Best Bangla Kobita Culture | Special Selected Poems

Sharing Is Caring:

Bangla Kobita Culture – Susanta Sen

তুমি – সুশান্ত সেন

তোমার কাছে যেতে গেলে পার হয়ে যেতে হয় দিন ও রাত্রির সীমারেখা।
যেখানে অদৃশ্য বায়ু নীল কোনো গতিহীন
নোঙর পেরিয়ে নিরাশার শ্বাস নিয়ে ফিরে ফিরে আসে অবিরাম।
আমলকী গাছটির প্রলম্ব শাখার কাছে দোয়েলের মৃদু গান
ভরে থাকে সন্ধ্যার বিপণি
তোমার শ্বাসের ন্যায়।
কান পেতে সেই গান শুনে যায় নদী
প্রবাহিত হয় সীমানা পেরিয়ে অবিরাম।
সেই মত চলে গেলে একদিন দেখা হয়
তোমার সাথেই যেখানে রয়েছ তুমি
গোপন শ্বাসের মৃদু কোনো ইচ্ছাকে জড়িয়ে।

স্বাধীনতা – সুশান্ত সেন

পতন হলেই গায়ের রং ঘন সবুজ
পতন হলেই সূর্যমুখী সন্তুষ্ট
একবারও সে চাইবে না স্বাধীনতা
মুখে ললিপপ, জিভ দিয়ে জল ঝরছে।

ঘন ঘন পাল্টে যাচ্ছে রঙ
ঘন ঘন ফাটছে হাত – বোমা
স্বাধীনতার পঞ্চাশ + পঁচিশ
ধৃষ্টদ্যুম্ন রাত্রি কালে জাগে।

স্বাধীনতার ঘণ্টা নাড়া সন্ন্যাসী
তোমার কাছে কেউ নিল না দীক্ষা
জ্যান্ত কাতলা মাছ এখন ডাঙায়
ছটফট করছে ছটফট করছে
ছটফট করছে ।

নিবৃত্তি – সুশান্ত সেন

নিবৃত্তি পাবে না তুমি কিছুতেই
না রাত্রির সন্ত্রাস না ভোরের কুয়াশা
কোন কিছুতেই।

কেবল গুমরে গুমরে কাঁদবে
সভ্যতা।

চোখের জল শুষ্ক হয় হাত বোমায়
বা অ্যাসিডে।
চব্বিশ বছর ধরে
হাসপাতালে শুয়ে আছে মানবতা।
নিবৃত্তি পাবে না তুমি কিছুতেই
তুমি যে মেয়ে মানুষ হয়ে জন্মেছ ।

মারা – সুশান্ত সেন

ডাচ সেনারা যখন বালির রাজারানীদের
আর নিরীহ অস্ত্রহীন বালিবাসিদের
বন্দুকের গুলিতে মারছিল,
অথবা
যখন জেনারেল ডায়ার গুলি করবার হুকুম দিচ্ছিলেন, জালিয়ানওয়ালা’বাগে,

তখন তারা কি ভাবছিলেন বলতে পারেন?
অথবা
ট্যাক্স আদায়কারী যখন অন্যায্য ভাবে
আপনাকে নোটিস ধরান বা ওপাড়ার বিশু
আপনার কলার ধরে ঘুষি মারে!

তখন
তখন আপনারও কি বন্দুক ধরে
গুলি করতে ইচ্ছে হয়?

মানুষ মানুষকে যখন খুশি মারতে পারে!!

বোধ – সুশান্ত সেন

নাড়ি যখন ছিন্ন করে জন্ম নিয়ে থাকি
সে কি এক নিদারুণ যন্ত্রণা
না অতুলনীয় আনন্দের অপূর্ব বিচ্ছুরণ?
এই প্রশ্ন উত্তর বিহীন।

“বোধ” এর জন্মই হলো সেই মুহূর্তে

শুধু তোমারই জন্যে – সুশান্ত সেন

শুধু তোমারই জন্যে কয়েক লাইনের এই কবিতা
মাথা মুণ্ডু বা অর্থ যার কিছু নেই
ধরতে গেলে যে পালিয়ে যাবেই।

তবু সে দেখায় তোমারই মনের ছবিটা।
এই কবিতা।

বিরহ কে নেড়ে নেড়ে নেড়ে
ডাক ছেড়ে
কি যেন করতে চায় হাবিজাবিটা
কয়েক লাইনের এই কবিতা।

হাসি – সুশান্ত সেন

গুলগুলি দিয়ে ভেসে আসা আলো
চিবিয়ে নিয়ে
একটু দেত হাসি হেসে এগিয়ে গেলাম।

দরজা ত খুলে দিয়েছি
একটু বসুন চা বিস্কুট খেয়ে যান
অনেক দিন ত আসেন নি এ পাড়ায়।
লেখা চাইছেন? হাসির গল্প!

