাবতে পারেনি তার অতীত তার সামনে এসে কখনও দাঁড়াবে। কারণ মুন জানে সে ভাস্করকে ভালোবাসে আর ভাস্করও তাকে ভীষণ ভালোবাসে কিন্তু কেউ কাউকে বলতে পারে না।তবে ভাস্করের ব্যবহারে মুন অবাক হয়ে যেতো। সে ভাবত নিশ্চয়ই ভাস্কর তাকে ভালোবাসে। হঠাৎই তার এই ভাবনা ভুল হয়ে গেলো।ভাস্করের বিয়ে ঠিক হয়ে গেল।এদিকে মুন রোজ অপেক্ষায় থাকে ভাস্কর তাকে নিশ্চয়ই মনের কথা বলবে।কিন্তু দিন চলে যায় কেউ কাউকে মনের কথা বলতে পারছে না। এদিকে মুনের বাবা মুনের বিয়ে দিয়ে দিলেন অন্য জায়গায়। মুনের মনে মনে রাগ হলো ভাস্করের উপর ।কিন্তু কিছু করার নেই কারণ কেউই কাউকে কোনোদিনও মনের কথা বলতে পারেনি তাই মনে মনে অস্থির হয়ে উঠলো। মনে জমা হতে লাগল কতো রাগ আর অভিমান। মুন ভাবল কোনো দিনও তাদের আর দেখা হবে না।দিনের পর দিন চোখের আড়ালে থাকলে উভয় উভয়কে নিশ্চয়ই ভুলে যাবে এটাই ভেবেছিল মুন। কিন্তু হঠাৎ তার এই ভুল ভাবনা ভেঙে গেল। বহুদিন পর যখন তাদের দেখা হলো, অনায়াসেই অতীতের কথা সব যেন উজাড় হয়ে গেল উভয়ের কাছে। কতো অভিমান অনুরাগে পরিণত হলো। ভাস্কর জানালো আজও সে মুনকেই ভালোবাসে। আজও সে পূর্ণিমা রাতে মুনকে খুঁজে বেড়ায় আর তার আলোয় আলোকিত করতে চায়। এই কথা শুনে মুন ভাবে পৃথিবীতে তার থেকে সুখী বোধহয় আর কেউ নেই।সুখের জোয়ারে ভেসে যায় মুনের জীবন। সে ভাবে নাইবা পেলাম ভাস্করকে কাছে কিন্তু তার তো মনের আলোয় আলোকিত করতে পারলাম নিজেকে।সেই আলোয় ডুব দেবো আর খুঁজে নেব মিষ্টি আলোর ছোঁয়া। মুনের কাছে কামের মোহ দূর করে প্রেমাবেশে ভেসে যাওয়াই হলো অনুরাগ। কারণ কামে আছে রাগ, ঘৃণা, লজ্জা, ভয় আর প্রেমে আছে শুধুই ভালোবাসা আর শান্তি।মুন যেন অচিন সাগরে ভেসে গেল।

হঠাৎই শুনতে পেলো বাবা ও বাবা যাবে যে! মুনের ধ্যান ভেঙে গেল। কিছুক্ষণ অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলো ভাস্করের দুই মেয়ের দিকে। তারপর ভাস্করের কাছে জানতে চাইল তার ছেলে মেয়ে কজন। ভাস্কর উত্তরে বলল দুই মেয়ে এক ছেলে। মুন খানিক চুপ থেকে বলল বাঃ তুমি ভীষণ সুখী ভাস্কর। এইরকম ভাবেই সুখে থাকো আনন্দে থাকো। ভাস্কর তার বিষয়ে জানতে চাইলে বলে আমি একা ভীষণ একা। আমার স্বামী দ্বিতীয়বার বিয়ে করে সুখে সংসার করছেন। আমি অনাথ শিশুদের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছি।আমি এখন শত সন্তানের মা। তাদেরকে নিয়ে আমার জীবন।যাইহোক তুমি ভালো আছ দেখে ভীষণ খুশি হলাম গো । আজ আসি। বন্ধু, ভালো থেকো। বিদায় বন্ধু বিদায়।চোখের জল লুকিয়ে মুন সেখান থেকে চলে যায়। আর ভাবে অতীত বড়ো বেদনার।।

ভয় [Bengali Story]

