Poetry of Prabir Kumar Chowdhury
Bangla Kobita Ghar | Best Online Poetry Collection
অন্যায্য
মুখ আর মুখোশের আড়ালে –
মনুষ্যত্ব বলি হয় অন্তরালে
তুমি, আমি কেউ বুঝি না আহ্লাদে
আমরা কী গভীর ষড়যন্ত্রের ফাঁদে।
অফুরন্ত কামরসে সিক্ত হও
শিৎকারে নিভৃতে কথা কও
দেওয়াল বেয়ে নেবে আসে সরীসৃপ
ক্ষণকাল পড়ে নিভবে জীবনদ্বীপ।
যে ওষ্ঠে লেহন কর প্রেম রসলালা
সে ওষ্ঠে লুকিয়ে আছে চরম বিষজ্বালা
ক্ষণেকের মোহে যে মানবতার দ্রোহ
ঘরভাঙে লোভের নির্লজ্জ সমারোহ।
কতকাল চলছে মিথ্যার প্রহসন
তাকেই দিচ্ছো মর্যাদার আসন!
এতো যে অন্যায়, মিথ্যার প্রলাপ
অচেতনে তুলে দাও তারে গোলাপ?
অপস্রিয়মাণ
বর্ণমালার মিছিলে স্তব্ধ হয়ে আসে সে গান
আবহমান ঝাপসা হতে, হতে দুচোখ ম্রিয়মাণ
আজ কেবলই সবুজহীন লোভের অন্বেষণ
রাতভরে বসে অপ্রত্যাশিত মৃত্যুর অধিবেশন।
বসনহীন, বেআব্রু চকচকে ছড়ানো নকল সোনা
কৃত্রিমতার সাজানো বাগানে ফোটে না হাসনুহানা।
গাছের আঙিনায় ঠাঁই নেই, বড় নিষ্প্রাণ,ছায়াহীন
পাতা ঝরে,ঝরে ছায়া মরে, মরে গোধূলিই বিলীন।
চিতায় শোয়ানো অথবা কবরের নিচে শুধু আহ্বান
হৃদবলয়ে দাউ, দাউ করে অনল জ্বলে লেলিহান।
বেঁচে আছে প্রেম
না আর ভালো লাগে না
জীবনের যা কিছু বুকে তুলে নেওয়া
সুখের আঙিনায় হাসি মুখে দেওয়া
পিছে পড়ে থাকা নষ্ট দুপুরে
তোমার চলার ঝংকার নূপুরে
ভগ্ন নীড়ে ফিরে আর আসে না।
হয়তো বলিনি মুখ ফুটে কিছু
না বলেও তো থেকেছি কত না কাছে
বসন্ত বাতাসে ঝরেছে ফুল গাছে,গাছে
দুটি হাতে মালা গেঁথে পড়াতে চেয়েছি
বোঝোনি তুমি গানে, গানে কত বলেছি
বোঝোনি কেন ঘুরি পিছু, পিছু?
অভিমানে প্রেম দিলে নির্বাসনে
সবাই কি বলে মুখ ফুটে সব কথা
বড় প্রিয় বুকে চাপা গোপন ব্যথা
সে প্রেম বেঁচে আছে হৃদসিংহাসনে।
পদক্ষেপ
ধাপ গুনে পায়ে,পায়ে উঠে আসি
লুপ্তপ্রায় মননের চেতনায় –
জানি – নয় এতো কোন স্বর্গের সিঁড়ি
না ডুবে যাওয়ার এক মোহনা।
শুকিয়েছে কত জলাশয়, জলহীন স্থল
মধ্যাহ্নে, ফিরে যায় তৃষ্ণার্ত চাতক
বর্ষা বুকভরা অভিমানে, মরুভূমি হাসে
সুধাহীন ভূমে, শুস্কতা বুকের আঙিনায়।
তুলির টানে তোমার মুখে আকীর্ণ,
চুম্বন ভোলায় সব অভিমান
লংকাকান্ড, ছড়ায় বিষভান্ড -প্যালেটে –
বিকৃত প্রতিচ্ছবি, প্রতিবিম্বিত ক্যানভাসে।
গুনে গুনেও ভুল হলো সব পদক্ষেপ
পথ ভুলেই কাছে এলো মিথ্যার বাসনা
খণ্ডন হোক আদিষ্ট সুখ, জেগেছে-
ঘুমন্ত অবিশ্বাস্য জমিয়ে রাখা মন্বন্তর।
প্রেমহীন
কত যুগ পেরিয়ে এলো একসাথে
চারিহাতে সাজাল অপেক্ষার বসতের ঘর
ভরিয়ে দিল দোঁহে হাসি আর গানে
সায়াহ্নে খুঁজে,খুঁজে দেখে প্রেম ছিলো না!
