Best Bangla Kobita Live Stream | Live Poetry

Sharing Is Caring:

Bangla Kobita Live Stream | Read Bengali Poetry Online

অবিচ্ছিন্নতা

বিকেল একটা পাখির ঠোঁট ধরে উড়ছিল
পাতা ফুল ফল মাটি ছায়া বটগাছও
অগুনতি রোদ ডানা মেলে দিচ্ছিল বাতাসে
পুকুরের ছায়াজলে নির্জলা মেঘ ভাসছে

মায়াবী দুপুর ঝুপ করে এক চুনোপুঁটি
ঠোঁটে তুলে উড়ে বসল সূর্যের ডালে

জল অস্থির হয়ে ঢিল ছুঁড়ল নীরব শূন্যে
ভেসে ওঠে পাড়ায় পাড়ায় মনসাগীতি
বস্তির এঁদো বাতাস কানে কানে তোলে ঢেউ
এবারে বৃষ্টি কম সোনা
এদিকে আর কক্ষনো এসো না

জল আর বেল খেলে শরীর শীতল থাকে
শরীর থেকে ছায়াকে কি কেউ দূরে রাখে

মাতৃস্মৃতি

দিনরাত খাটা-খাটুনির পর
মায়ের বিশ্রাম ওই বাবার পদতলে
আক্ষেপ করে মা বলেছিল
মেয়েদের ভাগ্য এভাবেই লিখেছেন
অতীতের ঈশ্বর

বাঘের হলুদ চোখের গর্জন দেখেছি
বাবার লোভী চোখে
মা কোনোদিন ভয় পেত না
অভাবের সংসারে

মা নিশ্চিত, বাবাই মায়ের আসল ভরসার ক্ষেত্রভূমি

ভোরের সেতার

সন্ধ্যার আলো ডুবলে আকাশ ঝুঁকে যায়
কাড়িকাড়ি কার্বন-ভুষো হাতে নিয়ে
ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেয় পৃথিবীর মুখে চোখে

পৃথিবীর আলো দেখে ভোরের ইচ্ছে করে
সূর্যের সব রঙ গায়ে মেখে ফেলতে
বসন্ত উড়ছিল বলেই কোকিল ডেকে উঠল
গান এসে বাসা বাঁধে ডালে

এসকলই মায়াবী চলন বলন, শুনে
বিশ্বাসই হয়নি রাতচোরা পাখির
ঠোঁটে এক টুকরো জোনাকি ছানা এনে
রেখেছিল বাসায় তা দেওয়ার তাগিদে

সময় কখনো কখনো বাজে মশকরা করে
হাভাতে পথিকের সাথে
এবার সত্যিই ভোর বেজে উঠবে সেতারের ঠোঁটে

ব্যক্তিগত পরিসর

একফালি চাঁদ নির্জন আকাশে রাতে
কোমল বিছানা পেতে উপোষী বাতাস
ছুঁয়ে শিশির শরীর ভেজায়

নিত্যশক্তি ভরের ব্যথা বেদনা বোঝে
ধুসকালি মেখে বাতাসে ঢেউ তোলে
বোঝে উদ্বাস্তু যন্ত্রণা

ফিরে যেতে চায় মূর্খ বসন্ত ফুল ফোটায়
বিষাদজল মেখে ভোর হয় মৌলিক সকালের

ধূসর অপরাহ্ন ভেজা চোখে ভগ্ন নদীকূলের
নিঃস্বতা ফিরে চায়, মুগ্ধতা স্মৃতি মোহজাল

শান্তির বার্তা নিয়ে ব্যর্থ দেওয়ালের স্পর্শধ্বনি
ঈর্ষা-আগুনে পুড়ে পুড়ে ব্যক্তিগত পরিসর খোঁজে

সভ্যতার চাবি

সভ্যতা প্রত্যহ কামড়ে খেয়ে ফেলে সূর্যকে
কালো হয়ে হয়ে নেমে আসে অন্ধকার
হাতের ফলকচিহ্ন এপিটাফে শোকগাথা এঁকে
জাগে বাঁশির আওয়াজ, ছিঁড়ে যায় ধৈর্য-তার

আদিম কাঁকড়া বিছা পুচ্ছটি তুলে দৌড়ায়
নিমফুলের গায়ে ভীষণ জ্বর, নিরুত্তর তাপে
আচ্ছন্নে ঘোর পৃথিবী, জীবন্ত সারি সারি লাশে
মনুষ্যত্বের বিকিকিনি চলে মৃত্যুর উপত্যকায়

ধর্ম সভ্যতার চাবি, গোপন শোষণের মস্ত মুখোশ
মানুষের জন্য ধর্ম হলে, খুনে রক্ত ঝরে কার?
উন্মত্ততা আর বিভস্যতা চোখ পীড়িত করে,
সে ধর্মে বিশ্বাস নেই যাদের তারাই অবতার

নম্রতা, সহিষ্ণুতা, মানবতা, প্রেম, সেবা, সুরাসুর
প্রকৃতই ধার্মিকতায় জিঘাংসা, রিরংসা হোক দূর

চক্রব্যূহ

জল-কাদার মধ্যদিয়ে যুদ্ধ শেষ হলে
সেই-যুদ্ধে থাকে না কোনো অহংকার,
মিষ্টি মিষ্টি যুদ্ধ চলছে চারপাশে
ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ছে অগ্নির উত্তাপ,
তাতে কিছুতেই গলাতে পারছে না মন

গতরাতে কে এক আঁটি বাঁশ এনেছিল
বাঁশের অগ্রভাগে লেখা বীরত্বের কাহিনী
সকাল গড়াতে না-গড়াতেই ঐতিহ্যের বার্নিশ
এতটাই ফিকে যে এক শতাব্দর বেশি
পিছিয়ে যেতে হলো সময়-নৌকোয় চড়ে ।

যারা কিছু জানে, তারা থাকে না কিছুতেই
যারা চায় না হোক,তারাই চিৎকার করে বেশি

যৌবন আর উদ্যোগ সময় নির্ভরশীল
বেশিদিন ধরে নাচানাচি না-করাই ভালো
চাঁদের জ্যোৎস্না পূর্ণিমাকে দেয় স্বচ্ছতা
অমাবস্যার ঘোর আঁধারই নীরবতার আলো

অনেক দেখেছি, দেখছি আরও অনেক
সব কিছুই পাল্টে যাচ্ছে অতি দ্রুত
আদিম অনন্ত থেকে আজ-কাল-পরশু,
স্বভাবটার পরিবর্তন হয়নি ততো

কয়লা ধুলে ময়লা যায় না, সত্যও আহত
সঠিক পথে না পারলে যেতে, হও সংযত

কার হাত থেকে কাদের হাতে রথের রশি
কে ধরে লাগাম, কেশগুচ্ছ, আঁকড়ে জিন
সময়ে নিক্ষেপ করো সময়ের তির, বড়শি
ছুটে গেলে সবকিছুই বড়, আসলেই ক্ষীণ

সময়ই শেষ কথা বলে, সময় বড়ো নিরাময়
সময়ের কাজ সময়ে শেষ না হলে বিপদ
হাতের তির ফসকে গেলে ধনুকও অসহায়
কীভাবে ফেরাবে মুখের বুলি, ভাষ্য-পদ

গভীরতা পরিমাপে তেল মাখানো বাঁশের
প্রয়োজন থাকে কতটুকু, গভীর গভীরই
হাত হাতেই রাখতে জানতে হয়, শেষের
জয় তারাই পায়, আসলে যারাই ধীর,স্থির

