New Bengali Poetry 2023 | কবিতাগুচ্ছ | কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা

Sharing Is Caring:

কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা – সূচিপত্র [Bengali Poetry]

নির্বাসন – কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা

মলিন মুখে দাঁড়িয়ে
ছবি অপলক
স্তব্ধ হল ধরিত্রী ঘূর্ণন
তার চলে যাওয়া পথ
আমার অনন্ত পথের বাঁকে
দিক-চিহ্ন হীন নির্বাসিত

গান গাইলে হয়ে যেত ঝর্না ঝরণ
বাক ছিল তার কুয়াশার আস্তরণ

বিকেলের ফিঙের মত ডানা ছড়িয়ে
তার সঙ্গে পথ হাঁটছি অনন্তকাল
দু আঁখির জলস্রোতে সে গিয়েছে ভেসে

ফিরবে না আর কোন রাতে
বলবে না কবিতার শেষ দু লাইন

পরবাসে – কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা

একটা দিনের মৃত্যু হলে,
তোমার সঙ্গে দেখা ।
বাউল বাতাস বলছে আমায়,
একলা কেন থাকা !

একটা দিনের মৃত্যু হলে,
তোমার সঙ্গে দেখা ।
কান্না যত কেঁদেছি সব,
আঁচল মুছে রাখা।

একটা দিনের মৃত্যু হলে,
দেখবো তোমার মুখ।
বিরহ ব্যথার আগল ভেঙে,
মুছিয়ে দিক অ- সুখ।

একটা দিনের মৃত্যু হলে,
আরেকটা দিন আসে।
একলা সময় দিব্যি ঘোরে,
আমার ,ব্যাকুল পরবাসে।

সিঁদুরে মেঘের ভয় – কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা

আদিগন্ত বিষণ্ণতার চাদর
প্রাণ উৎস স্থির বিন্দু দূরে।

বিশ্বাসের স্তম্ভ সব হীন তাপে গলে।
অসাম্য বাতাস ছুঁয়েছে আমায় দিনে রাতে।
সে আমার পড়শি নয়,
সে আমার গেরস্থালী দেখেনি জীবনে।
তবে কী বসতে পারি তাহার হৃদয়ে!

জ্বালাতন রোদ, বৃষ্টি ধোয়া বাতাসের গান,
ভোরের প্রান্তে আসা স্বপ্নের ঘুম ।
ওসবের মর্মার্থ আলাদা !

জীবনের কটুকথা, শাপান্ত বা অভিযোগ,
সবকিছু গরল বিষয়ক।

নির্জন উপত্যকা যদি ডেকে বলে, –
কিছু কথা ভুলে যেতে হয়।
তখন ভাবনা এসে ঢুকে পড়ে মাথায়।

কে যে মানুষ, কে যে তা নয়,
মৃত্যুর কাছে এক, প্রশ্ন অবান্তর।

সে জীবন বসে থাকে চির আশঙ্কায়,
সে জীবন ‘ ঘরপোড়া গোরু’।
চিরকাল ‘ সিঁদুরে মেঘের ভয়ে ডরে’।

হতবাক – কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা

বাক হত হল, হয় চিরকাল।

গোধূলিতে অথবা আর্দ্র সকালে,
তোমার হাতে শুধু শুধু নীল পুষ্প নয়।

সুখদুঃখ মুছে ফেলে সদ্যজাত নদী,
একলাটি কাঁদে।

অহংকার আত্মস্থ জন্মসূত্রে ।
জননীর হাতে থাক বরণের ডালা ,
সব ভালোবাসা রেখে দিতে পারি।

সাপের প্রত্যন্ত ভাষা শুধুই কী ফোঁস!

আগুনের কানে কানে বলেছে বাতাস,-
চলে যাই চলে যাই !
জলঙ্গীর কূল থেকে চুর্নির তীরাবধি ,
আমি ও কাঁদছি একা,
চলে যাই
চলে যাই!

