Bengali Article 2023 | দুর্গা পূজার কথকতা | প্রবন্ধ ২০২৩

Sharing Is Caring:
BENGALI ARTICLE

কৃত্তিকা পোদ্দার – সূচিপত্র [Bengali Story]

দুর্গা পূজার কথকতা [Bengali Article]

শ্রাবণের অঝোর ধারায় সিক্ত প্রকৃতি যখন একমুঠো উষ্ণতার উদ্দেশ্যে সাধনালিপ্ত হয় ঠিক তখনই আকাশ তার নীলাম্বরী আঁচলটি মেলে ধরে প্রকৃতিদেবীকে ভরিয়ে তোলে নির্মল উষ্ণতায়। প্রকৃতিদেবী যেন তখন রঙিন পট্টবস্ত্রে সেজে মহামায়ার আরাধনায় লিপ্ত হন। সূচনা হয় শরৎকালের। তখন বাতাসে কান পাতলেই শোনা যায় মায়ের নূপুর নিক্বণ। শরতের বাতাস পদ্মকুঁড়িগুলোকে দোলা দিয়ে বলে যায় মা আসছেন। মুঠো মুঠো শিউলি ঝরে পরে শিশিরসিক্ত ঘাসের ওপর। মায়ের আগমনী বার্তা বয়ে আনে শিউলির মনমাতানো সুবাস। পৌরাণিক তথ্য অনুসারে শুক্লা ষষ্ঠী তিথিতে দেবী দুর্গাকে বিল্ববৃক্ষ্যে আরাধনা করে পূজা করেছিলেন শ্রী রামচন্দ্র। সেই তিথি ধরেই মা দুর্গার পুজো করা হয়ে থাকে।

দুর্গা পূজা মূলত শাক্ত ও বৈষ্ণব এই দুই রীতিতে হয়ে থাকে। বৈষ্ণব মতে প্রচলিত দুর্গার বাহন কিছুটা ঘোটক আকৃতির হয়। কৃষ্ণনগর রাজবাড়ীর দুর্গা প্রতিমার বাহন এই রীতি মেনেই তৈরী হয় আজও। দুর্গা পূজার একটি বিশিষ্ট অঙ্গ হলো নবপত্রিকা স্নান। আক্ষরিক অর্থে নয়টি পাতা হলেও নবপত্রিকা আসলে নয়টি উদ্ভিদ – রম্ভা (কলা), কচ্চি (কচু), হরিদ্রাচ (হলুদ), জয়ন্তী, বিল্ব (বেল), দাড়িমৌ (ডালিম), অশোক, মানা (মানকচু) এবং ধান। কলাগাছের সঙ্গে বাকি আটটি সমূল উদ্ভিদ একত্র করে বেল সহ শ্বেত অপরাজিতার লতা দিয়ে বেঁধে লালপাড় শাড়ী জড়িয়ে ঘোমটা দিয়ে বধূর আকার দেওয়া হয়। এই নবপত্রিকা প্রবেশের মাধ্যমেই দুর্গা পূজার মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। এই নয়টি উদ্ভিদকে দেবী দুর্গার বিশেষ নয়টি রূপের প্রতিকল্পরূপে কল্পনা করা হয়।

এবার আসি সন্ধিপূজার কথায়। সন্ধি কথাটির অর্থ হলো মিলন। অষ্টমী এবং নবমীর মিলন মুহূর্তকে সন্ধিক্ষণ বলে। অষ্টমী তিথির শেষের ২৪ মিনিট এবং নবমী তিথির শুরুর ২৪ মিনিট এই ৪৮ মিনিট হলো সন্ধিপুজোর সময়কাল। পুরাণমতে দেবী দুর্গা যখন মহিষাসুরের সঙ্গে যুদ্ধে রত তখন মহিষাসুরের দুই সেনা চন্ড ও মুণ্ড দেবীকে আক্রমণ করে। তখন দুর্গার তৃতীয় নয়ন থেকে আবির্ভূত হন দেবী চামুন্ডা এবং দুই অসুরকে বধ করেন। সন্ধিপুজোয় দেবী মহামায়ার চামুন্ডা রূপকে আরাধনা করা হয়। এই সন্ধিপূজার অপরিহার্য উপাচার হলো ১০৮টি পদ্ম ও ১০৮ প্রদীপ। 

