Bengali Poetry 2023 | যুবক অনার্য | কবিতাগুচ্ছ ২০২৩

Sharing Is Caring:

যুবক অনার্য – সূচিপত্র [Bengali Poetry]

কবিতার বাইরে কিছু নেই – যুবক অনার্য

হরিদ্রাভ কথামালা তে-চৈ শব্দকরণ
নাতিউষ্ণ বিবাহবিচ্ছেদ
মুদি মনোহারি সরঞ্জাম দ্রব্যমূল্য-সিন্ডিকেট
আহা বিবিধ জঙ্গম
সব কিছু নিয়েই কি কবিতা তবে
কবিতা তবে কি খইভাজা – ইত্যবসরে
কে জানে কি ছিলো তার মনে
কদাচিৎ দেখা হলে পার্বণে
প্রাক্তন প্রেমিকার মতো কর্পোরেট
তোমাদের এই আচরণ
কী এমন সুখ তাতে
সংখ্যাধিক্যের ব্যাকরণ
আর মূর্খের নেতৃত্ব অনিষ্টপ্রবণ –
এ বাচ্য স্মর্তব্য হলে
আজ এই ক্ষণে
জগৎযুক্ত করি-
হে মানবাত্মা তুমি দীর্ঘ হ্রস্ব হও
সংশ্লিষ্ট টানাপোড়েন লুফে নিয়ে নির্মাণ প্রণালী
বরাবর থেঁতলে যেতে যেতে বুঝে নাও
স্বতঃসিদ্ধ পাপ বলে কিছু নেই
উপযুক্ত পরিবেশে বেশ্যাও সতী হতে জানে
সতীও হতে জানে বিছানাবতী

হরিদ্রাভ কথামালা তে-চৈ উচ্চারণ
বিবিধ জঙ্গম
বেশ্যা সতী
অহিংস পাপ…
না, কবিতার বাইরে কিছু নেই

হে পাঠক
কবি হওয়া হলো না আমার

কেউ – যুবক অনার্য

কেউ
আসে না অতঃপর বৃষ্টিকে ভিজিয়ে
দু’একটা রৌদ্র-কথা কয়ে যাবে
ফুলের সৌরভ নামে না ঝড় হয়ে

কেউ
সুর্যদীঘল বাড়ির দিকে চেয়ে
বললো না- স্বপ্নের ঝিলম নদী
আমি তোমার

কেউ
সাহিত্য সাময়িকীর পাতাগুলো ঘেঁটে
খোঁজে না কবিতায় অভাগার যতিচিহ্ন

কেউ
সিঁড়ি ভেঙে উঠে যায়
চুড়ির ঝনঝন শাড়ির অহমি আঁচল অনিচ্ছুক হাত বাড়িয়ে বলে না-
এসো হাওয়ায় উড়িয়ে রাত
ঝিনুকবাহিত বাঁকে

কেউ
বোঝে না কান্নার বড়ো প্রয়োজন
নীরবতা ভেঙে
কোথাও নির্জনতা নেই- কোলাহল শুধু

অমীমাংসিত শ্লোক – যুবক অনার্য

তারপর চিতা আর জল যৌবনে
ভেসে গেলো প্রাসঙ্গিক কলাকৈবল্যবাদ নইলে কেন ফুরোচ্ছে এমন
পকেটে বেওয়ারিশ ধোঁয়া
নৈঃশব্দ্যের দেয়ালে
নইলে কেন শিল্পীত স্মৃতির ফসিল
বিনাশী জলের ঘোরে নথুরাম
উড়িয়েছে অবিশ্বস্ত চিল
তবে কি মেঘ ও পাহাড়ের যৌথ খামারে গজিয়ে উঠেছে দা- কুমড়ার
অমীমাংসিত শ্লোক
বরুণা বিশ্বাস তবে কি
নাশতার টেবিলে ছড়িয়েছে কাশফুল – অষ্টাদশী

ভয় হয় – এ বেলা মেঘ বুঝি বর্ষাবে না

নির্গ্রন্থ পাহাড়ের গল্প – যুবক অনার্য

সমুদ্রোত্তীর্ণ নিওলিথ গর্জনে
ফেটে পড়তে চেয়েছিলো
সন্ন্যাস বিরোধী আদিম পাহাড়
প্রয়োজন- মৃৎ-শৈল্পিক
অকর্ষিত উষ্ণ গহ্বর
যেখানে অনার্য পাহাড়
হারাতে চেয়েছিল
রক্ত সঞ্চালিত আহ্বানে
বয়ঃসন্ধি জ্যামিতিক অধিকার
নির্গ্রন্থ এই পাহাড় ভূমি-মধ্যরাতে
উৎপাদন করেছে
পঁচাত্তর ডিগ্রি এঙ্গেল-
নিষ্পাপ ক্রোধ
মধ্যাঞ্চলীয় সতেজ উষ্ণ কূপের সন্ধানে এখনো সে স্বপ্নবিদ্ধ
এখনো- নিঃসঙ্গ ফ্রাঙ্কেনস্টাইন

নিষিদ্ধ সাইরেন – যুবক অনার্য

লুট হচ্ছে জোছনার হামাগুড়ি
রোদের কিনার
মেঠো পথ থেকে নির্বাসিত
কুমারীর অনাঘ্রাত রাত
স্মৃতির খোড়লে জেগে আছে
বিষাদের স্লেট
বাতাসে এক হয়ে মিশে যাচ্ছে
শিশুপাঠ সান্ধ্য কীর্তন
দৃশ্য সংস্কারক ভুলে গেছে
জলোত্তীর্ণ সাঁকোর পদচিহ্ন
বিশ্বস্ত বিকেলের দীর্ঘশ্বাস নিয়ে
কবিতায় আজানুলম্বিত
নেমে আসে
পূর্বাভাস অধ্যুষিত ঝড়ের কফিন

পাতাল রাজ্যে রুইয়ে দেয়া হচ্ছে
পরিব্রাজক অন্ধকার
একটু পরেই পেছন ফিরে তাকাবেন
বিভ্রান্ত অর্ফিয়াস

বেজে উঠছে রাষ্ট্রদ্রোহী আমাদের
নিষিদ্ধ সাইরেন

যে আমি তীরভাঙা নদী – যুবক অনার্য

তোমাকে কী দিতে পারি বলো- নিজের ভেতরে জমেনি কিছুই
না কুসুম না কমল অষ্টাদশী ঝড় পাস্তুরিত প্রেম
নৈশ সড়কের নীলাভ সাঁতার জমেনি চেতনার পোস্টমর্টেম
নির্বাচিত ক্ষতের গভীরে রয়ে যায়নি বিবর্তিত মহাকাল
অক্ষম অণুচক্রিকা শুকিয়ে ফেলেছে রক্তের দাগ নৈঃশব্দ্যের উরুচিহ্নে
কেউ রেখে যায়নি যৌন অপবাদ আমি তবে কী করে ফোটাই বলো সৃষ্টির যোনি!
তোমাকে কী দিয়ে যাবো বলো। -খরাক্রান্ত আত্মাকে খেয়ে গেছে চতুর কফিন এক অমাবস্যা রাত
জোছনা বিয়োবে না চরকাকাটা চাঁদ!