যুদ্ধজয়ের আনন্দ আছে,পরাজয়েও আনন্দ
দ্বিচারিতা তবে কেন? মানুষ এতোই বোকা?
লড়াই ক্ষেত্রে যারা দেয় ফাঁকি অথবা ধোঁকা
নিজেকেই তারা ভালো বাসে, অন্যেরা মন্দ

মার্তণ্ড জলপান করে সময়ের শুঁড় দিয়ে
সেই জল যতটা নির্মল, ততটাই বিশুদ্ধতা
ফেক সংবাদ আর অডিও-ভিডিও ক্লিপ,তা
নিমেষেই নষ্ট করে দেয় চাঁদ, কলঙ্ক লাগে গায়ে

নিজ কাজে ব্যাপ্ত থেকে শুধুই নিজেকে চেনা
জানার চাইতে বেশি লোভ, ক্ষমতা ভোগ
লাভের অঙ্ক মেপে যায় ভালবাসা, রোগ?
ভালবাসাবাসি মনে, যুদ্ধের অপর ঠিকানা।

টিউটর ও একগুচ্ছ ভৌতিকতা

আজ কোনো কথা নয়, লেখা নেই
শুধুই ঘুরে ফিরে বেড়া
বাসন্তীর নীল আঁচলে পেতে রাখা
ভালবাসা, প্রেমিক পাহারা
হাতে খগ নেই, একটু সোয়াস্তির দিন
বাগদেবী, বীণাপাণি হাতে
শব্দে অক্ষরে কাগজের নরম
রোদ, ছুঁয়ে যায় বাতাসে
বৃষ্টিপতনে বৃষ্টি বুনে দাও মনে
জ্ঞানে পূর্ণ করো নির্বোধ প্রাণ
ফল ফুল দিয়ে ভরে উঠুক হাত,
টিউটরের থেকে পাই পরিত্রাণ।

সেদিন সন্ধেবেলা, আমি আর আরতি
বইখাতা হাতে এসেছি,পাঠে নেই মন
কী নিদারুণ জ্বালা, একটু আলাপন
পাঠ থেকে সরে আসা, কিছুটা বিরতি

পাঠে বরাবর কাঁচা, লজ্জায় থাকি ডুবে
চাপে চাপে পৃথিবীটাই গেছে বেঁকে
অদ্ভুত অজুহাত, রয়েছি তবু ঝুঁকে
বাগদেবীর কৃপা থাকে, ভয় কিসে তবে?

বাবার চাওয়া মেটে যদিও, মেটে না মায়ের আশ
প্রথম হওয়ার ইঁদুর দৌড়ে পিছিয়ে
টিউটর যত তার চেয়ে বেশি মা-ঝিয়ে
বকে বকে ফালা ফালা করে মন, আমার সর্বনাশ

তিন মাইল দূরে যেতে হবে ট্রেনে বাসে চড়ে
এ শহরে ভাল টিউটর নেই ফিজিক্স কেমিস্ট্রিরে
অংক জটিল, বিজ্ঞানে ঠাসা সিলেবাস, সূচি
সাহিত্যে শব্দ বিভ্রান্তি, ইতিহাসে নেই রুচি

চাকরি চাই, বেকারত্বের জ্বালা বোঝে এ জীবন
দল বেঁধে যেতে চাই টিউশনে, বুকভরা যৌবন
মধু লুটেরা ওত পেতে থাকে, একটা ফুটন্ত ফুল
বুকে পাঁজরে লিখে দেওয়া মহাজাগতিক ভুল

তবুও মাথা নোয়াবো না, প্রতিবাদে প্রতিরোধে
নৌকা উড়িয়ে টিউশনে যাই, লড়াই জীবনবোধে

শত চোখ রাঙা, কত চোখ ছুঁয়ে নগর গণ্ডি ছেড়ে
লড়াইয়ের মাঠে জয় ছিনিয়ে নিতে যুদ্ধে আছি রত,
সাথে আছে টিউটর-লিপি, সামনে লক্ষ্য পথ
যে পথে মানুষ বাঁচে, ভীরু পরাজিত, নতুন শপথ
বইয়ের ভেতর যে কথাগুলো আছে লেখা
লড়াই ছাড়া কি বাঁচা যায়?
অস্তিত্বের স্বাদ পেতে চাই, মূর্খ বসন্তে ফোটা ফুল যত
যে ফুল আগাম ভবিষ্যৎ আঁকে, একটুকরোর ভাঙা ছাদ,
পুরোনো সাইকেলখানি ভেঙে ভেঙে সারি, পিঠে হাত
সেই হাত ধরে গড়ে উঠুক ভাঙা রজনী প্রভাত।

আলো-আঁধারের সান্ধ্যলিপি

একটা অন্ধকার দিয়ে কি মৃত্যু মাপা যায়?

একটা মিথ্যা দিয়ে কি সত্যকে ঢাকা যায়?

কালো-আলোর ভেতরে বসবাস যে ভদ্রতার
চামড়া দিয়েই বিচার কি চলে তার?
মানুষরূপী মুখোশধারী দিনের বদল
সভ্যতার নিচে সংগ্রামী-মাধুর্য মেশা নগরী

ছায়া মেপে মেপে দেখে নিও কালিমার দৌড়
অজাতবর্ষ ধরে শরীরী ঘ্রাণে বাউলিনী নাচে
পরাবাস্তবতার ঝোঁকে শরীর এঁকেবেঁকে যায়
মানুষের দর্শন চিনিয়ে দিচ্ছে শীতল কাম

একঝুড়ি পাতলা ভালবাসা বেচতে গিয়েই
ফিরে আসি একমুঠো প্রত্যাশার বীজ নিয়ে।

মাটি খুঁড়ে পেলাম একগুচ্ছ পোড়ামাটি, খাপড়া
দগদগে ঘা আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে
হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো সভ্যতার বুকের ভেতর
মা, মাসি তাম্বুল সেবন করেছে কতবার
বাবাই আগুন জ্বেলে দিত কল্কির ছাই’য়ে
অসভ্যতা পুড়ে ছারখার হয়ে যেত নৈশভোজে

কালো গায়ে কোন দাগ কাটেনি বসন্তের রঙ
কেবল হাতছানি দিয়ে ডাকত একটি পলাশ
শরীরে শরীর মিশে যাচ্ছে ছায়াহীন বনে
শিমুলের মেজো-ডালে ভাঙা হাতুড়ির গান

অলৌকিক সন্ধ্যা এসে দাঁড়াত উঠোনে ক’রে ভীড়
মাঠ থেকে শৌখিন আলিঙ্গন এসে হয়েছে নিবিড়।

প্রতিটি ঊষারই সোনামুখে এঁকে দিত
আলোর মখমল পাতানো বিছানায়
একগুচ্ছ ঘাসের গোঁয়ার্তুমি মেখে বখাটে
নদীর-স্রোত বুক ভাসিয়ে গুণ টানে

অন্ধকার ছুটে এসে বাজাত খোল-করতাল
শীতের শেষে দু’পা জুড়ে জ্বলত ভালবাসা
হাতে হাত সেঁকে নিত অযুত নিযুতেরা
জীবনযাপনে বিলাস,অভিলাষে ভরপুর

আঁধার হাতড়াতে হাতড়াতে যে পেয়েছ সোনা
চাবিগুচ্ছ ঠিকঠাক রেখো ওতেই খুলবে বাসনা

ভুল করে পিতাশ্রী ফল ভোগ করি তুমি,আমি
এমন পিতার কাছে সত্যকথা বলাটা বোকামি
‘যা করে তা ভালোর জন্যই’ এ মিথ্যে সান্ত্বনা
যে ভোলে ভুলুক, আমি কিছুতেই ভুলছি না