কবিতার প্রজনন – কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা

কবিতারা উড়ে যায়, লক্ষ্মী প্যাঁচার মত
নরম ডানায়।
বাতাসের চোখে মুখে ছড়ায়ে ছড়ায়ে,
আপনার রেণু।
কখনও বা নামে মাটির পৃথিবীতে,
সন্তর্পণে।
বৈশাখের নিদাঘের দিনে,
যদি শোনে ভিনদেশি রাখালিয়া বেণু,
প্রান্তরের শেষ প্রান্তে বটবৃক্ষ তলে ।
তখন ভেজায় মাটি দুচোখের জলে।

ভাবনার শব্দমালা ভাসাই বাতাসে,
যদি ওড়ে তারা সব কবিতার পাশে !

কবিতা পরাগ মাখা শব্দগুলো,
কখন যে নেমে এলো বাবার বাগানে।
জল হাওয়া মাটি আর মানুষের টানে।

কবিতার প্রজনন কবির মননে ,
যারা তার চির সঙ্গী, বাঁচায় গোপনে।

অলক্ষ্যে হাঁটে ওরা – কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা

মনের গভীর খাদ থেকে তুলি মৃতদেহ গুলো।
সব চেনা মুখ।
ফোংলের মা, বিষ্টু পাগলা, পাঁপড় ব্যাপারী বুড়ো।
নিমেষেই ওরা জীবন্ত হয়।
স্মৃতির উঠোনে দিব্যি হেঁটে চলে,
নিজস্ব ঘরানায়।
গরীবের ঘরে খুব কষ্ট ছিল।
খামতি ছিল না ভালোবাসায়, রাগে অনুরাগে।
জীবনের ওঠা নামা গুলো ,সহজে জীবন
হয়ে যেত ওদের।
একদিন ওরা শ্মশান ভূমিতে গেল।
হয়তো এখনও বাঁচে পরিচিত পরিসরে !

পথ দেখিয়ে আঁধার করে পার।
অলক্ষ্যে বাঁচে অন্তরে।

চলে যাই – কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা

মধ্যরাত কখন যে পার হয়ে যায়!
ভোরের ফিকে আলোর চাদর সরিয়ে,
স্নেহময়ী পৃথিবীকে দেখি।
আলোয় বাতাসে বৃষ্টিতে সৃষ্টিতে,
কোন এক মায়াডোরে বেঁধেছে সময় ।
আমার পাপ পুণ্য ঘৃণা ভালোবাসা,
মাটির বুকেতে পুঁতে রেখে,
সূর্যোদয়ের প্রতিটি সকাল আলো দেয়।
প্রতিটি নতুন ভোর শুকতারা আলো,
কেন যে আমায় ডেকে বলে, চিরকালের
রূপকথা !
মাটির আঙিনা জুড়ে বিশুদ্ধ যাপন চিত্র।
কোথায় রাখি যে আমি, শ্লাঘা আর অহম!

কৃষ্ণপক্ষের মরা চাঁদ, তারার মালা থেকে
আলোর ফুল ছড়াচ্ছে পথে।
তখন শত্রু মিত্র সবাই,
নিয়ে যাচ্ছে আমার মৃতদেহ।

বেঁচে থাকা জীবনের নাম – কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা

সদ্য তোলা শাপলার মত ঘ্রাণ তার
বর্ষালি মেঘের মত চুলে একটি
কদম ফুল
অভিকর্ষ মহাকর্ষ সব সংজ্ঞা ভুলে
ধরেছি তোমার অনামিকা

এখন গোধূলির বিষণ্ণ আলোতে
এসো হে অদৃশ্য ঈশ্বর
আসন্ন জ্যোৎস্নার কথা বলেনি তো চাঁদ
তবু হেঁটে হেঁটে যাই অদ্ভুত আবেশে
তার সাথে
বিরল ছায়ার বিরল প্রেমের
অবিনাশী পৃথিবীর অন্তহীন পথে
ছন্দে দ্বন্দ্বে হাত রেখে হাতে
জানি শুধু
বেঁচে থাকা জীবনের নাম

বন্দরে বসতি – কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা

খাঁ খাঁ ভিতর মহল
ভেঙে ভেঙে খান খান সমস্ত গোপন
বিদ্রোহ স্তিমিত হল আলোক সজ্জায়
আগুয়ান পতাকায় অজানা ইঙ্গিত
এখনি দমকা হাওয়া আসবে
আজ আর নিবিষ্টতা নয়
অফুরান শব্দের ঘর মুক্ত করেছি

যত আপামর পংক্তি ভেঙে এগোচ্ছে

রক্তাক্ত আঙুল গুলো জলে নয়
আকাশে খেলা করে

সবুজ কলমি লতা বিসর্পিল
মেঘ-রং ধীরে ধীরে বাঁশরি বাজায়

হাত কাঁপা ভয় কেন
ছেড়ে ছুড়ে পালাও বন্দর থেকে

ব্যস্ততা – কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা [Bengali Poetry]

প্রিয়জন আসতো,
ভালোলাগার বাতাস নিয়ে।
এবং আত্মীয় কুটুম্ব।

হাজার ব্যস্ততায় তারা ডুমুরের ফুল,
ভুলে যায় সব ঠিকানা আস্তানা।
আবিল আকাশ থেকে ভেসে আসে,
কুশল অথবা অকুশল সংবাদ।

ইসকুলের মাষ্টার মশাই বলতো,
গাছ লতা পাতা বন্ধু সবার।
রোজ কাছে যাই, প্রাণবায়ু পাই।
দু দণ্ড বসে থাকি ছায়াতলে।
মা যেমন নেয় শিশু, কোলে তুলে।

তোমার গৃহকোণে যদি যাই!
হয়তো বলতে পারো,
সময় তো নাই!

ফিরে এসে ভেবেছি অনেক,
সময় দেওয়ার মত, নেই কী ক্ষণেক !

নিজের পৃথিবী ধরে, উল্টে পাল্টে দেখি,
ঠিকঠাক ঘুরিতেছে নাকি!

বৃক্ষের আসন্ন আকালে,
মানুষের শিকড় গজায় ।

শোক – কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা [Bengali Poetry]

গভীরতম শোক, মনের নিবিড় আঁধারে,
সুপ্ত থাকে চিরকাল।
রাত গাঢ় হলে,
বসে এসে বিছানার পাশে।
ঘুম থেকে ডেকে তোলে নানা অছিলায়।
তারপর ভিজে চোখ আমারে কাঁদায়!
সময় তো জানে,
কাঁদিছে মানুষ সঙ্গোপনে।
কোনদিন জানে না তা,
আপনার জন অথবা আনজনে।

নির্জন পথের বাঁকে,
দাঁড়ায় সে খুব কাছাকাছি।
এ এক বাঁচার ধরণ,
শোক আর আমি পাশাপাশি আছি!

আলো আঁধারিতে – কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা [Bengali Poetry]

আবছা কুয়াশা ভরে,
হিম মাখা বাতাসের স্তরে।
শান্তশীল ধুলোমাখা বিকেলের শ্বাস,
গুটি গুটি পায়ে নামিছে হেমন্ত সন্ধ্যা।
সূর্য গেল ঢলে, রাঙিয়ে গোধূলি-বাস।

প্রাত্যহিক হিসেব নিকেশ শেষ হতে,
চলে যায় দিবসের আলো।
ক্রমশ এগিয়ে আসে খেয়াঘাট গুলো।
আঁধার চাদর মুড়ি দিয়ে রাত নামে,
স্পষ্ট হয় সন্ধ্যাতারা বাতি।
কোন ঘরে ঐশ্বর্যের আলো,
আনঘরে দুঃখ-ভেজা রাতি।