পৌরাণিক কাহিনী মতে দীর্ঘদিন অসুর নিধনে লিপ্ত হওয়ায় দেবী দুর্গার দেহে অনেক ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছিল। এই দহন উপশমের জন্য দেবীকে দেবীদহে স্নান করতে উপদেশ দেন মহাদেব। দুর্গার দেহে ১০৮টি ক্ষত হয়েছিল। দেবীদহে অবগাহন করায় মায়ের দেহের ১০৭টি ক্ষত থেকে ১০৭টি পদ্ম প্রস্ফুটিত হয়। দেবীর যন্ত্রণায় কাতর মহাদেবের চোখ থেকে একফোঁটা অশ্রু নিক্ষিপ্ত হয় দেবীর একশো আটতম ক্ষতটির ওপর। সেই অশ্রুসিক্ত ক্ষতটি থেকে যে পদ্মটি প্রস্ফুটিত হয়েছিল সেটিকে দেবী নিজ করকমলে ধারণ করেন। প্রদীপ অজ্ঞতা ও অশুদ্ধতার বিনাশক তাই ১০৮ প্রদীপ প্রজ্বলিত করা হয়। কথিত আছে শ্রী রামচন্দ্রের আরাধনায় তুষ্ট হয়ে দেবী মহামায়া অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণে তাঁর সামনে আবির্ভূত হন এবং রাবণ বধের জন্য দাশরথির বানে অধিষ্ঠিত হন। নবমী তিথিতে হয় রাবণ বধ। তাই লোকবিশ্বাস সন্ধিপূজার সন্ধিক্ষণে চিন্ময়ী মা মৃন্ময়ী রূপে আমাদের মাঝে অবতীর্ণ হন।

দুর্গার আরাধনায় ১০৮ টি বিল্বপত্র অন্যতম প্রয়োজনীয় উপাচার। কথিত আছে বিল্ব পত্রের তিনটি ফলকে তিন দেব অর্থাৎ ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর বাস করেন। আবার বিল্ব পত্রের তিনটি ফলক সত্ব, তম ও রজোগুণের প্রতীক যা দিয়ে বিশ্বকে সৃষ্টি করেছেন ঈশ্বর। মা দুর্গার দশ হাতের অস্ত্র বহন করে বিভিন্ন অর্থ। পুরাণমতে শঙ্খ হলো সৃষ্টির প্রতীক, শঙ্খের নাদ থেকেই প্রাণের স্ফুরণ হয়েছে এই জীবজগতে। মায়ের হাতে চক্র থাকার অর্থ হলো সমগ্র সৃষ্টি তাকে কেন্দ্র করেই আবর্তন করছে। দেবীর হাতের পদ্ম প্রতিকূলতাকে জয় করে আলোর পথ উন্মোচনের বার্তা বহন করে। মানুষের ক্ষুরধার মগজাস্ত্রের প্রতীকী হলো মায়ের হাতের খড়্গ। তীর ধনুক ধারণ করে মনুষ্য শরীরের অন্তর্নিহিত শক্তির বার্তা দেন দেবী। ত্রিশূলের তিনটি ফলক সত্ব, তম ও রজ গুনগুলিকে নির্দেশ করে, দেবীর হাতের গদা আনুগত্য ও ভক্তির প্রতীক। বজ্র ধারণ করে দেবী চরিত্রের দৃঢ়তা ও সংহতি এই দুই গুনের সাহায্যে জীবনের লক্ষ্যভেদে সফল হওয়ার বার্তা প্রদান করেন। অগ্নি হলো জ্ঞানের প্রতীক এবং সর্প চেতনার নিম্নস্তর থেকে উচ্চস্তরে অবতরণের বার্তা বাহক। দুর্গা পূজা হলো মহাপূজা তাই ষোড়শোপচারে হয়ে থাকে এই পূজা।

