New Bengali Article 2023 | সংবাদ মাধ্যমের নিরপেক্ষতা

Sharing Is Caring:
BENGALI ARTICLE

সংবাদ মাধ্যমের নিরপেক্ষতা – প্রদ্যোৎ পালুই [Bengali Article]

সংবাদপত্র যখন তার নিরপেক্ষতা হারায় তখন সে আর সংবাদপত্র থাকে না। কারও না কারও মুখপত্র বা মুখপাত্র হয়ে ওঠে। বর্তমানে অগুনতি ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় দৈনিক অজস্র সংবাদ প্রচারিত হয়। সংবাদপত্রের প্রচারিত সংবাদ পাঠ করেও পাঠক সমৃদ্ধ হন। ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় দ্রুত সংবাদ পাওয়া যায় ঠিকই, কিন্তু সংবাদপত্রের মতো তা বিস্তারিত সংবাদ হয়ে ওঠে না। সংবাদ বড় হোক বা ছোট, তার শেষ পর্যন্ত পাঠককে টেনে নিয়ে যেতে পারলে সংবাদ মাধ্যমের সাফল্য। আর সেটা সম্ভব দুটো কারণে। এক, সংবাদ শুধুমাত্র ঘটে যাওয়া ঘটনাটি বলে যাওয়া নয়, তা কতখানি তথ্যসমৃদ্ধ করে সাহিত্যরস মিশিয়ে উপস্থাপিত করা গেল তার উপর অনেকখানি নির্ভর করে। অর্থাৎ ঘটনার উপস্থাপনা এবং বর্ণনার স্টাইল সংবাদকে আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে। দুই, সংবাদ পরিবেশনে নিরপেক্ষতা। সংবাদ মাধ্যমের গ্রহণযোগ্যতার স্বার্থে এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রকৃত ঘটনাকে সঠিকভাবে উপস্থিত করে পাঠকের কাছে সঠিক খবর পৌঁছে দেওয়া সংবাদ মাধ্যমের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব। তা না হলে সংবাদ অনেক সময় একমুখী প্রচার সর্বস্ব হয়ে ওঠে। পাঠক হেড লাইন দেখেই শেষ করেন। সংবাদের ভেতরে ঢোকার ইচ্ছা পোষণ করেন না।

বর্তমানে প্রচার সর্বস্ব যুগে সংবাদ মাধ্যমের নিরপেক্ষতা নিয়ে বিভিন্ন জনে বিভিন্ন প্রশ্ন তুলে থাকেন। বিকৃত সংবাদ পরিবেশন, সংবাদ না পরিবেশন এবং অর্থের বিনিময়ে সংবাদ পরিবেশন (পেইড নিউজ) নিরপেক্ষহীনতার অন্যতম উদাহরণ। তিনটি বিষয়ের সঙ্গেই পাঠক কমবেশি পরিচিত। বর্তমানে ইন্টারনেট দুনিয়ায় কোন সংবাদ চেপে রাখতে চাইলেও মুহূর্তকালও তা চেপে রাখা যায় না। বিভিন্ন মাধ্যম হয়ে বিভিন্নভাবে সকলের কাছে মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে। তখন দেখা যায়, একই সংবাদ পরিবেশকের পছন্দ অনুযায়ী বিভিন্ন মাধ্যমে বিভিন্নভাবে পরিবেশিত হয়। সেই অবস্থায় প্রকৃত ঘটনাকে খুঁজে পাওয়া অনেকের পক্ষে কঠিন হয়ে যায়। তখন পাঠক সংবাদপত্রের দিকে তাকিয়ে থাকে। সেখানে বাস্তব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কার্যকারণ খতিয়ে দেখে প্রকৃত ঘটনা জনসমক্ষে আনার চেষ্টা করা হবে এটাই মানুষের আশা। কিন্তু আশ্চর্যের হলেও সত্য এই যে, অনেক সময় দেখা যায়, একই সংবাদ বিভিন্ন সংবাদপত্রে বিভিন্নভাবে উপস্থাপিত হচ্ছে। অনেক সময় সংবাদের একটা দিক অন্ধকারে রেখে নিজের পছন্দের দিকটিই কেবল আলোকিত করে প্রচার করে দেওয়া হয়েছে। ফলে পাঠক তাঁর সমস্ত জিজ্ঞাসার উত্তর পান না। তখন তাঁকে প্রকৃত তথ্য বা ঘটনা জানবার জন্য একাধিক সংবাদপত্র পড়ে সেখান থেকে নিজের বিচারবোধ মিশিয়ে সঠিক ঘটনা জানার চেষ্টা করতে হয়। অনেক সময় দেখা যায়, কোন ঘটনা নিজের পছন্দের সঙ্গে মেলে নি, কিম্বা নিজে যাকে বা যাদেরকে পছন্দ করেন তাদের দ্বারাই কোন অপ্রিয় ঘটনা ঘটে গেছে। তখন সেই ঘটনা হয় ছেড়ে যাওয়া হয় নতুবা ধরি মাছ না ছুঁই পানি-র মতো করে নামমাত্র সংবাদ পরিবেশিত হয়। অথবা সংবাদ পরিবেশনের সময় আপাতভাবে দোষী ব্যক্তিকে কিছুটা আড়াল করার চেষ্টা করা হয়। একইভাবে সারাদিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংবাদের পরিবর্তে কম গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ হেডলাইন করে প্রচার করা হয়। তার থেকে পাঠকের পক্ষে সঠিক সংবাদ এবং সংবাদের গুরুত্ব জানা অনেক সময় সম্ভব হয় না। এছাড়া অর্থের বিনিময়ে সংবাদ পরিবেশন সংবাদপত্রের বিরুদ্ধে একটি গুরুতর অভিযোগ। কোন কম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাকে অর্থের বিনিময়ে ফলাও করে কাগজের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ছেপে পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। রাজনীতির ক্ষেত্রে এই ধরনের পেইড নিউজের রমরমা দেখা যায় বেশি করে। তাই নির্বাচন কমিশন প্রার্থীদের খরচের দিকটি দেখার সময় পেইড নিউজের দিকটিতেও সতর্ক দৃষ্টি দিতে নির্দেশ দেয়। অর্থের বিনিময়ে কাউকে বড় বা মহান করে তুলে ধরার এই ধরনের সংবাদ অনেক সময় সাধারণ পাঠক বুঝতে না পেরে কোন নির্দিষ্ট প্রার্থী বা দলের প্রতি আকৃষ্ট হয়। অর্থাৎ পাঠককে মোটিভেট করতে পেইড নিউজের গুরুত্ব অনেকখানি। তাছাড়া সরকারের আর্থিক আনুকূল্য পাওয়ার জন্য অনেক সংবাদ মাধ্যম নিজেদের নিরপেক্ষতা হারিয়ে ক্ষমতাসীন দলের গুণগান গাইতে থাকে ধারাবাহিকভাবে। সরকার ভুল এবং ঠিক দুই ধরনের কাজই করে থাকে। কিন্তু পেটুয়া সংবাদ মাধ্যম পছন্দের সরকারের কোন ভুল দেখতে পায় না। পেলেও তার প্রকৃত গুরুত্ব হ্রাস করে প্রচার করা হয়। এগুলোও পরোক্ষে অর্থের বিনিময়ে সংবাদ পরিবেশনের নামান্তর।