কোনজন বেঁচে সুখী,দুঃখী কোনজনে।

মানুষ, মানুষ, বলে মিছে হাহাকার।

BENGALI POETRY

রঙ ঢেলে পৃথিবীকে দেখা – কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা [Bengali Poetry]

খুব কাছে গিয়ে ,কলম মুখ ঘষছে ,
সাদা পাতার উঠোনে।
কত কথাই না পড়ে মনে।
মৌচাক,
মৌমাছির তিল তিল করে নির্মাণ।
আগুন আবিষ্কারের শিরোপাধারী,
ধোঁয়ার ধাঁধায় ভুলিয়ে মধু খায়।
বেচারি পতঙ্গ, তবুও ভালোবাসে,
পৃথিবীর ফুল!
হায়নার গায়ের রঙের মত,
শুঁয়োপোকার দল।
পুড়িয়ে দিচ্ছি সজনে গাছের শ্মশানে।
ভালোবাসার রঙিন রঙিন প্রজাপতি,
ওড়ে না আর আগানে বাগানে।

মধ্যরাতের ছায়াপথ ডেকে নিয়ে যায়।
মনুষ্যত্বের ভারা ধরে ঝুলছে অশরীরী।

রঙ ঢেলে পৃথিবীকে দেখা,
বিসদৃশ শব্দের ঝাঁঝালো কথায়,
মানুষকে বকা।

একবার পিঠে হাত রেখে বলি,
কেমন আছো ভাই!

বোবা বন্ধু – কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা [Bengali Poetry]

ভাঙা ইট পাথরের কুচি হাসে হি হি,
কোথাও পিচ ঢালা, এবং তোবড়ানো।
চলে গেছে সড়ক জনপদ চিরে।

রাজা রানী ধনী মানী দুঃখী ও কাঙাল,
ব্যস্ত যানে সারা দিন রাত।
হাতাহাতি মাতামাতি ঘটন অঘটন,
জীবন চলেছে দ্রুততম এই আজকাল।

পাকা ওই সড়কের দু ধারে রেখেই
মা গেল চলে !
ধোঁয়া খেয়ে ধুলো মেখে, বিজলী আলোয়
নিদ্রাহীন রাতের আঁধার।
এ কেমন পৃথিবী সংসার!
ঠায় দাড়িয়ে থাকি সারি সারি,
শিকড় পায় না মাটি, শুধু পোড়া ইট।
জলের আকাল সারাটা জীবন।

বর্ষার ভিজে দিনে, মা বৃষ্টি থাকে ক্ষণকাল,
ধারা স্নানে মলিনতা যায়,
মাটির গভীরে গিয়ে শিকড় বাঁচায়।
চলে যায় শরতের দিনে,
বলে যায়, রয়েছে মানুষ তোদের ভাই।

আমরা গাছের দল।
ধরিত্রীর ভালোবেসে দিয়েছি,
সুগন্ধি ফুল আর রসবতী ফল।

কতদিনে ‘মানুষের’ ঘটিবেক,
নিষ্ঠুর হৃদয় বদল!

এসো হে নতুন দিন – কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা [Bengali Poetry]

বিদায় ব্যথার আঁচল ঢেকে, সে যে চলে যায়।
কুয়াশা ঢাকা ক্লান্তি নিয়ে চলেছি কোথায়!
অজানা এক ঘন্টা ধ্বনি অসীমের নিকেতনে।
ছন্দবান বাতাসের ঢেউ আমাকে নিয়েছে চিনে।
বিগত দিনের কাদা মাটি ধুলো মেখে,
মানুষ বেঁচেছে নিষ্ঠুর মৃত্যুর হাত থেকে।

স্মৃতির দেরাজে রেখেছি খানিক তুলে,
বিপন্ন রাত বিষণ্ণ দিন অনেক গিয়েছি ভুলে।
নিকষ আঁধার নিশ্চুপে রেখেছিল,
আমার বালিশে মাথা।
মাঝরাতে ভাঙা চাঁদ বুঝেছিল,
তোমার বিরহ ব্যথা।
শুকতারা ভোরবেলা, দেখেছিল পথচলা,
নদীর কিনারা ধরে।
কেঁদেছিল জননীরা, চিরকাল শোকাতুরা,
তাহাদের জীর্ণ কুটিরে।

