Top Best Bengali Poetry 2023 | কবিতাগুচ্ছ | গোবিন্দ মোদক

গোবিন্দ মোদক – সূচিপত্র

কবিদের মৃত্যু হতে নেই – গোবিন্দ মোদক – Bengali Poetry

একটু আগে এই পথেই পরিভ্রমণে গেছেন
এক অনন্ত পথের যাত্রী
পথে ইতস্ততঃ ছড়ানো খই দেখে
অনুমান করা যাচ্ছে না যিনি চলে গেলেন
তিনি ভালোবাসার শব্দ-অক্ষর দিয়ে
গড়ে তুলেছেন অজস্র কবিতা-শরীর
নিজের চারপাশে এঁকেছেন অজস্র ভাঙ্গাগড়া
প্রতিবাদ-লেখা, নতুন শপথ-বাণী,
ভাবনার কারুকার্য কিংবা কবিতা-ছবি!
অথচ আজ তাঁকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না
সারাটা জীবন নতুন নতুন পথ খুঁজেছেন
উন্মোচন করেছেন পথের বাঁকের সমূহ রহস্য
অথচ আজ জানি না কোন রহস্যের খোঁজে
পাড়ি জমিয়েছেন অনন্ত পথের পথিক হয়ে …

তোমরা বলছ — একটু বাদেই গনগনে আগুনে
পুড়বে তাঁর কবিতা লেখার আঙুলগুলো?
পুড়বে হৃদয়, ইচ্ছে-অনিচ্ছে কিংবা সুখ-দুঃখগুলো?
কি জানি! বিশ্বাস হয় না তোমাদের কথা।
কে না জানে যে কবিদের মৃত্যু হতে নেই!!

প্রতীক্ষা – গোবিন্দ মোদক – Bengali Poetry

উদ্দেশ্যহীনভাবেই
বাড়ি থেকে বেরিয়েছি আজ
অবচেতন মনে স্থির করেছি
যেমন-তেমনভাবে হেঁটে যাবো এদিক-সেদিক
তারপর অপলকে বুনো ঝোপ দেখবো
পাখির বাসা দেখবো, উই ঢিবি দেখবো
ঘাড় তুলে দেখবো সুউচ্চ বৃক্ষরাজি
যেতে যেতে পথও ক্লান্ত হবে
দুপুর গড়িয়ে পড়বে বিকেলের আঙিনায়
কখন যেন অনুমতি না নিয়ে
দিনটাও ঢুকে যাবে রাতের আলোয় …
তারপর শুধু রাত আর রাত …
অথচ রাতের সব বাড়বাড়ান্ত বুঝি থেমে যাবে
চোখ-ধাঁধানো নিয়নের আলোয় …
তখন একবুক ঘুম পোয়ানোর পালা
আর সাজুগুজু ভোরের জন্য প্রতীক্ষা।

আধভাঙ্গা স্বপ্ন – গোবিন্দ মোদক – Bengali Poetry

আমাদের একটা
কাঁঠালকাঠের চৌকি ছিল
ছেলেবেলায়
সেই চৌকিতে কোণাকুণি শুয়ে
আকাশ দেখতাম আর ভাবতাম —
কবে আমি বাবার মতো বড়ো হবো!
চৌকিটাও আমার সেই ভাবনাকে
সমর্থন করে পালতোলা জাহাজ হতো।
আজ সে চৌকিও নেই
বয়সটাও নেই!
পৃথিবীর অনিবার্য নিয়মে
বাবার মতো বড়ো হয়েছি;
অথচ কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না
সেদিনের সেই আধভাঙ্গা স্বপ্নটাকে!