স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠবে, কেন সংবাদ মাধ্যম সংবাদকে এমন নিজেদের মতো করে পরিবেশন করে? এর উত্তর একাধিক। বিখ্যাত গ্রীক দার্শনিক অ্যারিস্টটল বলেছিলেন, “ম্যান ইজ বাই নেচার এ পলিটিক্যাল অ্যনিম্যাল।” সকল মানুষের মধ্যে একটা রাজনৈতিক সত্তা অবদমিত হয়ে লুকিয়ে থাকে। সেই সত্তা ব্যক্তি বিশেষে কখনও কখনও প্রকট হয়ে ওঠে। যদিও সাংবাদিকতার কাজের প্রতি নিষ্ঠা ও আস্থার স্বার্থে একশো শতাংশ নিরপেক্ষ থেকে সংবাদ পরিবেশন করা দরকার। কিন্তু নিজের বিশ্বাস ও আস্থার কাছে ব্যক্তি অনেক সময় দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে নিজের মত ও পথকে প্রতিষ্ঠা দেওয়া এবং বড় করে তুলে ধরার জন্য অনেক সময় এমন একমুখী সংবাদ পরিবেশিত হয়। এছাড়া আর্থিক আনুকূল্য তো আছেই। এক্ষেত্রে আরও একটা বিষয় বড় হয়ে দেখা দেয়। রাজনৈতিক রক্তচক্ষু। রাজনৈতিকদের হাতে ক্ষমতার সঙ্গে আরও এমন কিছু শক্তি থাকে যার অদৃশ্য চাপে অনিচ্ছা সত্ত্বেও সত্য এবং নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশনে কিছুটা ঘাটতি ঘটে যায়। তা সত্ত্বেও কিছু সাংবাদিক নিজেদের পেশার প্রতি অসাধারণ সৎ থেকে কাজ করতে চাওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে নানাভাবে দমনপীড়ন নেমে এসেছে। এমনকি খুন হতে হচ্ছে। মার খেতে হচ্ছে অনেককে। কিডন্যাপ করা হচ্ছে সাংবাদিককে। অভিযোগ, ভারতে মোদী সরকারের আমলে দেশে ৪০ জনের বেশি সাংবাদিক খুন হয়েছেন। ২০০ জন জখম হয়েছেন। সাংবাদিকের দু;সাহসিকতা এবং নিরপেক্ষতার জন্য ব্যাঙ্গালুরুতে গৌরি লঙ্কেশ, পঙ্কজ মিশ্র, মহারাষ্ট্রে নরেন্দ্র দাভোলকার, গোবিন্দ পানসারে, কর্ণাটকে এম এল কালবুর্গি, ত্রিপুরায় শান্তনু ভৌমিক ইত্যাদি অনেক সাংবাদিককে নৃশংসভাবে খুন হতে হয়েছিল। নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদ আন্দোলনের সংবাদ সংগ্রহের সময় একাধিক সাংবাদিককে পুলিশি বাধার মুখে পড়তে হয়েছে। হরিয়ানার সাংবাদিক বিনোদ দুয়া প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করার অপরাধে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে উদ্যত হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে সেই গ্রেপ্তারি রোধ করা গেলেও হেনস্থা বন্ধ হয় নি। হাথরসে ধর্ষিতা তরুণীর মৃত্যু সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহের আইনে সিদ্দিক কাপ্পনকে গ্রেপ্তার হতে হয়। দীর্ঘ দুবছর পরে তিনি জামিন পান। সারা দেশেই এভাবে বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিকদের উপর আঘাত এসেছে তাঁদের সাহসিকতা এবং নিরপেক্ষতার বিরুদ্ধে। বাংলায় সাংবাদিক খুন না হলেও বিগত ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে হুমকি, আক্রমণ, কিডন্যাপ ইত্যাদির মুখে পড়তে হয়েছে একাধিক সাংবাদিককে। দুর্নীতি এবং অন্যায় অত্যাচারের সংবাদ সংগ্রহের সময় বাধা আসে সবচেয়ে বেশি। বহির্বিশ্বেও খবরটা খুব সুখকর নয়। চিন সরকার হংকং-এর বিরুদ্ধে স্বৈরতান্ত্রিক নিরাপত্তা আইন লাগু করার পর সেদেশের গণতন্ত্রকামী আন্দোলনকে সমর্থন করে নিজের কাগজে প্রচারের জন্য চিন সরকার জিমি লাই-কে গ্রেপ্তার করে। বাংলাদেশেও একের পর এক সাংবাদিকের উপর পুলিশি আক্রমণ নেমে এসেছিল একসময়। এসবই সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা এবং বাক্‌স্বাধীনতায় অবৈধ হস্তক্ষেপ। এতদ্‌সত্ত্বেও কিছু সাংবাদিক এবং সংবাদ মাধ্যম নিজেদের নিরপেক্ষতার শর্ত থেকে বিচ্যুত হয় নি। এটা অন্ধকার আকাশে নক্ষত্রের ফুলকি বৈকি।

