অতনু দাশ গুপ্ত – সূচিপত্র [Bengali Novel]
অকপটে অগ্রজকে (পর্ব ৩) – অতনু দাশ গুপ্ত [Bengali Novel]
(প্রতিবিম্বের পত্রের ধারাবাহিকতায়)
আরও একটা কথা, আমি যখন দেশে বাবার শেষকৃত্যের কাজে গিয়েছি তখন লক্ষ করেছি ব্যাংকের হিসাবনিকাশে অনেক গরমিল হয়েছে। তবে অবশ্যই অনেক ব্যাপারে নিশ্চিত নই। বোঝা যাচ্ছে না। বেশ তন্নতন্ন করে খুঁজেও যেসব কাগজ দরকার ছিল সেগুলো পাইনি। তখন জায়গাজমির কাগজপত্রও দেখেছিলাম। তবে এটা বেশ বুঝতে পেরেছি যে টাকা বাবা তোমাকে দিয়ে পাঠিয়েছেন পড়ালেখা করতে সেটার ভার বইতে পারার মতো অবস্থা পরবর্তীতে ওদের ছিল না।
এ অবস্থায় মা’কে একা ঢাকায় রাখাটা যৌক্তিক মনে করিনি। আর তুমি থাকা অবস্থায় মাসির ছেলের বাসায় যাতায়াত থাকলেও পরে যখন চলে গেলে তখন তাকে আর ওভাবে পাওয়া যায়নি। মায়ের দেখভালের জন্য এমন কাউকে দরকার ছিল যে বাসায় থাকবে। আমি যখন ঢাকার বাসায় যাই তখন পুরো ঘরের লণ্ডভণ্ড অবস্থা! মায়ের কাছে শুনলাম আশেপাশের লোকজনেরা সুযোগ বুঝে জিনিসপত্র সরিয়ে ফেলছে! বেহাত হয়েছিল অনেককিছুই। পরে যখন আসবাবপত্র ট্রাকে বোঝাই করা হচ্ছিল তখনও সামাল দেওয়া মুশকিল ছিল একার পক্ষে। টিপুকে ডাকলেও ওকে দিয়ে মা’কে ঢাকায় পাঠানোয় এদিকে আমি আবার একা হয়ে গিয়েছিলাম। কি করবো কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। তখন তোমার অভাব বোধ করেছিলাম খুব। ভেবে দেখো তোমার সাহায্য কতটা প্রয়োজন ছিল। নিজেকে এলোমেলো অবস্থার মধ্যে পেয়েছি বহুবার কিন্তু তখন কখনোই বাবা হারা হওয়ার কষ্ট পাইনি!! নিকটবর্তী প্রতিবেশীরা সাহায্য করতে এলেও এদের অনেকের মনে অসৎ উদ্দেশ্য ছিল। আমি যতবারই আশপাশের কাউকে দায়িত্বে রেখে বাইরে কোন কাজে গিয়েছি, ততবারই কিছু না কিছু চুরি গেছে! ওই জায়গায় তোমার উপস্থিতি একান্ত কাম্য ছিল। আমাদের বাড়ির জমিদার যতটা পেরেছেন সাহায্য করেছেন। তারপরও অনেক জিনিসপত্র বেহাত হয়েছে। ওদিকে মা’কে নিয়ে টিপুরা ফিরে আসার পথে পড়লো দুর্ঘটনার কবলে। কিভাবে ওরা বেঁচে ফিরলেন তা বিধাতাই জানেন! টিপু না থাকলে আমার কাজ আরও অনেক দুরূহ হয়ে যেত। ইন্ডিয়া থেকে যখন দেশে ফেরত এসে সুইডেনে যাওয়া নিয়ে বাঁধার মুখে পড়লাম তখন চরম বিষন্নতা ঘিরেছিল। টিপুর সঙ্গ যদি না পেতাম তাহলে হয়তো নেশায় জড়িয়ে পড়াসহ অনেক খারাপ কিছু হতে পারতো! সবসময়ই একজন বিশ্বস্ত বন্ধুর মত ওর উপস্থিতি যেমন আমায় একটা ভালো সঙ্গ দিয়েছে তেমনি এলাকার আশপাশের মানুষের সাথে মিশে যাওয়ার সুযোগও সহজেই পেয়েছি।
চট্টগ্রামে কোন বাসায় উঠবে সেটাও একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় তখন। ছোট কাকা তখন যা দেখিয়েছেন তার পুরোটাই ছিল আদিখ্যেতা। সেটা পরবর্তীতে আমি এদিকে চলে আসার পর ক্রমে প্রকাশ পেয়েছিল। কত ঘটনা ঘটেছে আর ওদিকে তোমার নিশ্চুপ অনুপস্থিতি!