হাসির গল্প যে লেখা সহজ নয়, জানেন নিশ্চয়,
জেনেও কেন অপ্রস্তুত করেন।
দু একটা কবিতা লিখে দিতে পারি
ভালো না লাগলে
ওই পাতা গুলো ঠোঙা করে নিতে পারেন
অবশ্যই, ঝাল মুড়ি চিবাতে চিবাতে।

সৃষ্টি – সুশান্ত সেন

এই অপূর্ব সৃষ্টির মাঝে
মানুষ কেবলই
প্রকৃতিকে হয়েছে বিস্মৃত।

দম্ভ ভরে করে তাকে
করিয়াছে পদানত
নিজ ভোগবাদী প্রয়োজনে।

নীরবে সময় লক্ষ্য করে এই
অর্বাচীন পদক্ষেপ।
হিমালয় কাঁপে জোশিমঠে।

কখন ধ্বংসের মাঝে
লুপ্ত হবে এ সভ্যতা
থাকে তার প্রতীক্ষায়।

মন – সুশান্ত সেন

মন কোথায় যায়
কখন যায়
সে কি বাতাসে চেপে মেঘদূত
কোনো বারতা নিয়ে উধাও হঠাৎ।
জানিনা
জানতেও চাই না।
অনেক কালের মিত্র
যখন হারিয়ে গেল
তখন কি শুধু আফশোস
আফশোস করে সময় কাটান
দূর হিমবাহ
কি বহতা গঙ্গা মনে রাখে ?
কে জানে!

কবিতা – সুশান্ত সেন

কবিতা তোমাকে নিয়ে সারাদিন
তোমার সঙ্গে সারাদিন
দিন কাটাতে কাটাতে সারাদিন
ভাবতে ভাবতে ডাকতে ডাকতে সারাদিন
লিখতে লিখতে সারাদিন
কাটাতে কাটাতে দেখলাম
লেখা গুলো নতুন কিছু
ভাবতেও পারেনি লিখতেও পারেনি
কেবল বারবার বলা কথা
পুরনো হয়ে যাওয়া কথা
অনেক বার করে বলা কথাগুলো
বেবাক উগরেছে।
তাই আর কিছু লিখব না ঠিক করেছি।
মুঠোফোনে ই-মেইল করা বন্ধ।

মহাশয় – সুশান্ত সেন

আপনি আসুন মহাশয়
এই শীতের সকালে
হাত ধরুন, ফুরিয়ে যাবার আগে।
কে কে সম্পত্তি গুছিয়ে নিচ্ছে
তা দেখার কি দরকার!
সম্পত্তি ত থাকবে না দুটো সকাল
পেরোবার পর।

তখন ট্রেন ধরে যেতে হবে
ঠিকানায়, ভিড়ে চাপাচাপি করতে করতে।

ওরা কারো কথা শোনেনি
করো কথা শুনবে না।
চলুন আমরা হাত ধরাধরি করে
বিষ্ণুপুরের পোড়ামাটির মূর্তি গুলো
দেখে আসি।
গাড়ি দরজায় দাড়িয়ে আছে।

বিদূষক – সুশান্ত সেন

ও আমার আপন ভোলা বিদূষক
ও আমার নতুন মনের খেয়ালী
এখনো চলতে হবে অনেক দূর
এখনো অনেক দূরে কৈখালী।

জীবনটা ছ্যাতলা পড়া বারো উঠান
জীবনটা সার্কাসে খুব বাঘ খেলায়
জীবনটা কাটা ঘুড়ির ডিল সুতো
নিত্য কেমন হারিয়ে যায় অবহেলায়।

তোমায় ত বন্দী করে রাখতে চাই
ময়দানেতে খোলা হাওয়ায় অনেকক্ষণ
তোমার কাছে শুনবো ত সুর নানা রাগের
তুমি হবে মনের মাঝে আপনজন।

