New Bengali Poetry 2023 | কবিতাগুচ্ছ | অমল ভৌমিক

Sharing Is Caring:
Bengali Poetry

অমল ভৌমিক – সূচিপত্র [Bengali Poetry]

ছন্দহীন জীবনের কবিতা – অমল ভৌমিক [Bengali Poetry]

আকাশের বুক দখল করেছে ঘন মেঘের দল,
ভ্যাপসা গরম, ঘনান্ধকার রাত।
খোলা বারান্দায় আমার একাকীত্ব আর
পুকুর পাড়ে মাটির উপর জেগে আছে
আম, করমচা ও বাঁশ ঝাড়ের কালো আঁধার।
মনে হল অতীতটা আকাশের বুকে বৈশাখী মেঘের
কালো নকসা হয়ে কড়া নাড়ছে সদর দরজায়।
দমকা হাওয়ায় ভেসে আসা খড়কুটোর মতো
মগজে জড়ো হয় ব্যর্থ জীবনের
এলোমেলো শব্দের দল,
কলমের আঁচড়ে ওদের বন্দী করে রাখি ডাইরির পাতায়।
বিরহ মনের লুকানো অশ্রু
ভিজে যায় কিছু ক্ষীণ সময়,
ঝোড়ো হাওয়ায় উড়ে আসা বৃষ্টির ফোঁটা
মুছে দেয় অশ্রুবারির দাগ।
তারপর পেয়ালায় শেষ চুমুক দিতে দিতে
এলোমেলো শব্দগুলো সাজিয়ে
শেষ রাতে লিখে নিই
ছন্দ হীন জীবনের কবিতা।

নগর কথা – অমল ভৌমিক [Bengali Poetry]

নগরের বুক চিরে,
আঁকা-বাঁকা রাজপথ ।
ধীর বেগে ছোটে যান,
ট্রাম ছোটে ঘটা ঘট্ ।।
আঁধার গলি, আলো গলি,
সরু গলি, বাঁকা গলি।
ওলি-গলি, ধাঁধা গলি,
লাগে যেন খট্- মট্ ।।

হৈ-চৈ চেঁচামেচি,
লোকজন কাছাকাছি ,
তবু যেন বে-রসিক ।
রাত-দিন চলে কাজ,
রঙিন আলোয় কত সাজ।।
ডাকলে মেঘ গুঢ়্ গুঢ়া গুঢ়্,
বুকের ভিতর দুর্ দুর্ দুর্,
নগর হবে সাত সমুদ্রুর ।।

কথা ভেবে – অমল ভৌমিক [Bengali Poetry]

গাছটা দাঁড়িয়ে আছে,
গাছটা নিজের মতো করে দাঁড়িয়ে আছে ,
নিজেকে নিজের মতো করে সাজিয়ে
গাছটা নিজের মতো করে বড় হয়।
গাছটার মগডাল নীল আকাশ পানে তাকিয়ে থাকে,
গাছটা কিন্তু নীল আকাশ ছুঁতে চায় না,
গাছটা মেঘেদের সাথে সখ্যতা করে
শিকড়ের কথা ভেবে।

পাহাড়টা দাঁড়িয়ে আছে,
পাহাড়টা নিজের মতো করে দাঁড়িয়ে আছে,
পাহাড়টা পাথরের চাঁই বুকে আঁকড়ে ধরে
নীরবে আকাশ ছোঁয়া গাছেদের ভার বহন করে।
পাহাড়টা ধবল মুকুট পরে আকাশের শোভাকে
আরও মনমোহিনী করে তুলে,
পাহাড়টা মেঘেদের সাথে সখ্যতা করে
ঝর্নার কথা ভেবে।

নদীটা বয়ে চলে,
নদীটা নিজের মতে করে চলে,
নদীটা কূল ভেঙে নিজের মতো এগিয়ে চলে,
নদীটা গতির মুকুট পরলেও সেরা হতে চায় না।
নদীটা জীবনের সাক্ষী হলেও ইতিহাস হতে চায়নি,
নদীটা লোনা জলের সাথে সখ্যতা করে
অসম মিলনের সুখাভিলাষের কথা ভেবে।