কথা আর বাড়াবো না আপাতত। এত কথা ফোনে বলাও সম্ভব হত না! সম্পর্কের বিষণ্নতা নিয়ে সহজভাবে কথা বলা অনেক সময় কষ্টসাধ্য।
আশা করি না জানা কথার উত্তর দেবে। ভালো থেকো।
— প্রতিবিম্ব
প্রাণের কাছে যখন এ চিঠি পৌছায় তখন সেমিস্টার ফাইনাল চলছে। পার্টটাইম চাকরি থেকে ছুটি নিয়ে পুরোপুরি পরীক্ষায় মনোনিবেশ করেছে। অন্য কোন কাজের সময় ছিল না একদমই। পাছে মানসিক অবসাদ পেয়ে বসে তাই চিঠিও খাম সমেত রেখে দিয়েছে। পরীক্ষা শেষ করে তবেই অন্য কোন কাজ। পরীক্ষার হলের পরিস্থিতি অনেকটা আমাদের বাস্তব জীবনের সাথে মিলে যায়। এতদিন সবাই পাশাপাশি বসে ক্লাস করলেও পরীক্ষায় কক্ষে নির্দিষ্ট সারি মেনে বসতে হয়। একে অপরকে দূর থেকে দেখতে পাচ্ছে। হাত নেড়ে শুভেচ্ছাও জানাচ্ছে। ওইটুকুই! পৃথিবীতে যখন কোন নবজাতক আসে।।তখনও সবাই কোলে নিয়ে আদর করে। হাত নেড়ে কথা বলে। চলে যাওয়ার সময়ও একই পরিণতি বরণ করতে হয়। সবাই একা। আর সংসারে বাকি যা রয়েছে সবটাই মায়া। নানান চড়াই-উতরাই পেরিয়ে পরীক্ষা শেষ হলো। এখানকার জীবনে ছুটির দিন খুবই অল্প! পরীক্ষার শেষে ক্লাস না থাকলে চাকরিতে কর্ম-ঘণ্টা বাড়িয়ে নেয় এখানকার ছেলেপেলেরা। সেটা হোক পূর্ণকালীন বা খন্ডকালীন। কিছুটা বাড়তি রোজগার করে নেওয়া। জীবনে সুসময়ের চেয়ে দুঃসময়ের উপস্থিতি অনেক বেশি।
প্রাণের বাসাটা অবিবাহিত যে কারও জন্য বেশ খাপ খায়! প্রবেশ করেই সামনেই ছোট্ট একটা কিচেন। ঠিক এর সামনেই ওর পড়ার টেবিল। অপর পাশে কিছুটা সামনেই বসার জন্য সোফা। পেছনে সোফার গা ঘেঁষে পুরো দেয়াল জুড়েই বিশাল কাচের জানালা যেটা খোলা যায় না। তবে ওতে ভাগ রয়েছে। নিচের দিকের ছোট আকারের জানালাগুলো বাতাসের চলাচলের জন্য। সামনে ওয়াশরুম। টেবিলের সামনে একটা পার্টিশন রয়েছে। এর পেছনেই বিছানা। কুইন সাইজের বেড হওয়ায় দিব্বি দু’জনের জন্য ব্যবস্থা হয়ে যাবে। বিছানার পাশে লাগোয়া একটা ছোট ড্রয়ার এবং ঠিক তার পাশেই আলমারি। বড় আকারের জানালাগুলো যেখানে শেষ হয়েছে ওখান থেকে একটা ছোট্ট স্টোররুম। এতসব জিনিসপত্র কিন্তু সবই খুব সুন্দর ছিমছাম করে সাজানো! আর আকারে ছোট হওয়ায় গাদাগাদি করে রাখা হয়েছে এমনও মনে হয় না!