যে ডোম্বিনী বসত করত বাহির নগ্ন দ্বারে
তাকে কি এনেছে নাগর উঠোন কিংবা ঘরে?
ময়ানমাছের চড়্চড়ি, পিঙ্গলা নটের শাক
মন পোড়ে, তন ঝরে, কলজে পুড়ে খাক

সেই বিভেদের মাটিতে বসে অন্নজল, হাসি
ভুলতে পারি না হরেককিসিমের ভালবাসাবাসি

ছিল ওরা ভালর ভালো খেটেই কাটত কাল
শোকে দুঃখে আপনা থেকেই কেটেছে সংসার
উড়ে এসে জুড়ে বসা গাছের থেকে কেলোর
ধান গেল, দুব্বাও গেল, নাক কাটলো সুখের

আদর করে জড়িয়ে ধরি লোভের অভিলাষে
মায়ের পেটের ভায়ের সাথে লাগল ঝঞ্ঝাট
সমান সমান ভাগ করে খাই, নিত্য নতুন দিনে
হালবদলের নাই ঝামেলা ভাবনা কিসের আর?

গোলা,জালা, পুঁড়ি, কুঠি নতুন করে এসে
বিভেদ করে বিরাগ বাড়ায় সঞ্চয়ে,সন্তোষে

অন্ধকারের দিনগুলো সব রঙিন রঙে ভেজা
রোদ মেখে নাইতে যাওয়ার আনন্দটাই মজার
আরবি ঘোড়ার হ্রেষা ডাকে কাঁপছে গ্রাম ও বন
সাদা চামড়ার লোকগুলানই করছে আক্রমণ

করছে দখল ভিটেমাটি, ঘরের খাবার যতক
লুটে নিচ্ছে লুটবাজেরা কাড়ছে জীবন কতক,
জানের ভয়ে গেরাম ছেড়ে পাড়ি দিচ্ছে বনে
দস্যুবৃত্তি, লুটপাটের খেলা চলে সুনিপুণে

ভালবাসা হারিয়ে গেলে আঁধার ছেয়ে আসে
সুখে-দুঃখে,বাঁচা-মরার লড়াই চলে সংঘর্ষে

জাতের বড়াই করিস করো নাকো
কালো কি জাত নয়?
সাদা মনের মানুষ বোলে নিজেকে
দিতেছে পরিচয়।

এক দেহ এক কুঠুরি পঞ্চ নালা গলি
কেউ থাকি অট্টালিকায়, কেউ ঘিঞ্জিগলি
বাতাস একই, খাবার হরেক সস্তা বা দামী
মানুষ মানুষ বলে কেন চেল্লাছি তুমি, আমি

কেউ মানি বহুজনে, কেউ কেউ একেশ্বরে
তফাৎ শুধু মনের ভেতর কেউ আছি তিমিরে
ন’মাস পেটে সবাই থাকে রক্ত খেয়েই বাড়ে
ধরায় এসে নামেই চেনে শ্মশানে, কেউ কবরে

কী নিদারুণ লড়াইয়ে আছি সাংসারিক মাঠে
দুহাতে জড়িয়ে নিই বিষোদগার, হিংসা
বেতবনে বানর নাচে, আগুন শুষ্ক কাঠে
যা বলতে পারিনি, বলব না কি এতই অসার?

বন্ধ মুখ, কণ্ঠরোধ, কোন ভয়েতে ভীত
বহুল পিচ্ছিল পথ মন খোঁজে ঈশ্বর
শত কণ্ঠে গেয়ে ওঠে বাঁচার গান, অনিত্য
দেহে খুঁজি কোথায় পরমেশ্বর

মৃত্যুহীন পরিবার হতে এনো একমুষ্টি দানা
বেঁচে বর্তে থাকবে সুখে রবে না ব্যথা,বেদনা

লড়াইয়ে অবতীর্ণ হতে ধর হাতে সত‌্য-দীপ
এ তো জীবন রক্ষক,রাজধর্ম হোক ভালবাসা
প্রজার সুখে রাজার সুখ, সুসম্পর্ক চিহ্ন স্বরূপ
দেশ হোক সকল জাতির, ধর্ম বর্ণহীন
সকল প্রজার সম অধিকার ছিল যে রূপ
ফিরিয়ে আনি আদ্দিকালের সাম্য, সুদিন

এখানে মিশেছে নদী কত জলধারা, গানে
আর্যানার্যধারা মিশে আছে মানুষের মনে

দিনে দিনে বদলে যায় কত শত রঙ
কি কারণে মারি অরি মারীর সম্মুখে
নিত্য হারি, হেরে ভূত লড়ি না কদ্যপি
সামনে-বামে-ডানে-পিছে কত ভূত দেখি
লড়াই করি না পেটে বড় জ্বালা খিদে
চিন্ময়ী মাধুর্য হাতে শোকতাপ নিদে
খিদে পেলে কেঁদে মরি করি মাধুকরী
রাজার সুখে প্রজার সুখ এই নিয়ে ঘুরি
সুবিশাল ধরণীতে কতজন মরে না-খেয়ে
কি দিয়ে সান্ত্বনা দিই, কোন জাদু দিয়ে
এটা জানি, আমি পেলে আমি মহাখুশি
আমার আমার সব, সব নেব লুটেপুটে
সব সব সবকিছু, তবু ঘৃণা কেন ওঠে?
ত্যাগী আমি, ভোগী আমি, আমি আমি করি
আমার ভেতরে আমি আমিত্ব নিয়ে ঘুরি
ঈশ্বর, আল্লা, গড যে-নামেই ডাকি
কর্ম ছাড়া ধর্ম নয়, তবুও রেখেছি দু’ভাগে
কাটি মাথা লুটি সম্ভ্রম কে পারি কে আগে

অন্ধকার ঢের ভালো চেয়ে এমন চিকন আলোর
সমতল পথে তবু হোঁচট খেতে কার লাগে ভালো?

১০

আলো-আঁধারের খেলা দেখে মন ঘৃণায় ভরে
এ-সুখের জলে সাঁতার কাটি একান্ত অঘোরে
ধর্ম যদি এনে দিত সুখ, শান্তি, স্নেহ, ভালবাসা
মায়াজাল কেন তবে ছড়ায় অলীক প্রত্যাশা
নিপীড়ন, লুটপাট, নারীর শরীর নিয়ে ছিনিমিনি
জানি, এসবের পেছনে থাকে দুরন্ত কাহিনী
অনেক বলার থাকে,বলি না সব কিছু ভয়ে,
প্রশ্রয়ে অমন-দেশের মুখে পোকা যাক ছেয়ে
হাড়-হাভাতে লোকগুলো খেটে খেটে সারা
পেট খালি পিঠ কুঁজো বোঝা-ভূতে-ভরা
প্রতিদিন খালি হয় মায়ের বুকের যে-ধন
সেথায় লড়াই শুধু জমির দখল, আবহমান
রাজা কাপড় ছেঁড়া কবি কয় না,কবির শিশুটি
লড়াই হোক খিদের বিরুদ্ধে, চাই পোড়ারুটি।

১১

যা কিছু আঁধারে ছিল তুমি ছিলে আলোকে
হেসে যাও ভেসে যাও দুঃখ অতি দূরে
কালকে ছিলে যে’জন আপন উষ্ণ কুটিরে
পথ প্রান্তে বাটি হাতে ভিক্ষাবৃত্তি সে করে

তুমি যাহা ভাবছ না তা, তুমিও সে পথের
পথিক হইলে জ্বালাটা বুঝিতে মর্মে মর্মে
আগা পুড়লে গোড়া হাসে দুর্নীতির রসে
জ্বালায় পোড়ায় মন, বাঁচায় কোন ধর্ম এসে?