চিন্তা – সুশান্ত সেন

সন্ধ্যা এসেছে উৎসব ভরা রাত্রে
হিমেল হাওয়ায় ভেসে ভেসে যায় চিত্ত
চলেছে জনতা ছিঁড়ছে খুঁড়ছে জীবন
নতুন ধারার বোধন হচ্ছে নিত্য।

সারা জীবনের অনেক পাওয়ার মধ্যে
চুপিসারে জরা নীরবেই এসে পড়ে
তখন প্রাপ্তি ইতিহাস হয়ে যায়
লিখিত না হলে লুপ্ত হয় সে ঝড়ে।

আজ যারা মন দু হাতে নাড়িয়ে দিল
কাল তাহাদের চাই যে ভবিষ্যতে
শিক্ষা তাঁদের নিয়েছি জীবনে মেখে
প্রাপ্তি সকল চলে বিজয়ের রথে ।

তোমাকে – সুশান্ত সেন

তোমাকে দেখেই তো কথায় লাগালাম সুর
তোমাকে দেখেই হলাম বেদনা বিধুর,
বুক কেঁপে উঠলো দুরু দুরু
সেই থেকেই প্রেমের পাঠ শুরু।

তোমাকে দেখেই কেঁপে উঠেছিল মেঘ
মনে জন্ম নিয়েছিল আবেগ,
তোমাকে দেখেই হেসেছিল রজনীগন্ধা
অপরূপ হয়ে উঠেছিল সন্ধ্যা।

তোমাকে দেখেই কেঁপে ওঠে শিশিরের কণা
তুমি তো সে কথা জানো না
তুমি হাসলে সুধা বিন্দু ঝরে পড়ে
আশ্বিনের সন্ধ্যায়, বৈশাখের ঝড়ে।

তোমাকে দেখেই প্রথম পথ হারাই
অন্য পথে চলে যাই
তোমাকে দেখেই বুক কেঁপে উঠলো দুরু দুরু
প্রথম প্রেমের পাঠ নেওয়া হলো শুরু।

মেঘ – সুশান্ত সেন

মেঘ ও মেঘ সংক্রান্ত ধারণাগুলি এখন
বেশ ভাবায়।
মেঘ গুলি এক মুহূর্তের জন্যে স্থির হয়ে থাকতে পার না – কেন বলতে পারেন !
পাল্টে পাল্টে ভাসতে ভাসতে চলতে থাকলে, কোনো কথাই তো তাকে বলা যাবে না,
কারণ মুহূর্ত পরেই তো তাকে আর দেখি না দেখি অন্য লোক।

তাই প্রেমিকা কে সন্দেশ কি এখন মুঠোফোনে পাঠাবো ?

এই রকম উল্টো পাল্টা ভাবনা যখন মনটা গ্রাস করে রেখেছে,
তখন খেয়াল করিনি, মেঘটা কখন ঝর ঝর বৃষ্টি হয়ে মাথার ওপর ভেঙ্গে পড়লো,
স্নাত আমি বেভুল হয়ে আকাশের দিকে চেয়ে আছি।
মেঘ দল হাসতে হাসতে লাফাতে লাফাতে এ ওর গায়ে,
তাজা তরুণীর মত, ঢলে পড়তে থাকলো।

সম্পর্ক – সুশান্ত সেন

সম্পর্ক হারিয়ে শূন্যতা নিয়ে বসে থাকছো
জানো না কখন আসে আলোর রশ্মি
কখন আসে বন্যা।

এদেশ ওদেশ ঘুরেও জানতে পারছো না
কখন কোন গাছে কোন সার দিতে হবে
কখন কোন গাছ ফুল ফোটাবে।

হাত ধরার জন্য বসে আছি
বসে থাকি।

কখন টলোমলো পা ফেলে কাছে আসবে ভবিষ্যৎ
তার অপেক্ষায়।

মন – সুশান্ত সেন

মনটা চায় তো অনেক কিছু
কিছু পায় কিছু পায় না।
প্রাপ্তি তে তৃপ্তি। আর না পেলে বেদনা থাকেই।
বেদনায় দগ্ধ হলে প্রভাত সূর্যের কাছে যাওয়া,
আত্মনিবেদন ।
একটু একটু করে আলো আসে
একটু একটু করে পাপড়ি মেলতে থেকে
পুস্পদল
চড়ুই আর কাঠ – ঠোকরা সামনের বাগানে খেলা করে,
দেখি, দেখতেই থাকি
একটু একটু করে মনটা
ভালো হয়ে যায়।
তখন তোমার কাছে ফিরে আসি
তোমাকে ভালোবেসে ফেলি
হে দুরন্ত আকাশ , তোমাকেই ।