পরীক্ষার শেষ হওয়ার পরের দিন সকালের জলখাবারের পর বসে পরীক্ষার কিছুটা টুকটাক ভুল করা পড়াশোনা শেষে চিঠির খাম খুলে পড়তে বসলো। পড়ার পরে কি অবস্থা হয়েছিল প্রাণের? উত্তর দিতে বসে পড়লো লিখতে।
প্রিয় দাদাভাই,
তোমার চিঠি পড়া শেষ করলাম মাত্র। আমার চিঠিতে যা লিখেছিলাম সেটা আবারও মনে করিয়ে দিচ্ছি – আমাদের দুই ভাইয়ের সম্পর্কটা আর যা- ই হোক রক্তের সম্পর্কে সীমাবদ্ধ নেই! গাঢ়তা হারিয়ে গেছে বহুদিন আগে। বিশেষত তোমার বিয়ের পর থেকে সেটা দিনে দিনে আরও বেড়েছিল। গৌতম বুদ্ধের একটা কথা বলি – “পরিবার বলতে শুধু রক্তের বন্ধনকেই বোঝায় না। এরা হচ্ছেন তারাই যারা তোমার জীবনের সবচেয়ে মোক্ষম সময়ে সাথে থাকেন”। যদি তেমন হয় তাহলে আমার কোন অস্তিত্ব তোমাদের বর্তমান জীবনে নেই! আর হয়তো ভবিষ্যতেও হবে না। এখানে আসার এক মাস আগে থেকে সেই কবে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছ! বাবা চলে যাওয়ার পরে কথা হলেও বড় ভাই হিসেবে তোমার যোগাযোগ করার কথা ছিল। কিন্তু করেছিল কে? আমি! যখন বাবার অন্তিম সময় চলছে তখন তোমার প্রায় সব বন্ধুরা সুজন ভাই, কামাল, টিপু ভাইয়া সবাই তোমাকে অনেক কল করেছেন, টেক্সট পাঠিয়েছেন! তোমার কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। শেষমেশ হাসপাতাল থেকে সুমি আপু আমাকে যোগাযোগ করেছিলেন শুধু আমার মৌখিক অনুমতি নিতে। কারণ তখন মায়ের ওই মানসিক অবস্থা ছিল না। যখন রোগী শুধু আইসিইউতে যন্ত্রপাতির কারণে টিকে আছেন তখন একটা সময় পর সেগুলো তাঁকে চিরবিদায় জানানো হয়। এর জন্য আপন পরিবারের কারও অনুমতি নিতে হয়। শুধু তখনই কেন?? বাবার শেষ সময়ে কয়েক মাসে তোমাদের কোন খোঁজ খবর ছিল না। কোন যোগাযোগ তোমরা করনি। কেন?? কিসের এত ব্যস্ততা?? আমাকে এত এত কথা না লিখে নিজেদের কখনো আত্ম-জিজ্ঞাসার মুখোমুখি করেছো?? করলে হয়তো উপযুক্ত জবাব পেতে। আমাকে এখানে আসতে দেওয়ার পেছনে বাবার নিজ ইচ্ছাও জড়িত ছিল।
অতনু দাশ গুপ্ত | Atonu Das Gupta
Bengali Novel 2023 | ফিরি বিশল্যকরণী (পর্ব ৭) | উপন্যাস
Bengali Novel 2023 | স্টেশন কান্তার (১ম পর্ব) | উপন্যাস ২০২৩
Bengali Novel 2023 | স্টেশন কান্তার (২য় পর্ব) | উপন্যাস ২০২৩
New Bengali Novel 2022 | ফিরি বিশল্যকরণী (পর্ব ১) | উপন্যাস
bengali novel | indian poetry | indian poetry in english | indian poetry in urdu | indian poems | indian poems about life | indian poems about love | indian poems about death | bengali story | bengali story books for child pdf | bengali novel for adults | bengali story books | bengali story books for child | bengali novel pdf | bengali story for kids | bengali novel reading | short story | bengali novel analysis | bengali novel characteristics | bengali novel competition | short story definition | short story english | short story for kids | short story generator | short story ideas | bengali novel length | long story short | bengali novel meaning | long story | long story instagram | story writing competition | story writing competition topics | story writing competition for students | story writing competition malayalam | bengali novel competition india | story competition | writing competition | writing competition malaysia | writing competition london | writing competition hong kong | writing competition game | writing competition essay | writing competition australia | writing competition prizes | writing competition for students | writing competition 2022 | writing competitions nz | writing competitions ireland | writing competitions in africa 2022 | writing competitions for high school students | writing competitions for teens | writing competitions australia 2022 | writing cmpetitions 2022 | writing competitions uk | bengali novel writing | bangla news article | bangla article rewriter | article writing | bengali novel ai | bengali novel app | article writing book | bengali novel bot | bengali novel description | bengali novel example | article writing examples for students | article writing for class 8 | article writing for class 9 | bengali novel format | bengali novel generator | article writing global warming | article writing igcse | article writing in english | article writing jobs | article writing jobs for students | article writing jobs work from home | article writing lesson plan | bengali novel on child labour | article writing on global warming | article writing pdf | bengali novel practice | article writing topics | trending topics for article writing 2022 | what is article writing | bengali novel trends 2023 | bengali novel topics 2023 | Shabdodweep Writer | Shabdodweep | Shabdodweep Founder