কথার পাহাড় জমে গেল কত আজীবনে
হাত ধরে পেরোনো সুখ-দুঃখের চরাচর
মিলনের পর আতিপাতি খুঁজে, খুঁজে কাটে রাত
নরম বুক ছুঁয়ে, ছুঁয়ে কোত্থাও প্রেম পেলো না।
রান্নাঘরের তাকে সাজানো সুস্বাদু আহার
হাতে ভরা গ্লাসে বিশুদ্ধ পানীয় জল
দুপুর বেলায় মুখোমুখি পাতে সুগন্ধি ভাত-
গ্রাস গিলতেই বোঝে সে ভাত প্রেমে সিক্ত না।
পালঙ্কে জ্যোৎস্না পড়ে হাসে চাঁদ খসে, খসে
চাদরে অটুট রতিনেশার অদম্য নেশার গন্ধ
পরাগ মিলনে বাগিচায় সুপ্রভাতে ফুলও ফোটে
সে ফুল বুকে চেপেও কেন প্রেমহীনতার যাতনা?
কত রাত কেটে গেল ঠোঁটে-ঠোঁট রেখে
কত নিশীথের মিলন তৃপ্তির ভাসে শীৎকার
দুটি মন হিসাবের খাতায় কিছু কি জমালো
বার্ধক্যের চোখে জল, কথা দিয়েও প্রেম এলো নাতো।
চাঁদের কণা
মায়েরও সোনা চাঁদের কণা –
হেঁটে যায় গুটি গুটি পায়ে।
মুখে তার নিষ্পাপ হাসি,
মায়ের মনে বাসনার রাশি
বুকভরা আহ্লাদে আটখানা,
মায়া ভরানো ওচোখ টানা, টানা।
শুভ জন্মদিনে মায়ের মমতাখানা –
সাজায় দেখি ধুতি পাঞ্জাবি দিয়ে।
এও এক সাধনা
আদরে মাখানো রক্তশোষণের ইতিহাস দেখে –
হয়তো ফিরে তো যেতেই পারতাম, গরম ভাতের গল্পের জন্যে, তবুও দাঁড়িয়েছিলাম শেষটুকুর অপেক্ষায়।
ওভাল সেফের মুখ, মিষ্টি হাসি, মুখে –
টোল পড়ে ক্ষণে, ক্ষণে – বুকের উল্কিতে দুর্বার আকর্ষণ, বুঝিনি তাতে ভরা আছে কদর্য প্রতারণা।
কেমন ভিড়ে মিশে যায়, বিলিয়ে দেয় স্বত্বা,
মন জয় করে ভয়ানক সুন্দর চতুলতায় –
বিভ্রান্ত করে মন, কিন্তু পরিণতি বড়ই দুঃখের।
আমি বুঝিনি তার অভিনয় , অপেক্ষায় পায়নি চুম্বন,
একটু উষ্ণতার জন্যে ঘুরেছি বারবেলা, বড়ই শীতল ও দেহ।
নিশীথে অলক্ষ্যে জাগায় প্রলয় – কোন স্বপ্ন দেখায়নি।
খবরে প্রকাশ – শক্তির উৎসের সন্ধানে তার –
প্রতারণাও এক সাধনা, তারই জন্যে দিন – রাত গরম ভাতের গল্প, অন্তিমে বসায় পঞ্চমুন্ডির আসন।
মন সৃজনের কথা
শেষের শুরু – অশনির হাওয়ায় ছড়ায় ছলাকলা
আশা জাগায় মনে, মিলনস্পৃহা অনাথ আত্মজনে
না পাওয়ার ব্যথার ঘুম ভাঙায় স্বপ্ন গোধূলিবেলা
মনকথা কবে না আর, অতল নিঃস্বতার বিজনে।
বনানী বর্ণহীন, পাখপাখালির থেমে গেছে গুঞ্জন
নিরাসক্ত একা,খুঁজে ফিরি হারানো মনোরঞ্জন?
পিয়াস জাগে, বারিধারা মাগে তৃষ্ণার্ত চাতক চাতকি
নীলাকাশে ডানা মেলে ভারাক্রান্ত, অশান্ত মন,
নিরবধি খলনায়কের দিগন্তজোড়া দিশাহারা ভেলকি
আর কতকাল রবে নীরব, জ্ঞানহারা, মৃতবৎ অচেতন ?
মূক ও বধীর নও তো তুমি, নিরন্তর কেন বাকহীন
সল্লাসে উগরে দাও প্রতিবাদ – চেতন হোক বাধাহীন।
জাগ যুগপুরুষ
চিরঘুমে শায়িত তুমি হে যুগপুরুষ,
নিষাদের যে তীর কাঁপতে কাঁপতে বিদ্ধ করেছিল তোমায় –
আজ সেই তীরেই বিদ্ধ সকল মানবজাতি।
বিশৃঙ্খলিত আজ তোমার সাজানো পৃথ্বী।
সাম্য আর গণতন্ত্রের গান গেয়েছিলে তুমি,
আপন পৌরুষ আর গরিমায় গড়েছিলে –
মানুষের মানবিক ভারসাম্য।
পাপের সাম্রাজ্যে স্বপ্ন দেখিয়েছিলে –
ন্যায়, সত্য আর সুন্দরের,
আজ তুমিহীনতায় ভরে গেছে –
পাপাচার আর মিথ্যার বেসাতি।
দিক দিগন্তে কংস প্রাণ পেয়েছে ফিরে,
অত্যাচারে উন্মত্ত মাতাল,
নিষ্ঠুর, কামনায় ভরে উঠেছে শান্ত পৃথিবী।
হে মধুসূদন, হে গদাধর, জাগ্রত হও –
দেখাও তোমার অসীমতামানবতার কল্যাণে।
ধর্মরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাকারী হে মহান নেতা –
ভক্তিবাদের মায়াবী চেতনার হে উদারচেতা,
নবরূপে তুমি আজ এস ভগবান,
শান্তিরাজ্য প্রতিষ্ঠায় তোমাকে আহ্বান।
নবভারতের প্রয়োজনে হোক পুন-মহাভারত-
শঙ্খ, চক্র, গদা, পদ্মে শোভিত পদাঘাতে –
বিদীর্ণ হোক দুর্জন, শত্রুহীন হোক পবিত্র ভূমি
হে মহাসারথি বাজাও তোমার পাঞ্চজন্য,
বিশ্বরূপ দেখাও প্রভু নতুন কুরুক্ষেত্রে –
মানবতা জাগুক, আজকের রণক্ষেত্রে।
শীতের ছড়া
হিমেল হাওয়া দিচ্ছে জানান কড়া নাড়ে শীত,
পূর্ণিমা রাত রুপোয় ধোয়া গাইছে খুশীর গীত।
তাপমুক্ত, রোগমুক্ত প্রভাব চিরন্তন –
এবার বুঝি বেরিয়ে পড়ার এসেছে মাহেন্দ্রক্ষণ।
আকাশ আজ বাঁধনহারা নীল মেঘের ভেলা –
বনানী তাই দিচ্ছে হাসি, পাখ-পাখালির খেলা।
হৃদয় আমার দিচ্ছে শিস এ কোন আকুলতা –
ষড়ঋতুর পঞ্চঋতুর ভীষণ ব্যাকুলতা?
নবান্নের হাতটি ধরে আসছে শীতকাল,
মাঠে মাঠে সোনার ফসল হাসি ভরা গাল ।
পৌষ পার্বণ, খেজুর রস, পাটালি, পুলি-পিঠে –
প্রভাত রোদে পিঠ ঠেকিয়ে রসনায় জীবন মিঠে।
সকাল-সন্ধ্যা চাদর মুড়ে দিচ্ছে যেন উঁকি –
মিষ্টি সকাল, রোদের কিরণ নাই জ্বলনের ঝুঁকি।
হিমেল হাওয়ায় হিমের স্পর্শ –
শিশির ভেজা ঘাসের আগায় জাগায় বুঝি হর্ষ!
শীতের রাতে গরম চাদর আগুন পোয়ানোর ঢল –
এমন সুখের, খুশীর দিন কোথায় আছে বল?
শীতের রাতে কতই মজা যাত্রা পালা হবে –
স্কুলমাঠে মেরাপ বাঁধা সার্কাস পার্টি রবে।
ঠান্ডা-রাতে সুখস্বপ্ন, ঘুমের দেশে খেলা –
তাইতো মাগো ঘুম ভাঙতে আজ হয়েছে বেলা।
নানান ফুলের জলসায় নীরব থাকে না মন,
শিশির মাখানো স্নিগ্ধ ফুল সৌরভ ছড়ায় এখন।
তোমরা বল মৃত্যু সময়,কেউবা বলে নীরবতা,
আমি বলি ভালোলাগা, সুখ মেশানো অধীরতা।
তাপ মুক্ত দিবস-রাতি জাগায় বুকে প্রাণ,
দরজা খুলে তাকিয়ে দেখি শীতের আহ্বান।
উদ্ভাস
শুভ সকাল
থাক বহাল
শুভেচ্ছাটুকু।
এ দীনতায়
এ বিনতায়
বাঁচি কতটুকু?
ডাকি যে এতো
আশায় কত
মন উড়ুক্কু।
ঘরেতে এসো
একটু বোস
প্রেমাঞ্জলিতে।
একটু ছুঁয়ে
মিলবো দুয়ে
আসক্তিতে।
আশায় নব
দুজনে রব
উচ্ছাসহীন…
এত লাঞ্ছনা
এত বঞ্চনা
চেতনাহীন।
পড়েছি নুয়ে
থেকেছি ভূয়ে
মুখ-বধির।
পাপ-অংশ (পাপাংশ)
হোক ধ্বংস
দিন অস্থির।
এ কোন সৌভিক
জানালা থেকে দৃশ্যত একটা পঙ্গু গ্রহের আংশিক উন্মুক্ত আকাশ-
নিরবচ্ছিন্ন শতভিষা নিভু, নিভু ।
কুহকে মোড়ানো আদিঘোড়া ছোটে অক্লান্ত,
কৃষগহ্বর মুঠোয় নিয়ে আসে…ধূসর শহর।
আর কবে স্বাবলম্বী হবে,দৃষ্টি দেবে
গঠন বিন্যাসে মুখরিত হবে কথকতা?
তুমি যে ঋত্বিক অনন্ত সময় পেরিয়ে হয়েছ সাধক।
মৃত্যুর শোকাবহে …আমূল পরিবর্তন সঙ্গীত মুখর ।
ছকভাঙ্গা যাত্রাপথে দোতারায় সুর তোলে-
পদাতিক অনন্তকাল।
বিবসন, আর স্বর্গরথে চড়ে না মন
এখন যে দেহ টানে জ্যোৎস্নাহীন আদিঘোড়া।
আবর্তে নেশাচ্ছন্ন করে রেখেছে সৌভিকসন্ধ্যা ।
প্রেমচুম্বন
কে তুমি মায়াশরীর
আমার মুখোমুখি
তোমার নবনির্মিত আয়ুধ-
আমার শরীরে আঘাত হানে।
সময়ের দৃষ্টিতে সহস্র প্রশ্ন
অন্বেষায় ক্লান্ত ,পিছিয়ে যায় তটরেখা।
প্রতিভার প্রথম আলো –
ঠিকরে পড়ে প্রেমহীন বুকে
সাফল্যে গোলাপ কুঁড়ি উন্মাদ স্তন
বেপরোয়া উল্লাসে শুধু চায় – “প্রতীকের উত্তরাধিকার “।
কিছুই পারিনি নিতে
সে কেবলই চায় কামনায়
নিষিদ্ধ যৌবন। ব্যর্থ নিষিক্ত প্রেমে –
শেষ বিকেলের পালানো আলো
কনে দেখে,গোধূলির আলাপনে।
পতঙ্গের ন্যায় উড়ে আসে-
কাঁপা ঠোঁট অপেক্ষার মদির ঠোঁটে-
সলাজের ঢাকনা খুলে ঢেলে দেয় প্রেমচুম্বন।
অনুকবিতা
বড় লোভী তুই খুঁজিস রতন
রাত পহালো রে উঠবি কখন?
বেলা বয়ে যায়, সঞ্চয় কোথায়?
নিলি শুধু ভেট ভরালিও পেট।
দেখলি না নদী- মাঝি পাড় করে
সায়াহ্নে দাঁড়ায়ে কাঁদবি অঝোরে।
এ কোন সকাল
সহস্র বছর পেরিয়ে এসে-
দেখি এ কোন সকাল?
তমিস্রাবৃত,ধূসর, বিবর্ণ
মায়াহীন –
জঠর জ্বালায় ক্ষত-বিক্ষত
মনুষ্য আকৃতির দুপেয়ে অবলা জীব।
সূর্যোস্নাত কিছু বিষমাখা বিক্ষুব্ধ
ত্রাণযাঁচে দুর্নিবার। অসহায়-
দুমুঠি ঊর্ধবাহু অনর্গল কান্নায় ডুবে অনন্তকাল।
নিরাভরণ, পীড়িত – নগ্নতায় দোল খায়, যেন এক উচ্ছিষ্ট জীবন !
প্রাত্যহিক, অযাচিত নির্মম খোলস ছাড়ায় অপরিপূর্ণতার অনুতাপে।
ব্যথাতুরা নিখিল আকাশ,
বিষাক্ত নির্মম বাতাস,
কার দোষ খোঁজে নিপীড়িত, অনাহুত, অবাঞ্চিত দুর্গন্ধ শবাধার ?
ঘৃণার স্রোতে ভেসে যায় –
অভিশপ্ত গর্ভের নিস্কলঙ্ক আধার।
সহস্র বছরের কঠোর সাধনা,
কৃচ্চসাধনের এ ভয়াভয় প্রতিফলন-
বল, বল কে চেয়েছে অসহনীয় –
সংক্রামিত এ অভিশপ্ত সকাল ?
স্বপ্নের মূর্ছনা
হৃদয়ের অভ্যন্তর রক্তাক্ত, ক্ষত-বিক্ষত
তবুও তোমার মুখের সেই হাসি
যা দেখে যৌবনে প্রারম্ভে বলেছি-
ভালোবাসি শুধু তোমাকেই ভালোবাসি।
অলক্ষ্যে দুহাতে সরাও পথের কাঁটা
জ্বলছে শুধুই জ্বলছে, যেন লঙ্কাবাটা
সমস্ত দুঃখকে স্বপ্নের রাংতায় মুড়ে –
তবুও বলেছো ভালো থেকো।
নিশীথে একাকিনী তুমি কলঙ্কিনী
দুঃখকে ঢেকেছো স্নিগ্ধ জোছনায়
নীরব থেকেই হাজার ঝাড়বাতি-
জ্বেলে-জ্বেলে, তমসের মহল করেছো আলোকিত।
কে তুমি অভিমানী, আঁখিজলের স্রোতস্বিনী
বুকে অতৃপ্ত মাতৃত্ব ক্ষুধা, প্রেমহীনা স্রোতস্বিনী?
চোখের পাতায় অসমাপ্ত ফুলশয্যার বারঙ্গিনী
হাজার রাতের বাসর জেগেও দৃষ্টিতে মধুভান্ড ?
কে তুমি অদৃশ্যে বাজাও ভোরের ভৈরবী
জীবন হাটে ছেঁড়া তারে তোল সুরের লহমা।
বাসি ফুলের মালা গেঁথে গলায় পরাও ভালোবেসে
মৃতপ্রায় মনুষ্যত্বের এখনও কি বাঁচার আশা আছে ?
সপ্তমীর নবপত্রিকা পূজা
দুর্গাপূজার একটি অঙ্গ নব পত্রিকা
নিছক পাতা নয়, নয়টি উদ্ভিদে যেন নবরূপের মাতৃকা।
কদলী, কচু, হরিদ্রা, বেলপাতা-
দাড়িম্ব, অশোক, মান, ধান যথা।
সপ্তমীতে পূজার শুরু, কলাবউয়ের সাথে-
স্নান করাতে নদীপথে সকল গৃহবালা, শঙ্খ নিয়ে হাতে।
একজোড়া বেল, লালপাড় শাড়ি, ঘোমটা টানা বঁধুর আকার নেয়-
কাষ্ঠমঞ্চে সিঁদুর দিয়ে কলাবউকে গণেশ পাশে দেয়।
তোমরা কি জানো – নয়টি উদ্ভিদে দেবীর আরাধনা ?
নবপত্রিকায় দুর্গা মায়ের নয়টি রূপের কল্পনা।
কদলী গাছের অধিষ্ঠাত্রী দেবী ব্রাহ্মণী –
কচু গাছে কালিকা মায়ের হয় গো আগমনী।
হরিদ্রা গাছের অধিষ্ঠাত্রী আমার মা উমা,
জয়ন্তী গাছেই থাকেন মা কার্তিকী, করেন শুধু ক্ষমা।
বিল্ব গাছে থাকেন মা দেবী শিবা, মানবের রক্ষিকা-
দাড়িম্ব গাছেই অবস্থান মাতা দেবী রক্তদন্তিকা।
অশোক গাছের অধিষ্ঠাত্রী মাতা শোকরহিতা –
মা চামুণ্ডা মান গাছেই থাকেন অন্তরিতা ।
বৈকুণ্ঠের লক্ষ্মীদেবী ধানগাছের অধিষ্ঠাত্রী পুরাণ মনস্কাম,
নবপত্রিকার বাসিনী নয় দেবীর একত্রে নব দুর্গা নাম।
এইভাবেই দুর্গোৎসবের ভক্তি আরাধনার সূচনা –
কৃত্তিবাসে রাবণবধে রামচন্দ্রের অকালবোধনে প্রার্থনা।
বাতিঘর
আমিতো সাজাই ভগ্ননীড় একমনে,
যেন দুঃস্বপ্নের অবহেলিত জাদুকর
একচিলতে অন্ধকারাচ্ছন্ন মনে সযতনে-
অবশিষ্ট, আলোর বাতিঘর..বাতিঘর..বাতিঘর।
ভাঙছে মন, ভাঙছে শরীর তবুও আছে বায়না
ক্ষত চাঁদ জাগিয়ে তোলে হৃদয়ে প্রেমের জ্যোৎস্না।
কাঁকর পথে দিচ্ছি হামা ছিনিয়েছে আমার মনোরমা
কলঙ্ক আর লজ্জাশরম কিনছে দেখি টাকায় ক্ষমা
বাসর ঘর, হিংস্র অধর, মেকি ছিল ফুলের আধার
প্রজাপতির ভাঙছে ডানা অবহেলার মনফাগুন
শুকনো ফুল গন্ধ বিহীন, ফুলশয্যাই সারাৎসার
স্বপ্নগুলো সাজিয়ে রেখে চিতায় তোলে মনাগুন।
বাড়ছে বয়স, জীর্ণ শরীর দৃষ্টিতে কেবল দীর্ঘ ছায়া
অভিমান কাড়ছে শুধু হৃদয়ে রাখা সকল মায়া।
নয়নের মাঝে নয়ন না পাই দাঁড়াই বেদনার বালুচরে –
ঘর ভেঙে গেছে কবেই বালুচরে আজও অশ্রু ঝরে।
তবুও বানাই বালি দিয়ে ঘর অবচেতনে
আমি যেন স্বপ্ন পূরণের এক জাদুকর
দীর্ণ, জীর্ণ, ভাঙাচোরা, একচিলতে মনে-
এখনও অবশিষ্ট আমার বাতিঘর..বাতিঘর..বাতিঘর।
একাগ্রতায় লিখছে ইতিহাস
নিত্য নতুন কাহিনীতে পৃষ্ঠা ভরে ওঠে
মুক্তির আবাহন হয়না চিরসত্য শব্দাক্ষরে
ডাস্টবিনে জমা হয় শোক, পঙ্কিল সভ্যতা হাসে –
পেটে ছুঁচো ডাকে, দুর্বল কাঁপে, বোবা গাছে খোঁজে খড়কুটো ।
ক্রীতদাস পায় অনুমতি,তৈল মর্দনে সহস্র লুণ্ঠন
আদল গায়ে বাদল ঝরে – গোলানো ভাতের সঙ্গম
বেআবরু দেহের ভাঁজে, ভাঁজে মৈথুন সংগ্রাম
উদর ভর্তি অনশন, রয়েছে ফাঁকে বুদ্ধিদীপ্ত পলায়ন
মরমী জানে বিসর্জনই নিভৃতে স্বর্গের সিঁড়ি ছোঁয়।
আসন দখলে অন্ধকার সিঁড়ির চুপকথা
শেষ চক্রে একাগ্রতায় ইতিহাস মাপছে আয়ু
এখনি সময় আগুনে আহুতির নির্লজ্জ অহংকার।
আত্মদর্শন
মনটা পাগল বড় সন্দেহ
ঘুরে ফেরে একা, একা
পীড়িত মন যে বড় দুরূহ
ধরায় ভীষণ দেহে জ্বালা।
মায়ার বেঁধা এ প্রাণপাখি
ছিঁড়তে চায় সে শুধু জাল
উড়তে চায় উচ্চ গগনে –
বাধ সাধে ধর্মের মহাকাল।
জীবন যৌবন ক্ষণস্থায়ী
তাতেই অতীব আকর্ষণ
মুক্তি পেতে ছাড়তেই হবে
ত্যাগে কেন বৃথা লমোহর্ষণ?
মানবজমিন পড়ে রয় ভূমে
কবে হবে হায় সঠিক কর্ষণ?
ফেলে রেখে তো বেলা গেল
গোধূলির আলোয় মোহ দর্শন।
কর্ম, জ্ঞান আর ভক্তিমার্গ
সার-ই “যত মত তত পথ”
কোন পথে মন নিকেতনে
মন খোঁজে শুধু মুক্তির রথ।
মহাসমরে
সুখেরও লাগি ঘুরিফিরি কোথাও সুখ নাই
ভোরের সূর্যোদয়ের আলোয় সুখ খুঁজে যাই।
পথশ্রান্ত, দিকভ্রান্ত একা, একা দিশাহারা
পথে পথে আপনে খুঁজি রণক্লান্ত পথহারা।
তুমি চলে গেছ, সব আলো নিভে গেছে
হিমেল হওয়ায় শীত কাঁপানো রাতে
সবুজ পাতারা দেখি নুয়ে ভুয়ে পড়ে আছে
শূন্য বাতায়নে পাখিরা কাঁদে প্রাতে।
আমি কি আছি যেমন ছিলাম প্রিয়তম
ঘর ভেঙে গেছে হাসি কেবল অগ্নিসম।
যাবার বেলায় কোন কথাই তুমি বলোনি
আজ বুঝেছি ব্যর্থতা কেমন জ্বালে অগ্নি।
বিসর্জনের ঢাক বাজে, বেদনভরা আকাশে
মধু কথারা হারিয়েছে মুখে বিষাক্ত বাতাসে,
উদ্বেলিত,বিক্ষিপ্ত আজ নিশ্চিন্ত পরাজয়ে,
রণক্ষেত্রে একাকী সেনা অনিশ্চিত পরাভয়ে।
তুমি জানো না
এ তমসে খুঁজছো কোথায় হারানো সুর, ছন্দ-
অবহেলায় মুছে গেছে স্বপ্ন পাতার সব পদ্য?