চুপ – সুশান্ত সেন

চুপটি করে থাকো শব্দ করো না
অনেক দিনের কথা সঙ্গী পাবে না
প্রতিটি পদক্ষেপে ত্রুটি
প্রতিটি পদক্ষেপে অশ্রুজল
সর্বদাই মনের মধ্যে
বাজছে দলমাদল
তাই বাদানুবাদ আর নয়
এখন নিস্তব্ধতা
নিস্তব্ধতা ই সঙ্গী হয়ে থাক
বাকিটা জীবন

সকাল – সুশান্ত সেন

সকাল হলো দেখি সরব হলো আলো
জীবন জাগে ধীরে সরায় সব কালো,
শালিক এসে বসে ছাদের কিনারায়
উড়তে চাওয়া ফড়িং ঘুঘু’র ঠোঁটে যায়।
মেঘরা আকাশ থেকে নিয়েছে আজ ছুটি
কাক রা আস্তাকুড়ে খাদ্য খায় খুঁটি।
বহুতলের নিচে চা এর দোকান খোলা
কলের জলের ভাগে দ্বন্দ্ব চাঁচাছোলা,
রাস্তা দিয়ে চলে একটা দুটো গাড়ি
অফিস যেতেই হবে , করছি তাড়াতাড়ি।
সকালটাকে ভাই করো না অবহেলা
সকাল কেটে গেলে বাড়তে থাকে বেলা।

জন্ম – সুশান্ত সেন

আমার এ জন্ম ও নেই, গত জন্ম ও নেই,
আমার আঙ্গুল ও নেই, কলাগাছ ও নেই,
তাই বেশ নিশ্চিন্তে বনে বাদাড়ে ঘোরা,
সেখানে আমসত্ত্ব ও নেই, আসন পিড়ি পেতে বসাও নেই,
কেবল সন্ধান করা ইতিহাস, নাড়ীর যোগ, জাতে জাতে স্বাতন্ত্র্য।
দেশ ও বিদেশের সীমানা মুছে
দেখিয়ে দেওয়া মুন্সিয়ানা
অথবা এক জীবন নিয়ে
আমৃত্যু টানাবহানা ।
এভাবেই শহরে শহরে, পাহাড়ে পাহাড়ে,
বিদেশে বিচরণ।
যার থাকাও নেই, না থাকাও নেই,
বাবা ও নেই, মা ও নেই,
কেবল অস্থির অস্থির সন্ধান।

বাক্স – সুশান্ত সেন

দো’তলার পুরনো ট্রাঙ্ক পরিষ্কার করতে বসে
পেলাম পুরানো চিঠি।
চিঠিতে বড় ঠাকুমা, যাকে আমি দেখিনি,
ঠাকুরদাদা কে লিখছেন
তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে আসতে
কারণ তার ভয় করছে তার খোকার জ্বর
সাত দিন হলো ছাড়ছে না,
বারবার ফিরে ফিরে আসছে।
হিসেব করে দেখলে চিঠি টা প্রায়
দেড়শ বছর আগে লেখা আর বোঝা গেল
বড় ঠাকুমা সেই কলেও বেশ লেখাপড়া জানতেন,
তাঁর হাতের লেখা বেশ গোটা গোটা পরিষ্কার,
যিনি সহজে বিচলিত হন না,
খোকার শরীর খারাপ হলেও
সাত দিন নিজের ওপর ভরসা রাখতে পারেন।
বড় ঠাকুমা আর ঠাকুরদাদা কে কোথায় ছিলেন বা চিঠিটা কিভাবে পাঠিয়ে ছিলেন, কে জানে !!
তখন ত যাতায়াতের সময় লাগতো বিস্তর।
ভাবছি এখন একটু জ্বর হলেই অস্থির হয়ে ডাক্তার এর কাছে ছুটে যাই কেন !!
সময় টা পাল্টে গেছে।