যে’টুকু ছিলে তোমার তুমি পাঁচ হাত ধরে
কাদা মেখে নেমে গেলে অতল সলিলে
যে-পোড়ে সেই জানে কতখানি পীড়া
না-আঁচালে বিশ্বাস নেই, ভিড়ি কোন কূলে?

১২

আগুনে আগুন পোড়ে, ধ্বংসলীলা বাড়ি
নিকট হইল দূর, দূরে থাকা শরীর
ছায়া সুশীতল হলে পথিক সুজন
নিশ্চিন্তে ঘুমায় তলে, ফেরার নেই তাড়াতাড়ি

পড়শির ঘরে যখনই লেগেছে আগুন
কিংকর্তব্যবিমূঢ় তুমি! হাতে ধরো জল
নতুবা সেই অগ্নিশিখা ক্রমশ ধেয়ে এসে
বহ্নি পোড়ায় শাপদ অরণ্য, বাসরত ঘুণ

এ-দেশ তোমার নয়, রোহিঙ্গা বা উইঘুর
বোমা ফাটে ভাঙে ঘর হোক সে সূদূর
মরছে যে প্রাণগুলো তাঁরাও তো মানুষ
মানুষে মানুষে ভেদ, আছে কারো হুশ?

১৩

যে মরছে মরুক সেথা আমি আছি বেশ
সহস্র আদর মাখা স্বাধীন এ-আমার দেশ

যে মরে সে কোন জাতি, হিন্দু বা মুসলিম
বৌদ্ধ, জৈন, শিখ,পারসিক, খ্রিস্টান তাসলিম

মানুষ মরেছে সেথা, সেটাই সত্যি কথা
বাঁচাতে লাগাওনি হাত, হাতে হাত ভোঁতা

বৃষ্টি এসে ঢালে পানি নদী ভরে জলে
সাগর হাসিয়া বলে মূর্খ শতদলে,

শিশির বিন্দু দিয়ে দাও কতটুকু জল?
বিন্দুবিন্দু ফোঁটা-ফোঁটায় আমিও অতল

নাম দিয়ে চিনি তাকে, ফলেই পরিচয়
ভাল-মন্দ, জ্ঞানী মূর্খ কর্মেই চেনা যায়

এসেছ দুদিনের জন্যে, পৃথিবীরই অতিথি
পরোপকার লিখে রাখে, কে পর,কে জ্ঞাতি।

১৪

কি দিয়ে পরিমাপ হয়, নিজেই তো জানি না
ধ্বংস তবু শেষকথা নয়,
কসরত করি নিত্য দু’বেলা
সাধন ভজন করে সুখে আছি, ভাগ্য মানি না

ললাটে কি লিখা থাকে, ক’জন জেনেছে
‘কর্মের কর্ম দ্বারা ভাগ্য লিখনের
হবে পরিবর্তন’- বলে বিদ্বজ্জন,
অন্যায় অত্যাচারে মানুষই প্রতিবাদ করেছে

শত্রু-মিত্র,অরি-বন্ধু কালো সাদায় নয়
শাসকের সকল অন্যায় মেনে নিলে
শাসক শোষক রূপে চিহ্নিত হবে,
প্রজার মঙ্গল-সাধনই শাসকের পরিচয়

গণতন্ত্র নামেই বেঁচে, মিথ্যেয় ভরা বুলি
লাল রক্তে রাঙায় দেহ ভাঙে শির-খুলি

১৫

পাখির কোন দেশ নেই, ওড়ে পাখা মেলে
আসলে ওরা মুক্ত স্বাধীন
দিন দিন ওরা হেসে খেলে ওড়ে
পৃথিবী আপন দেশ, যেতে পারে জঙ্গলে, মঙ্গলে

বাতাস জেগেছে আজি বেড়া ভেঙে আসে
নিমেষে ছড়িয়ে পড়ে এখানে ওখানে
নেই তার মানা, ঝড় হয়ে ভাঙে ঘরদোর
বৃষ্টির পতন আনে সবুজ, সহস্র প্রশ্বাসে

যে আলো জাগে এখানে কাল ছিল কালো
সেথায় আলোক এসে অন্ধকার গিলে
ফেলে অনায়াসে নতুন ভোরের দিকে
হেঁটে যাই, খালি পায়ে নগ্ন জমকালো

কাজের সন্ধানে ঘুরি, পুড়ি দহনে দাহনে
দেহ পোড়ে মন পোড়ে, এ কথা কে না জানে

১৬

অনেক কথাই বলার ছিল, বলব কাকে?
সে কথা থাক পেটের ভিতর, কে দেখে কাকে
সত্য কথা যেই বলেছ গণতন্ত্রের কাছে
হোঁচট খেয়ে ভিমরি খাবে গল্প-গরু গাছে
বেড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধার দায় কি আছে কারো
মুখে কত বাঘের বুলি, শেয়াল দেখলেই থরথরো

বাদশা রাজার নামে পথে চলছে শত ধিক,
ততই পথে বিনাশ ঘটে পেটে পড়লেই টনিক
হাথরস, দিল্লি কত গলি নিশির ভেতর মিশে
সত্য মিথ্যা কে না জানি, তবু আছি উল্লাসেই

শাসক তুমি শাসন করো ন্যায় অন্যায় বুঝে
নমরুদ, ফেরাউন, হিটলার, সু বাঁচেনি সমাজে
সৃষ্টির শেষে মৃত্যু আসে শোষণ কলের যাতায়,
তবু, হেসে-খেলে বেঁচে আছি দিল্লী-কলকাতায়।

কমরেড, তোমাকে

সামনে ঝুঁকলে ঘোর বিপদ, মৃত্যুও
একদল হায়না আড়ি পেতে আছে,
কাক জ্যোৎস্নার রাত, পথ টলমল
তুমি কি এগিয়ে যাবে, কমরেড?

উদ্দেশ্য যদি কল্যাণকর বা আত্মত্যাগ
আমি পাতা,ফুল, শেকড় হতেও রাজি
আমার আমিকে পরিচয় করিয়ে দিতে চাই না
সংগ্রাম যুদ্ধে অশ্বত্থামাও হতে পারি

কমরেড, তোমাকে নিয়েই কত ভাবনা
জানো, একজন কমরেড কীভাবে পচে?
অর্থ ও চরিত্র ধরে রাখা কি সহজ কাজ?

এভাবে মাথা নত কি মানায় ভালো,
ওদের দেখেছি, নারী-মাংস কী সুস্বাদু,
কোটা কি হয়েছে পূরণ?
এসব দেখেই তো প্রোমোশন হয়, জানো?