আজ বেলাশেষের অবসরে জীবন ভরা গদ্য।
ঝলসানো সময়ের অসহনীয় পোড়া দেহ,
পথেই পড়ে রয় অনাবশ্যক, অপাঙতেও,
গোধূলির আলোয় এসে ডাকলো না কেহ।
তোমার নীড়ে বাজাবো বাঁশি, কাটাবো দিন,
হৃদয়ে প্রেম, অনেক আশা অন্তরে, অন্তহীন,
দহনে জ্বলে সকল আশা তুমি যে উদাসীন।
ভালোবাসার ফুলমালা দুলবে বুকের মাঝে-
সাজাবো তোমায় মনের রঙে নববধূর সাজে,
বিরহ-বিধুর, কত নিঃসঙ্গ আমি, কে বোঝে?
বুকে তোমার আছি আমি বাহিরে তুমি খোঁজ,
আমার আলো তোমায় ঘিরে সেকি কভু বোঝ?
আঁধার রাতে আমায় কেবল বৃথাই খোঁজ ?
দিনের শেষে, পালিয়ে যাব ফিরবে না মনপাখি,
খুঁজবে তুমি, সজল হবে তোমার ছলনার আঁখি!
স্মৃতি নিচে চাপা কত কথা, বলা তোমার বাকি।
অপ্রত্যাশিত
নির্বাক হয়ে সবাকের কথা শুনতেই মশগুল
খালিপেটে পতাকা তুলে ধরে কিছু দেশপ্রেমিক
মায়ের গর্ভে আজও গাঁথা হাজার অভিশাপ
কিছু অভিলাষীর ঘুম ভাঙে আত্মসুখী ভদ্রাসনে।
রাতের মদিরায় বিবেক ছিঁড়ে প্রমোদে মত্ত
কেউ জানে নাতো আদিমতা আজও বিকায়।
কোন ব্যাধ বধ করে আমার সে সুখপাখি
সাধের ডানা কেটে রক্ত সে শোষে আকণ্ঠ
মরীচিকা এসে ঢেকে দেয় সজল আঁখির দৃষ্টি
বড় প্রাণান্তকর আকুলতা, কোথা পায় পুষ্টি?
শেষ বিকেলের সাঁঝে আসবে কি কোন আমির
দুখের ঘরে আমার ভরাবে কি সুখ জ্যোৎস্নায়?
প্রকাশিত
জোব্বায় রাখা আছে গোপন মন্ত্র – আওড়ায় নিশীথে
শত আবরণেও হতশ্রী বেআবরু চিরন্তন।
কাঁদছে সময় সংঘাতে, অসংরক্ষিত মুহূর্তে
তবুও খোলা বুকে রেখেছি আশায় বিকল যন্ত্র…।
মুরুব্বির অভাব নেই নিখরচের প্রভূত দান
এখন গোপন থাকে, সর্বত সর্বনাম…।
তুমিও তো চোখে ফেট্টি বেঁধে ঘোরো
আহা, উহু পেট ভরে খাও দেখাও নিষ্কাম।
উন্ময়নের কিছু মান ছেয়ে গিয়েছে, সরণী তার চাবিকাঠি,
কেউ, কেউ দুঃসাহসে হিসাবের তদারকিতেই তুলেছে বিবরণ।
ছাগলের ব্যা -ব্য রব সেতো তিন সারির সন্তান –
তবুও ঢাকা আছে গোপনে লজ্জার আবরণ।
প্রবীর কুমার চৌধুরী | Prabir Kumar Chowdhury
New Bengali Article 2023 | সংবাদ মাধ্যমের নিরপেক্ষতা
দেবতা ৩৩ কোটি | 33 Crore Gods | প্রবোধ কুমার মৃধা
Chandannagar Jagadhatri | চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পূজার প্রবক্তা কে ??