সংবাদ মাধ্যম যেহেতু গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ, তাই এই স্তম্ভকে স্বতন্ত্র, স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ রাখার দায়িত্ব সাংবাদিক থেকে জনগণ এবং সর্বোপরি গণতান্ত্রিক সরকারের। বর্তমানে যেভাবে গণতন্ত্রের প্রথম তিনটি স্তম্ভের উপর নানাভাবে আঘাতের অভিযোগ উঠছে তাতে চতুর্থ স্তম্ভের নিরপেক্ষতা বজায় রাখা আরও বেশি করে প্রয়োজন। কিন্তু তা এখন আরও বেশি কঠিন কাজ। শত বাধা সত্ত্বেও সংবাদ মাধ্যম নিজেদের দায়বদ্ধতা বজায় রেখে সঠিক সংবাদ জনগণের কাছে পরিবেশন করবেন এই আশা সকলেই করে। সংবাদ মাধ্যম তা কতটা বজায় রাখতে পারবে তার উপর নির্ভর করছে তাদের গ্রহণযোগ্যতা।

প্রদ্যোৎ পালুই | Pradyut Palui

Bengali Poetry 2023 | ডাঃ মাধাই মিদ্যা | কবিতাগুচ্ছ ২০২৩

ট্যাটুর ইতিহাস ও আমরা | History of Tattoo | Reasons for using tattoos | 2023

Emblem of Ramakrishna Mission | রামকৃষ্ণ মিশনের প্রতীকের অর্থ | নক্‌শা ও তাৎপর্য | 2023

Bengali Poetry 2023 | যুবক অনার্য | কবিতাগুচ্ছ ২০২৩

bengali article writing competition | writing competition malaysia | writing competition london | writing competition hong kong | writing competition game | writing competition essay | writing competition australia | writing competition prizes | writing competition for students | writing competition 2022 | writing competitions nz | writing competitions ireland | writing competitions in africa 2022 | writing competitions for high school students | writing competitions for teens | writing competitions australia 2022 | writing competitions 2022 | writing competitions uk | bengali article writing | bangla news article | bengali article rewriter | article writing | bengali article writing ai | bengali article writing app | bengali article writing book | bengali article writing bot | bengali article writing description | bengali article writing example | article writing examples for students | article writing for class 8 | article writing for class 9 | bengali article writing format | article writing gcse | bengali article writing generator | article writing global warming | article writing igcse | article writing in english | bengali article writing jobs | article writing jobs for students | article writing jobs work from home | article writing lesson plan | article writing on child labour | article writing on global warming | article writing pdf | article writing practice | article writing topics | trending topics for article writing 2022 | what is article writing | content writing trends 2022 | content writing topics 2022 | Bangla Prabandha | Probondho | Definite Article | Article Writer | Short Article | Long Article | Bangla kobita | Kabitaguccha 2022 | Galpoguccha | Galpo | Bangla Galpo | Bengali Story | Bengali Article | Shabdodweep Writer | Shabdodweep | Shabdodweep Founder

Leave a Comment