রাত হলো, ঘুমোতে হবে,কাল সকালে
মিছিল নিয়ে যেতে হবে। ফুল পাতা দিলে
রজনীও সন্ধ্যা হবে ঘুমোনোর আগে।

নারী পুরুষ

ইস্রাফিল শিঙগা ফুকেনি বলে আজও আছি
তুমি, আমি সকলেই এই ধরাতলে
জিবরিলের বার্তা এসেছে এখানে
হাতে পানির বালতি, মাথায় আগুনের আঁচ

রাম কাকভেজা ভোরে মাঠে নেমেছে
আদানকাদান মাটি, থলথলে ঘাস
আগুনের দ্যাশে বিষ্টি কোথায়? আধ-খরা
পৌষমাস আসার আগেই সব সর্বনাশ

নারী রমণে ব্যস্ত শুকনো রুটি, দলাইমলাই
পুরুষ পাশাপাশি হাতে হাত রাখে
তবুও দুশো টাকা এবছরের মজুরি,
ইস্রাফিল-কে বলো, শিঙগায় জোরে ফুঃ দিতে।

নদী

নদী চেয়েছিল যৌবন ফিরে পেতে
সর্দি জ্বরে ভুগছে শ্যাওলা বালি
বসন্ত এলে এবার বানাবে বাড়ি
প্রত্যাশার সংযম বিছিয়ে দিয়েছে ঘাস।

ঢেউগুলো কথা বলতে বলতে যাচ্ছে
নদীর বিরহ দিনের কথা
এপারে সূর্য উঠলে ওপারে আঁধার নামে
মানুষ নেই,অমানুষিক নির্যাতনের ওরা দলদাস।

অসহায় কথাগুলো খোঁজে কথার মোহনা
সব বুঝেও কেন করো, খুঁজো নানা বাহানা।

অনন্ত মানবিকতা

অনন্ত মানবিকতা
কোথায় খুঁজবে? ধ্বংসস্তূপের নিচে, পাহাড়ের চূড়ায়
বলে বলে ক্লান্ত, একটা মানবিক মুখ চাই
যে শিশু ঘুমোয় লাশে চূড়ান্ত লজ্জায়

তাকে তুমি কি বলবে? আগ্রাসী? পরস্বাপহরণকারী?
মাটি কার? জল, বাতাস,আলো
কার করে সেবা?যুগ এত নিষ্ঠুর কেন?
মানুষ মানুষকে বাসে না কেন ভালো?

লাশ থেকে বেরিয়ে আসে ধ্বনি, আমরা বাঁচতে চাই,
কে দেখাতে পারে তাদের বাঁচার স্বপ্ন? ভাঙা হাতুড়ির ঘাই।

বিদ্যুৎ রঙ-এ স্বপ্ন-দেখা

বিদ্যুৎ-এর রঙ দেখেই চিনেছি বাতাস-দোলনা
গভীর বেদনা-জলে তার মুখখানা ভাসছে
কোনো এক সৌন্দর্যের রঙ মুগ্ধ করে চিন্তাকে।

আলকাতরা-রঙের বিশ্বাস নিয়েই হাঁটছি পথে
মধ্যাহ্নের নিশ্চিত আনন্দ বিঁধে ফেলছে বিষন্নতা
আকার দিয়ে পরিমাপ করে ক্লান্ত অসময়ের রোদ।

বিদ্যুৎ আর আলকাতরা দুই রঙের দুর্বার দাপটই
আমাকে উৎসাহিত করছে বাঁচার স্বপ্ন দেখতে।

ভালবাসি আকাশের নিচে ভেসে-থাকা কথা

তোমার সঙ্গে দেখা শান্ত সংযত নদীর জলে
পাথরের নুড়ি, শ্যাওলা বিছানো উদোর,
কতকাল বহে চলা স্মৃতিময় অরণ্যরোদন,

একটুকরো হাসি, এঁকেবেঁকে ভেসে যাওয়া বাতাস
গভীর দিনের কথা ভুলছি না, আঘাতে ভাঙা পাড়
ইতিহাস, মাটি ধুয়ে এঁকে দেয় অনন্ত নির্জন

ভালবাসি আকাশের নিচে ঝুলে থাকা সত্যটাকে
অপরিণত চরখানি গুচ্ছ-প্রেম মেখে রৌদ্র পোহায়

সব যুদ্ধ বন্ধ হোক

সব যুদ্ধ বন্ধ হোক
যুদ্ধ দিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যায়না
পৃথিবী বারবার ধর্ষিত হয়েছে যুদ্ধবাজের দ্বারা
ফেরাউন, নমরূদ, হিটলার, লেনিন, ইজরায়েল,
মায়ানমার, চেচনিয়া,আসাম, মনিপুর, অর্ধেক পৃথিবী জুড়ে
যে মারণ খেলা চলে,
তাকে আমি ঘৃণা করি, ঘৃণা করি
কেন আমরা ভাতের জন্য লড়াই করি না?
কাজ পাওয়ার দাবীতে মাঠে নামি না?
ভয় তো আমাদের বিশ্বাসকে নিয়ে
আমাদের আস্থাকে নিয়ে
আমরা আদৌ ভাল বাসতে ভুলে গেছি
মানুষ তো দূর, নিজেকেই ভরসা করতে পারি না
যুদ্ধ হোক বিভেদের বিরুদ্ধে, হিংসার বিরুদ্ধে
ভালবাসা বুনে যাই মানব জমিনে ভাল লাগার।

বাবা

বাবা তালপাতার একখানা পুঁথি বানিয়েছিল
রাত হলেই কীসব লিখত রোজ
আড়চোখে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখতাম
লিখা হলে রাখত বেঁধে লালসালুতে

হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে
শোকতাপ ভুলে একদিন সন্তর্পণে
টিনের তোবড়ানো বাক্সে খুঁজে পেলাম পুঁথিটা

দেখি,দৈনন্দিন হিসাবের কথা লিখা
চাল,ডাল,আনাজপত্র কত কি
কোনদিন কী কী কেনা হয়েছে

বছরের শেষে লাভক্ষতির হিসেব
লাভের চাইতে ক্ষতিটাই বেশি

তাই হরসনে জমি বিক্রি করত বাবা

বাবার এটাই তার মঙ্গল কাব্য।।

নৈশযাপন

অনেক রাত জেগে আলকাপ গান শুনেছি
কখনও হর-পার্বতী, কখনও ধর্ম-অধর্ম,
নারী-পুরুষের মধ্যে কে বেশি বড়?
গুমানি দেওয়ান আর লম্বোদর চক্রবর্তীর
কবি-লড়াই, রাত জাগা সুগভীর ধৈর্য

রতনপুরের মেলায় কবি গানের পাল্লা হবে,
কবিয়াল আসবে, দোহার থাকবে
মাথার পোকাগুলো নড়ে ওঠে সন্ধ্যা হলে
দোহাররা গলা তোলে, ঢোল-বাজনা বাজে
রাত জাগে, পালাগান শুনি, ভোর ঘুমায়

জাত নিয়ে পালা, ভাত নিয়ে নয়
কে জেতে, কে হারে,
এই নিয়ে বাড়ি ফিরি অন্ধকারে
নৈশযাপন শেষে ভোর হয়।

মজনু শাহ-কে দেখি ভৈরবীর হাত ধরে চলে যেতে

তিনিই, মা

ছেঁড়া-শাড়ি-পরা মহিলাটি নিত্য
উনুনে রান্না করে খড় ও পাতায়
উনুনের তিনটি ঝিক একটা
না একটা প্রতিদিনই ভাঙে
সেও তার আর এক সন্তান
ভালবাসার মাটি দিয়ে ছাঁচ দিত।

একবার আমার অসুখ হলো,
রক্ত কমে গেল শরীরের
মাঠের আল থেকে কণ্টকুলিকা এনে
রান্না করে রস খাইয়েছিল,

সর্দিজ্বরে বাসকপাতা, তুলসির ডগা
আম জাম নিম অর্জুন ছালে সেদ্ধ-জল
খাইয়ে কতবার তাড়িয়েছে ব্যামো,

তাঁকেই দেখলাম সদর দরজায় দাঁড়িয়ে
পরনে সাদা থানের শাড়ি, উসকো-খুসকো চুল
আসবি না বাছা! ডাক শুনেই তাকিয়ে দেখি মা,
শাড়ির আঁচলে বাঁধা একগুচ্ছ ফুল

‘আয়! বাছাধন, কাছে আয়! দেখি চাঁদমুখ,
চুমু খেয়ে চলে যাব, এতেই আমার যা সুখ’

স্বগতোক্তি

কার জন্যে কাদের কাছে যাওয়া
কার জন্যে মিথ্যে চাওয়া পাওয়া
সত্য যে ভাঙে বারবার।

মিথ্যের সাথে ঘর সংসার করা
অসৎ যুক্তিতে সত্যের ভাঙে বেড়া
কি দিয়ে ভাঙবে আপন অহংকার?