Odisha Goddess Durga | ওড়িশার পটচিত্রে দেবী দুর্গা | 2023
Shabdodweep Web Magazine | Bangla Kobita Ghar | Prabir Kumar Chowdhury
Bangla Kobita Ghar is the ultimate destination for poetry lovers who admire the depth and beauty of Bengali literature. Bengali poetry, especially Adhunik Bangla Kobita, holds a special place in the hearts of literature enthusiasts worldwide. Shabdodweep Web Magazine takes pride in publishing exquisite poetry and stories by talented writers such as Prabir Kumar Chowdhury, who has contributed significantly to the literary world. If you are passionate about exploring modern and classic poetry, this is the place for you.
The Essence of Bangla Kobita Ghar
Bangla Kobita Ghar is not just a collection of poems; it is an archive of emotions, culture, and history that reflect the soul of Bengali literature. From the traditional verses of Rabindranath Tagore to the contemporary creations of modern poets, this platform serves as a bridge between different literary eras.
What Makes Bangla Kobita Ghar Special?
Diverse Collection – From classical Bengali poetry to Adhunik Bangla Kobita, readers get a wide range of poetic styles.
Renowned Writers – Writers like Prabir Kumar Chowdhury, who have contributed several compelling pieces to Shabdodweep Web Magazine, offer insightful and thought-provoking poetry.
Authentic and Engaging Content – Every poem reflects deep emotions and cultural richness, making it a must-read for all poetry lovers.
The Evolution of Adhunik Bangla Kobita
Adhunik Bangla Kobita (Modern Bengali Poetry) evolved from the traditional poetic forms and introduced a fresh perspective on contemporary life, emotions, and social issues. Many modern poets focus on themes like existentialism, urbanization, and human struggles. The influence of legendary Bengali literature writers is evident in the modern poetry published in Bangla Kobita Ghar.
At Shabdodweep Web Magazine, we aim to bring forward the best of Adhunik Bangla Kobita by featuring exceptional poets and their masterpieces. If you are an admirer of modern poetry, this is the perfect place for you.
Prabir Kumar Chowdhury: A Literary Gem
One of the key contributors to Shabdodweep Web Magazine is Prabir Kumar Chowdhury, a good writer known for his compelling storytelling and poetic expressions. His works beautifully blend deep emotions with intricate narratives, making them highly engaging for readers.
His contributions to Bangla Kobita Ghar have enriched our collection, bringing stories that touch the soul and provoke thought. If you haven’t explored his literary gems yet, visit Shabdodweep Web Magazine and immerse yourself in his mesmerizing storytelling.
Why Should You Visit Bangla Kobita Ghar?
If you are a true admirer of Bengali literature, visiting Bangla Kobita Ghar is a must. Here’s why:
Rich Content: Explore an extensive collection of Bengali poetry from legendary and modern poets.
Authenticity: Every piece is carefully curated to ensure originality and literary excellence.
Regular Updates: Fresh and engaging poetry is added frequently, keeping readers intrigued.
Platform for Poets: New and established poets find a space to showcase their talent to a broad audience.
At Shabdodweep Web Magazine, we aim to promote the beauty of Bengali literature by bringing the best poetry to our readers. Bangla Kobita Ghar is an integral part of this vision.
FAQ Section
What is Bangla Kobita Ghar?
Bangla Kobita Ghar is a unique collection of Bengali literature featuring poetry from classic and modern poets. It serves as a platform for literature lovers to explore traditional and Adhunik Bangla Kobita.
Where Can I Read the Poems of Prabir Kumar Chowdhury?
You can find the exceptional works of Prabir Kumar Chowdhury on Shabdodweep Web Magazine, where he has contributed several compelling stories and poetry.
Why Should I Read Adhunik Bangla Kobita?
Adhunik Bangla Kobita provides a modern take on life, emotions, and society. It is engaging, thought-provoking, and beautifully crafted by contemporary poets.
How Often is Bangla Kobita Ghar Updated?
Bangla Kobita Ghar is regularly updated with fresh content from talented poets, ensuring a constant flow of quality Bengali literature.
Can I Submit My Poetry to Shabdodweep Web Magazine?
Yes! If you are a poet and want to showcase your work, Shabdodweep Web Magazine provides a great platform to reach a wide audience.
Conclusion
Bangla Kobita Ghar is a paradise for poetry lovers who appreciate Bengali literature. Whether you admire the works of classical poets or are intrigued by Adhunik Bangla Kobita, this platform has something for everyone. With contributions from good writers like Prabir Kumar Chowdhury, it continues to uphold the richness of Bengali poetry.
If you are passionate about poetry, visit Shabdodweep Web Magazine and explore the enchanting world of Bangla Kobita Ghar today!
Sabuj Basinda | Follow our youtube channel – Sabuj Basinda Studio