শিকড় – অমল ভৌমিক [Bengali Poetry]

শান্ত বাতাস মেশানো ভোরের আলো
আর পাখির ডাকে ভাঙে ঘুম,
সকালের রোদ ওদের পাঠিয়ে দেয় মাঠে।
বৃষ্টি ভিজিয়ে দেয় আদুল গা,
তার চেয়েও বেশী ভেজায় প্রখর রোদ।
আটপৌরে জীবনটা এগিয়ে যায় শেষের দিকে,
শহুরে ব্যস্ততায় নয়–
প্রকৃতির ছন্দ তাল লয়ে।
ওরা শিকড়ের টান ভালোবাসে,
যতই আসুক খরা কিংবা বন্যা
ওরা শিকড়ের টান আলগা হতে দেয় না।
ছোট ছোট গাছগুলো হাওয়াতে মাথা দোলায়
কিশলয় বড় হয় গাছের শান্ত নিবিঢ় শান্ত ছায়ায়।

গন্তব্য – অমল ভৌমিক [Bengali Poetry]

এ পথে পথিক চলে অবিরত
আগত পদ চিহ্নের চাপে
হারিয়ে যায় পদচিহ্ন,
যা ছিল বিগত।

মোহের রোশনাইয়ের ঝলকানি
চমকিছে দিকে দিকে,
মায়াবি ছলনায় কৃত্রিম আবহ সুর
লঘুসংগীতের সুর দেয় ঢেকে।

এগিয়ে চলেছে ক্ষ্যাপা বাউল
আঁকা বাঁকা চড়াই উথরাই এর পথ বেয়ে।
পথধারের গন্তব্যের মাইলস্টোনটা
কুন্তির চোখ শুধু-ই খোঁজে।
এ পথচলার গন্তব্য
আর কত বাকি আছে?

সংকেত – অমল ভৌমিক [Bengali Poetry]

কিসের অনলে পুড়িছে হিয়া
সখি, বলিতে না পারি বদনে ।
শয়নে স্বপনে হেরি সেই রূপ
দিবা-নিশি আঁখি পল্লব মুদিলে।
উঠিছে তুফান হিয়ার অতল তলে,
এ কি প্রেম ! না কি কামনার বাসনা।
বুঝিতে না পারি গোপন ভাষা,
গুন গুন সুর শুনি ওলিদের গুঞ্জনে ।
হৃদয় বসন্তের সমাগমে,
তবে কি এসেছে প্রেম!
নবপল্লব শোভিত বিকশিত কলির
নব যৌবন দুয়ারে।

অনলাইনে ভয় – অমল ভৌমিক [Bengali Poetry]

পলেস্তারা খসে যাওয়া দেওয়াল,
চুন সুরকিতে গাঁথা শ্যাওলা ভেজা ইঁটগুলো
কাতর চোখে তাকিয়ে আছে।
কার্নিশটা দখল করেছে বট অশ্বত্থ পাকুড়ের শ্রেণী,
ঘুলঘুলিতে ঘর বেঁধেছে
গোলা পায়রা, চড়াই ও টুনটুনির দল।
গত বৃষ্টিতে ভেঙেছিল ঝুলবারান্দাটা,
এই বৃষ্টিতে যদি ঝুলে পড়া পেশী,
কুঞ্চিত চামড়া ঢাকা হৃৎপিন্ডটা ভেঙে যায়!
যারা সদর ঘর কিংবা খোলা বারান্দায়
রাতের ঘুমটা সেরে নেয়,
তাদের চোখের হড়পা বানপারবে কি ভাসাতে,
অনলাইনে দখল নেওয়া বহুজাতিকের পুঁজি!!