উজবুক! – গোবিন্দ মোদক – Bengali Poetry

এখন যেখানে দাঁড়িয়ে আছি
সেটা মোহনা।
নদী এতোটাই গায়ে-গতরে
যে ওপাড় চোখে পড়ে না।
দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে
আর কলধ্বনি শুনতে শুনতে
ইচ্ছা জাগছে
মাঝনদীতে ভেসে পড়তে।
কিন্তু জানি মাঝনদীতে গেলে
আবার ইচ্ছা জাগবে
তীরে ফেরবার!
জলেরও টান আছে …
পাড়েরও …
কারোর টানই
উপেক্ষা করতে পারিনি আমি
তাই বুঝি সমাজ আমাকে
‘উজবুক’ বলে!

টান – গোবিন্দ মোদক – Bengali Poetry

কবিতা লিখতে বসে
টানের কথা মনে পড়ে গেল —
… “তবুও তো থেকেই যায় কিছু টান!”
সংসারের টান — ভালোবাসার টান —
স্নেহের টান — নেশার টান —
অথবা একান্ত কোনও মুহূর্তের টান।
মনের মাধ্যাকর্ষণকে উপেক্ষা করি সাধ্য কি!
একদিকে পাহাড় টানে — অন্যদিকে সাগর
একদিকে অন্ধ গলি টানে —
অন্যদিকে সংস্কার মুক্ত মন।
কবে যে আসবে সুবাতাস কে জানে!
…. তবুও তো থেকেই যায় কিছু টান!

উল্লাস! – গোবিন্দ মোদক – Bengali Poetry

ইতিহাস গড়বার কথা যাদের ছিল
তারা এই মুহূর্তে মৌতাতে ব্যস্ত।
শিথিল স্নায়ু নিয়ে তারা বসে আছে এলোমেলো,
সম্মুখে ফেনিল পাত্র ডেকে যায় – আয়! আয়!
ডাকে সাড়া দিয়ে স্নায়ু শিথিলতর হয়েছে ওদের,
অসংখ্য টুনির আলো জ্বলা-নেভা করছে
মস্তিষ্কের ভিতর,
আর আদিগন্ত ক্ষেতে ফুটে আছে উঠছে সর্ষের ফুল,
মাথায় বুজকুড়ি কাটছে স্বপ্নিল ফেনা।
ইতিহাস বলে যে কেউ ছিল বা আছে
তা এই মুহূর্তে ওদের মনে পড়ছে না।
কিন্তু কথা না রাখার দায়ে
ওদেরকে অভিযুক্ত করা চলবে না।
কারণ স্বপ্নিল গ্লাসগুলো একত্রে টুংটাং করে বেজে উঠে
একটু আগেই উচ্চারণ করেছে একটি মাত্র শব্দ
— উল্লাস!
— চিয়ার্স!
ওদের ঠা-ঠা হাসির শব্দে চমকে উঠে
উড়ে পালিয়ে গেছে কিছু কাক আর চড়ুইয়ের দল
এখন ওরা “উল্লাস” পোহাচ্ছে!!

অসম প্রতিযোগিতার আসরে – গোবিন্দ মোদক – Bengali Poetry

এই মুহূর্তে —
নিতান্তই অসম একটা দৌড় প্রতিযোগিতায়
আমাকে ভিড়িয়ে দেওয়া হয়েছে
পৃথিবীর সেরা দৌড়বাজদের সঙ্গে।
অবশ্যম্ভাবী লজ্জাজনক হারের কথা ভেবে
আমার পা চলছে না।
বরং টের পাচ্ছি —
মোমের মতো গলে গলে যাচ্ছে
আমার হাঁটু দু‘টো
আর জলের নিচে
কিলবিল করে উঠছে
আমার ভবিতব্য!