ভোর

নিশ্চিত ঘুমের দরজা দিয়ে বেরিয়ে আসে
এক একফোঁটা সময়ের দাগ
পিয়ালী চাঁদ ছেড়ে কাঁথা-কম্বল জড়িয়ে
জেগে থাকে অনন্তের স্মৃতিতে

হেসে খেলে বেঁচে উঠা দিনগুলো
আদিম লজ্জা খুলে
গা-গতর ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে
তখনই লজ্জাবতীর চোখ খোলে

হাহাকার খিদে জেগে ওঠে
চর্বিত চর্বণ মধ্য যুগে
নিরাময়গুলো অলৌকিক শয্যা পেতে
সৃষ্টি করে সৃষ্টির করুণ ক্ষত

একটা ভোর শুদ্ধ হলে, অনন্তর মুক্তি পাওয়া যায়।

যাত্রাপালা

যাত্রাপালা দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পড়ি
হাততালি দিয়ে নাচে বাতাস
দীর্ঘশ্বাস ফেলে বেরিয়ে আসে
মায়ামৃদঙ্গ, অঙ্গুলিরেখা,পরিহাস

দিনে দিনে যথেচ্ছার বেড়ে গিয়ে আগুন,
নিয়ন্ত্রণে আনতে একদল পৌরুষওয়ালা
দমকল হাঁকে, যাত্রাপালা ধ্বনি তোলে
আর কতদিন দেখব নিদারুণ এ পালা?

সর্বনাশের বিনাশ না হলে ধৃতরাষ্ট্র চোখ
খুলবে না জেনেই এতকাল সেঁধিয়ে থাকা
অরণ্যে রাতদিন এক তবুও অসমান

এতদিন যাত্রাপালা দেখেছি মঞ্চায়নে
এবার শুধু দেখব ঘরে অভ্যন্তরে মানাভিমান।

বাকযুদ্ধ

কথায় কথায় এত কথা বলো না তো
বাক্যবাগীশ ছন্দেই তোলা থাক
বৃষ্টি হলে পদ্ম ফুটুক যে যার যতো
ততটুকু থাক না মাথায় টাক

ভালয় ভালয় কাটছে দিনের ঘড়ি
তাড়াতাড়ি ছুটছে লোভের ঘোড়া
তোরা যা পারিস খা-গা আপন করি
হাত দুটো যে বাধা,বুঝলি হতচ্ছাড়া

বাকযুদ্ধে নেমেছি যখন চলবি দেখেশুনে
আবোলতাবোল যাই আসবে মুখে
চড়বড়িয়ে কথার মারপ্যাঁচে ফেলে ততক্ষণে
মিথ্যের ফুলঝুরি ফোটাবি সম্মুখে

হেরে গেলে চলবে না তো জিততেই হবে
আদার জলে গা ভাসিয়ে দিয়ে ফিরতে হবে।

কাব্য রচনা

একখানা কাব্য রচনা করব বলে
কত প্যাচ কষলাম কত চরিত্রের
দিনরাত্রি কিছু ভাঙি কিছু গড়ি
তবুও একটি চরিত্রে পৌঁছাতে পারিনি

অভাব নিত্য ঘরে ঘরে হামলে পড়ে
নদী শুকিয়ে যায় ক্ষুধার দৃষ্টিতে
বালি তেতে উঠলে উপস্থিত বুদ্ধি
হারিয়ে যায়,এতো দারিদ্র্য কখনো দেখিনি

চরিত্রগুলো এক এক করে মিশে যায় কাগজে
একটাও কাব্য রচিত হয়নি ঘিলুহীন এ মগজে।

শরৎ

শরতেরা সাদা কাশফুলের দিকে তাকিয়ে
কখন ডেকে উঠবে ভোরের শিয়াল
রাঙা পদ্মপাতার ভেতর অনুভূতির হিয়ে
আড়মোড়া দিয়ে ঘুম ভাঙায় আজকাল

আগমনী গান বাজলে বাতাসের ডালে
পাড়ায় পাড়ায় ওঠে উৎসবের ঢেউ
কচি ধানের শীষ মিশে আছে আড়ালে
জীবন পাখির ডাক, এ নামে ডাকেনি কেউ

এই শীতে জেগে ওঠে প্রভাতের তারা
হাওয়ার মাতন শুরু, এঁকেবেঁকে ছুটে চলা গান
ভৈরবীর কোলাহল ছোটে হয়ে আত্মহারা
নতুন জীবন আনে শরৎ, এ-ধারা চির আবহমান।

শেষদৃশ্য

পর্যটন রাত্রির কাছে অসুস্থ বিস্ময় নিয়ে
যে ঘটনা ঘটেছে, এতে কারো হাত নেই

অথচ কতকিছু ঘটে বিচিত্র বিচক্ষণতায়
কেউ কেউ খায় না, কারো পেটে ভাত নেই

হাড়ভাঙা খাটুনি খেটে গেছে পূর্বপুরুষ
একটু সুখের সন্ধানে ঘরকন্নার সৌজন্যে

কি নিদারুণ আহ্লাদে মেতে আছি গৌরবে
ভুলে গেছি তাঁদের অবদান প্রযুক্তির জন্যে

কলরব থেমে যায় কৌতূহল দমিয়ে রাখে
তবুও ভুল করে ফেলছি পিছলে পড়ে পা

বাজার মন্দা চারিদিকে শুধু অন্ধকার
মুখোমুখি কুরুক্ষেত্র কোথায় পালাবি, যা

শেষদৃশ্য দেখে যেতে বহুদূর বাকি সময়ের হাতে
সব ছেড়ে দিলে হাত ঝেড়ে নিলে কিছু নেই পাতে।

পির মাহাত্ম্য

অলিগলি খুঁজে পাইনি যা খুঁজে বেরাই
চোখে না-দেখা দৃশ্যাবলী শুধু হাতরাই
ভাঙা আলো জ্বলে ঘরে মিলেমিশে থাক
এ জীবন শুধু পুণ্য খোঁজে সব দূরে যাক
সেই অলীক মানুষের সন্ধানে বাউল বাতাসে
মেকি ভুল এসে বাসা বাঁধে ভাঙা শ্বাসে-প্রশ্বাসে
মিথ্যের পিছনে ছুটে ছুটে আসা আর যাওয়া
অদৃশ্য আশার পিছনে পিছনে ধাওয়া
করা কবে শেষ হবে সেদিনই পেলাম ডাক
সবকিছু পড়ে থাক
খুঁজে পাক না পাক, নতুন জেল্লা প’রে
যে এসেছিল আমাদের ঘরে, মাঠে, তেপান্তরে
একটুকরো মিথোজীবী আলো হাতে
আস্ফালন ভেঙে জীবন গড়তে সুগভীর যন্ত্রণাতে।