উপাচারগুলি যথাক্রমে – আসন, স্বাগত, পাদ্য, অর্ঘ্য, আচমনীয়, মধুপর্ক, পুনরাচমন, স্নান, বস্ত্র, অলংকার, গন্ধ, পুষ্প, ধূপ, দীপ, নৈবেদ্য ও পুনরাচমন। মা কৈলাস থেকে বহু পথ অতিক্রম করে আসেন তাই প্রথমেই তাকে বসার আসন দেওয়া হয় এবং স্বাগত জানানো হয়। ঠিক যেমন অতিথি এলে আমরা বলি “এখানে বসুন”। এরপর মায়ের পদযুগল পরিষ্কার করার জন্য জল প্রদান করা হয়, তা হলো পাদ্য। এরপর মাকে দই, দুধ দিয়ে অর্ঘ্য প্রদান করা হয় এবং মুখ ধৌত করার জল দেওয়া হয় যা হলো আচমনীয়। মার পথশ্রান্তি নিবারণের প্রয়াসে দই, ঘি, মধু, চিনি দিয়ে সুস্বাদু শীতল জল প্রদান করা হয় যাকে বলে মধুপর্ক। পুনরায় মুখ ধৌত করার জন্য জল দেওয়া হয়। এরপর মায়ের ক্লান্তি দূরীভূত করার জন্য স্নান এবং স্নানের পর তাঁকে বস্ত্র, অলংকার, পুষ্প, ধূপ, দীপ দেওয়া হয়। আহারের জন্য নৈবেদ্য ও পুনরায় মুখ প্রক্ষালনের জল দেওয়া হয়। এ বিষয়ে লক্ষণীয় পূজার উপাচার্য ও আমাদের লৌকিক নিয়ম একইরকম। ভক্তি, আন্তরিকতা ও জ্ঞানের দৃষ্টি দিয়ে দেখলে অনুধাবন করা যাবে পূজার অনুষ্ঠান কত গাম্ভীরাঅর্থদ্যোতক।

কৃত্তিকা পোদ্দার | Krittika Podder

Bengali Story 2023 | রূপশঙ্কর আচার্য্য | গল্পগুচ্ছ ২০২৩

Bengali Story 2023 | ওরাই আমাদের কর্ণধার (শিশুকিশোর) | গল্পগুচ্ছ ২০২৩

Bengali Story 2023 | লুনি বা টুনী | গল্পগুচ্ছ ২০২৩

Bengali Article 2023 | চিরায়ত ধর্মমঙ্গলের স্বাতন্ত্র্য | প্রবন্ধ ২০২৩

দুর্গা পূজার কথকতা | কলকাতায় দুর্গাপূজা | কলকাতা শীর্ষ ১০ সেরা দুর্গা পূজা | পূর্ববঙ্গের দুর্গা সংস্কৃতি | দুর্গা পূজা ২০২৩ | দুর্গা পূজা ১৪২৯ | দুর্গা পূজা ২০২২ | দুর্গা পূজা সঠিক বানান | দুর্গা পূজা রচনা | বাংলা প্রবন্ধ | বাংলার লেখক | প্রবন্ধ ও প্রাবন্ধিক | সেরা প্রবন্ধ ২০২২ | শব্দদ্বীপ | শব্দদ্বীপের লেখক | বাংলা ম্যাগাজিন | ম্যাগাজিন পত্রিকা | শব্দদ্বীপ ম্যাগাজিন

Durga Puja | durga puja kolkata | durga puja bengali | durga puja essay | durga puja unesco | durga puja in english | story of durga puja | when is durga puja in 2023 | bengali article writing competition | writing competition malaysia | writing competition london | writing competition hong kong | writing competition game | writing competition essay | writing competition australia | writing competition prizes | writing competition for students | writing competition 2022 | writing competitions nz | writing competitions ireland | writing competitions in africa 2022 | writing competitions for high school students | writing competitions for teens | writing competitions australia 2022 | writing competitions 2022 | writing competitions uk | bengali article writing | bangla news article | bengali article rewriter | article writing | bengali article writing ai | bengali article writing app | bengali article writing book | bengali article writing bot | bengali article writing description | bengali article writing example | article writing examples for students | article writing for class 8 | article writing for class 9 | bengali article writing format | article writing gcse | bengali article writing generator | article writing global warming | article writing igcse | article writing in english | bengali article writing jobs | article writing jobs for students | article writing jobs work from home | article writing lesson plan | article writing on child labour | article writing on global warming | article writing pdf | article writing practice | article writing topics | trending topics for article writing 2022 | what is article writing | content writing trends 2022 | content writing topics 2022 | Bangla Prabandha | Probondho | Definite Article | Article Writer | Short Article | Long Article | Bangla kobita | Kabitaguccha 2022 | Galpoguccha | Galpo | Bangla Galpo | Bengali Story | Bengali Article | Shabdodweep Writer | Shabdodweep | Shabdodweep Founder

Leave a Comment