একটি তিমিরে স্বপ্ন দেখেছিলো মিতা । সে নাকি স্বর্গের সুখে অন্তহীন গহীনে ভেসে যাচ্ছিল। অনেক তারা যেন এক হয়ে তাকে আলো দেখাচ্ছিল। সে ভেবেছিল এই সংসারে তার মতো সুখী বোধহয় আর কেউ নেই। নাইবা থাকলো অর্থের চাকচিক্য। নাইবা থাকলো সোনাদানা। উন্মুক্ত আলোতো তার সাথে আছে। সে সেই আলোতেই করবে স্নান দুচোখে দেখবে নতুন নতুন রং। মন জুড়ে শুধু থাকবে তার কিছু ভালো লাগা। যে ভালো লাগা জিনিসগুলো শুধু তাকে ভাবাবে যে সে বেঁচে আছে ,ভালো তো আছে। মন জুড়ে আছে শুধুই এক উজ্জ্বল আলো। তার চারপাশে সে আর কাউকে চায়না। চায় শুধু তার মনের মতো এক মানুষ যে তাকে ঐ উজ্জ্বল আলোয় পথ দেখাবে। পাশে থেকে বলবে এগিয়ে যাও ঐ অনেক দূর আলো দেখা যায়।ঐ লক্ষ্যে পৌঁছতে হবে তোমায়।

হঠাৎ একটা দমকা হাওয়ায় যেন মিতার চোখের সামনেটা ঝাপসা হয়ে এলো সে তার চারদিকে শুধু অন্ধকার আর অন্ধকার দেখতে লাগলো। সে চিৎকার করে খুঁজতে থাকলো তার মনের মানুষ কে। অনবরত বলতে থাকলো তুমি কোথায়? কেন দেখতে পাচ্ছি না আমি তোমায়? অতো আলো কোথায় গেলো? চারদিকে কেন এতো অন্ধকার? আর্তনাদ করে কেঁদে উঠলো। ভয়ে তার গায়ে কাঁটা দিলো। সে তার মনের মানুষ কে খুঁজে চললো। কিন্তু দেখতে পেলো না। এক নিমেষেই তার ভয়ে ঘুম ভেঙে গেলো। ঘুম থেকে উঠে দেখলো সকাল হয়ে গেছে। সূর্যের আলোয় চারদিক ঝলমল করছে। সংসারের সব কাজ তাকে যেন হাত বাড়িয়ে ডাকছে।

সে নিজেকে তখনও পর্যন্ত দুঃস্বপ্নের ঘোর অন্ধকার থেকে বের করে আনতে পারছে না। ভাবছে এটাকি সত্যি স্বপ্ন! নাকি তার জীবনে হয়তো ভয়ংকর দুর্ঘটনা ঘটতে চলেছে। সূর্যের রক্তিম আলো যেন তার কাছে দাবদাহের মতো লাগছে। মনে হচ্ছে কেন সুন্দর স্বপ্নের মাঝে দুঃস্বপ্নগুলো এসে কষ্ট দেয়। কেন হারিয়ে ফেলার ভয় গুলো তাকে সবসময় তাড়িয়ে বেড়ায়। সে জীবনে হয়তো অনেক আপনজনকে হারিয়েছে বলেই তার এতো ভয়। তাই যাকে ভীষণ ভালোবাসে তাকে হারিয়ে ফেলার ভয় সবসময় তাকে তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায়। তাই যতো কষ্টই হোক বেঁচে থাকতে হলে তাকে সবসময় ভয় নিয়েই বেঁচে থাকতে হবে আর এটাই নিয়তি। এটাই হয়তো মিতার ভাগ্যের লিখন।

স্বপ্ন [Bengali Story]

একদিন রাতে স্বপ্ন দেখে সহেলী সে তার মনের মতো যেমন মানুষ খুঁজে ছিল সেই মানুষ তার চোখের সামনে এসে হাজির।কাছে এসে হাত বাড়িয়ে বলল ডার্লিং কেমন আছো। ভালো আছো তো? কেন এতো খোঁজো আমায় ? তুমি জানো না কি আমি ভীষণ ব্যস্ত মানুষ? তবুও তোমার ডাক এড়াতে না পেরে কাজের ফাঁকে ছুটে এসেছি তোমার কাছে। বলো আমি তোমার জন্য কি করতে পারি সোনামণি।
সহেলী বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে তার দিকে চেয়ে থাকে ফ্যাল ফ্যাল করে। কথার উত্তর দেবার মতো ভাষা হারিয়ে ফেলে। কারণ সে তার মনের মণিকোঠায় শুধু তার মনের মানুষের স্বপ্ন এঁকেছিল।সে কেমন হতে পারে ভেবেছিলো। হঠাৎ করে স্বপ্নের মাঝে তার সাথে দেখা হয়ে যাবে এটা সহেলী কখনও ভাবেনি। তাই ব্যস্ত মানুষ যে সবসময় কাজে ব্যস্ত থেকে তার খোঁজ নিচ্ছে। তাকে এড়িয়ে যেতে পারছে না শুনে আনন্দে আত্মহারা হয়ে গিয়েছিল। সহেলী ভেবেছিলো কিছু সময়ের জন্য হলেও সে স্বর্গ সুখের অনুভূতি লাভ করলো। তাই সে প্রাণসখার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে রইলো।

আবার উল্টো দিক থেকে প্রশ্ন এলো কিগো কিছু বলছো না যে। কেন ডেকেছিলে বলো?আমার অনেক কাজ দাঁড়ালে হবে না।