চাইছ – সুশান্ত সেন

তুমি চাইছ আমরা ঘৃণা করি
তুমি চাইছ আমরা হিংসায় মত্ত হই
তুমি চাইছ আমাদের আস্তানার বাতাস ছিনিয়ে নিতে,
ধুঁকতে ধুঁকতে খাবি খেতে খেতে যেন সারাজীবন মনে রাখি
তুমি চাইছ বশ্যতা ।
সব সময় আমরা যেন তোমার বন্দনা গাই।
তুমি চাইছ চাবুক হাতে সংগ্রাম
তুমি চাইছ উচ্ছেদ করা জন্মভূমি,
তুমি চাইছ সারা পাহাড় নেমে আসুক সমতলে
যেন দিগন্ত দেখা যায় সমভূমিতে।
তুমি চাইছ আমরা যেন খাবি খেতে থাকি সারাটা জীবন।

লেখা – সুশান্ত সেন

লিখে দেখি শেষের পাতায় এসে
অর্থ কোনো নেই যে লেখার শেষে ।
মনকে বলি শোন
বিত্তহীনের শক্তি যে নেই
মনের মাঝে জানিস সর্বক্ষণ।
দূরপাল্লার যাত্রী হলেন যারা
অনেক কঠোর সাধনা সে
দু চার পাতার আঁকি ঝুঁকি
কেমন করে হৃদয় দেবে নাড়া ।
অনেক দিনের অপেক্ষাতে কখন বীণাপাণি
হারিয়ে গেলেন অচিন পথে উড়িয়ে দিয়ে ছিন্ন
আঁচল খানি।
তাই করেছি পণ
খাতা কলম সাধনাতে
কাটাব দিন কাটাব রাত
কাটাব সর্বক্ষণ ।
একটি দুটি লেখা মনের মত
হলেই হবে সাঙ্গ সর্ব ব্রত ।

এখন – সুশান্ত সেন

সুখী নয় এখন মানুষ
সুখী নয় সর্বদা বিলাপ
জীবনটা আশ্চর্য ম্যাজিক
নেই তার কোন পরিমাপ ।

তবুও শপথ নিই রোজ
প্রকৃত মানুষ হতে চাই
পরমায়ু যেন সুস্থতায়
জীবনের জয়গান গায় ।

প্রভাতের জেগে ওঠা আলো
নানা রঙে মাতে আকাশেতে
নিয়ত বদলে যায় ছবি
চোখ ভরে নব আনন্দেতে ।

মাঝে মাঝে চকিত বিদ্যুৎ
আলো দিল মহাপুরুষেরা
নড়ে বসে মানব সভ্যতা
বিচার চলেছে চুলচেরা ।

কিছু বললে – সুশান্ত সেন

কিছু বললেই
লোকে শুনবে কি!
শীতের পাতা ঝরা বাতাসে
যখন হিমের স্পর্শ আসে,
যখন উদাসী বাতাস শিউলি ফুলের বুকে
কাঁপন ধরায়,
যখন শুকিয়ে আসে পূর্ণ প্রাণের রস,
তখন অবিশ্বাস ও আতঙ্ক ছেয়ে আসে বনে ।
‘ রণে বনে যেখানে থাকিও
আমাকে স্মরণ করিও ‘ —
এই আপ্ত বাক্য হারিয়ে যায় বহতা নদী স্রোতে ।
তখন কিছু বললেও
বসে শোনার মানুষ থাকে না।
তারা স্রোতের টানে ভাসতে ভাসতে
শীত আর শীত – বাতাসের কথা বলে যায়,
বিকেলের বাতাসে প্রকাশিত হয় বিবমিষা ।

অনুভব – সুশান্ত সেন

একটু আগেই সে শুয়েছিল
এখানে এই ফুটপাত এর ধারে
চোখ বন্ধ, নোংরা শতচ্ছিন্ন পোশাকে,
গা ভর্তি ধুলো, মাতাল কিনা কে জানে!
দ্রুত পাশ কাটিয়ে চলে গেলাম কাজে
মনে একটু দুঃখ।
( সাজানো দুঃখ নয় তো ? )
ফিরবার পথে এসে দেখি আর সে নেই
নীল আকাশ, ছেড়া ছেড়া মেঘ,
ছুটে চলা গাড়ির চাকায় চাকায়
সে হারিয়ে গেছে।
দুঃখ বা সাজানো দুঃখ অনুভবে আর নেই।

ভাবনা – সুশান্ত সেন

চোখ ছলছল
মাথা টলটল
জ্বর এলো বুঝি
কি করবি বল !