ওরা শ্রমিক – অমল ভৌমিক [Bengali Poetry]

জ্বলন্ত ব্লাস্ট ফার্নেসের উত্তাপে
ওদের রক্ত ঘাম হয়ে ঝরতে থাকে ।
গরম লোহায় হাম্বরের আঘাতে আঘাতে
ওরা তুলতে থাকে সুরের ঝংকার।
উৎপাদনের নেশায় মাতাল হয়ে ওঠে,
ক্লান্তি আর অবসাদে অবসন্ন হয় শরীর।
লক্ষ্য পূরণ হলে মেলে অবসর,
ওরা শ্রমিক– ওরা সৃষ্টির কারিগর।

সেতু থেকে রাজপথ, সোনালি চতুর্ভুজ
কিংবা সড়ক যোজনা -পেয়েছে রূপ,
ওদের প্রাণহানি অথবা রক্ত ঝরা কঠোর পরিশ্রমে।
ওরা বড়ই একা, ওরা দিশাহারা
অজানা ভয়ে ক্ষুধার্ত পেটে রাজপথে হাঁটে,
ওদের তৈরী সড়কে
ওরা মরে মাথা কুটে।
আজি দুর্দিনে সেই ট্র্যাডিশন চলছে সমানে।
ইতিহাস বলে-শোনো মোর কথা,
ওদের তৈরী লাইনে ওরা পড়ে কাটা,
ওপর তলা নীরবে রয়
পায় না হৃদয়ে ব্যথা।

তুই বুঝবি না – অমল ভৌমিক [Bengali Poetry]

তোর লেখা প্রথম চিঠিটা
অনেক দিন পর পড়লাম।
চিঠির কাগজটা জৌলুস হারালেও
পাতার ভাঁজে লুকিয়ে থাকা
প্রথম আবেগের ভাষা
গোপন অভিলাষের কথা
যা অক্ষর দিয়ে সাজিয়ে সাজিয়ে
শব্দের ঠাসা বুনোনে তৈরী করেছিলিস
প্রথম প্রেমের নক্সী কাঁথা।
যেটা সযত্নে রেখেছি হৃদয়ের সিন্দুকে
তার খবর তুই রাখিস না।
যে আগুন জ্বালিয়ে ছিলিস আমার বুকে
তার কোনো খবর রাখিস না,
তোর ভালবাসায় নিকোটিন ছিল কি না
তা বলতে পারব না।
তবে, তোর ভালবাসার জ্বলনে তৈরী ধোঁয়ায়
কর্কটের তীব্র যন্ত্রণা অনুভব করি
আমার বিদগ্ধ হৃদয়ের ক্ষতে,
তা তুই বুঝবি না ।
শুনেছিস কখনো
পাঁজর ভাঙা শব্দ ?
কতটা পাহাড় সমান কষ্ট জমলে
তবেই পাঁজর ভাঙে
এই মুক্ত অঙ্গনে
অঢেল প্রাণ বায়ু আছে,
তবুও শ্বাস নিতে পারছিনা,
কার কথা ভেবে দম বন্ধ হয়ে আসে?
তা তুই বুঝবি না ।

যখন রব না ঘরে – অমল ভৌমিক [Bengali Poetry]

যখন আমি রব না ঘরে,
রইবে আমার ঘর।
এপারে সব আপন জন,
ওই পারে সব পর।
ডাক দিয়েছে গোকুল পতি
টুটবে বাঁধন ভুলবো হাসি,
পৌঁছে যাব ঐ দেশেতে,
হব আমি অনাবাসী,
তুমি হবে পর।
যখন আমি রব না ঘরে
রইবে আমার ঘর।

যখন আমি রব না ঘরে
রইবে আমার ঘর।
শ্রাবণ ধারার গভীর রাতে
ঝরবে বারি দুচোখ হতে,
বিরহী মন নিশুতি রাতে
স্বপ্ন দেখে উঠবে জেগে
দেবে কী চুমু কল্পনাতে?
যখন হব পর।
হয়তো আমি রব না ঘরে
রইবে আমার ঘর।