হিংসুক! – গোবিন্দ মোদক – Bengali Poetry

ধ্বংসের দেবতাকে পুজো করলে
সৃষ্টি-দেবীর মুখে
অনায়াস-আষাঢ় ঘনায়
তাই –
তাড়াতাড়ি পুজো সারতে প্রয়াসী হই।
আর ওদিকে –
জলজ-শৈবালের নিচে
পুড়ে যেতে থাকে
আধখানা চাঁদ
অথবা তার আলোহীনতা।

ভবঘুরে ও নাগরিক – গোবিন্দ মোদক – Bengali Poetry

একটা ভবঘুরে বাঁশি বাজালে
তার বাঁশির সুর লতার মতো ফুল ফুটিয়ে
এগিয়ে যেতো এঁকেবেঁকে দূরে … আরও দূরে।
তারপর যথাক্রমে জলতল ও দিগন্ত ছুঁয়ে
পৌঁছে যেতো আকাশকে ছুঁতে।
ভবঘুরের পা মাটিতে থেকে থাকতো
অথচ তার সুর অনায়াস ছুতো আকাশের গা।
আর সেইজন্যই বুঝি বাঁশির সুর শুনতে শুনতে
মনে দানা বেঁধে উঠতো একটা কষ্টের পুঁটুলি!

অথচ আমি বাঁশি বাজালে সে সুর কৃত্রিম লাগে,
এতোটাই কৃত্রিম যে —
সে-সুর কোনদিনও ছোঁবে না আকাশের দুধ-মুখ,
অথচ আমি আকাশের অনেক কাছে থাকি,
মাটির অনেক ওপরে এক কংক্রিটের খুপরিতে,
আমার পা মাটিতে ঠেকে না বহুদিন আগে থেকেই।

ছায়ামূর্তি – গোবিন্দ মোদক – Bengali Poetry

সন্ধ্যার প্রায়ান্ধকারে
যে সব ছায়ামূর্তি ঘোরাফেরা করে
আমি তাদের কেউ নই,
ছিলামও না কোনও কালে।
তবু আলো-আধারিতে থাকবার অভিযোগে
আমাকে অভিযুক্ত করা হলো।
বরাদ্দ শাস্তির মেয়াদ শেষ হতেই
আমি পাকাপাকিভাবে হয়ে উঠলাম
তাদেরই একজন,
যারা প্রয়োজনে অথবা অপ্রয়োজনে
ঘোরাফেরা করে সন্ধ্যার অন্ধকারে
ছায়ামূর্তির মতো।

কাঁটাতারের কান্না – গোবিন্দ মোদক – Bengali Poetry

মাইলের পর মাইল ক্রোশের পর ক্রোশ
নির্দিষ্ট দূরত্ব অন্তর খুঁটির সমারোহ।
খুঁটিকে জড়িয়ে আছে কাঁটাতার
এক-ফেরতা … দু-ফেরতা … তিন-ফেরতা …
বেশ একটা পোশাকি নামও জুটেছে –
কাঁটাতারের বেড়া!
ঈশ্বরের তৈরি ভূখণ্ডকে দ্বিধাবিভক্ত করে
আলাদা রাষ্ট্র, আলাদা শাসনতন্ত্র তৈরী করবার
এ এক অভিনব হাতিয়ার –
কাঁটাতারের বেড়া!
কিন্তু পেরেছো কি বাতাসের গতিবিধি আটকাতে?
পেরেছো আলোককে
সীমারেখার ওপারে বেঁধে রাখতে?
পাখিদের কি কোনো ভৌগোলিক সীমারেখা আছে?
তারা তো উড়ে যায় কোথায় কোথায়!
তাহলে যতো ভাগ শুধু মানুষের বেলায়?
সে কি শুধু মানুষ সভ্য হয়েছে বলে?
তাহলে অসভ্যটা কে ???

উৎসের খোঁজে – গোবিন্দ মোদক – Bengali Poetry

ভালো লাগার চোখে চাঁদকে দেখি বলে
চাঁদ অতো সুন্দর, চাঁদের মতোই সুন্দর!
গুণগ্রাহীর চোখে পেলব আর রেশম কোমল।
অথচ বাস্তবিকপক্ষে চাঁদ অমসৃণ
এলোমেলো বিন্যাসের নুড়ি আর খানাখন্দে ভরা
বায়ুহীন, জলহীন, ঊষর অতি শিলাময় খণ্ড!
গুণগ্রাহী অতশত বোঝে না,
সে কেবলই তার প্রেমিকার চাঁদমুখ খোঁজে
ভেতরের সব কথা না জেনেই!
আর জ্যোৎস্না? মরে যাই মাইরি!
চাঁদের কস্মিনকালেও আলো ছিল না, নেইও।
তবে জ্যোৎস্না কোথা থেকে?
যতদূর সম্ভব গুণগ্রাহীর কোমল মনই তার উৎস,
সূর্য নিমিত্ত মাত্র।