ঠাণ্ডা যে লাগে
গায়ে ব্যথা জাগে
ডাক্তার দাদা
কি করি যে আগে ?

পেটে বড় ব্যথা
হাত ন্যাতা ন্যাতা
সকালেই কেন
ঘুরল রে মাথা !

বড়ি দুই তিন
তাড়াতাড়ি দিন
নাহলে তো ভাই
কাটবে না দিন ।

কথা – সুশান্ত সেন

এত কথা কেন
শুধু কথা আর কথার বেসাতি করে
কত কাল কত যুগ কেটে গেল ।
যেতে যেতে কত পথ কত মতামত,
কত না আনাজ ভরা শস্যক্ষেত্র গুলি
হয়ে এলো বীজ শূন্য
সৌধ গুলি হয়েছে বিধ্বস্ত।
অনেক যুগের পর আত্মানুসন্ধানের
খোঁজে রণক্ষেত্রে দাঁড়ালো অর্জুন ।
সারাদিন কথা বলে কথা শুনে
লাভ কি বা হবে !
কথা গুলি বলো নাকো আর
ক্ষান্ত দাও জ্ঞানীরা সকল ।

ভালোবাসা – সুশান্ত সেন

কোথায় খুঁজব ভালোবাসা
হৃদয় ত শুকিয়ে কাঠ
কোথায় পাবো ভালোবাসা
ঠিকানা লেখা দরজা টা কোথায় !
বৃষ্টির কাছে গিয়েছিলাম
ঝর্নার কাছে গিয়েছিলাম
বন্যার জলে ভেসেছিলাম
নদী স্রোতে সাঁতার ও কেটেছিলাম
বৃথাই বৃথাই
শুকিয়ে যাওয়া ফুল ঝরে পড়লো
হাতে গায়ে
শঙ্কিত হয়ে চাইলাম আসে পাশে ।
কেউ কোথাও নেই
চারপাশ অন্ধকার
সেই অন্ধকারে হারিয়েছে
আমার ভালবাসা ।

মহামারী – সুশান্ত সেন

কথা ছিল তোর সাথে বেরিয়ে পড়বো
দেখবো না দেখা ঘাট, নদীর বুক
পাশে পড়ে থাকা মাঠ
সবুজ ঘাসে ঢাকা।
কথা ছিল যাব, যাবই
হাতে হাত রেখে দিকদিগন্ত পেরিয়ে
দূর দেশে।
অজানা গুহা ও শিশমহল দেখবো দু’জনে ।
এখন সামনে সমুদ্র
এক অনন্ত বিরামহীন সমুদ্র
সমুদ্র আর সমুদ্রের ঢেউ ছাড়া
আর কিছু নেই।

মহামারী কেড়ে নিয়েছে তোকে।

মল্লিকা – সুশান্ত সেন

স্বপ্ন ভেসে যায় মাঝ গঙ্গায়
সাফল্যও,
সাঁতরাতে না জানলে
খাবি খেতে খেতে ডুবে যাওয়া
অতলে।
কোনোদিন ও আর দেখা হবে না
তাই
খামচা খামচি করে রস শুষে নিতে থাকি,
বিসর্জন দিই মাঝ গঙ্গায়
আশা ভরসা ।
তুমি আর আমার কাছে এসো না, মল্লিকা।

নতুন দিন – সুশান্ত সেন

নতুন দিনে উথলে ওঠে খুশির পাতা
অভ্র কালির ছোঁয়ায় জাগায় সজীবতা,
নতুন বছর নতুন দিনের অঙ্গীকারে
শপথ সে নেয় দিনশেষের শেষ বিচারে,
বুনতে থাকে নতুন করে নকশিকাঁথা
আনবে সে আজ এই সমাজের পরিত্রাতা।
ধুইয়ে দেবে সকল পাপের কালিমাকে
বিজন ঘরে দিল সে আশা আজ আমাকে।
নতুন জীবন নতুন দিনের খোঁজার টানে
ভাসিয়ে দিল সপ্ত – ডিঙ্গা স্রোত উজানে।