যখন আমি রব না ঘরে
রইবে আমার ঘর।
গোপন প্রেমের কাব্য হয়ে
রব আমি তোমার মনে।
থাকব আমি ছায়ার মতো
জোছনার আলোয় মায়াবি রাতে ।
ছন্দ-সুরে যাক ভেসে যাক
তোমার দিকের তীর।
প্রেমের পাখি যাক্ উড়ে যাক্
শূন্য থাকুক নীড়।
স্বপ্ন দেখা আঁধার রাতে
হব কি আমি পর?
যখন আমি রব না ঘরে
রইবে আমার ঘর।

শুধু তোমার জন্যে – অমল ভৌমিক [Bengali Poetry]

মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্ক,
প্রেমের বাঁধন হয়েছে আলগা,
অবসাদ আর হতাশার উল্কা ছুটছে দিগদিগন্তে।
মানবিক মুখ আর সামাজিক বন্ধন,
ক্রমশ এগিয়ে অবক্ষয়ের পথে।
অর্থ ভাণ্ডারে হেনেছ আঘাত,
দেখি মৃত্যু মিছিলের সারি,
সৃষ্টি-কারিগর পেয়েছে উপাধি –নাম “পরিযায়ী”।
শুধু তোমার জন্যে।
শুধু তোমার জন্যে।।

বন্ধ স্কুল-কলেজ, শিক্ষা “গৃহ বন্দী”,
অনলাইনে শিক্ষা? সবার নাহি জোটে।
ক্রীড়া প্রেমীদের উল্লাস নেই কো খেলা র মাঠে,
একেলা আছে খেলার মাঠ, নীরবে নিভৃতে কাঁদে।
ব্যস্ততা ভুলি আছি ঘরে বসে,
হেরি আতঙ্কের কালবৈশাখী ধরণীর আকাশে।
শুধু তোমার জন্যে।
শুধু তোমার জন্যে।।

সামাজিক বয়কট আর মুমূর্ষু -এর আর্তনাদ,
আকাশ বাতাস উথলি ওঠে।
কাজ হারা স্বামী কে তুমি নিলে কেড়ে,
“বিশেষ সক্ষম “সন্তানে পালিবে কেমনে,
অবসাদের গ্রাসে তাশার ভারে,
সদ্য স্বামী হারা স্ত্রী,সন্তানে মেরে —
হন আত্ম-ঘাতী।
শুধু তোমার জন্যে।
তুমি অমানবিক, তুমি অতিমারি কোভিড-19
শুধু তোমার জন্যে।
শুধু তোমার জন্যে ??

স্মৃতি কথা – অমল ভৌমিক [Bengali Poetry]

আঁকাবাঁকা মেঠো পথ,
দিগন্ত বিস্তৃত ধানের ক্ষেত,
লালাভ সূর্যের আলোতে,
একরাশ এলোচুলের লাজে রাঙা মুখ,
দেখেছিলেম আশ্বিনের গোধূলি বেলাতে।
সেদিনের স্মৃতি পারিনি ভুলিতে।।

কুয়াশা মাখা শীতের সকাল,
লাল চাদর জড়িয়ে,
হলুদ ফিতে বাঁধা বেণী দুলিয়ে–
চলেছিলে টিউশনের পথে।
কুয়াশা ভেদী সূর্যের আলো,
পড়ে ছিল তোমার মুখে।
দিনের প্রথম দেখায় বলেছিলে–
সলজ্জ হাসি মুখে–ভালো আছো ?
সেই রোদ মাখা মুখ—পারিনি ভুলিতে। ।

খোঁপায় হলুদ গাঁদামালা,
পরনে সবুজ পাড়ের হলুদ-রাঙা শাড়ি,
দেখেছিলেম শ্রীপঞ্চমীতে ।
প্রসাদের অছিলায় পেয়েছিলাম ছোঁয়া,।
কাঁপা-কাঁপা ঠোঁটের মুচকি হাসি,
সলাজ্ দুই চোখের ভাষা,
সেই দিন পারিনি বুঝিতে।
সেই দিনের কথা পারিনি ভুলিতে।।

প্রতীক্ষা – অমল ভৌমিক [Bengali Poetry]

আঁকা বাঁকা মেঠো পথ,
উন্মুক্ত মাঠের বুক চিরে –
চলে গেছে গাঁয়ের সীমান্তে।
নীল আকাশের সামিয়ানা
স্পর্শ করেছে দিগন্তরেখা।
সূর্য অস্তাচলে–
গোধূলির শেষ আলোয়
ভরেছে সারা মাঠ।
হালের গরুর পিছে
লাঙ্গল কাঁধে ঘরমুখো চাষীর দল।
হঠাৎ দমকা বাতাসে
এলোচুলে অবগুণ্ঠিতা হয়েছিলে।
কুয়াশামাখা সাঁঝবেলায়
কিশোর হাতের আলতো ছোঁয়ায়
এলোচুলের অবগুণ্ঠন সরিয়ে ছিল সেদিন।
আর প্রাণ ভরে নিয়ে ছিলাম
তোমার প্রসাধনের সুবাস।
শুরু হয় পথচলা
পাশাপাশি পায়ে পায়ে,
পৌঁছে ছিলাম অনেকটাই পথ একসাথে।
হঠাৎ থমকে দাঁড়ালাম,
যেখানে চলে গেছে দুইদিকে দুটি পথ।
দ্রুত পায়ে চলে গেলে তুমি
আঁধার নামার আগে।
অব্যক্ত ভালবাসা নিয়ে প্রতীক্ষায় আছি
তোমার পথ চেয়ে।

প্রেম – অমল ভৌমিক [Bengali Poetry]

প্রেম-,তোমার আসন হৃদয় দেউলে,
তুমি আছো মনের গভীরে।
তুমি আছো কবিতার ছন্দে,
তুমি আছো গানে গানে-
কথায় কথায় সুরে সুরে।
তুমি ত্যাগ, তুমি তিতিক্ষা,
তুমি সাধনার ফল।
প্রেম, তুমি অমর, তুমি অজেয়, তুমি মৃত্যুঞ্জয়।
তোমার সাধনা সাধিতে
যদি আসে পরাজয়,
কত শত মন তোমায় খোঁজে,
ছিন্ন হৃদয় বিবাগী হয়ে রয়।

রামী-চণ্ডীদাস, রাধা-কৃষ্ণের প্রেমকথা
অজেয় গাথা, অমর অক্ষয়।
যীশুখৃষ্ট্র, চৈতন্যের প্রেমের বানী
মানুষকে ভালোবেসে করেছে বিশ্ব জয়।
“লাভ জেহাদি ” নাকি বিধর্মী প্রেমের পরিচয়,
সাধকের মনে সাধনার পথে
এক নতুন অন্তরায়।
দূরে যাক মলিনতা
তোমার সাধনায় ভালোবাসার হোক্ জয়,
তুমি প্রেম, তুমি অমর, তুমি মৃত্যুঞ্জয়।।

সোরেনের বাড়ি – অমল ভৌমিক [Bengali Poetry]

শাল-পিয়ালের ছায়া ঘেরা,
আমার ছোট্ট ঘরখানি ।
বনের পশু চরে বেড়ায়
দোয়েল ঘুঘুর ডাক শুনি।
খড়ের চাল আর মাটির দেওয়াল
ঘরখানি বেশ পরিপাটি ।
বধূর আঁকা আলপনাতে
স্বর্গ সাজে আমার বাটি।
শালের ফাঁকে সূর্য ডুবে
সাঁঝের বাতি জ্বলে।
মনসা তলায় ধামসা বাজে
মেয়ে-মরদ জোটে।
মহুয়ার মৌতাপে
দুঃখ কথা যায় ভুলে।
মাদলের বাজনা বাজে
ছন্দ তালে কোমর দোলে।
অভাব মোদের নিত্য সাথী
জয় করি তাই একসাথে।

শব্দটা – অমল ভৌমিক [Bengali Poetry]

গণতন্ত্র বুঝি না বাপু,
ভাষণের বুলিতে শব্দটা শুনি।
এই দেশ সবুজ শ্যামলে ঘেরা,
এই দেশ শস্যে সয়ম্ভরা–,
তবুও জঠরে জ্বলে ক্ষুধার আগুন।
ওদের কি হবে? কি জানি …..?
গণতন্ত্র বুঝি না বাপু,
ভাষণের বুলিতে শব্দটা শুনি।

গণতন্ত্র বুঝি না বাপু,
ভাষণের বুলিতে শব্দটা শুনি।
জ্যামিতির দেশেতে, বেকারের জ্বালাতে,
অনশনে-ডোনেশনে মিলছে না সমাধান।
উত্তর কি আছে, কি জানি…..?
গণতন্ত্র বুঝি না বাপু
ভাষণের বুলিতে শব্দটা শুনি।

গণতন্ত্র বুঝি না বাপু,
ভাষণের বুলিতে শব্দটা শুনি।
নারীর আছে অধিকার,
নারী মুক্তির কথা শুনি।
কন্যা ভ্রূণ হত্যা চলছে সমানে
ধর্ষিতা হয় এই দেশের বহু নারী।
ওদের কি হবে, কি জানি…..?
গণতন্ত্র বুঝি না বাপু
ভাষণের বুলিতে শব্দটা শুনি।

গণতন্ত্র বুঝি না বাপু
ভাষণের বুলিতে শব্দটা শুনি।
ভোটের লাইনে থিক্-থিক্ ভিড়,
জনগণ সারি সারি।
বলছে খবরে, দেখছি লাইভে
চলছে অবাধ ভোট,
হয়নিকো লুটমারি।
জিততেই হবে, মরিয়া তাই
ওরা গণতন্ত্রের কাণ্ডারী।
জনগণের কি হবে, কি জানি….?
গণতন্ত্র বুঝি না বাপু
ভাষণের বুলিতে শব্দটা শুনি।

প্রার্থনা – অমল ভৌমিক [Bengali Poetry]

হে বিশ্ব বিধাতা, করি প্রার্থনা তব সমীপে,
দাও,ভেঙে দাও তুচ্ছতার বেড়াজাল,
স্বার্থের নিত্য সংঘাত কর নিরসন,
লোভের নির্বিবেক-মত্তার কর অবসান।
স্খলন পতনের চোরাবালি সরিয়ে,
সুখ-দুঃখ,বিরহ বেদনার খেলাঘর,
নতুন অরুণ কিরণে দাও ভরিয়ে,
হে বিশ্ব বিধাতা ,করি প্রার্থনা তব সমীপে। ।

হে বিশ্ব বিধাতা, করি প্রার্থনা তব সমীপে,
হতাশা-ক্লিষ্ট, আমাদের বুক,
স্পন্দিত হউক নব নব প্রত্যয়ে।
দুর্জয় সাহস, দুর্বার গতি,
করি আহরণ জীবনে চলার পথে,
বিশ্ব জীবন দীক্ষিত হউক
মানবতার মহামন্ত্রে,
হে বিশ্ব বিধাতা,করি প্রার্থনা তব সমীপে।।

মোমবাতি – অমল ভৌমিক [Bengali Poetry]

মোমের তৈরী মোর দেহ
নাম-মোমবাতি,
আমি স্বভাবে শান্ত,
শরীরটা নরম অথচ কঠিন।
সলতে আগুন দিলে
আমি জ্বলে উঠি।
সূচিত হয় তোমাদের শুভক্ষণ,
করতালির উচ্ছ্বাস আর উন্মাদনায়
তোমাদের মাতামাতি দেখি।
শত যন্ত্রণা হৃদয়ে চেপে রেখে
নিজেকে শান্ত রাখি।
তোমাদের ডিনারের টেবিল কিংবা
কায়াপটের সম্মুখে নীরব সাক্ষী হয়ে
অভিমান, অবহেলার নিস্তেজ শিখায়
আগুনের পরশে নিজেকে বিগলিত করি।
মোমের তৈরী আমি,
আমার পরিচয়, নাম মোমবাতি।।

নতুন পৃথিবী – অমল ভৌমিক [Bengali Poetry]

তোমার জন্য কাঁদতে পারি না,
নিজের জন্য কান্না আসে না।
তোমাকে নিয়ে দেখা স্বপ্নরা
কুয়াশার মতো ধুলোর সংগে লুকিয়ে আছে।
বেলা বাড়ার সাথে সাথে
ওরা হারিয়ে যায় পৃথিবীর বুকে।
ঘাটের মড়ার মতো
একটা চাপা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে
জীবনটা বাঁচিয়ে রেখেছি।
মজার উৎসাহ নিয়ে
যন্ত্রণাময় প্রতীক্ষার অবসানের আশায় আছি।
কেউ কি বেঁধেছে আমায় অলক্ষ্যের রঙে!
অলক্ষ্যের রঙ ছড়িয়ে দাও
ঐ রঙচটা আকাশের বুকে।
ঘুমের ঘোরে টের পাই
যোজন যোজন পথ পার হয়ে
কারা যেন আসছে-
টর্নেডোর রূপে। উথলি মন স্বপ্ন খুঁজি ,
ওরা নতুন পৃথিবী গড়বে।

স্বাধীন দেশের গণতন্ত্র – অমল ভৌমিক [Bengali Poetry]

আমি চুয়াত্তরটা বছর অতিক্রম করে আজও অণুরা আছি,
তাইতো দিনের আলো কিংবা রাতের আঁধার যাইহোক,
তোমরা নিজেদের মতো আমার যথা সর্বস্ব ভোগ করো।
অবাধে খুন ধর্ষণ রাহাজানি ব্যভিচার তোমাদের হাতিয়ার,
তোমরা নিরন্ন মানুষকে ভুল বুঝিয়ে ঝোলাটা ভরে নাও।
তোমরা মাঝে মাঝে গর্জে ওঠো
আর বলতে শুনি গণতন্ত্র বিপন্ন।
তখন আমি স্বাধীন দেশের গণতন্ত্র হয়ে
লজ্জায় নারীর উষ্ণ প্রস্রবণে মুখ লুকিয়ে নিই,
আর নিজেকে বাঁচাতে দুয়ারে দুয়ারে মাগি এক মুঠো অন্ন।

অমল ভৌমিক | Amal Bhowmik

New Bengali Article 2023 | কবিতার অন্তরাত্মা

New Bengali Article 2023 | কৃষিভিত্তিক সমাজ ও মুঠ উৎসব

Best Bengali Story 2020 | কিছু নই | শওকত নূর

Chandannagar Jagadhatri | চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পূজার প্রবক্তা কে ??

কথা ভেবে | শিকড় | গন্তব্য | সংকেত | অনলাইনে ভয় | ওরা শ্রমিক | তুই বুঝবি না | যখন রব না ঘরে | শুধু তোমার জন্যে | স্মৃতি কথা | প্রতীক্ষা | প্রেম | সোরেনের বাড়ি | শব্দটা | প্রার্থনা | মোমবাতি | নতুন পৃথিবী | স্বাধীন দেশের গণতন্ত্র | কৃষ্ণ কথা ভেবে ভেবে | শিকড়, কন্দ ও কলা | শিকড় সমার্থক শব্দ | গাছের শিকড় | শিকড় অর্থ | শিকড় প্রকাশনী | গাছের শিকড় | শিকড় বই | শিকড় থেকে শিখরে | অফবিট গন্তব্য | গন্তব্য কাকে বলে | গন্তব্য স্থান | গন্তব্য সন্ধি বিচ্ছেদ | গন্তব্য এর সমার্থক শব্দ | গন্তব্য স্থল অর্থ | গন্তব্য কবিতা | গন্তব্য হোক জান্নাত | রাসায়নিক সংকেত | মোলের ধারণা ও রাসায়নিক গণনা | কিসের সংকেত | রাসায়নিক সংকেত | ফটকিরি সংকেত | অণুর সংকেত | পারমুটিট এর সংকেত | আণবিক সংকেত ও গাঠনিক সংকেত | অশনি-সংকেত | ওরা শ্রমিক ওরা স্বপ্ন | পরিযায়ী শ্রমিক কবিতা | হারিয়ে যাওয়া কবিতা | দুঃসময় কবিতার বিষয়বস্তু | খেয়া কাব্যটির প্রকাশকাল কত | আগমন কবিতার মূলভাব | তখন রাত্রি আঁধার হল | অভিসার কবিতা | বীরপুরুষ কবিতা | যে দিন রব না আর | আমার ভালোবাসা শুধু তোমার জন্য | শুধু তোমার জন্য গল্প | শুধু তোমার জন্য বই | শুধু তোমার জন্য | শুধু তোমার জন্য লিরিক্স | শুধু তোমার জন্য লিখি | স্মৃতি নিয়ে স্টেটাস ও বাণী | স্মৃতি নিয়ে উক্তি | স্মৃতি কথা কী | স্মৃতি নিয়ে ছন্দ | শৈশবের স্মৃতি কথা | স্মৃতি ক্যাপশন | পুরনো স্মৃতি নিয়ে কিছু কথা | স্মৃতি নিয়ে ফেসবুক স্ট্যাটাস | পুরনো স্মৃতি মনে পড়ে যায় | ভালোবাসার স্মৃতি কবিতা | প্রতীক্ষা নিয়ে উক্তি | তোমার প্রতীক্ষা | প্রতীক্ষা বানান | প্রতীক্ষা আর অপেক্ষার পার্থক্য | প্রতীক্ষা সন্ধি বিচ্ছেদ | প্রতীক্ষায় | প্রেম হয় ৭ রকমের | সত্য প্রেম | প্রেম করার | প্রেম কিভাবে হয় | প্রেমের বিয়ে | প্রেমের দর্শন | প্রেম কিভাবে করে | প্রেম ভালোবাসা | প্রেম কি পবিত্র | ভোরের প্রার্থনা | প্রার্থনা কি | যিশুখ্রিস্টের প্রার্থনা| প্রভুর প্রার্থনা | অসমীয়া প্রার্থনা | সন্ধ্যাকালীন প্রার্থনা | প্রার্থনা সংগীত কি | একটি নতুন পৃথিবী | গণতন্ত্রের ইতিহাস | ভারতীয় গণতন্ত্র | গণতন্ত্র ও গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য | ভারতের গণতন্ত্র | গণতন্ত্র কি | গণতন্ত্রের মূল কথা কি | গণতন্ত্রের সুফল ও কুফল | বাংলার লেখক | কবি ও কবিতা | শব্দদ্বীপের কবি | শব্দদ্বীপের লেখক | শব্দদ্বীপ | বাংলা ম্যাগাজিন | ম্যাগাজিন পত্রিকা | শব্দদ্বীপ ম্যাগাজিন

bee poem | poem about self love | story poem | poetry angel | narrative poetry examples | poetry reading near me | prose poetry examples | elegy poem | poetry reading | the tradition jericho brown | poetry websites | protest poetry | prayer poem | emotional poetry | spoken word poetry | poem about god | percy shelley poems | jane hirshfield | spiritual poems | graveyard poets | chapbook | poems about life | poems to read | found poem examples | poems about life and love | elizabeth bishop poems | poems about women | sister poems that make you cry | famous quotes from literature and poetry | mothers day poems from daughter | poem about community | 8 line poem | inspirational poetry quotes | poem about life journey | positive poems | short poem about life struggles | toni morrison poems | good bones poem | google poem | funny poems for adults | inspirational poems about life | friendship poem in english | paul laurence dunbar poems | freedom poem | sad poetry about life | Shabdoweep Founder

Leave a Comment