অপরাহ্ন-তীর ছুঁয়ে এ নদী গেড়েছে নোঙর
তবু নিমজ্জমান অপয়া আমি কিছুই পারি নি দিতে পারবো না আর।

মৌলিক বনভূমি – যুবক অনার্য

হোক না তা সাদামাটা পরিপুষ্ট ততোটা নয়- তবু
নিজস্ব সৃষ্টিকে মানুষের চিরদিন শ্রেষ্ঠ মনে হয়-
আর এ হলো প্রহসন- খুব স্বাভাবিক।
এ কথা তুমিও জানো,
জেনে শুনে নিজেরই প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলে!
বিলাসী বাড়ির মতন সে তোমার প্রিয়তম ভুল।
মানুষের ছায়া দেখে পোশাকের বিচিত্র রঙের কথা সহজ পংক্তিতে লিখি বলে
তোমার অলঙ্কৃত সারি সারি বৃক্ষের অহম কি
ভেঙে গেলো! ভেঙে যাক।

মৌলিক প্রতিভা হলে একদিন বৃক্ষেরা বনভূমি হবে।

চৈতন্যে তাক করা ছুরি – যুবক অনার্য

এসো তবে প্রশ্নবিদ্ধ করি ক্ষমতার চৌকিদার
প্রতিটি শব্দের ব্যুৎপত্তি ইতিহাস প্রশ্নবিদ্ধ করি
ধরে নেয়া সত্যের চৈতন্য ক্লেদ
প্রতিষ্ঠান-পোষ্য প্রজন্মের ক্ষুধা অবদমিত যৌনবাদ চা-খানায় কবিদের গোষ্ঠীবদ্ধ ত্রাস
নষ্ট রাজনীতির লিঙ্গ চুষে একাডেমি পুরষ্কার
প্রশ্নবিদ্ধ করি পাদ্রীর নিজস্ব কলমের বাইবেল রাধাকৃষ্ণ-প্রেম পিতামাতার জনন উদ্দেশ
সম্পর্ক পরম্পরার সামাজিক বৈধতা
ধর্মের উপনামে বাণিজ্যিক অধর্মবাদ
প্রশ্নবিদ্ধ করি শ্লীল অশ্লীল সীমারেখা,
তার টিকা ভাষ্যের প্রচল প্রয়াণ
নগরের কর্পোরেট চাঁদ ধর্মযুদ্ধের রক্তাক্ত উৎসব প্রশ্নবিদ্ধ করি পিতাপুত্রহীন ঈশ্বরের বৈষম্যবাদ!

তার আগে আত্মশ্লাঘার ঘানি নিয়ে এসো
প্রশ্নবিদ্ধ করি নিজেকেই।

ভাতে খেতে হলে – যুবক অনার্য

প্রতিদিন আমি ভাত খাবার কথা ভাবি
প্রতিদিন আমি অফিসে যাই বেতন পেয়ে
সেই টাকা দিয়ে চাল কিনতে হবে- এই কথা ভাবি।
বাল্যে আমি লেখাপড়া করেছিলাম
তখন লেখাপড়ার সংগে ভাতের সম্পর্ক ছিলো
শুধুই অজানা;
ভাত খেতে হলে এইসব প্রয়োজন – লেখাপড়া
চাকুরী বাকুরী ব্যবসায় ইত্যাদি
ভাত খেতে হলে মিল ফ্যাক্টরি কৃষক গাড়ি ঘোড়া
আরও কতো কিছু প্রায় অনেক অনেক কিছু
না হলেই নয় যেমন ভাত খেতে হলে রাজনীতি সমাজনীতি অর্থনীতি বিজ্ঞান এমনকি দর্শন
আহা আরো কতো কতো কিছু যে লাগবেই
তার ইয়ত্তা নেই –
লাগবে লাঙল ট্রাক্টর নদী নৌকো এতো এতো কিছু আর অন্য কিছুতেই লাগে না কখনোই,
ভোট লাগে দল লাগে মিটিং মিছিল দলাদলি রক্তারক্তি হায় কত সর্বনাশাই না লেগে যায় ভাত খেতে হলে!

আর লাগে শহরের মাঝখানে নর্দমার কাছে
একটি হলুদ ডাস্টবিন যার পাশে শিশুরা জমাবে ভিড় শুধু ভাত খাবে বোলে!

শবদেহে কবিতার উল্লাস – যুবক অনার্য

আমি লুকিয়ে রাখবো না আর রাখবো না লুকিয়ে আমার বিশ্বস্ত চেতনা এইবার ঠিক এইবার
সেই সংস্কারসন্ধানী সুর ভেঙে দিয়ে ব্যক্তিগত
আমার আদিগন্ত ছিঁড়ে খুঁড়ে তুলে আনবো
হননশীল আগুন-আল্পনা কেন না নৈরাজ্যের মধ্যে আমি আবিষ্কার করেছি
মানবজন্মের নিষ্কলুষ পরম্পরা আর পাপের গভীরে আমি দেখাতে চেয়েছি
গড়িয়ে যাচ্ছে ধর্মের তীর্থ মন্দির এবং মৃত্যুর মধ্যে আমি জানি
ঘটে যাবে শরীরসত্যের পুনরাবৃত্তিগুলি
এবং নির্বাসিত নক্ষত্রের গান গেয়ে
শ্মশানে ঘুমিয়ে উঠবার পর আমি জেনে গেছিলাম আমার শবদেহ পুড়িয়ে যে ছাইভস্ম তা থেকে
কবিতা ছাড়া পাওয়া যাবে না অন্য কিছুই
মাতৃগর্ভ তাই আমি মনে করি সৃষ্টিশীল কবরের
বিনিদ্র পটভূমি আর সেই কবরে আমি
জীবিত লাশ হয়ে বেঁচে থাকতে পারি বলেই
হুলিয়াবিদ্ধ আমার ফেরারি কবিতাকে
তোমাদের যাবতীয় কুচকাওয়াজের বড় বেশি ভয়
পাছে যদি মাতৃদুগ্ধের মত সহস্র ধারায়
ছলকে ওঠে নিষিদ্ধ কবিতার গেরিলা হৃদয়!

গার্হস্থ্য অসুখ – যুবক অনার্য

আমি আমার চেয়ে আলাদা কিছু নই আমারও শরীরে রয়েছে মাংসপিন্ড এক
যাকে তোমরা ‘হৃদয়’ দিয়েছো নাম ভালোবেসে।
আমি নই কিন্তু হৃদয় সে তো যেতে পারে শূন্যতায় -সীমানার অধিক কোনো দূরে
এ হদয়ে রক্তের মতন লাল লাল
উপমাময় স্রোতস্বিনী ক্ষত আছে -আছে শিরা উপশিরা – মিশে আছে
সোনালি অসুখ-
অদম্য নিশাচর।
এ হৃদয় ছলনা জানে না,নেই
মাথা নোয়াবার সাধ,ওকে আর
প্রাসাদে ডেকো না, ভুল হবে,বোলো না-
দুধের মাছি হয়ে কাটাতে প্রহর –
যেরকম বসন্ত ফুরোলে
মানুষেরা লৌকিক সম্পর্ক- সুতোয়
কালিমা লেপে
কেটে পড়ে।

এ হৃদয় অভিমানী খুব কেননা সে
জেনে গেছে -বধূরা বরের ঘরে থাকে
তবু বরের জন্যে থাকে না কোনোদিন!
সভ্যতার অযাচার,বঞ্চনার, তুচ্ছতার
মহিরুহ ভেঙে দিয়ে সে তো মানুষেরই প্রেমের নির্দলীয় বন্টন
বেটে দিতে
বাড়িয়েছে পা;
তাকে ফিরিয়ে দিও না, বোলো না –
চলে যেতে – বড়ো অবেলায় এলে হে
দেরি হয়ে গেছে!

সময়ের মৌনতায় আপোষী সংঘতায়
ছড়াতে চেয়েছে সে তো
দ্রোহেরই আগুন
সে তো দিনশেষে খুঁজে খুঁজে
হারিয়েছে নিজেরই পায়ের নিচে মাটি।

তবু তাকে ফেরাতে চাও কেন
যেখানে জেগে রয় গার্হস্থ্য অসুখ
জেগে রয় আত্মার অনন্ত প্ররোচনা –
মোহ আর মোহন রমণীয় সুখ!
তাকে তবে ফিরে নাও দগ্ধ আত্মার পোড়াগন্ধের কাছে – যেখানে নেই
ঘুমন্ত বাসনার চোরাবালি, আছে
নিজেকে নিজের কাছ থেকে
সরিয়ে রেখে বেদনায় নিঃস্বতায়
মানুষেরই কাছে ফিরে আসা।

অমুদ্রিত স্বরলেখা – যুবক অনার্য

এতোটা পথ হেঁটে এলে তবু কি
টের পেলে- হেঁটে যাবার সমস্ত সড়ক
বন্ধ হয়ে গেছে
তবু কি টের পেলে সাপ কেন
আড় ভেঙে হাঁটে
কেন দ্রোহ নিষিদ্ধ হ’লে
জ্ব’লে ওঠে বিকল্প বিপ্লব
সূর্য তার আত্মায় কতোটা অগ্নি নিয়ে
তবে জেগে ওঠে!