এসো সাধক, এক মুষ্টি সরষের বীজ খুঁজে এনো
রাঙিয়ে দাও বিশ্বভুবন মৃতহীন করো সব প্রাণ।

যু্দ্ধ জয়ের যুদ্ধ

কিছুক্ষণ আগেই একটা যুদ্ধ জয়ের পর
আরো একটা যুদ্ধের প্রস্তুতি
চাঁদ অবশেষে ধরা দিল অনাহূতের হাতে
এক পুলক বিস্ময়।

আবেগে ভেসেছিল আকাশের আলো
আলো আর আলো
ছয়লাপ চারদিক, মৃদু হাসি চাঁদের
একটুখানি চুমু দিয়ে যা।

বাতাসের গায়ে কিসের গন্ধ, রোদ-বালিশ
সুখের ঘরকন্নার পরতে পরতে বাসি রোদের
ঘরপোড়া কান্না

একটা যুদ্ধের অবসানে আর এক যুদ্ধের
ঐকান্তিক ইশারা,
মস্কো থেকে ভলগা, গঙ্গা থেকে কাবেরী
জল বহে বিদ্যের বহর পরিমাণ

চন্দ্রযান-৩ থেকে চন্দ্রযান-৪ এ উত্তরণ।।

ছাদ

পামীর মালভূমির মতো সমতল আমার বুক
যেখানে বাতাস পাখি হয়ে ওড়ে
বাজে আয়নায় মুখ ঘষলে কাঁচ কুৎসিত স্বরে
চেঁচায়, একটা ঠোঁট এসে বসে ছাদে।

ছাদ সাবালক মিছিলের দিকে ছুটে যায়
হলুদ বৃষ্টির গুঁড়া ঝরে পড়ে
মেঘ-বৃষ্টির খেলা চলে
ছাদ থেকে খসে পড়ে তারা, সপ্তর্ষিমণ্ডল

মাঠের কচি ধানপাতা তড়তড়িয়ে বাড়ে
এক মাঘ চলে গেলে শীত আসে আর এক মাঘে

একটা হরিণের নাম তাই রেখেছি হাতটাত গুণে
‘অকালচণ্ডী’, ছাদ গুঁতোয় ভাঙা বুকের ভিতরটা।।

যুদ্ধের কবিতা

যুদ্ধে হেরেই যাচ্ছি, বাসি রোদের কাছে
অনর্গল অস্ত্র চালানো আমার অনভ্যাস

কার কাছে পরামর্শ নেব সেই দেওয়াল নেই
বাতাসের কাছে শর্ত ছিল উড়িয়ে দেবে না

পরগাছা হয়ে বেঁচে থাকার চেয়ে বেশি কিছু
একটা না দণ্ড-কে হ্যাঁ-সূচক স্বরসন্ধিতে ভাঙা

ব্যালট পেপার চিবুতে চিবুতে যুদ্ধ জয়ের উল্লাস
ভাঙা ব্যালট-বাক্সটা জলে ভেসে যায় নৌকা হয়ে

মাঝি নেই,হাল নেই তবুও জয়ের প্রবল উচ্ছ্বাস
একটা আদিম যুগ অতিক্রম করতে পারছি না

হাতের চাবুক বুক পর্যন্ত উঠে আবার নেমে আসে
শান্তি খুঁজি দশ-চাকা পৃথিবীর রহস্যময় বিন্দুতে

যুদ্ধ নাকি অস্তিত্বের প্রমাণ বারবার প্রাণ উৎসর্গ
এর থেকে ভাল নয় কি আতস কাঁচে যুদ্ধ খোঁজা

যুদ্ধের পরের নিস্তব্ধতা

কিছুক্ষণ আগেই যুদ্ধ হয়ে গেছে, মলিন যুদ্ধ
একগুচ্ছ নিস্তব্ধতার জাল বিছিয়ে দিয়েছে মাঠ

জয় পরাজয় নিশ্চিত জেনে ছিলাম, দ্বৈরথ
কে হারল আর কারা জিতল তা জানা নেই

শুধুই দেখতে পাচ্ছি এক ঘোমটা নিস্তব্ধতা
অন্ধকারের নৈঃশব্দ্যের হাহাকার ঢেউ পায়ে

হেঁটে যায় ভারী সময়ের হলুদ বৃষ্টির ফোঁটা
কতদিন তাকে খুঁজেই চলেছি অস্ত্রের ভেতর

কিছু আগেই যুদ্ধ হয়েছে, কয়েক শতাব্দী হবে
সব লালরেখা ফুটে উঠেছে চাঁদের স্নিগ্ধতায়

কার সঙ্গে কাদের যুদ্ধ জানা নেই, তবে হয়েছিল
সেই জয়ের উল্লাস প্রকাশ করা হয়নি, পরাজিত

সারা ক্ষেত্র জুড়েই রয়েছে শোণিতের ক্ষীণধারা
সেই সূত্র ধরেই নিস্তব্ধতা আপন মনে জাল বোনে।

কলাবউ

অ-নাকাঙ্ক্ষিত বউ না পেয়ে আমি বউহীন,

আমি সমকামীতে বিশ্বাস করি না
অভেদ্য নারীও তাই সঙ্গিনী হতে চায় না
আমি নপুংসক, পুরুষজাতির কলঙ্ক।

অপ্রতিরোধ্য রাতে আমার ঘুম আসে
বিছানায় খেলা করে আমার কামরোগ

কখনও কখনও কামরোগ বীতরাগ হয়ে উঠে

বিছানা ছেড়ে ভঙ্গুর রাতের দিকে বাড়ায় হাত
কলাগাছ এসে দাঁড়ায় সম্মুখে
জাপটে ধরে আলিঙ্গন করি, চুমু খাই
শক্ত দণ্ড দিয়ে আঘাত করি
কলাবউ আমাকে জাপটে ধরে লেলিহান রূপে

কামরস বেরিয়ে এলে বাকি রাতটা সুখেই কাটে।

মিছিলের লোক

আমি কোনো এক মিছিলের লোক
অনুমতি ছাড়াই হেঁটে চলেছি
অজস্র মানুষের সাথে

এ মিছিলের শুরু নেই, শেষও নেই
অনন্ত অন্তর্জলিযাত্রা
ভোরের পাখির ডাকে ঘুম ভাঙে
পথঘাট ধূলিময় হয়ে ওঠে
বেহায়া বাতাস ফিসফিস করে বলে,
‘দারুণ একটা মিছিল হলো’।

প্রতিদিন কত মিছিল হয়, কত কত উড়ে
পায়ের নিচের ধুলো, বালি
চোখের বালি হয়ে উঠি কারো কারো চোখে

কেউ জানি না কেন মিছিল, কাদের মিছিল
শুধু মিছিল বলে, ‘দিতে হবে, দিতে হবে’।

বাতাসের কান আছে

যা জেনেছি তা না-জানার ভান করে হাঁটি
খুনসুটি লেগে থাকে মনে, কথাকেই বাঁটি
মানুষের দরবারে অমানুষেরা ঘোরে
আদাড়ে-বাদাড়ে খুঁজি
বাতাসের কান আছে বুঝি
কথা দিয়ে কথা না-রাখা লোক থাকা শহরে

সনেটের কাছে গিয়েছি আমি যে ফিরে
ছন্দ অলংকারে
রূপক, উৎপ্রেক্ষা, উপমা বলে যত সুন্দরী
মাতাল করে পয়ার, ত্রিপদী, অন্ত্যক্ষরী