অপরূপা – সুশান্ত সেন

তোমাকে দেখেছি কাল জোছনার ধারে,
অবোধ শিশুর ন্যায় খেলা কর তুমি অবিরাম,
চারপাশে চেয়েও দেখ না।
সুর তোলো গান কারো কত কথা বলে যাও তুমি,
কাকে বলে যাও, ভেবে ভেবে আমি তো অস্থির।
সেইখানে, সেই ছায়া তরু তলে,
রজনীগন্ধার ঘ্রাণ নিয়ে আমি জেগে বসে আছি,
একবার যদি কাছে আসো এই ভেবে ভেবে স্থবির হয়েছি আমি।
সেই ভালো মনে করো আমি এক প্রস্তর মুরতি
যার অঙ্গে জোছনা মাখানো।
সেই স্থানে তুমি এসো, পাশে বসো, গান গাও,
ফিরে ফিরে যাও পুনরায় এসো,
দেহেতে দেহের স্বাদ নিয়ে হয়ে যাই আমি উন্মাদ পাগল।
তুমি থাকো পাশে অপরূপা ।

কবি – সুশান্ত সেন

সে জানে সে কবি নয় তবু সে লেখে
খুঁজে যায় ছন্দ ও মিল
মনে আশা একদিন খুলে যাবে খিল
উন্মুক্ত হবে দরজাটা, দেখা যাবে খোলা প্রান্তর
সেখানে সে গড়ে নেবে তার ছোট ঘর।
তাই সে সর্বদাই মনে মনে বলে যায় কথা
স্বপ্নের ভেতর খেলা করে
ফুলগুলি সাজাইয়া রাখে থরে থরে,
নিয়ে তার ঘ্রাণ
উদীপ্ত হয়ে সে পথে নামে
সুন্দরের আরাধনা করে চলে সলজ্জ প্রণামে ।

সুশান্ত সেন | Susanta Sen

Bengali Story 2023 | তিন্নির ফড়িং আর মানুর কারসাজি | গল্পগুচ্ছ ২০২৩

Bengali Story 2023 | মন্টুর মা | গল্পগুচ্ছ ২০২৩

Bengali Article 2023 | “স্তন কর” বিরোধী নারী আন্দোলন ও নাঙ্গেলির (Nangeli) আত্মত্যাগ

Bengali Article 2023 | শ্রমিক আন্দোলনে সুভাষচন্দ্র বসু | প্রবন্ধ ২০২৩

Shabdodweep Web Magazine | Bangla Kobita Culture | Susanta Sen

The rich tradition of Bangla Kobita Culture holds a significant place in the literary world, embodying the essence of Bengali thoughts, emotions, and life. Bangla Kobita (Bengali poetry) is not merely a form of artistic expression but an integral part of Bengali heritage and identity. It delves into the human experience, from love and loss to philosophical reflections, all while preserving the beauty of the Bengali language.

At Shabdodweep Web Magazine, we proudly publish a diverse collection of Bangla Kobita, bringing to light the best works of contemporary poets. One such poet is Susanta Sen, a celebrated name in modern Bangla Kobita. His poetry reflects the soul of Bangla Kobita Culture, offering readers insight into its depth and timeless appeal. Our platform not only features special selected poems but also creates an engaging space for those who wish to explore and appreciate the world of Bengali poetry.

Here we will explore the significance of Bangla Kobita Culture, how it shapes modern literary landscapes, and why it continues to inspire generations. We will also dive into the contributions of poets like Susanta Sen, whose works are featured on our platform, and discuss how Shabdodweep Web Magazine brings the finest Bangla Kobita to the forefront.

The Essence of Bangla Kobita Culture

Bangla Kobita Culture is deeply rooted in the history and heritage of Bengal, with poetry being an integral part of the region’s intellectual and emotional life. From the era of Rabindranath Tagore, who revolutionised Bengali poetry, to contemporary poets like Susanta Sen, Bangla Kobita has evolved while retaining its emotional depth and philosophical undercurrents. The culture of Bangla Kobita is characterised by a fusion of simplicity and profundity, where everyday themes are explored with immense sensitivity.

Bangla Kobita Culture isn’t just about rhyming words – it is a form of storytelling that reflects the diversity of the Bengali experience. Poetry in Bengal often addresses social issues, personal emotions, cultural identity, and the mysteries of life. Whether in the form of classic poems or modern verses, Bangla Kobita is a vibrant expression of the spirit of Bengal.

The significance of Bangla Kobita Culture lies in its ability to bridge generations. Poems are passed down from one generation to the next, preserving the wisdom and emotions of the past. It has a unique way of staying relevant, even as the world changes around it. The poems inspire, challenge, and comfort, making them a timeless part of Bengali society.

The Influence of Susanta Sen in Bangla Kobita

Among the modern voices in Bangla Kobita, Susanta Sen stands out for his distinctive approach to poetry. His works, regularly featured on Shabdodweep Web Magazine, beautifully reflect the essence of Bangla Kobita Culture. Susanta Sen brings forth the power of simplicity in his poetry, blending the beauty of language with deep emotional and philosophical insights. His poems are known for their rich imagery, thoughtful themes, and ability to resonate deeply with readers.

In Shabdodweep Web Magazine, we celebrate the contributions of poets like Susanta Sen, whose works have left a lasting impact on the Bengali literary scene. His Bangla Kobita explores themes of love, nature, human struggle, and the eternal questions of life. Through his poems, readers experience the delicate balance of tradition and modernity that defines Bangla Kobita Culture.

Special Selected Poems at Shabdodweep Web Magazine

At Shabdodweep Web Magazine, we curate special selected poems from both established and emerging poets to showcase the best of Bangla Kobita. Our platform brings together diverse voices that reflect the many facets of Bangla Kobita Culture – from the classical to contemporary. We provide readers with an opportunity to discover the power of Bengali poetry, offering insightful reflections on life, love, and the human condition.

Whether you’re new to Bangla Kobita or a long-time admirer, our collection of special selected poems is a treasure trove that invites you to explore the depths of Bengali literature. Shabdodweep Web Magazine serves as a hub for those seeking inspiration, connection, and a deeper understanding of Bengali poetry and its cultural significance.

Why Bangla Kobita Culture Matters

Bangla Kobita Culture matters because it connects people to their roots and provides a window into the Bengali way of thinking and feeling. It preserves history, educates, and evokes strong emotions, all while being a significant part of Bengali identity. The influence of Bangla Kobita extends beyond literary circles, shaping cultural norms and societal values.

Cultural Preservation: Bangla Kobita Culture is integral to preserving Bengali traditions, language, and worldview. It ensures that the essence of Bengali thought continues to thrive in modern times.

Emotional Expression: The beauty of Bangla Kobita lies in its ability to express complex emotions – whether it is love, grief, or longing – in a way that feels personal to the reader. These poems capture the essence of human experiences, making them universally relatable.

Philosophical Reflection: Many Bangla Kobita poems explore philosophical themes, prompting readers to reflect on existence, purpose, and life’s deeper meanings. These reflective verses contribute to intellectual and emotional growth.

Explore Bangla Kobita at Shabdodweep Web Magazine

At Shabdodweep Web Magazine, we are committed to bringing Bangla Kobita and Bengali poetry to a global audience. Our platform features special selected poems that highlight the beauty of Bangla Kobita Culture. We believe that poetry is an essential part of cultural identity, and through our publication, we aim to preserve and promote the richness of Bengali literary heritage.

If you are passionate about Bangla Kobita and wish to discover new voices or revisit classics, Shabdodweep Web Magazine is the perfect space for you. With contributions from poets like Susanta Sen, we strive to keep the spirit of Bangla Kobita alive for generations to come.

FAQ About Bangla Kobita Culture

  1. What is Bangla Kobita Culture?
    Bangla Kobita Culture refers to the rich tradition of Bengali poetry, which reflects the emotions, philosophy, and social issues of Bengal. It is a deep part of Bengali identity and intellectual heritage.
  2. What kind of poems can I find on Shabdodweep Web Magazine?
    At Shabdodweep Web Magazine, you can explore a variety of Bangla Kobita, including special selected poems that reflect the essence of Bangla Kobita Culture. Our collection features both classical and modern poetry, offering a blend of tradition and contemporary thought.
  3. Can I submit my own Bangla poetry to Shabdodweep Web Magazine?
    Yes! Shabdodweep Web Magazine welcomes contributions from both emerging and established poets. If you have original Bangla Kobita, you can submit your poems for a chance to be featured on our platform.
  4. Why is Bangla Kobita important today?
    Bangla Kobita remains relevant today because it captures the essence of Bengali culture and thought, while addressing universal themes that resonate with readers worldwide. It continues to inspire, educate, and provide emotional depth.

Sabuj Basinda | Follow our youtube channel – Sabuj Basinda Studio

Leave a Comment