সহেলী উত্তরে বলল আমি অনেক দিন দেখিনি তোমায়।তোমাকে দেখতে বড্ড ইচ্ছে হচ্ছিল তাই।যে কাজে তুমি নিজেকে উৎসর্গ করেছো সেই কাজ অতি দায়িত্ব পূর্ণ কাজ। সেই কাজে অনেকের জীবন মরণ সমস্যা থাকে। তুমি মন দিয়ে সেই কাজ করো। শুধু এটুকু বলবো নিজের খেয়াল রেখো। ভালো থেকো। জানো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এক জায়গায় বলেছিলেন – “ব্যস্ত মানুষেরা নিজের ইচ্ছে ছাড়া কথা বলে না। আর অহংকারী মানুষেরা স্বার্থ ছাড়া কথা বলে না। এদের থেকে দূরে থাকাই শ্রেয়। কষ্ট হতে রক্ষা পাবে”।

আজ দেখছি কথাগুলো ভীষণ বাস্তব। আমি কোনোদিনও অহংকারী মানুষদের পছন্দ করিনি। কিন্তু কর্তব্য পরায়ণ ব্যস্ত মানুষদের ভীষণ পছন্দ করি। ভালোবাসি। বিশেষ করে যাঁরা অন্যের জন্য ভাবেন আর কাজ করেন তাদেরকে আমার ভীষণ ভালো লাগে। তবে মাঝে মধ্যে আপনজনদেরও খোঁজ নিতে হয়।তারা কেমন আছে জানতে হয় তবেই সব সম্পর্ক সুন্দর থাকে ও চিরস্থায়ী হয় । বলতে বলতেই দুচোখ বেয়ে অঝোর ধারায় জল নেমে আসে। কান্নায় ভেঙে পড়ে সহেলী।

প্রত্যুত্তরে তার প্রিয়তম তাকে জানায় তাদের জীবন দেশ ও দশের জন্য উৎসর্গীকৃত। আর সব কিছু জেনেই তুমি তাকে ভালোবেসেছো তাই ভেঙে পড়ো না প্রিয়া। আমার গৌরব তোমার গৌরব। আমার গর্ব তোমার গর্ব সোনা। ভালো থেকো সুস্থ থেকো। নিজের খেয়াল রেখো। আমি আসছি। আমার ফিরে আসার পথ চেয়ে থেকো। আমি ঠিক ফিরে আসবো।

এই কথা শুনতে শুনতে আঁধার হয়ে যায় চারিদিক। সহেলী ডাকতে থাকে কোথায় গেলে তুমি? কোথায়? দেখতে পাচ্ছি না কেন? সাড়া দাও। হাউহাউ করে কেঁদে ওঠে সহেলী। পাশেই ঘুমিয়ে ছিল তার ছেলে ও মেয়ে। তারা মায়ের কান্না শুনে ঘুম থেকে উঠে পড়ে এবং মাকে জাগিয়ে দেয়।
সহেলীর স্বপ্ন ভেঙে যায়। কিন্তু নিজেকে ঠিক রাখতে পারে না। ছুটে রাতের অন্ধকারে বাইরে বেরিয়ে যায় কিন্তু কাউকে দেখতে পায় না। ঘরে এসে হাপুস নয়নে কাঁদতে থাকে। মায়ের কান্না দেখে ছেলে মেয়েও মাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে। স্বপ্নটা যেন স্বপ্ন ছিল না তার কাছে। যেন সবটাই তার সত্যি বলে মনে হয়েছিল। তাই সে এতো কষ্ট পাচ্ছিলো।

বিপাশা চক্রবর্তী | Bipasha Chakraborty

New Bengali Poetry 2023 | তৌহিদুল ইসলাম | কবিতাগুচ্ছ

New Bengali Poetry 2023 | প্রতিম ঘোষ | কবিতাগুচ্ছ

New Bengali Poetry 2023 | বারিদ বরন গুপ্ত | কবিতাগুচ্ছ

New Bengali Poetry 2023 | সুকান্ত মজুমদার | কবিতাগুচ্ছ

bengali story | short bengali story analysis | short bengali story characteristics | short bengali story competition | short bengali story definition | Bengali Story Analysis | Best Bengali Story | Top Bengali Story | World Bengali Story | International Bengali Story | short bengali story english | bengali story competitions for students | bengali story competitions ireland | writing competitions ireland | bengali story writing practice | bengali story writing topics | trending topics for article writing 2022 | what is bengali story writing | bengali story trends 2022 | content writing topics 2022 | Bangla Prabandha | Probondho | Definite Article | Article Writer | Shabdodweep bengali story | Galpoguccha | Galpo | Bangla Galpo | Bengali Story | Bengali Article | Shabdodweep Writer | Shabdodweep | Shabdodweep Founder

Leave a Comment