চুপ! চুপ! এ-কথা বলো না, বাতাসের কান আছে
ভয়ে ভয়ে থাকি, সেই ভয় দিয়ে সরলতা ঢেকেছে

পৃথিবীর গভীরতম ক্ষত

জন্ম সাল থেকে শুনে আসছি কেউ কারো নয়

পৃথিবী যখন একটিই ছিল সম্পূর্ণ একা
মানুষ এল, ডাইনোসরের দল ঘুরত
কেউ বলে, আদম-হাওয়া, কেউ অ্যাডাম ঈভ’
সাম্যবাদ নামে এক সুখ হেসে খেলে যেত

বিবর্তনের আঘাতে মহাদেশ, বহু দেশ
বহুল মানুষ, বহু মতামত, বহু বিদ্বেষ
দেশ, রাষ্ট্র, জাতি
রাজা, মহারাজ, অধিপতি
কত শত

লোভ লালসা বাড়ে অর্থগৃধ্নু শরীর, মন
শিশু পোড়ে, নারীর দেহে মেটে খিদে
এক একটা প্যালেস্টাইন ফিলিস্তীনে জন্মায়

পৃথিবীর বুকে গভীরতম ক্ষত সৃষ্টি হয়
প্রাণ ঝরে, উল্লাস ওড়ে,
তবুও নিজেকে মহান বলে দাবি করি, হে মূর্খ

ধুলো

আমি ধুলো নিয়ে ব্যবসা করি
আমি ধুলো খেয়ে উপার্জন করি
আমি ধুলো মেখে চলতে জানি
ধুলোই আমার মাতৃজননী

ধুলোর সংসার ভেঙে যায় সম্পর্ক হারালে
বিশ্বাস ভেঙে যায় অবিশ্বাসের ধারণায়
সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হলে
বিশ্বাসের সেতুকে মজবুত করে গড়তে হয়
সুগভীর প্রেম পতনশীল সলিলে ঝাঁপ দেয়
টেনে তোলে ভালবাসার নৌকা
ধুলো মাখা রোদ, একা

এই রোদ গায়ে মাখছি প্রতিদিন
বিচ্ছেদের গাছ লুটোপুটি খায় ধুলোয়
আবেগ ধরে রাখে পরস্পরকে
তবুও ধুলোঝড় আসে, সামাল হৈ মাঝি।

দেওয়ালের কান ভারি

এইটুকুন এক ঘর, কেউ বলে বাসর
তুমি আমি নীরব থাকি দুঃখ পরস্পর

রোগ-যাতনা যতই আসে সামলে নিতে পারি
তোমার মনে আমার মনে থাক না আড়াআড়ি

বৃষ্টি ভেজা সকাল দিনে মন কাঁদে, ওই নূপুর
তুমি বকো, আমিও বকি, কান্না ভাঙা সুর

মাঝরাতেতে রাগ করে যেই দূরে সরে থাকি
স্নেহময়ী হাত দুখানাই জাপটে ধরে রাখি

শীতল ছায়া কোমল মায়া মনের গভীর স্বর
ছোট্ট একটা অনাদরের বাঁধি বাসর ঘর

দুঃখগুলো চাঁদের আলোয় চাল ফুটিয়ে হাসে
এটাই স্বর্গ, সুখই নরক, পাচ্ছি সংসারী বাতাসে

অন্য কথা কেউ বলো না, দেওয়ালের কান ভারি
ইচ্ছে করে ভাঙতে পারে আদ্যিকালের এই জুড়ি

নাসির ওয়াদেন | Nasir Waden

2023 New Bengali Story | রামপদর ভুবন | কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা

Sesh Parinati | শেষ পরিণতি | বিনায়ক ঘোষ | 2023

Bengali Poetry 2023 | বিকাশ চন্দ | কবিতাগুচ্ছ ২০২৩

Mother’s Day History Information | মাতৃদিবসের উৎপত্তি, তাৎপর্য ও বাঙালি প্রতিক্রিয়া | 2023

Shabdodweep Web Magazine | Bangla Kobita Live Stream | Nasir Waden

In today’s digital world, the way we experience art and culture has been radically transformed. For Bengali Poetry lovers, the Bangla Kobita Live Stream offers a unique opportunity to engage with poets and their works in real time. This innovative platform allows poetry enthusiasts to immerse themselves in Bengali Literature, enjoy live Bengali Poems, and interact with the creative minds behind these beautiful works. As poetry continues to evolve in the digital age, the Bangla Kobita Live Stream stands at the forefront, providing an avenue for global audiences to connect with Bengali literature like never before.

What is Bangla Kobita Live Stream?

A Bangla Kobita Live Stream is a digital platform where Bengali Poetry, Bengali Poems, and Poetic Rhymes are shared live, giving audiences the chance to enjoy real-time performances by poets. Whether you’re a fan of Bangla Kobita Full Time or a newcomer to Bengali literature, the live stream offers an immersive experience that connects poets with their audience. Through live streams, poets can present their works, discuss themes, and interact with viewers, providing a dynamic and engaging environment for poetry lovers.

Platforms like Shabdodweep Web Magazine are spearheading this initiative by offering Bangla Kobita Live Stream sessions that highlight both established and emerging poets. These platforms allow users to access exclusive content, participate in discussions, and enjoy poetry performances, all in a seamless, live-streaming format.

Why Is Bangla Kobita Live Stream Important?

  1. Interactive Experience

One of the key advantages of a Bangla Kobita Live Stream is the ability for poetry lovers to interact with poets in real time. Viewers can ask questions, request poems, and engage in discussions about the deeper meanings behind the works. This level of interaction fosters a deeper connection between the poet and the audience, making the experience more personal and enriching.

  1. Global Access to Bengali Literature

For those who may not have access to local poetry events or live performances, the Bangla Kobita Live Stream bridges the gap. It provides global access to Bengali Poetry, allowing anyone, regardless of location, to tune in and experience the rich literary culture of Bengal. Whether you’re in India, Bangladesh, or abroad, the beauty of Bengali Poems is just a click away.

  1. Exclusive Content

Bangla Kobita Live Stream sessions often feature exclusive works that are not available in print or recorded formats. Poets use these platforms to debut new poems, perform live readings, and offer personal insights into their writing process. For fans of Bengali Literature, these live sessions provide a rare glimpse into the creative minds of poets, including those whose works are published by Shabdodweep Web Magazine.

  1. Community Engagement

The live nature of these sessions fosters a sense of community among poetry lovers. People from all walks of life can come together, share their love for Bengali Poetry, and celebrate the timeless beauty of Bangla Kobita. In this way, the Bangla Kobita Live Stream serves as a virtual gathering place for all those who appreciate the art of poetry.

Shabdodweep Web Magazine: A Platform for Bangla Kobita Live Stream

Shabdodweep Web Magazine plays a central role in promoting Bangla Kobita Live Stream and Bengali poetry through its platform. As a premier online magazine, it publishes stories, novels, and a wide range of literary content, including poems that highlight the depth and beauty of Bengali Literature.

One of the notable poets featured on Shabdodweep Web Magazine is Nasir Waden, whose contributions to Bengali Poetry have garnered a loyal following. Through Shabdodweep, Nasir Waden shares his poetry during live streams, connecting with his audience and offering a deeper understanding of his creative process. His works, which often delve into themes of love, nature, and human experience, are a perfect example of the power of Bangla Kobita Live Stream to showcase the emotional depth of Bengali literature.


Sabuj Basinda | Follow our youtube channel – Sabuj Basinda Studio

Leave a Comment