কতো না বছরভর স্বপ্ন দেখে এলে
শস্যিতা মাঠ গাভিন নদীর
তবু যে হারিয়ে গেছে আবাদি লাঙল,
তার দীর্ঘ ছোবল।
কতো না রাজপথ অট্টালিকা
ভুবনজোড়া কুমারী রাত
তবু কি জানা হলো নারী কেন
এতোটা রমণীয়- সোনালি পালক-
তবু কেন এতোটা চাবুক
ধরে রাখে জিভে
রূপসী কেন এতোটা রূপ নিয়ে
নিঝুম দুপুরে নিশ্চুপ কাঁদে!

জানা কি হলো আজও-
এতদিন কতদিন তুমি
আসবে বলেও
চলে গেছো -‘ভালোবাসি
খুব বেশি ভালোবাসি’-বোলে!
প্রেমিকা কেন এতটা খ’সে পড়ে
তারার মতন
কী নিবিড় স্খলনে পুষ্ট হয়ে
তবু চলে যায়!
কেন এই অগ্নি দহন
অবেলায় এমন এই আত্মহনন
এই বদ্ধভূমির খোলা হাওয়া –
তবু কি জানা হলো!
আজও কেন নির্দোষ কয়েদি আর প্রেমিকের খিদে পেলে
রোদ্দুর হারিয়ে ফেলে উষ্ণ ভূমিকা
আর মানুষেরা কেন তবু
মেঘের অপেক্ষায় থেকে বজ্রাহত
হতে ভালোবাসে
একজন কবি কেন এতোটা অসহায়
কেন তুমি বেসেছিলে ভালো
কবিতা আমার আর আমাকে
বাসোনি ভালো- জানা কি হলো তবু
আজও জানা হলো!

অবাধ্য স্প্লিন্টার – যুবক অনার্য

তুই জানান দিয়েছিলি অস্ত্বিত্ব তোর
তীব্র চিৎকারে
মনে হলো পৃথিবীতে এসেছে
এক অবাধ্য স্প্লিন্টার
লন্ডভন্ড করে দিয়ে সে
সাজিয়ে দেবে সুন্দরের প্রথম প্রহর।

শুরু হলো এক অকে এক দুই অকে দুই…

চিরায়ত মাতৃক্রোড়, ঘুচিয়ে দিলি
পিতাজির বন্ধ্যাত্ব অপবাদ
হামাগুড়ি হাঁটি হাঁটি পা পা
আধোবোল পরাশ্চর্য পংক্তিমালা
শাশ্বত নিয়মের গণ্ডি বেয়ে শৈশব
আর কৈশোর ছুঁই ছুঁই কররেখা;
বলেছিলি- বাবা, হৃদয়ে গেঁথে তোমার হননযন্ত্রণা
একদিন আমিও জিতেন্দ্রিয় হবো
তোমারই মতন
এক পৃথিবী স্বপ্নশালুক বেঁধে দেবো মায়ের আঁচলে গার্হস্থ্য চাবির মতন
দেখো বাবা, একদিন অসুন্দরের বিরুদ্ধে একটি কলি রক্তাক্ত হতে হতে হয়ে উঠবে সোমত্ত গোলাপ।

প্রতিজন পিতার মতো আমারও বুক,
মধ্যবয়সী চোখ আর্দ্রতা নিয়ে
নিমীলিত হলো;
কিশোরগন্ধা তোর চোখের দিকে তাকিয়ে অনিয়ন্ত্রিত আমি বলতে চেয়েছিলাম-
আজন্ম লালিত তোর স্বপ্নগুলি ঘাসফুলনদী হয়ে ছড়িয়ে যাক ৭১ বিধৌত আমার বদ্বীপখানি জুড়ে- আমি থাকি, নাই বা থাকি আর।

বলেছিলি- আব্বু তুমি খোলা আকাশ,
ভালোবাসার চেয়ে অধিক ভালোবাসি শুধু তোমায়;
আম্মু তুমি নয়নমণি,
ভালোবাসার চেয়ে অধিক ভালোবাসি শুধু তোমায়।

কথা ছিলো –
ফুল ফুটাবি
চাঁদ উঠাবি
পদ্মপাতায় জল ভাসাবি।-

এসব কথা রাখলি না তুই
ফুটলো না ফুল উঠলো না চাঁদ
জলে ভেসে পদ্মপাতা হারিয়ে গেলো!

কার কি-ই বা এলো গেলো
শুধু আমি শূন্যতাকে দারুণ রকম শূন্য করে
“আমার একটি যায়ান আছে”- বলতে গিয়ে থেমে গেলাম;
বলতে হলো, বলতে হবে জন্মপোড়া জলের মতো- “আমার একটা যায়ান ছিলো”।

নদীস্বপ্নের শেষ দৃশ্য – যুবক অনার্য

নদীস্বপ্নে আমাদের বাড়ি ছিল তেতলা বিশিষ্ট
একটি অর্ধনগ্ন পুকুর এবং তার ছাদে
আত্মনিমগ্ন ঘোড়ার প্রবহমান আস্তাবল
আর সহিসটি ছিল ইকথিয়ান্ডারের মতো
এক মৎস্যকুমার।
বাড়ির চৌপাশে প্রজন্ম বরাবর দূরত্বে
শূন্যতা-বিভোর বাউলের বহুভাষীক একতারা।
এখানে বৃষ্টি এলে কারা যেন
আগুনের নৃত্য থেকে খুলে নেয় নূপুরের নিক্কণ;
ক্লান্তির গুমোট অন্ধকার ফুঁড়ে ভেসে ওঠে
পালতোলা রোদ্দুর।
এই সুবাদে মৎস্যকুমার বেরিয়ে পড়েন
ঘোড়ার পূর্বজন্মের ত্রিমাত্রিক স্মৃতিঘর
তালাশের উদ্দেশে।
শৈত্য প্রবাহের আদিম খোড়লে আবিষ্কৃত হয়-
পূর্বজন্মে ঘোড়ার শাসক ছিল
এককোষী এমিবা থেকে উদ্ভূত দুই হাত
ও দুই পা বিশিষ্ট যুদ্ধবাজ এবংবিধ প্রাণী
যার নৃতাত্ত্বিক নাম – হোমোস্যাপিয়েন্স।

নদীস্বপ্নের শেষ দৃশ্যে – সুতরাং – ঘোড়াটি আর
ফিরে যেতে চায়নি গল্পরঙের স্মৃতিঘরে।

পাতাল সাম্রাজ্যের কবিতা – যুবক অনার্য

মাঝবয়েসী রাতের সৌখিন দ্বিপ্রহরে
আমার অনুবাদহীন ছায়ার পিছু নেয়
সদ্য রজঃমুক্ত রমণীর দশটি আঙুল।
ছোটোখাটো চাঁদাবাজি দুই-একটা মসৃণ ছিনতাই
আর এক প্রস্থ মেধাবী ঠগবাজির একটি পয়সাও
এখন আমার পকেটে নেই।
ছায়া অনুসারী দশ আঙুল অর্থাৎ নিশির শালবনে
চাঁদ এবং সমুদ্রের বকেয়া অভিসার প্রথাসিদ্ধ নয়।

অকস্মাৎ পেছন ফিরে বলতে চাইলাম-
নিশি, তোর দুই গোলার্ধ আর পাতাল সাম্রাজ্যে
যেতে হলে আমাকে একবার অসংখ্যবার নষ্ট হতে হয়।

আমার মৌন গ্রন্থির মুদ্রিত ক্যানভাসে
নিশি ঠিক বুঝে নেয়- আকাশ জোড়া মেঘ।

রৌদ্রকরোজ্জ্বল অন্য কোনো ছায়ার সন্ধানে

অতঃপর মুখস্থবিদ্যার মতো হেঁটে যায় নিশির পরকীয়া মাঝরাত।

স্বল্পদৈর্ঘ্য শালিকদুপুর – যুবক অনার্য

মৃত্যুর সমান বয়সে এসে আজ
অভিমান নিয়ে নয়,অভিজ্ঞ নাবিকের মতো মাস্তুলতাড়িত হয়ে মনে হয়-
আর কিছু জানিনা তো, শুধু জানি এই-
সমস্ত নদীর জল শুকিয়ে চর হলে
আমি খুঁজবো না কোনোদিন তাকে।
সমস্ত ভালোবাসা ঘৃণা হলে
আমি বলবো না তাকে- এবার শরীরে
হৃদয় মেখে বর্ষাতুর ভিজে রোদ্দুর
হবো নাকো আমি।
অচেনা মানুষের মতো চেনা শোক ভালোবেসে
কিশোরীর স্বল্পদৈর্ঘ্য যৌনতা
চেয়েছি হতে কতবার!
জানি না আজ সায়ন্তিকা সোমত্ত হল কিনা
নিজেকে জড়িয়ে রেখে নিজের ভেতর।
সবকিছু জানা হলে তবু তারপর
মানুষেরা মূর্খ থেকে যেতে পারে
আমিও আজানুলম্বিত মূর্খ বটে
না জেনে নিজেরই মরণ, না বুঝে সাধন ভজন।

তবে আজ বড়ো মনে পড়ে-
কী এক শালিকদুপুর-
তুমি যেন বা পদ্মপুকুর-
স্নানের নূপুর আর গুটিয়ে লাজুক পরত
ম্লান হয়েছিলে;
আমি এক ইচ্ছেসুলভ যেন বা
বেগানা বালক, দু’চোখ সরিয়ে রেখেছি
অই দূরে-আহা।,
‘আহা’ময় শব্দচয়ন বুঝি শুধু জীবন বাবুরই
পৈত্রিক স্বর!
তাই এ শব্দ অনুচ্চারিত থেকে আজ
কাব্য করা সমীচীন হোক।
উচ্চারিত তবে আজ হোক-
সমস্ত নদীর জল শুকিয়ে চর হলে
তুমি শরীরে হৃদয় মেখে বর্ষারঙা রোদ্দুরে
খুঁজবে আমায় তবু
খুঁজে খুঁজে পাবে নাকো মোরে।

আজ দ্রোহবার – যুবক অনার্য [Bengali Poetry]

না না আজ থাক আজ না হয় অন্য কথা বলো
আজ কোনো প্রেম নয় ভালোবাসা নয়।

নির্বাসিত জোছনার মুখ, দেয়ালে বিগত বছর-
ঝুলে আছে ক্যালেন্ডারে;
কার যেন ভুল সিলেবাস ছিঁড়ে ফেলবার
কথা ছিল
কার যেন ভাড়াটিয়া সিলেবাস রুখে দাঁড়াবার
কথা ছিল।
দূর থেকে বুঝি অই দূরে মুছে যাচ্ছে
সিংহের পদধ্বনি-
একদা ছিল এইখানে ছিল রাজপথে;
দ্বিতীয় শৈশব কিংবা আসবে কি পুনরায়
সেই এক ঝাঁঝালো দশক!
সমউল্লাসে সমস্বরে সমঅধিকারে
মেতে কি উঠবো মোরা দ্বিগুণ কোনো দ্রোহে,
নাকি এসব শুকনো নস্টালজিয়া- কেবলই অচল!
আমাকে ফুল ভেবে করো নাকো ভুল,
কাঁটা হয়ে দিব্যি কাটিয়ে দেবো একটা জীবন
ফুলকে সুরক্ষিত রেখে।

দেয়ালে বিগত বছর- ঝুলে আছে ক্যালেন্ডারে,
কেউ একজন হাল ধরবার কথা ছিল।ধরেনি।
কেউ একজন প্রত্যাখ্যাত প্রেমিক হবার কথা ছিল। হয় নি।
কেউ একজন বুলেটবিদ্ধ হয়ে এ রাষ্ট্র পুনরায়
স্বাধীন করবার কথা ছিল।
হয়নি কোনোকিছু।
নীল দাগ মুছে গেলে আকাশকে মহান ভাববার
মানে নেই কেননা কেউ কেউ ভুল করে ভালোবাসে
কেউ কেউ ভালোবেসে ভুল করে।

আজ কোনো প্রেম নয় ভালোবাসা নয়
আজ শুধু নিষিদ্ধ কবিতার মতো
এক নিষিক্ত দ্রোহের কথা বলো।

দিনগুলি – যুবক অনার্য [Bengali Poetry]

জল ধুয়ে দেবো আমি তোমাদের ঘরে
গন্ধরাজ, তার পাতার মহিমা ছুঁয়ে
উল্লাসে কাঁপা সৃষ্টি সুখের মতো ভৈরবী বাজে
নিশ্ছিদ্র জানালায় দেয়ালের মুখ ভেসে ওঠে রন্ধনশালায় বংশবিস্তারের কারুকাজ
আর দোদুল্য নীরবতা শব্দিত হ’লে
নদীনগ্ননারীর কথা জানি
এরকম বর্ষায় ভুলে গেছে কথিত বৃষ্টির সুখ
সে এক কবি ছিল সান্তাক্লুজের কথা
কবিতায় লিখে জানিয়ে দিয়েছিলো-
বিমানবন্দরে যাবে না সে উড়ে
তবু চলে গেছে- একুশের স্বীকারোক্তি নিয়ে!
হায় সখী এরকমই হয়
বধূরা নিশ্চুপ রয় না আজ প্রথম প্রহরে
শাড়ির আঁচলে-পাড়ে
স্পন্দিত হতে চায় নিবিড় নিবিড় ঘুমঘোরে
কবিতা লিখবো না আর – ভেবে
কিঞ্চিৎ দূরে
সরে এসে দাঁড়িয়েছি মিছিলের পাশে
তবু জানি কবিতারা মিছিলেই
খুন হতে আসে।

জল ধুয়ে দেবো আমি
মুছে দেবো আত্মার শোক
এতদিন দিন ছিল তোমাদের
এইবেলা দিনগুলি আমাদের হোক।

রাষ্ট্রীয় হাঙর [Bengali Poetry]

বনেদি ভঙিমার দুঃখ খোঁজার মতন অক্লেশে
এসব অনুষঙ্গ এলো
সমোচ্চারিত শার্সি খুলে যায়
এই প্রশস্ত কালজয়ী খড়কুটো বনফুলগুলো
যেন রাত্রিভর কাঁদে
নক্ষত্রের শৈল্পিক মঞ্চায়নে
কবিতার দেহে ভুল ছন্দ- মন্দ কিছু নয়!
গ্রন্থপাঠে এসবের ব্যাকরণসম্মত বিন্দু বিসর্গ
প্রয়োজন হবে না,তাই অপেরা ও মঞ্চকর্মী দেখে
তোমার তো বোঝা হলো-
এখানেও ছন্দহীন কোনো কিছু
অথবা সৌখিন প্রথা।-
স্মরণীয় সভামঞ্চে এভাবে কোনো কোনো দিন
রাষ্ট্রীয় হাঙরের কুশপুত্তলিকা অগ্নিদগ্ধ হবে।

সশস্ত্র আঁধার [Bengali Poetry]

ত্রিকাল দর্শন নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে যদি
পিতৃদত্ত ঘরদোর স্বরচিত অধিবাস
নিয়নের আলো মেপে বয়ে তো আনবে ঢের
প্রতারিত সুখ স্মৃতি বিজন বিরোধ।

এমনও হয় নাকি- বিভোর স্বপ্ন ভুলে
ঢেউয়ের আড়ালে ঢেউ লুকিয়ে থাকে আহা
প্রকাশিত ঢঙে,অথৈ জলের ঘোরে
ডূবে যায়,ডুবে গেলে
পৃথিবীতে নেমে আসে অবহেলা
কী দারুণ অপবাদে
নিশ্চুপ ভেসে থাকে জোছনার খরা।

হলোই তো এরকম- পিতৃদত্ত ঘরদোর
স্বরচিত অধিবাস সফল জোছনা নিয়ে
ভরাডুবি হলো
আর সশস্ত্র আঁধার খুব অযাচিত কালো রাতে
বেঁচে থেকে জেগে রয় গর্বিত আলোর মতন।

নিষিক্ত চিরকুট [Bengali Poetry]

অর্বাচীন অই স্মৃতির অর্থ মায়া

বিস্তারিত স্লেটে লিপিবদ্ধ এর সর্পিল ব্যক্তিত্ব
সংক্ষিপ্ত মধুমাসে কিছু রাতজাগা অনিয়ম
বেঁচে ছিলো দীপিত ভোরের উদ্দেশে
ঘুমন্ত পাখিরা স্বপ্নেও খুঁজে আয় পায়
নিষিদ্ধ হাওর শীতের প্রদেশ

তুমি এর কিছুই বুঝবে না..

নিসর্গের কাঁচুলি অনাবৃত করে
নিষিক্ত অপরাহ্নে বুঝে উঠছি-
কিছু মেঘ কখনো বৃষ্টি হবে না
কিছু বৃষ্টি কখনোই গৃহপালিত নয়

ব্ল্যাকবোর্ড [Bengali Poetry]

তোমার নিকটবর্তী যে শ্বাসরুদ্ধ শূন্যতা সে আমার নিঃসঙ্গ সতীন,
তোমার পায়ের কাছে অপেক্ষমাণ শতাব্দীব্যাপী যে সড়ক
সে আমার মিছিলমগ্ন রাজপথ বিজন পথিক।
তোমাকে ঘিরেই সবকিছু পূর্ব-গগনে উদিত- অস্তগামী পশ্চিম তীরে,
তোমাকে দেবো না হারাতে এক আলোকবর্ষ দূরে রাখবো জনমজুরে অবিকল বুকের পাঁজরে।
হিম হয়ে আসা শীতের রাত্রি জানে কতোটা দূরত্বে বাস করে বসন্তের বিরহ কানন,
উড়ে চলা পাখি জানে শূন্যতার ভিতর কীভাবে বসিয়ে যেতে হয় উড়ন্ত দাগ;
তবু সকাল হবার খুব কাছাকাছি যে সময় তার নাম কি রাত্রি ছাড়া অন্য কিছু হয়!
জেনে রেখো – এই বসন্তে নির্বাসিত হবে কায়েমি দালালের সমূহ ব্ল্যাকবোর্ড-
যেখানে খড়ি দিয়ে যা-কিছুই লেখা হোক মুছে ফেলতে যে ডাস্টার তা কিন্তু আমাদের ঘরে- হাতের আঙুলে

আমি [Bengali Poetry]

আমি। প্রাতিষ্ঠানিক নই। প্রতিষ্ঠান-বিরোধী হতে গিয়ে নিজেই হয়ে উঠিনি এক প্রতিষ্ঠান।
বড়োজোর তোমাদের অই পারফিউম মাখা আধুনিকতাকে স্রেফ অস্বীকার করেছিলাম।
স্বীকৃতি দিতে চেয়েছিলাম আমার ঘাম আর জমাটবদ্ধ রক্তের দুর্গন্ধকে।

আমি। প্রেমিকাকে বুকে নিয়ে ভাবি গণিকাগমনের কথা।
গণিকালয়ে গিয়ে প্রেমিকার মুখ ভেসে উঠে বোলে অনুতপ্ত হইনি কোনোদিন কারণ আমি জানি- প্রেম ও কাম
এক নয়, কারণ আমি জানি – প্রেম ও কাম আলাদা নয়।

আমি। যাকে প্রতিষ্ঠান বলেছিলো ” সাহিত্যের জারজ”, কারণ আমি কবিতায়
অবমুক্ত করে দিয়েছিলাম শাব্দিক অবদমন।

আমি। মনীষার সংগে প্রেম করতে গিয়ে জেনে গেছি- অধিকাংশ সিঁদুর পরিহিত মহিলার
ধর্ম নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নেই যেরকম আছে সেইসব পুরুষের যারা সিঁদুর পরান এক রমণীকে আর ভালোবাসেন অন্য রমণী।

আমি। কথা বলার সময় পোঁদ ব্যবহার না করে ব্যবহার করি মুখ। মল ত্যাগ করার জন্য
মুখ নয়, ব্যবহার করি পোঁদ। তাই প্রতিষ্ঠান আমাকে ঘোষণা করেছিলো “সাহিত্যের বাতিলমাল”।

আমি। হ্যাঁ, আমি। সুদর্শনাকে ভালোবাসি বোলে বন্ধুরা হয়ে উঠেছিলো ঈর্ষাপরায়ণ,
এ কথা জানবার পরেও যে- সুদর্শনা আমাকে ভালোবাসেনি কোনোদিন।
সুদর্শনাও আমাকে ভালোবেসে ফেললে বন্ধুরা আমাকে ও আমার কবিতাকে খুন ক’রে
এক সংগে চালান করে দিতো সুদর্শনাদের বাড়ির কাছে শ্মশানঘাটায়।
বন্ধুদের ঈর্ষাকাতরতায় আমি এক ধরনের অর্থহীন পরাজয়ের গন্ধ পেয়েছিলাম যেরকম দেবতা পরাজিত হয়ে যায় পূজারীর কাছে!

আমি। না ঘুমিয়ে দুই যুগ কাটিয়ে দিয়েছিলাম শুধু কবিতায় একটিমাত্র সত্যকে আবিষ্কার করতে গিয়ে – “শব্দের নিজস্ব কোনো অর্থ নেই”!

আমি। গার্হস্থ্য জীবন শিখিনি- শিখিনি সন্ন্যাসব্রত। আমি কেবল মৃত্যুর বিনিময়ে পেতে চেয়েছিলাম জীবনের স্বাদ,
যে-জীবন ভালোবেসে আজীবন থেকে যায় ফেরারি আসামি যেমন।

তাই গঙ্গাজল আর সমুদ্রজলের মধ্যে মিঠা-নোনা ছাড়া অন্য কোনো তফাৎ আছে কিনা আমার জানা হলো না আজও!

বীজ কর্তনকারী [Bengali Poetry]

Seamus Heaney – এর রচিত ‘The Seed Cutters’ কবিতার অনুবাদ

[অনুবাদ : যুবক অনার্য]

মনে হয়- তারা শতবর্ষ আগে; ব্রুগেল,
যদি সত্যি করে পাই,
তুমি তাহাদের জেনে নিও।
গুল্মগুচ্ছের নিচে, অর্ধবৃত্তের ভিতর
তারা নতজানু।
বৃক্ষসারির পেছনে ভেঙে উঠছে বাতাস
আর তারা হলো বীজ কর্তনকারী।
খড়ের নিচে সমাহিত আলুবীজ,
ওপারে ভাঁজ ও ঝালর- পার্শ্বমঞ্জরীর।
সময়ের সাথে সাথে
সময়কে হত্যা করে নিয়ে নিচ্ছে
তবু্ও সময়।
অলসতায় ধারালো ছুরি
শিকড়কে করতলে
অর্ধেক-আলাদা করে দেয়:
দুধময় দীপ্তি আর মাঝখান জুড়ে
অন্ধকার জলরেখা;
ও বর্ষীয়সী প্রথা,
গুল্মগুচ্ছের নিচে হরিদ্রাভ
রচনা করে নাও
পশমি কাপড় কিংবা কারুকার্যময়তা
রচনা করে নাও আমাদের
সকলকে ছদ্মনামে আর।

শুভরাত্রি [Bengali Poetry]

Seamus Heaney – এর রচিত ‘Good Night’ কবিতার অনুবাদ

[অনুবাদ : যুবক অনার্য]

আলোকিত গুহার ধারালো প্রান্তর
আর তুলে ধরা অর্গল
উঠোনের এপাশ থেকে ওপাশে
খুলে যায়;
নাতিদীর্ঘ দরোজা থেকে
ঝুঁকে পড়ে মধুরিম করিডোরে
অন্ধকার দেয়ালের মধ্য দিয়ে
সরাসরি হেঁটে চলে তারা।

মিশ্রিত কাদাবালি- খোয়া, সিঁড়িধাপ
এবং দরোজার চৌকাঠ
স্থির হয়ে আছে উজ্জ্বল ছকে;
পুনরায় পার হলো সে,
ছায়ার পেছনে তার-
অতীতসমগ্রকে অস্বীকার ক’রে।

রাত্রিচারণ [Bengali Poetry]

Seamus Heaney – এর রচিত ‘Night Drive’ কবিতার অনুবাদ

[অনুবাদ : যুবক অনার্য]

ফ্রান্সের মধ্য দিয়ে রাত্রিচারণের পর
প্রচলিত নতুন ঘ্রাণ: বাতাসের উপরে
বৃক্ষ এবং বৃষ্টিঝড়
উন্মুক্ত গাড়ির মাঝখানে
বাতাসকে উষ্ণ রেখেছিলো।

অদম্য সাদাটে থাম
মন্ট্রেল, এবেভিল, বুভেইজ
প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, এসে চলে গিয়েছিলো
প্রতিটি স্থানের রয়েছে অকৃপণ নাম।

সমন্বিত আর্তনাদ – বিলম্বিত পথ
হালকা আলোর ওপারে রক্তাক্ত বীজ
বন্য আগুন ধূমায়িত – জ্বলে ওঠে,
বন্ধ হয়ে এলো ক্ষুদ্র ক্যাফে।

তোমাকে নিয়ে অবিরাম চিন্তিত আমি
দক্ষিণে – সহস্র মাইল জুড়ে
অন্ধকার এলাকায়
ইতালি, ফ্রান্সের কাছে
যেখানে কটিদেশ রেখেছে শায়িত।

বিয়ে দিবস [Bengali Poetry]

Seamus Heaney – এর রচিত ‘Wedding Day’ কবিতার অনুবাদ

[অনুবাদ : যুবক অনার্য]

শব্দ, দিবসের মধ্যে থেমে আছে
এবং চিত্রকল্প নড়বড়ে
হেঁটে চলে, ভীত সন্ত্রস্ত আমি;
হেঁটেই চলেছে তারা। অশ্রুগুলো কেন

ট্যাক্সির বাইরে থেকে বোঝা যাবে,
মুখের ওপরে বন্য যন্ত্রণা তার- কেন?
কুন্ঠিত অতিথিদের মধ্যেও আমাদের,
শোকসন্তাপের সুরঙ্গ জেগে ওঠে।

তুমি গান গাও এক বুকঝিম
নববধূর মতো দীর্ঘ কলেবরে
শাস্ত্রীয় সজ্জার মধ্য দিয়ে
অটল থেকেছে উন্মত্ত এই নববধূ।

সুশীল -সভ্যদের কাছে গিয়ে দেখি-
সেইখানে হৃদয় শিকে গাঁথা
সেইখানে লৌকিক উপাখ্যান;
তোমার স্তনের ওপরে নোঙর পর্যন্ত
আমাকে ঘুমাতে দাও।

হননের কালে [Bengali Poetry]

চাইলেই কি কবিতা লেখা যায়!-

কবিতা নিয়ম না মানা এক আশ্চর্য ক্ষরণ
রোদনের কালে মানুষের সর্বনাশ আর ভরাডুবি হলে
কবিতা খুঁজে ফেরে শব্দচাষী এক
যে বিরুদ্ধ বাতাসে দাঁড়িয়ে বলে দিতে জানে-
‘আমাদের মিছিলের নাম হোক ভালোবাসা, আমাদের দ্রোহ হোক প্রেম।’
রুগ্ন অবেলায় যদি বা সব গান থেমে যায় আর সব সুর,
কবিতা উঠোনে এসে বলে যায় –
আমি এক ঝাঁঝালো প্রেমিক চাই যে গড্ডালিকা প্রবাহের প্রতিকূলে দাঁড়িয়ে
বেশুমার বলে দিতে জানে – ‘আমাদের চেতনা হোক মানুষধর্মী হৃদয়ের স্বরলেখা,
আমাদের কবিতা হোক বিধ্বংসী সময়ের বিরুদ্ধে বিরোধীতা।’

চাইলেই কি কবিতা লেখা যায়!-

কবিতা নিয়ম ভাঙা এক জাজ্বল্য যিশু যেন
নিজেরই স্কন্ধে তুলে নিয়ে মানুষের সব অবহেলা-
ক্রুশবিদ্ধ হতে হতে রেখে যায় প্রেমের প্লাবন।
পৃথিবীতে নেমে এলে হলুদ অসুখ
কবিতা খুঁজে নেয় শব্দখোড়ক যে পরাজিত হতে হতে লিখে রাখে
বিজয়ের গান- ‘ একদিন আমরাও দেখে নেবো নিহত সুর্যের পোড়া উত্থান।’

চাইলেই লেখা যায় না কবিতার মতো এক অবাধ্য সন্ত্রাস
দ্রোহের কসম নিয়ে ধুঁকে ধুঁকে ক্ষয়ে গেলে
গোপন প্রিয়ার মতো কবিতা ধরা দেয় হননের কালে।

মানুষেরা ভুলে যায় [Bengali Poetry]

মানুষেরা ভুলে যায়- যা কিছু মনে রাখে- তারচেয়ে বেশি
ভুলে যায় গতকাল আজকাল আগামীকালের চিরচেনা মুখ
ধূপছায়া গোধুলিবেলায় রমণীকে
কথা দেয় – একদিন
সমুদ্র পাড়ি দেবো- হবো সমুদ্রের
চেয়ে বেশি বড়ো-
সেই কথা ভুলে যায় – রমণ শেষে ভুলে যায়
রমণীর মুখ
নদী পার হলে মুহূর্তে ভুলে যায়
নৌকোর মাঝি
উপন্যাস পড়তে গিয়ে কবিতা ভুলে যায় কবিতা পড়তে গিয়ে ভুলে যায়
গল্পের প্লট
ভুলে যায় একদিন মানুষেরা পৃথিবীতে পড়েছিলো নগ্ন পরিধেয়
আজ সভ্যতার নামে পরে আছে কুচকাওয়াজ লেফট রাইট লেফট
নদীর মতো বহমান এ সময় কখনও
যাবে না থেমে
শুধু থেমে যাবে গন্তব্যবিহীন
সমস্ত লাশবাহী গাড়ি
ভুলে যায় পৃথিবীর প্রতিটি দালানই তো গাড়ি
– একেকটি লাশ বয়ে নিচ্ছে প্রতিটি সময়
তবু ব্যাংক ঘরে জমে থাকে কালো কালো কুৎসিত ডামাডোল
তবু হায়েনার চেয়ে অধিক জান্তব
এ মানুষ খেয়ে নেয় মানুষের লাশ
তবু কপালপোড়া জরিজনাকে
সংস্কারের নামে আগুনে পুড়িয়ে দেয় প্রতিবার
মানুষেরা ভুলে যায়
কেবলই ভুলে যেতে থাকে ‘মানুষ’ বোলে কিছু একটা ছিলো কিংবা ছিলো কি কোনোকালে!

ভুলে যেতে যেতে তারপরও ভুলে যায়
কিছুই থাকে না, পারে না থেকে যেতে;
থেকে যেতে পারে শুধু বিশুদ্ধ আত্মার ঘ্রাণ;
যে জীবন পায়নি তারে, জনম জন্ম ফুরাবে
তবু পাবে নাকো আর।

গেরিলা চংক্রমণ [Bengali Poetry]

ভুবন চংক্রমিত হোক। নিয়তিসম সত্তা আমার
তবে কি চেয়েছিলো বোধের অধিক বোঝাপড়া!
চৌহদ্দি ব্যাপে বাঁশঝাড় বুনে দিয়ে অতিক্রান্ত হও ভিটেবাড়ি
মাথার উপরে তার থেকে যাক বুড়ো চাঁদ চড়কা বুড়ি নিয়ে।
ভবিষ্য এই ভাঙাগড়া প্রেমের প্রসিদ্ধ অনুযোগ তৃতীয়াংশ পরকীয়া
তাথৈ নারীগণ আমাকে বুনো মোষ ভেবে চোখের সমুখে ঝুলিয়ে রেখেছে রজঃবত লালরঙা ছোপ
আমি নিরস বিদারী সব্জিবত হেঁটে চলি
তবে কি জৈব আমি নই- কেবলই অনুর্বর বলিরেখা!
হতে পারে এইমতো। যে-মতোই হোক,
গাঙজলে না ডুবেই গভীরতা মেপে নেয় প্রকৃত প্রেমিক।
আমি তাই জোছনাকুমারীহীন রাতেও
রাজপথ ছেড়ে দিয়ে ধ্বংসস্তূপের কিনারে
উদ্বাস্তু এক- খুঁজে ফিরি
তৃতীয় বিশ্বের গেরিলা সড়ক।

শিউলি কুড়ানো ভোর [Bengali Poetry]

র‍াত্রি
তুই বলেছিলি রাত জেগে জেগে
লিখতে কবিতা অথৈ।
বলেছিলি – আমি যেন কবিতায়
লিখি -ঈশ্বর বড়ো একা
অনির্বচনীয় নিঃসঙ্গতা
ঘিরে রেখেছে তাকে প্রতিক্ষণ প্রতিবার!
সমগ্র সৃষ্টি জগৎ
তাকে সঙ্গ দেবার জন্য নয়
যথেষ্ট মোটেই
যেহেতু সৃষ্টি জগৎ নয় সমকক্ষ তার।
ঈশ্বর তবে শেয়ার করবেন কার সঙ্গে
সুখ কিংবা দুঃখ তার!

রাত্রি
তুই ঈশ্বরে বিশ্বাসী নোস তবু কেন
লিখতে বলেছিলি কবিতা- নিয়ে তাকেই-
সে কথা তোকে আমার জিজ্ঞেস করা
হয়নি তো আর
কেননা ঈশ্বর ধর্ম রাজনীতি –
এসব নিয়ে আমার মাথাব্যথা
ছিল না কোনোকালে।
আমার বিষয়বস্তু -মানুষ কেবলই মানুষ।
কিন্তু অদ্ভুত হলো এই- মানুষ নিয়ে
লিখতে গিয়ে দেখি ঘুরে ফিরে
ঈশ্বর ধর্ম আর রাজনীতি হানা দিচ্ছে
যেন অনিবার্যভাবেই।
জন লেননের
‘ইমাজিনেশন’ গানটির কথা মনে পড়ে –
‘কল্পনা করো পৃথিবী এক যেখানে নেই কোনো ঈশ্বর স্বর্গ নরক’।-
এখানেও তো তাই হলো –
ঈশ্বরহীন পৃথিবীর কথা বলতে গিয়ে
সেই ঈশ্বরই এলেন
মুখস্ত বিদ্যার মতো ক’রে!
আসলে ঈশ্বর ছাড়া কোনো পৃথিবী নেই।
যে -পৃথিবীতে মানুষ আছে
সেখানে ঈশ্বরও আছেন,
কারণ মানুষের একজন ঈশ্বর প্রয়োজন-
সেই ঈশ্বর যার আছে নরকের মতো এক আশ্চর্য জগৎ,
সেই ঈশ্বর যিনি বড়োই নিষ্ঠুর মমত্বহীন!
ঈশ্বর এরকম না হলে ধর্ম ব্যবসায়
উঠবে লাটে – এমন অব্যবস্থাপনা ধর্ম ব্যবসায়ীগণ মেনে নিতে
মোটেই সম্মত নন।
মানুষের পৃথিবীতে তাই ঈশ্বরের অস্তিত্ব
সুদীর্ঘ প্রয়োজন
আর ঈশ্বরের পৃথিবীতে
মানুষের কোনো প্রয়োজন নেই,
প্রয়োজন কেবল মোল্লাতন্ত্র
যাজক পাদ্রী পুরোহিত-
এ হলো তথাকথিত ঈশ্বর।
যিনি প্রকৃত ঈশ্বর তার সন্ধান পেতে হ’লে ফিরে যেতে হবে মানুষের কাছেই ,
সেই মানুষ যার কাছে দুইটি মানুষ
আলাদা কিছু নয়
যার কাছে মানুষ মাত্রই হোমো সেপিয়েন্স আর হোমো সেপিয়েন্স হতে হলে
ধর্মের কোনো প্রয়োজন নেই।
আর ঈশ্বর?
প্রতিটি মানুষই ঈশ্বর
কেননা মানুষ ছাড়া ঈশ্বরবাচক ডিসকোর্স নিতান্তই নিস্প্রয়োজন।

রাত্রি
রাত জেগে জেগে কবিতা লিখতে গিয়ে
ভোর হয়ে এলো
যে- ভোর কারো কাছে ঈশ্বরের আরাধনা কারো কাছে ভগবানের প্রতি নিবেদন
কারো কাছে যিশুর স্মরণ কারো কাছে, কিংবা শিউলি কুড়ানো মিষ্টি প্রহর।

রাত্রি
এক জীবনে শিউলি কুড়ানো
তোর সঙ্গে হলো না আমার!

যুদ্ধ [Bengali Poetry]

ওরা এলো
শিশুদের খুন
পুরুষদের হত্যা
আর নারীদের ধর্ষণ করে চলে গেলো

এটা ওদের কাছে ঘুম থেকে উঠে
দাঁত মাজার মতো স্বাভাবিক

যুবক অনার্য | Jubak Anarjo

Bengali Poetry 2023 | ডাঃ মাধাই মিদ্যা | কবিতাগুচ্ছ ২০২৩

Bengali Poetry 2023 | মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ | কবিতাগুচ্ছ ২০২৩

Bengali Poetry 2023 | শিবপ্রসাদ পুরকায়স্থ | কবিতাগুচ্ছ ২০২৩

Bengali Poetry 2023 | প্রতিম ঘোষ | কবিতাগুচ্ছ ২০২৩

রাষ্ট্রীয় হাঙর | সশস্ত্র আঁধার | নিষিক্ত চিরকুট | ব্ল্যাকবোর্ড | আমি | বীজ কর্তনকারী | শুভরাত্রি | রাত্রিচারণ | বিয়ে দিবস | বাংলা কবিতা | বাংলা কবি | নতুন কবিতা ২০২২ | কবিতাগুচ্ছ | সেরা কবিতা | কবি ও কবিতা | অনুবাদ | সিমাস হিনি | স্পিনার হাঙর | হাঙরের সঙ্গে ছবি | হাঙর মাছের ছবি | রস্ট্রাম কী | হাঙর কোন শ্রেণীর প্রাণী | হাঙ্গর মাছ ধরা | হাঙ্গর কে মাছ বলা হয় কেন | হাঙ্গর মাছের বৈশিষ্ট্য | হাঙ্গর মাছ খাওয়া কি হালাল | হাঙ্গর চোষক মাছ | হাঙর নদী গ্রেনেড | তোমারে চিনি না আমি | আমি একজন সেলসম্যান | আমি তোমাকে | আমি আমি | ভাই আমি | আমি কি | আমি মানুষ | আমি ভালো আছি | আমি চাই চাই চাই | তুমি আমি | আমি চাই থাকতে | আমি কোথায় পাব তারে | আমি ক্রিকেট দেখি না | আমি কাউকে রেফার করেছি | কবিতার বাইরে কিছু নেই | কেউ | অমীমাংসিত শ্লোক | নির্গ্রন্থ পাহাড়ের গল্প | নিষিদ্ধ সাইরেন | কবিতাগুচ্ছ | বাংলা কবিতা | সেরা বাংলা কবিতা ২০২৩ | কবিতাসমগ্র ২০২৩ | বাংলার লেখক | কবি ও কবিতা | শব্দদ্বীপের কবি | শব্দদ্বীপের লেখক | শব্দদ্বীপ | বাংলা ম্যাগাজিন | ম্যাগাজিন পত্রিকা | শব্দদ্বীপ ম্যাগাজিন | কবিতার অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ | কবিতার কথা | কবিতার কথা জীবনানন্দ দাশ | কবিতার গুরুত্ব | রোদেলা দুপুরের কবিতা | কবিতার কথা প্রবন্ধ | জীবনানন্দ দাশের কবিতার বৈশিষ্ট্য | প্রিয় তুমি কবিতা | শেষের কবিতা | কিছু অমীমাংসিত রহস্য | অমীমাংসিত সত্য | পাহাড় আর হ্রদের গল্প | পাহাড়ি মেঘের গল্প | তিন পাহাড়ের স্বপ্ন | নীল পাহাড়ের গল্প | পাহাড়ে ওঠার গল্প | মেঘবালিকা ও পাহাড়ের গল্প | চুম্বক পাহাড়ের গল্প | নদীস্বপ্নের শেষ দৃশ্য | পাতাল সাম্রাজ্যের কবিতা | স্বল্পদৈর্ঘ্য শালিকদুপুর | আজ দ্রোহবার | দিনগুলি | দুই নদীর স্বপ্ন | আমি স্বপ্নে দেখেছি নদী | স্বপ্নে নদীর পানি ঘোলা দেখলে কি হয় | স্বপ্নে নদী ভাঙ্গা দেখলে কি হয় | স্বপ্নে নদী পার হতে দেখলে | স্বপ্নে নৌকা দিয়ে নদী পার হতে দেখলে কি হয় | স্বপ্নে নদীর স্রোত দেখলে কি হয় | স্বপ্নে গঙ্গা নদী দেখলে কি হয় | স্বপ্নে নদীতে মাছ ধরতে দেখলে কি হয় | স্বপ্নে নদীতে সাঁতার কাটতে দেখলে | স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র | মুছে যাওয়া দিনগুলি | একাত্তরের দিনগুলি | দিনগুলি মোর সোনার | হারিয়ে যাওয়া দিনগুলি | মুছে যাওয়া দিনগুলি স্বরলিপি | মুছে যাওয়া দিনগুলি আমায় যে পিছু ডাকে | মুছে যাওয়া দিনগুলি অডিও | মুছে যাওয়া দিনগুলি রিংটোন | ফেলে আসা দিনগুলি | মুছে যাওয়া দিনগুলি আজো মনে পড়ে | দ্রোহ-প্রেম-সাম্যের কবি | প্রেমে দ্রোহে গর্জে ওঠা সৈনিক | প্রেম ও দ্রোহের কবি | খুঁজে ফিরি দ্রোহ কবিতা | দ্রোহের কবি কাজী নজরুল | যে আমি তীরভাঙা নদী | মৌলিক বনভূমি | চৈতন্যে তাক করা ছুরি | ভাতে খেতে হলে | শবদেহে কবিতার উল্লাস | অবাধ্য স্প্লিন্টার | অমুদ্রিত স্বরলেখা | গার্হস্থ্য অসুখ | পাড় ভাঙা নদী | মণি নদীর তীরে গ্রাম | আমার পাড় ভাঙা এক নদী | আমার পাড় ভাঙা এক নদী লিরিক্স | ইয়াংজী নদীর তীরে | বনজ সম্পদ | বন ও বনবিজ্ঞান | বনভূমির শ্রেণীবিভাগ | পবিত্র বনভূমি মাফলং | ভারতের কোন এলাকায় সবচেয়ে বেশি বন সম্পদ রয়েছে | ত্রিপুরার বনজ সম্পদ অনুচ্ছেদ | বন সংরক্ষণের উপায় | ত্রিপুরার বনজ সম্পদ রচনা | বনজ সম্পদ এসাইনমেন্ট | প্রাকৃতিক বন কাকে বলে | বাংলাদেশের বনজ সম্পদের বিবরণ | বনজ সম্পদের উদাহরণ | চৈতন্য মহাপ্রভুর শিক্ষা | শ্রীচৈতন্যের প্রকৃত নাম কী | চৈতন্য সংস্কৃতি বলতে কী বোঝ | গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর মৃত্যু রহস্য | চৈতন্যদেব জন্মগ্রহণ করেন কত খ্রিষ্টাব্দে ? | গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু কার অবতার | নিমাই এর জন্ম | শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর গান | পান্তা ভাত | ভাত খেয়েও রোগা থাকুন | ভাত খেতে পছন্দ করেন | ভাত খাওয়ার অপকারিতা | ভাত খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা | সকালে ভাত খাওয়ার উপকারিতা | পান্তা ভাত খাওয়ার অপকারিতা | পান্তা ভাতের উপকারিতা ও অপকারিতা | ভাত খাওয়ার নিয়ম | সকালে পান্তা ভাত খাওয়ার উপকারিতা | প্রতিদিন কতটুকু ভাত খাওয়া উচিত | জ্বর হলে কি ভাত খাওয়া যায় | অতিরিক্ত ভাত খাওয়ার কুফল | প্রতিবাদী কবিতার দেয়ালিকা | গার্হস্থ্য ও পারিবারিক হিংস্রতা সম্বন্ধে | গার্হস্থ্য হিংসার ধারণা | গার্হস্থ্য জীববৈচিত্র্য | গার্হস্থ্য সহিংসতা কি | গার্হস্থ্য হিংসার সংজ্ঞা | গার্হস্থ্য সহিংসতা | গার্হস্থ্য বিজ্ঞান | গার্হস্থ্য অর্থনীতি কি | গার্হস্থ্য সহিংসতা আইন

The Seed Cutters | Wedding Day | Night Drive | Good Night | Bengali Poetry | Bengali Poem | Bangla Kobita | Natun Bangla Kabita | Kabita Guccha | Writer | Poet | Seamus Heaney | Chitrakoot mountain | Chitrakoot mountain in Ramayana | Chitrakoot hotels | Chitrakoot famous temple | Hill station near Chitrakoot | Chitrakoot nearest railway station | Chitrakoot one day trip | Chitrakoot Temple | Chitrakoot Garden and Resorts | Chitrakoot Farmstay Pabong | Black Board | Blackboard Learn | Blackboard app | Buy blackboard for Home | What is blackboard made of | 5 sentences about blackboard | Black Board online | Ke Bole Ami | Ami Chai Thakte Lyrics | bengali poetry | bengali poetry books | bengali poetry books pdf | bengali poetry on love | bangla kobita | poetry collection books | poetry collections for beginners | poetry collection online | poetry collection in urdu | poetry collection submissions | poetry collection clothing | new poetry | new poetry 2022 | new poetry in hindi | new poetry in english | new poetry books | new poetry sad | new poems | new poems in english | new bengali poetry in hindi | new poems rilke | new bengali poetry in urdu | bangla poets | indian poetry | indian bengali poetry in english | indian poetry in urdu | indian poems | indian bengali poetry about life | indian poems about love | indian poems about death | Bangla kobita | Kabitaguccha 2022 | Shabdodweep Writer | Shabdodweep | power poetry | master class poetry | sweet poems | found poem | poetry night near me | poem about myself | best poets of the 21st century | christian poems | prose poetry | poetry international | bengali poetry pdf | free poem | a poem that tells a story | beat poetry | poetry publishers | poem and poetry | def poetry | heart touching bengali poetry | poetry near me | prose and poetry | poem on women empowerment | identity poem | quotes by famous authors and poets | bee poem | poem about self love | story poem | poetry angel | narrative poetry examples | poetry reading near me | prose poetry examples | elegy poem | bengali poetry reading | the tradition jericho brown | poetry websites | protest poetry | prayer poem | emotional poetry | spoken word bengali poetry | poem about god | percy shelley poems | jane hirshfield | spiritual poems | graveyard poets | chapbook | poems about life | poems to read | found poem examples | poems about life and love | elizabeth bishop poems | bengali poetry about women | sister poems that make you cry | famous quotes from literature and poetry | mothers day poems from daughter | poem about community | 8 line poem | inspirational poetry quotes | poem about life journey | positive poems | short poem about life struggles | toni morrison poems | good bones poem | google poem | funny poems for adults | inspirational poems about life | friendship poem in english | paul laurence dunbar poems | freedom poem | sad poetry about life | Shabdoweep Founder

Leave a Comment