আছে যত অপ্রেম, দলাদলি,
দাও তারে গঙ্গাজলে ফেলি।
অন্তরের রাগ, মহাবলী,
মনের প্রাঙ্গণে দাও বলি।
ছিল কত বিদ্বেষের বিষ,
হয় যদি পৌষ ধানের শিষ!
আছে যত দুখী মুখ ম্লান,
সকলের দাও প্রাণ অফুরান।

বাজুক প্রাণের তারে ভাটিয়ালি তান,
নতুন বরষ আসে, করি আহ্বান!

ভাবুকের পৃথিবী – কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা [Bengali Poetry]

পাই না দেখা ভাবনা পাখির পাখা,
কিন্তু তারে যায়না ধরে রাখা !
কখন গিয়ে বসলো মনের খাঁচায়,
ফিরে আসে শিশুর ভালোবাসায় ।
যখন আবার শুনলো প্রেমের গান,
ভাবনা ভেঙে হল যে খান খান।
অতীত কালের পতিত ভূঁয়ে,
হঠাৎ গিয়ে বসে।
একটু খানি জায়গা পেলে,
মজে ভাবের রসে।

কেউ বা ভাবে কাব্য নিয়ে,
নতুন সৃষ্টি সুধা।
দিনরাত্রি ভাবছে মানুষ,
নিয়ে জঠর ক্ষুধা।

ভাবনা থেকে মহার্ঘ্য সব,
সৃষ্টিগুলো আসে।
আকাশ থেকে উড়ান যানে,
মানুষ মহাকাশে।

নানান রঙের ভাবনা ভাবে,
মানুষ নিরবধি।
ভুবন ডাঙায় বান এনেছে,
অক্ষরের নদী।

শ্রাবণ রাতের বৃষ্টি ধারায়,
ভাবনা ভিজে যায়।
হৃদয় মাঝে সেতার বাজে,
সুরের মূর্ছনায় ।

মেঘের ছায়ায় গাছের পাতায়,
ভাবনা করে খেলা ।
মন খারাপের ভাবনা সে নয়,
মেলে যে ডালপালা।

সূর্য জাগে রোজ প্রভাতে,
ভাবনা পৃথিবীটা ।
ভাবনা মনের অলঙ্কার,
যেমন ফুলের কাঁটা!

মুখ দেখে মা বুঝতো আমার,
ভাবনা নিয়ে আছি।
স্নেহের পরশ বুলিয়ে মাথায়,
বসতো কাছাকাছি।
মা গো আমার ভাবনাগুলো,
পাঠাই তোমার কাছে।
মানুষ নিয়ে ভাবনা যেন,
সারা জীবন বাঁচে!

কবিতার জন্মসূত্র – কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা [Bengali Poetry]

হৃদয়ের গাছ থেকে নিঃসীম
আকাশপানে ধায়
প্রান্তরে প্রান্তরে ছড়িয়ে যায়
তার ডানার পালক
ঘাসে ঘাসে অন্তর্লীন থাকে
বর্ণহীন চোখের জল
আকাশনীলে বাজে তার
মুগ্ধতার সুরেলা বাঁশি

এই আছি এই নেই
গগন বিদারী হাহাকার

থাকা না থাকার মধ্যিখানে
কবিতার জন্মসূত্র পেয়ে যাবো

শান্ত দীঘির জলে ভাসমান
কলমি লতার ফুলে

হৃদয়ে সাজানো মঞ্চ – কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা [Bengali Poetry]

পেতেছি আসন আশায় আশায়
সময় হল কী তার আসা!
কোথায় হারিয়ে যায়, গরিমার হড়কা বানে,
মানুষের তুচ্ছ ভালোবাসা।

