Top Best Bengali Poetry 2023 | সুশান্ত সেন | কবিতাগুচ্ছ

সুশান্ত সেন – সূচিপত্র [Bengali Poetry]
সম্পর্ক – সুশান্ত সেন
সব কিছু শেষ হয়ে গেলে
কি হাতে হাত রাখা
চোখে চোখ রাখা থেকে যায় !
গোধূলির রঙে রাঙা হয়ে থাকে কি আকাশ
সূর্যাস্ত হলেও !
হাতে হাত রাখা সহজ নয় —
বলেছিলেন কবি।
সেই দুরূহ পথেই চলে চলে মধ্যাহ্ন পেরিয়ে
যখন ঝরাপাতার ঢেউ বেলাভূমিতে আছড়ে পড়লো
তার অভিঘাতেই জেগে উঠে বসলো প্রেম।
সম্পর্ক তৈরি হলো দুজনের সঙ্গে দুজনার।
হাতের পরে রাখা হলো হাত।
যাই – সুশান্ত সেন
কোথায় যাই !
যাওয়ার জায়গা খুঁজে বেড়াই
ধানসিঁড়ির মাঠে
মহুয়ার বনে
শাল সেগুনের ছায়ায়।
মনের মধ্যে ডাকে সমুদ্র
ডাকে সাড়া পাঠায় সামুদ্রিক বক।
সেই ডাক শুনতে শুনতে বিহ্বল হই
অজানার আহ্বানে হই উতলা।
চেষ্টা করি পা ফেলে বাইরে আসতে।
পা শক্তিহীন।
বিজন জীবনে অর্থহীন সাবধানতা নিয়ে
কাটে পরমায়ু ।
অরণ্য – সুশান্ত সেন
অরণ্য তোমায় নিয়ে কত কথা
কত অনুভব। তবু দিন শেষে দেখি
ভালোবাসা নেই।
তুমি মৃত হও, পড়ে থাকে শব।
নির্মম নিধন চলে
আমাজনও জ্বলন্ত আগুন।
আমাদের লোভ রিক্ত করে তার বুক
শুরু হয় খান্ডবদাহন
শুষে শুষে শেষ করি অরণ্যের গুণ ।
সংশয় – সুশান্ত সেন
প্রতিটি পদক্ষেপে এক সংশয়
ঠিক না বেঠিক, সেই নিয়ে ভাবনা
ভাবনার সেতু বেয়ে অতঃপর এক
প্রশ্নবোধক অন্ধকারের সামনে চলে যাওয়া
যার সামনে বন্ধু বলে ওঠে —
কোথায় যাচ্ছিস ?
যেন যাওয়া না যাওয়া আমারই হাতে।
আজ পর্যন্ত ত
নিজের ইচ্ছায় কোথাও যেতে পারি না
প্রহরীরা দ্বার এর কাছে ঠিক সময়
ঠিকই দাঁড়িয়ে থাকে।
পা ফেলতে সংশয়
কথা বলতে সংশয়
কাছে চলে আসতে সংশয়
ইত্যাদি নানান সংশয় চব্বিশ ঘণ্টাই
চারপাশ ঘিরে বসে থাকে।
আমি পাতা ঝরা একটা গাছ হয়ে যাই।
রামমোহন – সুশান্ত সেন
প্রোজ্জ্বল হয়ে শিখা
উজ্জ্বল করে
চারিধার
জ্ঞান মধু বার্তা
জ্বলে ওঠে
বার বার।
মথিত সতী দুঃখ
নিগড় দিল
ভেঙ্গে
সরব প্রতিবাদ
দিল আকাশ
রেঙ্গে।
বাচিল কত নারী
পরিবর্তিত হল
সমাজ
দ্বি – সার্ধ শতাব্দীতে
বন্দনা করি
আজ।
আওয়াজ [Bengali Poetry]
চারপাশে বিস্তর আওয়াজ
শুনতে শুনতে বুঝতে বুঝতে
জীবন – সময় ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হয়
চারপাশে মেঘ জমে থাকে
মেঘ ভেদ কারি দৃষ্টি না থাকলে
পর্বত পৃষ্ঠ থেকে পতন ও মূর্ছা।
আওয়াজের এমন ধ্বংসকারী
ক্ষমতায় পর্যুদস্ত হই।
বিস্তর অন্যায় করার পরেও
বিস্তর আওয়াজে সব কিছু চাপা পড়ে যায়।
জন্ম [Bengali Poetry]
যাকে জন্ম দিতে পারিনি সে কি অন্য কোথাও
জন্ম নেয়!
যে কথা বলতে পারিনি অন্য কেউ কি বলিষ্ঠ কণ্ঠে সেই কথা বলে!
যে কবিতা লিখতে পারিনি সেই কবিতা প্রত্যন্তবাসিরা আগেই লিখে গেছে।
যে গল্প লিখবো বলে ল্যাপটপ খুলে বসেছিলাম, আজ দেখলাম সেই গল্পই ছাপা হয়েছে আনন্দবাজারে।
ভাবতে ভাবতে শিখতে শিখতে সময় চলে যাচ্ছে আর কোনো কিছুই সৃষ্টি করতে বা জন্ম দিতে না পেরে হৃদয় বেদনার্ত ।
আমি ক্ষমাপ্রার্থী।
সে দিন সন্ধ্যায় [Bengali Poetry]
সে এক আশ্চর্য সন্ধ্যা
তখন বর্ষার আকাশে মেঘ আছে, বৃষ্টি নেই
মেঘের জল ভরা কালিমার ঠিক নিচেই
গোলাপি আভা ছড়িয়ে আকাশ হাসছে।
গাড়ি বারান্দার নিচে শুনতে পেলাম —
কাল আর রোজগার নেই, দোকান বন্ধ,
যেতে হবে মিটিং এ।
ডাক এসে গেছে।
জন্মে থেকেই ত শুনে আসছি
যেতে হয়, সময় হলেই যেতে হয়।
যেতে যেতে খাল বিল মোহনা পেরিয়ে, একদিন সমুদ্রের পাড়ে পৌঁছে যাওয়া,
ভাবতে থাকা — ইলিশের ঝাঁক নিয়ে ট্রলার না পৌঁছালে, মহাজনের ঋণ কি করে শোধ হবে কি করেই বা হাঁড়ি চড়বে!
শান্তি [Bengali Poetry]
শান্তি খুঁজো নাকো, শান্তি কোথাও নেই
যখনই মানুষরা একটু সভ্য হয়ে উঠলো
আর আপেল টা খেয়ে ফেললো খোসা সমেত
তখন থেকেই আমি আমি তুমি তুমি জপ করতে
করতে
শান্তি কে বিসর্জন দেওয়া হলো আস্তাকুড়ে।
সেই থেকে প্রজায় প্রজায় রাজায় রাজায় কত
যুদ্ধ কত পাতার পর পাতা মহাভারত
রচনা হয়ে গেল, তার খবর কে রাখে!
অনেক দেরি হয়ে গেল,
বিষ বাষ্পে পৃথিবী ভরিয়ে দিয়েছি,
রোপণ করছি অরাজকতা,
বিদায় নেবার সময় তো এসে গেছে।
না [Bengali Poetry]
না চেয়েছি মণিমুক্তা না চেয়েছি যশ
না চেয়েছি সম্পত্তি
তবু সভ্যতা বেশ পাঁকে পাঁকে জড়িয়ে ফেললে ত
আমাদের।
সাপের মতো হিস্ হিস্ শব্দ
বা চাবুকের সিপ সিপানি কানের ভেতর
সব সময়ই বাজতে থাকলো ।
ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি
দুমুঠো অন্ন ছাড়া আর তো কিছু চাইনি,
এই ছোট্ট কথাটা কেউ বুঝলো না ।
কেন কে জানে!!
কেন যে কোনো দেশই নিজের হলো না
এক দেশ থেকে অন্য দেশে পালাতে থাকলাম
সর্বদা — ডি ভোটার হয়ে!!
মন [Bengali Poetry]
অশান্ত এ মনটা কেমন খেয়ালী
কি করবে ভাবে বসে সে খালি।
প্রজাপতির পাখায় ভাসা রোদ্দুরে
মেঘটা ভাসে আকাশ পথে ক’দ্দুরে,
শাল গাছটার মাথায় দেখি চিল বসে
হলদে পাতা হাওয়ার দোলায় যায় খসে।
রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে কারা ত্রস্ত চোখ
হন্ত দন্ত চলছে দেখি বেবাক লোক,
এই সকালে আমার কোনো সঙ্গী নেই
মনটা উদাস কখন হারায় পায়না খেই।
মন পবনের এমন হাওয়া সঠিক নয়
ক্ষুব্ধ হয়ে দেখতে থাকি অবক্ষয়।
তোমরা এখন আমার কাছে আসবে কি
নতুন করে আমায় ভালোবাসবে কি!