একটি নষ্ট মেয়ের গল্প – গোবিন্দ মোদক – Bengali Poetry

“একটি নষ্ট মেয়ের গল্প!”
এই নামে আমি একটি কবিতা লিখেছিলাম।
মাননীয় সম্পাদকদের পছন্দ না হওয়ায়
কোথাও কবিতাটি ছাপা হয়নি।
হবে কি করে?
এ যে একটি জীবন গদ্য
যাতে মিশে আছে অনেক যন্ত্রণা,
অনেক বঞ্চনা, অনেক শোষণের ইতিকথা!
তাই ভাবছি কবিতাটা নাম বদলে দেবো।
নতুন নামকরণ করবো —
“যে মেয়েটি বাঁচতে চেয়েছিল!”
তারপর দেখবো কোনও সম্পাদকের
সেটি পছন্দ হয় কিনা!!

সাঁকোটা – গোবিন্দ মোদক – Bengali Poetry

কবে জন্য একজন পাগলে বলেছিল –
“ওরে, সাকোটা নাড়িয়ে দে!”
সাঁকোটা সেদিন কেউ নাড়িয়ে দিয়েছিল
অথবা আদৌ কেউ তা দেয়নি
তা জানি না।
যেমন জানি না আদৌ সেই সাঁকোটা
বাস্তবে ছিলো কিনা!
তবে আজ দিনের শেষে
শরীরটা বিধ্বস্ত হলে
মনটা যেন বলে ওঠে –
“ওরে, কে আছিস!
সাঁকোটা নাড়িয়ে দে!”

যখন মৃত্যু … – গোবিন্দ মোদক – Bengali Poetry

মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখেছি বলে
অন্ধকারকে আমি আর ভয় পাই না;
যদিও জানি মৃত্যুর শীতল হাতের থাবা
লুকিয়ে থাকে অন্ধকারের গর্ভেই,
আর একটু একটু করে পুষ্টি পায় থাবার নখ!

আমি নখকেও ভয় পাই না।
কারণ আমার সারা শরীরে নখের ক্ষতচিহ্ন
জন্ম-টীকার মতোই জ্বলজ্বল করে!
তবে আমি নিজে
আর একবার ভয় পাবো বলে
মনকে প্রস্তুত রাখি,
সেটা আমার নিজেরই মৃত্যু দিন।।

বন্দিশ – গোবিন্দ মোদক – Bengali Poetry

না! কোনও বন্দিশ শুনিও না।
বরং অগোছালো হাতে
বেহালা তুলে ছড় টানো,
বিষণ্ণ কোনও সুর বাজাও
কিংবা নিজেই বেহালা হয়ে যাও
সুরের সাগরে।

না! কোনও কাজল পরো না।
বরং এলোমেলো হাতে
খোঁপা বেঁধে নাও,
ঠোঁটে দাও বিবর্ণ ওষ্ঠ-রঞ্জনী
কিংবা বাতাসে
কাগজের নৌকা হয়ে ভাসো।

না! ভালোবেসো না!
বরং ভালোবাসার ভান করে
কটাক্ষ হানো,
কিংবা চেষ্টা করো
সুনিপুণ আঘাত হানবার।
কেন না, আমি আঘাত পেতে
বড়ো ভালোবাসি।

এ কোন অসুখ – গোবিন্দ মোদক – Bengali Poetry

দু-দুবার অসুখে পড়ে
সেরে উঠবার পর
কবিতা লিখবার বাতিক
হয়েছে আমার।
তাই ধ্রুবতারা দেখি,
আকাশের তারা গুনি,
ভোরের ঘাসে শিশির দেখি,
কৃষ্ণচূড়া ফুল দেখলে
মন কেমন করে,
পাতা ঝরে গেলে শীতার্ত হই
আর বৃষ্টি হলে পেখম তুলে নাচি।
তাহলে অসুখ সেরে উঠবার পর
এ কোন অসুখ আমার?