উৎসবের কী আছে আদর!
ভক্ত করে ভক্ত সমাদর।
তারপর, তারপর আপনার সংকীর্তন ধ্বনি,
আকাশের খুব কাছাকাছি পৌঁছে যায়,
ঘৃণ্য অহমিকা ।
নিদারুণ গোলামী প্রণতি রাখে,
মিথ্যে আভরণে সেবক সেবিকা।

মঞ্চপথ হয়তো বা অহম লাঞ্ছিত আজকাল,
মিছে তারে করেছি বরণ, সন্ধ্যা সকাল !
ফিরে যায় দেবতা, মানস মন্দির থেকে,
নিয়ে দুঃখ গাথা।
মিথ্যে হল, রঙ গুলে, মরা ফুলে,
তাহার আসন পাতা।

পৃথিবীর পিচ্ছিল রক্ত ঝরা পথে,
হেঁটে হেঁটে একদিন কোনমতে,
হৃদয়ের দ্বারে রেখে হাত।
মরুর বুকেতে করেছে খনন,
মহার্ঘ্য ক্ষমার জল প্রপাত।

পৃথিবীর এই ক্রান্তিকালে, উৎসবের সাজে নয়,
নয় কোন আঘাতের ব্যথা।
দেবতার শূন্য আসন যাবে ভরে,
মানুষ শুনবে যবে, মানুষের কথা !

সন্তান – কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা [Bengali Poetry]

গঙ্গাজলে নেয়ে আমার মুখটা পড়বে মনে তোর
তখন আমি থাকবো না আর সারা দুপুর ভোর
যেখান থেকে হেঁটে হেঁটে শিশুবেলা গেল ছুটে
পুকুর বাগান বটতলা আর কুঁড়ের বাদার ধার
খুঁজবি কত বুঝবি যত সে জন গেছে ভুবনপার

এমনি ভাবে পথের মত মুছেই যাবো চলে
ভোরের আকাশ ফুল বাগিচা সবাই গেছে ভুলে
ছবিখানা মলিন হলে রাখবি তাকে তুলে

এইতো জীবন সারাজীবন মাটির মায়া খেলা
কান্নাকাটি হাসির ভুবন ক্ষণিক মিলন মেলা
হয়তো আমি বেঁচে আছি তোদের প্রাণের মাঝে
তোদের গানে মোর আনন্দ নিত্য সে সুর বাজে।

হারানো শীতের সকাল – কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা [Bengali Poetry]

শীতের সকাল এলে, লেপ কাঁথা ঠেলেঠুলে,
রোদ্দুর – বাগানেতে যাই।
মাটির দেয়াল ঘেঁষে, রোদ্দুর মেখে বসে,
বই পড়ি আমরা ক’বোন ভাই।

আমড়া গাছের পাতা, সব গেছে ঝরে,
পাকা আমড়ার থোকা সবার নজরে।
ভিজে আছে কলাপাতা শিশিরের জলে,
পালং মুইড়ে খায় তিনটে ছাগলে।
ভাঁড় বাঁধা আছে দুটো খেজুরের গাছে,
গোটা তিন বুলবুলি বসে তার কাছে।

ডিমের ঝুড়ি মাথায় নিয়ে ডিমব্যাপারি হাঁকে,
ভীমের খুড়ি কুন্তীবুড়ি চেঁচিয়ে তার ডাকে।
ঝুরু ঝুরু বয়ে আসে উত্তুরে বায়,
আমার লাটাই ঘুড়ি হারালো কোথায়!

খেজুর গুড়ের গন্ধ আসে কাকার বাড়ি থেকে,
ভুরু ভুরু গন্ধ মধুর না যায় রাখা ঢেকে ।
পাড়ার কজন বুড়োবুড়ি বসে উনুন পাশে,
হাড় কাঁপানো শীত পড়েছে অগ্রহায়ণ শেষে!
পিছন বাড়ির ভুবনমাসী ঢেঁকিতে চাল কোটে,
শীতের দিনে ধান ভানলে, শীত নাকি যায় ছুটে!
এসব দিনে তাড়াতাড়ি সকাল চলে যায়,
যদুর কাকী উঠোন – রোদে পান্তা বেড়ে খায়।

এমনি ছিল শীতের সকাল, গাঁ গঞ্জের পাড়ায়,
শীত বিলাসী মানুষ এখন, ইচ্ছে মত বেড়ায়।
শীত না এলে কান্নাকাটি, বৃথা মেলার আয়োজন,
হয় কেমনে শীত উৎসব, প্রিয় বনভোজন!

আলতা সুন্দরী – কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা [Bengali Poetry]

খুব তার প্রিয় ছিল আলতার শিশি,
বড্ড বকুনি দিত, মা মাসি পিসি।
যখন মেলায় যেত, কিভাবে সে খুঁজে পেত,
চুড়ির দোকান।
কিছু তো নেই নাকে, কিনে দেয় কে যে তাকে,
ফাঁকা আছে, দুই কান।
ওসব না হোক তার, লোভ নেই বেশি।
কিন্তু একটা চাই আলতার শিশি।

সখি যত মিলে হত পুতুলের খেলা,
আলতায় রাঙা দু-পা, বিকেলের বেলা।

একদিন বেজে ওঠে সুরেলা সানাই,
পালকি সাজিয়ে আসে নতুন জামাই।
উত্তর কিশোরী কাল, আজ তার বুক দুরুদুরু,
কাঁপে যেন কোন এক আমলকী তরু।
চোখের জলেতে ভাসে বরণের ডালা,
মলিন যে হল তার কণ্ঠের মালা।
আলতা রাঙা পা দুখানি বরণ পিঁড়িতে,
মায়ের চোখের জল, না জানে থামিতে !
আঁধারে ঢেকেছে আজ মায়ের ভুবন,
‘পরের’ বাড়িতে যায়, নাড়ি ছেঁড়া ধন।

নাকেতে নোলক তার, কানে দোলে দুল,
খোঁপায় শোভিত আজ গোলাপের ফুল।
দু পায়ে আলতা রাঙা, নখেতে কুম কুম,
স্বামীর ঘর তার, উৎসবের ধুম।

ননদিনী রাঙায়েছে, কচি দুই পা।
শাশুড়ি বলেছে, – ‘অষ্টমঙ্গলা যা।’

আলতা সুন্দরী যায় পিতার ভবন,
সেথা প্রিয় মুখ সব, ভাবে অনুক্ষণ!

কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা | Krishna Kishore Middya

New Novel Updates 2023 | অনুভূতির বান্দরবান (পর্ব ২) | অতনু দাশ গুপ্ত

New Novel Updates 2023 | অনুভূতির বান্দরবান (পর্ব ৩) | অতনু দাশ গুপ্ত

New Novel Updates 2023 | অনুভূতির বান্দরবান (অন্তিম পর্ব) | অতনু দাশ গুপ্ত

New Novel Updates 2023 | অনুভূতির বান্দরবান (পর্ব ১) | অতনু দাশ গুপ্ত

bee poem | poem about self love | story poem | poetry angel | narrative poetry examples | poetry reading near me | prose poetry examples | elegy poem | poetry reading | the tradition jericho brown | poetry websites | protest poetry | prayer poem | emotional poetry | spoken word poetry | poem about god | percy shelley poems | jane hirshfield | spiritual poems | graveyard poets | chapbook | poems about life | poems to read | found poem examples | poems about life and love | elizabeth bishop poems | poems about women | sister poems that make you cry | famous quotes from literature and poetry | mothers day poems from daughter | poem about community | 8 line poem | inspirational poetry quotes | poem about life journey | positive poems | short poem about life struggles | toni morrison poems | good bones poem | google poem | funny poems for adults | inspirational poems about life | friendship poem in english | paul laurence dunbar poems | freedom poem | sad poetry about life | Shabdoweep Founder

Leave a Comment