সত্যি [Bengali Poetry]
সত্যি করে বলতে গেলে বলতে হয়
আমরা ভূমিকম্পের ফল্ট লাইন এর ওপর বসে আছি
সর্বদা মনে ভয় নিয়ে।
এই বুঝি মাটি কেঁপে উঠলো
আর হুড়মুড় করে সব বাড়ি ঘর ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়ল।
তখন ত পাখি হয়ে উড়ে যেতে হবে
দিগন্ত ছাড়িয়ে অজানা যাত্রায়।
আজ খবরের কাগজে পড়লাম
কোলকাতা বসে আছে ভূমিকম্পের
ফল্ট লাইনে।
(আমরা তো জন্ম থেকে কোলকাতায় ভূমিকম্পই দেখে আসছি, কোলকাতা ভরে আছে খানাখন্দে, কেউ সে খানাখন্দ বোজাবার চেষ্টাও করে না)
ভূমিকম্প আর আমাদের কি রোজই হচ্ছে না ?
আর কত সত্যি কথা বলবো, বাবুমশাইরা !
ধ্বংস [Bengali Poetry]
ধ্বংসের ভেতর থেকে মুক্তি নেই, কারণ এখন আমাদের এই বসুন্ধরা, কু-জনে কু-জনে ভরে আছে।
অখ্যাতির বোঝা নিয়ে সমুদ্র উত্তাল হয়ে গ্রাস করে বালিয়াড়িগুলি, বৃন্তচ্যুত হয়ে পড়ে শেফালী অনেক, বড়বাবু এসে গেছে।
আশা কিছু মেই, ভরসা ও নেই, মন্দির গাত্র অলঙ্কারকারী খনকেরা নিয়েছে বিদায়, শুধু দেখি কোনারক জেগে আছে বালিয়াড়ি জুড়ে এখনো সতেজ ।
কোনদিন ধ্বংস হয়ে যাবে সে যে, কেউ তো জানে না, বেমিহান বুদ্ধের মতন। আকাশের চিলগুলি ঝাঁপ দেয় ধৈর্য সহকারে ।
ধ্বংসের অপেক্ষায় আছি আমরা।
জাদুকর [Bengali Poetry]
হে মহান জাদুকর, জাদু দিয়ে বিভ্রম ঘটালে সারাটা জীবন ধরে। কোনো দিনও বোধগম্য হল না সে অপার রহস্য, শূন্য খাঁচা থেকে তুমি পায়রা উড়ালে স্টেজ জুড়ে, তখন আশ্চর্য চোখে দেখে নিতে হল জাদু দন্ড থেকে ভাসা মিশর রমণী। অদৃশ্য হওয়ায় পর পুনরায় দৃশ্যমান হও তুমি দর্শক সমীপে।
এই খেলা দেখে দেখে জীবন কাটিয়ে এসে একদিন উপলব্ধি হল তুমি নেই, জাদু নেই, প্রেক্ষাগৃহ নেই, নেই কোনো উচ্ছ্বাস ভরা দর্শকের দল; কেবল অনন্ত বিশ্বে ভরে আছে সুষুপ্ত সময় প্রবাহিত হয়ে আছে যুগ থেকে যুগে।
জাদুকর, তুমি খালি বিভ্রম ঘটালে।
কোন কালো বামনের মাঝে বসে তুমি এ খেলা দেখাও!
খেয়ালী [Bengali Poetry]
রাস্তা দিয়ে চলতে গিয়ে বস্তা দিয়ে মেপে
ক্ষেপে উঠলো জগাই মামা প্রথম পদক্ষেপে
সারা রাস্তা নোংরা বেজায় আস্তাকুড়ে ভরা
দেখার কোনো লোক নেইরে, সবাই ধামাধরা।
নিজেই তিনি নিলেন হাতে ঝাড়ু দেবার ঝাঁটা
রাস্তা জোড়া ময়লা তুলে হলেন পরিত্রাতা।
এমনি করে সবাই যদি ক্ষেপে হঠাৎ ওঠে
তার ই সাথে গন্ডা খানেক পাড়াপড়শি জোটে
কলকাতার রাস্তা গুলো থাকবে পরিষ্কার
নোংরা ভরা, আস্তাকুঁড়, বলবে না কেউ আর।
সেই আশাতে ছন্দ বানাই পূর্ণিমার এই রাতে
মধুর সুবাস বাতাস বইছে, বসবে এসো ছাদে।
বলুক [Bengali Poetry]
যে যাই বলুক, চেষ্টা তো করতে হবে
সঠিক পথ খুঁজে পাওয়ার
চেষ্টা তো করতেই হবে।
চেষ্টা তো করতে হবে সেই পথে চলার
যতই না সেই পথ হোক অচেনা আর খানা খন্ডে ভরা বা থাকুক না পদে পদে ভুতের ভয়।
যে যাই বলুক, চলতে চলতে একদিন
ঠিকই খুঁজে পাওয়া যাবে মনুষ্য জন্মের ঈপ্সিত লক্ষ্য, কেন জন্ম, কেন মানব জীবনই শ্রেষ্ঠতম ?
এই ভাবনায় পথ চলতে চলতে পা ক্ষতবিক্ষত,
পাদুকা ছিঁড়ে খুঁড়ে একসা।
তবু চলতে থাকি, বসি, বিশ্রাম নিয়ে আবার চলতে থাকি, চলতেই থাকি।
মনের কথা [Bengali Poetry]
মনের কথা সহজ করে বলতে পারা চাই
কেমন করে বলব সেটাই ভাবছি সর্বদাই।
বাঁশ বাগানের ওপর যখন চন্দ্রমা যায় দেখা
নম্র আলোর আজব দ্যুতি আকাশ ভরে লেখা
সহজ সুরে গান ত শেখায় ভোরের পাখির দল
বৃষ্টি পড়ে পুকুর জলে হৃদয় টলমল,
মাটির গানে বাউল জাগায় সহজ আলাপন
নিত্য নতুন গানের সুরে ভরায় সবার মন।
এদের কাছেই জানতে হবে সহজ হতে শিখতে
সহজ করে ভাবলে, তবেই সহজ হবে লিখতে।
নদী [Bengali Poetry]
কিছু কিছু নদী স্বপ্নের ভেতরে ঢুকে যায়
প্রবাহিত হয় তারা দিকগুলি ভেঙ্গে চুরে সীমানার বাঁধা নাহি মেনে।
এমন নদীর কাছে চলে যাওয়া মিশে থাকা ভালো ও সুন্দর, নিয়ত দিগন্ত দেখা চলতে চলতেই,
অন্য কোনো নদীর বুকেই মিশে যাবে বলে পথ চলা।
অথবা কখনও বিস্তৃত বিস্তৃততর হয়ে বৃষ্টির জল নিয়ে দুকূল ছাপিয়ে বন্যা নিয়ে ভেসে চলা জনপদ গুলি মাড়িয়ে মাড়িয়ে কোন এক মোহনায় এসে লীন হওয়া সাগরের বুকে।
নদী গুলি তাই সতত মনের ভেতরে রেখে দিও একান্ত গোপনে নরম তুলোর মতো যত্ন করে অতি সাবধানে জলহারা হয়ে যেন রুদ্ধ হয়ে যায় নাকো কোনদিন।
কিছু কিছু নদী স্বপ্নের ভেতরে ঢুকে যায়। তাহাদের সাবধানে রাখো।
যদি [Bengali Poetry]
যদি খাপছাড়া ভাবে ঘুরত পৃথিবী
মাঝে মাঝে চব্বিশ ঘণ্টাই একটা দিন
তাহলে তো বায়ু চাপ বদলে গিয়ে
ঝড় হয়ে উঠত উত্তাল।
বিদায় নিত বসন্ত
আর কবিদের বকবকানি।
অতি বড় দিনটা নিয়ে করবে কি
ভেবে অস্থির হয়ে
পাশ ফিরে শুয়ে পড়ত
মহাকাশ।
ব্যাঙরা মৃত হত ডোবার জল শুকিয়ে।
তুমি [Bengali Poetry]
তুমি অনেক কিছু দেখেছো অনেক কিছু জান
তাই তোমাকে বর্জন করাই শ্রেয়
নাহলে সবাই জানতে চাইবে — কে ও ? কে ও ?
শুকিয়ে যাচ্ছে জলাশয়
সরে যায় মেঘ
তোমার দুর্দশায় জাগে না আবেগ।
দৌড়ে দৌড়ে ছুটছে স্বাধীনতা
দৌড়ে দৌড়ে ছুটছে মানুষজন
অর্জন ও বর্জনের এক আশ্চর্য
সমাপতন।
কে যে থেকে যাবে শেষকালে ?
কালবামনই জানে সভ্যতার অন্তিম মোহ জালে।
চেয়ার [Bengali Poetry]
ওই চেয়ারেই তিনি বসতেন
সারাদিন ধরে নানা সৃষ্টিশীল কাজে রত থাকতেন
চলচ্চিত্র নতুন রূপ পেল তাঁর হাতে
গ্রাফিক ডিজাইনও
মুগ্ধ হয়ে পড়তাম তাঁর কিশোর ও কল্পবিজ্ঞানের কাহিনী
সৃষ্টির অমোঘ বেদনায় মূর্ত হত
তুলির টান হাতের লেখা
ক্যামেরার জাদু।
এখনও সেই চেয়ার টি বাতাসে দোল খাচ্ছে
আগন্তুক এর অপেক্ষায়,
যেন তিনি তিরিশ বছর নানা দেশে দেশে কাটিয়ে
ফিরে আসবেন,
মৃদু হাসি হেসে বসবেন,
বলবেন – কূপমণ্ডূক হয়ে থেকো না।
নব প্রভাত [Bengali Poetry]
নব – প্রভাতে জাগিয়া উঠিলাম
দেখিলাম অনন্ত আকাশে
অগণিত আলোকিত মহাজাগতিক বস্তু
ভীম বেগে চক্রাকারে ছুটিয়া চলিতেছে
অপরিমিত সেই বেগ
ঘূর্ণনে ঘূর্ণনে গ্যাস পিণ্ড বা বস্তু পিণ্ড হইতে
কিছু কিছু গ্যাস বা বস্তু পিণ্ড
ছিটকাইয়া ছিটকাইয়া পড়িতেছে
আপন মহিমায় ও তেজে
চারিপাশ নিনাদিত।
তারই মধ্যে
কোন জাদু মন্ত্র বলে
ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র এই মানুষ
বিদ্যমান ?
এই ভাবনায় বেশ শিহরিত হয়ে উঠলাম।
হরিদাস পাল [Bengali Poetry]
হরিদাস পাল বলে শোনরে রাখাল
গাছ থেকে পড়লো কি দুটো পাকা তাল ?
তাহলে কিনবো কি দু লিটার দুধ
তার সাথে মেলাবো কি কামিনীর খুদ
তাল ক্ষীর খেলে পরে দিল হবে খুশ
সারা ঘর গন্ধেতে হবে ভূস ভূস।
তার সাথে বানাবে কি ছোট ছোট বড়া
পারিনা থাকতে আর নিয়ে এস ত্বরা।
হরিদের উঠানেতে সারাটা বিকাল
এসে বসে তাল ছানে সুবোধ রাখাল ।
জানি না [Bengali Poetry]
আমি জানি না
আমি কি করতে চেয়েছিলাম
আমি জানি
একটা যাঁতাকলে জুতে গিয়ে
বেঁচে থাকার জন্য বা শুধু অস্তিত্বের তাড়নায়
বা সামাজিক দায়িত্ব বোধ নিয়ে
সকালে সন্ধ্যায় ছুটে বেড়ালাম।
আমি সবুজ ঘাস চিনি নি
হলদে রোদ্দুর বা জলহারা মেঘ দেখিনি
কেবল হাতে হাত রেখেছিলাম যুদ্ধক্ষেত্রে।
গানের সুরে সুরে একদিন দেখি
যুদ্ধক্ষেত্রে আমি একা
আমার হাতে নতুন রকম
তীর ও ধনুক,
বার বার তারা আমাকে ডাকে
মন্ত্রমুগ্ধ আমি এগিয়ে চলেছি
চারপাশে তীর ছুঁড়তে ছুঁড়তে।
আমি জানি না আমি করতে চেয়েছিলাম।
কাছে দূরে [Bengali Poetry]
যখন কাছে থাকে
তখন অন্য কাজে মেতে থাকি
যেন সেই কাজ গুলো না করলেই নয়,
সময় দিই না তাকে।
এখন যখন দূরে
মনে হয় কত কথা বলা হল না,
এখন মেঘদূত কোথায়
বলে আক্ষেপ করি না।
কারণ জানি
হোয়াটস-অ্যাপে যখন ইচ্ছা
কথা বলতে পারি।
খালি বুকে টেনে নিতে
বা জড়িয়ে ধরতে পারি না ।
অক্টোপাস [Bengali Poetry]
অক্টোপাস কি পাকে পাকে জড়িয়ে ধরে সর্বদা
ক্ষুধা ছাড়াই !
সাপ ই বা কখন জড়িয়ে ধরে ?
কি ভাবে সেই সময় তারা ?
সেই জড়িয়ে ধরা সময়ে ?
এদিকে ত জীবনের যাঁতাকলে
কুম্ভীপাকে জড়িয়ে থাকি সর্বদা
বিরামহীন এক স্রোতে
বাজতে থাকে কাঁড়া নাকাড়া
যুদ্ধের পর যুদ্ধ জয় করে যেতে যেতে
এক সময় দিনান্ত দেখা দেয়,
তখন বলে উঠি কি বিচিত্র এই দেশ
কি মায়াময় এই জীবন।
জড়িয়ে জড়িয়ে থাকা সর্বদা।
রুমাল [Bengali Poetry]
রঙিন রুমালে আটকে রাখি মুখ
খেয়াল নেই খুলে ফেলা দরকার
সারাটা জীবন এই মুখ নিয়েই
হারিয়ে যাই ও হই জেরবার।
লুকিয়ে লুকিয়ে মুখটা এখন দেখি
অসম্ভব এক ভেলকি দেখাচ্ছি
লোকরা ভাবছে আহা কি আদর্শ
মনের ভেতর আমি খাবি খাচ্ছি।
মুখ ও রুমাল পরস্পরের কাছে
চুপি চুপি কি সন্ধি করিয়াছে
মই আন মই টেনে আন
গাছে গাছে আম পাকিয়াছে।
শরশয্যা [Bengali Poetry]
দেখুন শিরদাঁড়ায় আর জোর নেই
তাই বারবার শুয়ে পড়ি
এপাশ ওপাশ করি
কিন্তু শান্তিতে শুয়ে থাকতে পারি না।
মনে হয় যেন শরশয্যায় শুয়ে আছি।
পিতামহ দক্ষিণায়নে সূর্য ঢলে পড়া পর্যন্ত
সহ্য করেছিলেন সেই নিদারুণ বেদনা কি ভাবে কে জানে !
এক এক মুহূর্ত মনে হচ্ছে যুগের পর যুগ, বছরের পর বছর – যেন অনন্ত কাল।
কোন অর্জুন – বান ধরিত্রী ভেদ করে সুধারস নিয়ে আসবে তার অপেক্ষায় সময় কাটাই।
শিরদাঁড়ায় আমার কোনো জোর নেই।
পারি না [Bengali Poetry]
পারিনা তো আমি সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে পড়তে
পারিনা তো আমি সকালে কুপিয়ে মাঠটা সমান করতে।
পারিনা তো আমি হাত জাল দিয়ে পুকুরেতে মাছ ধরতে
পারিনা তো আমি সাইকেলে চেপে এপাড়া ওপাড়া করতে।
পারিনা চালাতে মোটর গাড়িটি পারি না চালাতে বাসটা
মাইল খানেক দৌড় ও পারিনা ধরে ধরে আসে শ্বাস টা।
পারিনা ত আমি হাঁটু জল ভরা চাষের জমিটা চষতে
ধারটা বাড়াতে হাতের কাস্তে পারিনা পাথরে ঘসতে।
না পারার কথা বাড়তেই থাকে জীবনটা হলো ব্যর্থ
সারাটা সমাজ বলতেই থাকে আমি এক অপদার্থ।
প্রদীপ [Bengali Poetry]
গঙ্গায় তুমি প্রদীপ ভাসিয়ে ছিলে
হরিদ্বারের গঙ্গায়
মনে আছে।
সে প্রদীপ ভাসতে ভাসতে
কোথাও কি পৌঁছেছিল ?
সেই প্রদীপে ভাসতে ভাসতে
কোথাও কি পৌঁছানো যায় ?
না বাতাসে নিভে যাবার জন্যেই
প্রদীপের জন্ম।
অনন্ত আকাশ
তোমার দিকেই চেয়ে থাকি
তোমার কাছেই চাই উত্তর
পাই না
তুমি অনন্ত জিজ্ঞাসা হয়ে
বসে থাকো
মহাকালের হৃদয়ে।
সমুদ্র তরণীটি
ভেসে যেতে থাকে।
বিরামহীন।
লেখা [Bengali Poetry]
লিখতে বসলেই লেখা যায় না।
অনেকবার খাতা আর ডটপেন নিয়ে লিখতে বসি
আকাশ পাতাল ভাবি,
কি লিখবো কেন লিখবো এই সব ভাবনায় মনটা
উথাল পাথাল করে
আর সকালের আলোতে এসে দাড়ায় নাম না জানা এক সমস্যা।
তখন খোলা জানলা দিয়ে দেখি সামনের গাছের
পাতারা নরম শীতে টুপটাপ করে ঝরে পড়ছে
আর রাস্তায় সেই পাতাগুলো অগোছালো সরে সরে যাবার শব্দ মাঘের বাতাসে মন্দ্রিত
সামনের রাস্তার ফুটপাতে স্কুলের বাসের জন্য
অপেক্ষারত ছেলেমেয়ের দল
কখন হলুদ রং এর স্কুল বাস আসবে!
সময় ত হয়ে গেছে।
মন ভালো হয়ে যায়
কিছু না কিছু লিখতে বসি।
তোমাকে [Bengali Poetry]
তোমাকে শোনাবো বলে গল্পটা মনের কুঠুরিতে
রেখে দিয়েছিলাম।
তোমাকেই শোনাবো এই ভেবে।
বাগানের ধারে উঁচু বাধানো পাটাতন টা
যেখানে বিকেলে গা ঘুরে সিন্ধ পরী হয়ে তুমি বসে থাকতে, সেইখানেই বসেছিলাম।
তখন শীত।
গাছের থেকে টুপটাপ ঝরে পড়ছে পাতারা
নতজানু রোদ্দুর সেই পাতাদের সোহাগে সোহাগে ভরিয়ে দিচ্ছে,
নরম হয়ে আসছে প্রাক সায়াহ্নের আলো,
নাম না জানা পাখিটা
ডেকে উঠছে বারবার।
গল্পটা তোমাকে শোনাবো বলে আমি বসে আছি,
আমি অপেক্ষা করছি।
শীতের হাওয়া ধেয়ে আসছে চারপাশে
মোহময় গন্ধ ছড়িয়ে।
আমি অপেক্ষায়, কখন তুমি আসবে!!
আমি [Bengali Poetry]
আমি ভণ্ড, আমি মিথ্যাবাদী
আমি এক কামুকের চোখ
বৃক্ষহীন প্রান্তরের মাঝে
আমি এক রক্ত – চোষা জোঁক।
আমি রিক্ত, আমি বুদ্ধিহীন
আমি রক্ত ঝরাই অক্লেশে
আমার স্বপ্নরা সব মৃত
প্রেতাত্মারা ঘোরে দেশে দেশে।
আমি সব অন্দর মহলে
বিজাতীয় হাসি নিয়ে ঢুকি
লুট করি সম্ভ্রম নারীর
কাঁদলেই দিই ভর্তুকি।
জ্বেলে দেই শ্মশানের আলো
ভেঙ্গে দিই ভরন্ত খামার
তুমি তো আমার এক দাস
সম্পদ তো কেবল আমার।
আমি এক রহস্য জন্মেই
মানুষ নই তো, আমি তাই
রক্তবীজ থেকে রক্তবীজে
বিষ – কণ্ঠে কেবল সাঁতরাই।।
অপেক্ষা [Bengali Poetry]
অপেক্ষা করতে করতে সময়টা
ঘুমিয়ে পড়েছে।
এখন অনেক ঝঞ্ঝাট —-
ডাক, ঘুম ভাঙ্গাও,
আড়মোড়া দিয়ে গড়িমসিতে
অনেকটা সময় চলে যাবে।
একা একাই তাই
পাথর টেনে গর্তটা বন্ধ করার চেষ্টা
যতটা পারা যায় ।
এখন তো এই রাস্তাতেই এগিয়ে যেতে হবে,
যদিও চৌমাথায় চৌমাথায় রক্ষকরা ঘাঁটি গেড়ে বসে আছেন
নজর রাখছেন কারা আসছে করা যাচ্ছে
দেখে নিচ্ছে বৈধ কাগজপত্র।
একটু সন্দেহ হলেই ঠেলে দিচ্ছে
দরজার ওপাশে।
যেন সারা অঙ্গে বিছুটি পাতার রস লেগে আছে,
ছোঁয়া যাবে না।
এদিকে ঠেলার চোট সামলাতে গিয়ে
কাপড় চোপড় খুলে একসা।
উলঙ্গ আমি কে দেখে ভয় পেও না তোমরা
সর্বভক্ষ আধিপত্য এগিয়ে আসছে।
সমাজ [Bengali Poetry]
সমাজ চলেছে কোথায় !
“যাবে কেন ! দাড়িয়েই ত আছে।”
চারপাশে এত হিংসা কেন ?
“এত ভাববেন না, মানুষ ইতিহাসে প্রথম থেকে আজও হিংসাই করে এসেছে।”
চিন্তায় চিন্তায় যে অস্থির হয়ে গেলাম, ভবিষ্যৎ এ কি ?
“আকাশে রামধনু দেখেছেন ? না দেখে থাকলে, আকাশে তাকান, খুঁজতে থাকুন।”
কিছুই ভালো লাগছে না যে!
“তাহলে শীততাপনিয়ন্ত্রিত মলে বা সিনেমাহলে যান, এদিক ওদিক তাকাতে থাকুন, মজায় থাকুন।”
কতদিন?
” যত দিন চলে।”
কিন্তু !