আলো দাও – গোবিন্দ মোদক – Bengali Poetry

এ কথা বলবো না যে –
প্রভু, আমাকে কিছু দুঃস্বপ্ন দাও,
দাও কিছু নিদ্রাহীন রাত;
অথবা বলবো না –
দাও ঘর্মাক্ত বিছানার ভয়াবহতা
কিংবা –
কামনার ছাইপাঁশ আগুন;
বরং বলবো –
প্রভু, আমার চোখে
সেই আলো দাও
যে আলোয় আমি দেখতে পাবো
তোমার মধুর কিছু সৃষ্টি!

কৃষ্ণচূড়া বিষয়ক কবিতা – গোবিন্দ মোদক – Bengali Poetry

কৃষ্ণচূড়া বিষয়ক কবিতা
কখনও লিখিনি।
কিংবা লিখলেও
তা আর মনে নেই।
তবে ফুলগুলো আকাশে
আগুন জ্বালালে
তাকিয়ে তাকিয়ে দেখি।
জানি –
একদিন আমিও
নিশ্চিত হয়ে যাবো
এক গোছা কৃষ্ণচূড়ার মতোই লাল
আর আগুন জ্বালাবো
কারও হৃদয়াকাশে।

সময়ের গ্রন্থি – গোবিন্দ মোদক – Bengali Poetry

তোমাকে অনেকবার আমি
নিষেধ করেছি ওভাবে ডাকতে,
তবু তুমি শোনো না।
অথচ জানো যে
আমি বিল-বাওর-ধানক্ষেত,
নীলকুঠি মাঠ, ফাঁসিতলা ঘাট,
মায়ের থান, পাগলা সাহেবের কবর
কিংবা পীরের দরগায় ঘুরে ঘুরে
গিঁঠ দিই সময়ের গ্রন্থিতে;
এমন সময় ডাকতে নেই,
কেননা তুমিও নিশ্চিত জানো যে –
যে কোনও সময়
খুলে যেতে পারে সময়ের গ্রন্থি!

গোবিন্দ মোদক | Gobinda Modak

Bengali Article 2023 | চিরায়ত ধর্মমঙ্গলের স্বাতন্ত্র্য | প্রবন্ধ ২০২৩

Bengali Article 2023 | আশা নিরাশার দোলাচলে বাঁকুড়া জেলার কাঁসা শিল্প

Bengali Article 2023 | শ্রমিক আন্দোলনে সুভাষচন্দ্র বসু | প্রবন্ধ ২০২৩

Bengali Article 2023 | “স্তন কর” বিরোধী নারী আন্দোলন ও নাঙ্গেলির (Nangeli) আত্মত্যাগ

bee poem | poem about self love | story poem | poetry angel | narrative poetry examples | poetry reading near me | prose poetry examples | elegy poem | poetry reading | the tradition jericho brown | poetry websites | protest poetry | prayer poem | emotional poetry | spoken word poetry | poem about god | percy shelley poems | jane hirshfield | spiritual poems | graveyard poets | chapbook | poems about life | poems to read | found poem examples | poems about life and love | elizabeth bishop poems | poems about women | sister poems that make you cry | famous quotes from literature and poetry | mothers day poems from daughter | poem about community | 8 line poem | inspirational poetry quotes | poem about life journey | positive poems | short poem about life struggles | toni morrison poems | good bones poem | google poem | funny poems for adults | inspirational poems about life | friendship poem in english | paul laurence dunbar poems | freedom poem | sad poetry about life | Shabdoweep Founder

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *