অতনু দাশ গুপ্ত – সূচিপত্র [Bengali Novel]
অকপটে অগ্রজকে (পর্ব ২) – অতনু দাশ গুপ্ত [Bengali Novel]
(আগের পত্রের ধারাবাহিকতায়)
বুদ্ধিমান সে-ই যে পরিস্থিতি বুঝে কাজ করে আর জ্ঞানী সে যে কোন পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নেয়। তবে বাবা-মায়ের পরিস্থিতি এমন হয়ে গিয়েছিল তখন বুঝে কাজ করা বা মানিয়ে নেওয়ার মত কোন অবস্থাই ছিল না।
“পরিবার বলতে সবসময় রক্তের বন্ধন বোঝায় না।
এনারা তারাই যারা আপনাকে তাদের জীবনে চান।
আপনি যা তা-ই এরা মেনে নেন নিঃসঙ্কোচে।
আপনাকে দেখার জন্য এনারা অসম্ভবকেও সম্ভব করবেন।
সদাহাস্যজ্বল থেকে আজীবন আপনাকে ভালোবেসে যাবেন।”
(সংগৃহীত – ক্যাথি)
ক্যাথিকে ব্যক্তিগতভাবে চেনার প্রয়োজন নেই। এত সত্য, সুন্দর কথা যিনি সহজেই বলতে পারেন তিনি সর্বজনীন। তার কথা সবার জন্য।
আপাতত আজ আর কিছু মাথায় আসছে না! পরের চিঠিতে লিখে জানাবো আরও অজানা কথা। সেই পর্যন্ত সুস্থ থেকো, ভালো থেকো। এটাই কামনা। ইচ্ছে হলে উত্তর দিও।
ইতি
তোমারই ছোট্টু
প্রাণ
প্রতিবিম্ব প্রত্যুত্তর দিয়েছিল। তবে বেশ কিছুটা সময় পার হয়ে যাওয়ার পর। প্রাণের ফাইনাল সেমিস্টার শুরু হবে আগামী মাসে। আপাতত ও তিনটে খন্ডকালীন চাকরি আর পড়াশোনা পাশাপাশি করে যাচ্ছে । দুটো চাকরি ইউনিভার্সিটির অফিসে। তাই ঝুট ঝামেলা পোহানো অনেক কম।
এবার অগ্রজের কথায় আসা যাক – প্রতিবিম্ব, বৌ-বাচ্চা নিয়ে সিডনি শহরের সারে হিলস এলাকায় আছে। পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার আর বৌ পৌলমী ফার্মেসি এসিস্ট্যান্ট। পাঁচ বছরের ফুটফুটে একটা মেয়ে আছে ওদের – টুকটুকি। প্রায় পঁচিশ বছরেরও বেশি সময় হতে চললো ওরা ওখানকার বাসিন্দা। দু’তলা বাসার উপরের তলায় দুটো ঘরের একটায় প্রতিবিম্ব, পৌলমী। আরেকটায় টুকটুকি। আজকে ফোনের অ্যালার্মের শব্দে নিজে উঠে গেলেও বউকে কোন বিরক্ত না করে ধীর পায়ে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে কিচেনে গিয়ে জানালা দিয়ে বাইরের বাগানে লাগালো ফুলগাছগুলো দেখছে।
প্রতি শনিবারের সকালের মত আজও প্রতিবিম্ব সকালের মেইল বাক্স দেখছে – কিছুটা আশ্চর্য হয়ে রয়্যাল মেইলের একটা খাম দেখতে পেলো। উপরে ঠিকানা সমেত লেখা রয়েছে প্রাণ রায়। বুঝতে বাকি রইলো না এর প্রেরক কে! ঠান্ডা মাথায় এক কাপ কফি নিয়ে নিজের ঘরের কাজের টেবিলে বসে চুমুক দিতে দিতে পুরো অসমাপ্ত চিঠিটা শেষ করলো। প্রথমে ভাবলো ছিঁড়ে ময়লার ঝুড়িতে ফেলে দেবে কি না? পরে বাবা-মায়ের নানান স্মৃতি বিজড়িত কথা স্মরণ করে পারলো না! এর প্রত্যুত্তরে একটা ফোন করলেই হয়। তবে সে পথে না গিয়ে নিজেও কিছু লিখতে বসলো অনেক যুগ পর। হয়তো ফোনেও বলে এত কথা শেষ করা সম্ভব হবে না।
প্রাণ,
তোমার চিঠি পেয়েছি।
কেন বা কি হয়েছে এতকিছু লেখার আগে নিজেকে একটা প্রশ্ন করো – বয়োবৃদ্ধ মা-বাবাকে শেষ বয়সে ফেলে রেখে বিদেশ যাওয়ার মানে কি?? বাবা-মা অনেক রোগের জন্য চিকিৎসা নিয়েছেন সবসময়। সেক্ষেত্রে তাঁদের দুই সন্তানের মধ্যে কেউ তো পাশে থাকা উচিত ছিল। যদি বিষয়টা এমন হত তুমি চলে যাওয়ার পর দুজনের দায়িত্ব কাউকে দেওয়ার প্রয়োজন নেই, তাহলে হয়তো বিষয়টা মেনে নেওয়া যায়। মা-বাবার ইচ্ছে কি ছিল সেটার চেয়ে অনেক বড় ব্যাপার হচ্ছে তোমার করণীয় কি ছিল? সেটা কখনো নিজেকে প্রশ্ন করে দেখেছো?? বাবার সবসময় ডাক্তার দেখাতে হত। মায়ের স্ট্রোক হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত যতটুকুই উনি সেরে উঠেছেন সবটাই তোমার জানা,দেখা। বলতে গেলে তোমার সামনেই সবকিছু হয়েছে। তারপরও ওনাদের এ বয়সে এভাবে ছেড়ে পড়তে যাওয়াটা কতোটা যৌক্তিক ছিল?
তোমার পড়াশোনার খরচও জোগাড় করতে হয়েছিল আমাকে। যখন খরচ দিতে আমাকে কয়েকটা চাকরি করতে হয়েছিল একই সময়ে! সেসব না হয় বাদই দিলাম। কিন্তু একদিকে যখন তোমার পড়ার খরচ মেটাতে আমি হিমশিম খেয়েছি অন্যদিকে এর পরে সংসারের খরচও আমাকেই দিতে হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে আমার উপর দিয়ে কি গেছে সেসব কখনো নিজ তাগিদে ভেবে দেখেছো?? বড় ছেলের দায়িত্ব বেশি। এটা সবার জানা কথা। বাবার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল। আমাদের সংসারে নিজের খরচ দিয়ে যাওয়াটা সমস্যা হলেও কখনো গা করিনি। কারণ এটা আমার জানা ছিল একদিন না একদিন তুমি আমার যোগ্য উত্তরসূরী হয়ে সংসারের হাল ধরবে। সেটা তুমি ধরেছিলেও বটে। কিন্তু পরবর্তীতে তোমার চাকরি ছেড়ে দিয়ে ইংল্যান্ডে পাড়ি জমানোটা বেশ বিভ্রান্তিকর ঠেকেছে। বুঝলাম, তুমি অনেক বছর ওই দেশ ছাড়াও অন্যান্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা করেছো। এক্ষেত্রে এটাই বলবো বিদেশে পাড়ি জমানোটাই কি সব??
আমাকে ক্লাস ফাইভে পড়ার সময় বাইরে পড়তে পাঠিয়ে দেওয়ার পর মা-বাবা তোমাকে আর ছাড়তে চাননি। বরাবরই ছোট হিসেবে তোমাকে ওনারা পাশেই রেখেছেন। শেষ সময়ে ওনাদের ছেড়ে যাওয়ার ব্যাপারে ওনারা হয়তো কিছু বলেননি কিন্তু যে কোন বাবা-মায়ের শুধু একটাই হয়তো চাওয়া থাকে। কেউ ওনাদের পাশে থাকবেন। আমি প্রথম থেকেই বাইরে থাকার কারণে যা করতে পারিনি তা তুমি করতে পারতে।
মাঝে যখন আমার চাকরি নিয়ে খারাপ সময় গিয়েছিল তখনই তোমার ইংল্যান্ডে যাওয়ার ভিসা আসে। তখন কয়েক মাস তো বাসায় ঠিকঠাক টাকা-পয়সা পাঠাতেও পারিনি। এটা নিয়ে তোমার সাথে কথা কাটাকাটিও হয়েছিল! মনে হয় না তোমরা কখনো আমার এখানকার সংসার কিভাবে চলে বা সেটার খরচের হিসাবনিকাশ নিয়ে ভেবেছ?? সবারই একটা সীমাবদ্ধতা আছে তা সেটা জেফ বেজোসই হোক বা ইলন মাস্ক! এত কর্মী ছাটাই কি ওরা শুধু শুধু করছে?? বাবা-মা এখানে নিয়ে আসাটা যদি এতই সহজ হতো তাহলে অনেক আগেই সব কাজ সেরে ফেলতাম। অতিমারী পরবর্তী অসংখ্য নিয়ম কানুন পালটে গেছে আর এর আগেও যা ছিল ওতেও ওনাদের আনতে মোট অ্যানুয়েল ইনকাম যা দেখতে হতো তা ছিল না! বাদবাকি নিয়মে আনলেও বড়জোর টেনেটুনে এক বছর রাখা যেত। আরও একটা ব্যাপারে আমার খটকা রয়েছে। বাবা তোমাকে এত বড়ো একটা অ্যামাউন্ট দেওয়ার আগে নিজের ভবিষ্যৎ বা মা’কে নিয়ে কেন একবারও ভাবলেন না! বুঝলাম, ওনার বয়স হয়েছে কিন্তু তুমি তো পেছনে তাকাতে পারতে! তোমার কি কখনো উচিত হয়েছে এতগুলো টাকা বগলদাবা করে বিদেশে পাড়ি দেওয়া? তা ও আবার বয়োবৃদ্ধ অসুস্থ মা-বাবাকে একা ফেলে রেখে! কার ভরসায় বা কে ওনাদের দেখবেন তোমার অনুপস্থিতিতে এটা একবার হলেও ভাবা উচিত ছিল তোমার!
অতনু দাশ গুপ্ত | Atonu Das Gupta
New Bengali Novel 2022 | ফিরি বিশল্যকরণী (পর্ব ৩) | উপন্যাস
New Bengali Novel 2022 | ফিরি বিশল্যকরণী (পর্ব ৪) | উপন্যাস
New Bengali Novel 2022 | ফিরি বিশল্যকরণী (পর্ব ৫) | উপন্যাস
New Bengali Novel 2022 | ফিরি বিশল্যকরণী (পর্ব ৬) | উপন্যাস
bengali novel | indian poetry | indian poetry in english | indian poetry in urdu | indian poems | indian poems about life | indian poems about love | indian poems about death | bengali story | bengali story books for child pdf | bengali novel for adults | bengali story books | bengali story books for child | bengali novel pdf | bengali story for kids | bengali novel reading | short story | bengali novel analysis | bengali novel characteristics | bengali novel competition | short story definition | short story english | short story for kids | short story generator | short story ideas | bengali novel length | long story short | bengali novel meaning | long story | long story instagram | story writing competition | story writing competition topics | story writing competition for students | story writing competition malayalam | bengali novel competition india | story competition | writing competition | writing competition malaysia | writing competition london | writing competition hong kong | writing competition game | writing competition essay | writing competition australia | writing competition prizes | writing competition for students | writing competition 2022 | writing competitions nz | writing competitions ireland | writing competitions in africa 2022 | writing competitions for high school students | writing competitions for teens | writing competitions australia 2022 | writing cmpetitions 2022 | writing competitions uk | bengali novel writing | bangla news article | bangla article rewriter | article writing | bengali novel ai | bengali novel app | article writing book | bengali novel bot | bengali novel description | bengali novel example | article writing examples for students | article writing for class 8 | article writing for class 9 | bengali novel format | bengali novel generator | article writing global warming | article writing igcse | article writing in english | article writing jobs | article writing jobs for students | article writing jobs work from home | article writing lesson plan | bengali novel on child labour | article writing on global warming | article writing pdf | bengali novel practice | article writing topics | trending topics for article writing 2022 | what is article writing | bengali novel trends 2023 | bengali novel topics 2023 | Shabdodweep Writer | Shabdodweep | Shabdodweep Founder