“দু দিন পরেই তো আপনি ভোকাট্টা, ভাবনা কিসের ?”
আপনি ব্যক্তিকেন্দ্রিক ।
“কে নয় ?’
আমার মাথা ধরে যাচ্ছে।
“মাথাটায় গঙ্গাজল ছিটান, গঙ্গাজল।
সুশান্ত সেন | Susanta Sen
প্রবীর রঞ্জন মণ্ডল | কবিতাগুচ্ছ ২০২৩ | Bengali Poetry 2023
মন্টুর মা | গল্পগুচ্ছ ২০২৩ | Bengali Story 2023
মোঃ ওয়াসিউর রহমান | কবিতাগুচ্ছ ২০২৩ | Bengali Poetry 2023
বিকাশ চন্দ | কবিতাগুচ্ছ ২০২৩ | Bengali Poetry 2023
সমাজ | অপেক্ষা | আমি | তোমাকে | লেখা | প্রদীপ | পারি না | শরশয্যা | রুমাল | অক্টোপাস | কাছে দূরে | জানি না | হরিদাস পাল | নব প্রভাত | চেয়ার | তুমি | যদি | নদী | মনের কথা | পাঁকের বর্ম কেটে | রুখবার কে আছে | কূলহারা নদী | আমার আস্তিনে | বিষাদ আগুন | কারুময় | উদ্দীপিত যৌবন | টুকরো আশা | দৃষ্টি রেখো | মনের রঙে | কারুময় খামে অচেনা প্রেম | এক টুকরো আশা | তোমার দৃষ্টি রেখো মানে কি ইংরেজি | ছেলের দিকে দৃষ্টি রেখো | জানালায় রেখো দৃষ্টি | মনেরও রঙে রাঙাবো | মনেরও রঙে রাঙাবো লিরিক্স | ঘর সাজুক মনের রঙে | নতুন বছরে ঘর সাজুক মনের রঙে | কূলহারা উপকূলবাসী | মরা নদী কূলহারা | কূলহারা মানুষ ছাড়ছে উপকূল | আমার আস্তিনে কবিতা | কবিতাগুচ্ছ | বাংলা কবিতা | সেরা বাংলা কবিতা ২০২২ | কবিতাসমগ্র ২০২২ | বাংলার লেখক | কবি ও কবিতা | শব্দদ্বীপের কবি | শব্দদ্বীপের লেখক | শব্দদ্বীপ | বাংলা ম্যাগাজিন | ম্যাগাজিন পত্রিকা | শব্দদ্বীপ ম্যাগাজিন
Karumoy fashion | Monero Ronge Rangabo | Monero Ronge rangabo lyrics | Ami Jeno Kulhara Nodi | Kulhara Village | bengali poetry | bengali poetry books | bengali poetry books pdf | bengali poetry on love | bangla kobita | poetry collection books | poetry collections for beginners | poetry collection online | poetry collection in urdu | poetry collection submissions | poetry collection clothing | new poetry | new poetry 2022 | new poetry in hindi | new poetry in english | new poetry books | new poetry sad | new poems | new poems in english | new poems in hindi | new poems rilke | new poems in urdu | bangla poets | indian poetry | indian poetry in english | indian poetry in urdu | indian poems | indian poems about life | indian poems about love | indian poems about death | Bangla kobita | Kabitaguccha 2022 | Shabdodweep Writer | Shabdodweep | power poetry | master class poetry | sweet poems | found poem | poetry night near me | poem about myself | best poets of the 21st century | christian poems | prose poetry | poetry international | poetry pdf | free poem | a poem that tells a story | beat poetry | poetry publishers | poem and poetry | def poetry | heart touching poetry | poetry near me | prose and poetry | poem on women empowerment | identity poem | quotes by famous authors and poets | bee poem | poem about self love | story poem | poetry angel | narrative poetry examples | poetry reading near me | prose poetry examples | elegy poem | poetry reading | the tradition jericho brown | poetry websites | protest poetry | prayer poem | emotional poetry | spoken word poetry | poem about god | percy shelley poems | jane hirshfield | spiritual poems | graveyard poets | chapbook | poems about life | poems to read | found poem examples | poems about life and love | elizabeth bishop poems | poems about women | sister poems that make you cry | famous quotes from literature and poetry | mothers day poems from daughter | poem about community | 8 line poem | inspirational poetry quotes | poem about life journey | positive poems | short poem about life struggles | toni morrison poems | good bones poem | google poem | funny poems for adults | inspirational poems about life | friendship poem in english | paul laurence dunbar poems | freedom poem | sad poetry about life | Shabdoweep Founder