Aged chicken meat | বুড়ো মোরগের মাংস | 2023 New Story

Sharing Is Caring:
Aged chicken meat

বুড়ো মোরগের মাংস – কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা [Aged chicken meat]

পুরুলিয়া স্টেশনে পৌঁছানো, হাওড়া – চক্রধরপুর এক্সপ্রেসে। সেখান থেকে বাস স্টপেজ। এইমাত্র ভোরের আঁধার কাটলো। গাড়ি ধরে যখন আমি পশ্চিমের বেলকুঁড়ি স্টপেজে নামলাম , তখনও সকাল। শৈত্যপ্রবণ পুরুলিয়ায় শীত তার পাতা কাঁথাটা ধীরে ধীরে গুটিয়ে নিচ্ছে। বেলকুঁড়ি থেকে বামদিকে পায়ে হাঁটা পথ। গ্রামীণ। ক্লান্ত শরীরে হাঁটতে হাঁটতে – কুকুরগড়িয়া গ্রাম। দু পাশে আদিবাসী মানুষের মাটির পরিচ্ছন্ন ঘর বাড়ি ,- ছবির মত। সকালের গেরস্থালীর কাজে ব্যস্ত সবাই। যারা কাজে যাবে, তারাও পথে বেরিয়েছে । হাঁস খুপরি থেকে মুক্তি পেয়ে, বাচ্চা পাতি হাঁস আর রাজহাঁস পুকুরে সাঁতার দেয় মা হাঁসেদের সঙ্গে। মিনিট কুড়ি পর, শীতের কাঁসাই। শুয়ে আছে বুকভরা বালি, ক্ষীণ স্রোত নিয়ে। বর্ষার উত্তাল নদী এখন শান্ত, স্রোতের তীব্রতা বলে কিছু নেই। যেন এক প্রাণহীন নদী। না বাঁচলে মানুষ বাঁচে কী করে! ছপ ছপিয়ে পার হই। তারপর নাড়াবন, পায়ে পায়ে তৈরি পথ বেয়ে হাঁটি। হাঁটতে হাঁটতে গৌরা দাগ গ্রামের প্রান্তে। ছাগল, গরু, হাঁস মুরগি নিয়ে মানুষের প্রাত্যহিক জীবন। বিশালাকার বলদ আর লাঙ্গল জোয়াল নিয়ে চাষী যায় মাঠে। গ্রামের প্রায় শেষ সীমায়, শঙ্কর মাহাতোর একান্নবর্তী সংসার। রাস্তার পাশে ওদের মুদি দোকান। তার পিছনে গোয়াল ঘরের পাশে একতলা দুটো ঘর। ওখানেই আমাদের আস্তানা। আমি আর শান্তনুদা, শান্তনু কর্মকার, বাঁকুড়ার সোনামুখীতে বাড়ি। ছাদে উঠলে দক্ষিণে উদোম মাঠ। দেখা যায় গজাবুরু পাহাড় দূরে। পাশে এক তেঁতুল গাছ, গাছের পাশে কুয়ো। কুয়োতে দড়ি বাঁধা বালতি, তার স্বচ্ছ জলে চান আর সব ধোয়া। মাঝে মাঝে আমি যাই, কিছু দূরের এক নির্জন পুকুরে। পাড়ে তার পলাশ আর সোনাল গাছের সারি। জলস্তর খুব কম।

চানের সময় শঙ্কর বাবুর মেজ ভাই, কিঙ্কর বাবুর সঙ্গে দেখা। এক গাল হেসে বলেন, – কেমন আছেন স্যার ! আছি ভালো, আপনারা? – আছি স্যার। পুরুলিয়ার এই গৌরাদাগ গ্রামে কেন থাকি ! পরে বলা যাবে। শান্তনুদা আগের দিন এসেছেন, আড়শা গেছেন, বিকেলে ফিরবেন । দুপুরের ভাত আমাকেই ফোটাতে হবে।এখানে মাছের অভাব, সবজি ভাত দিয়ে মধ্যাহ্ন ভোজন। সবজিও মহার্ঘ্য, এখানকার ল্যাটেরাইট মাটির জন্য। তবে যেটুকু চাষ হয়, খুবই সজীব সতেজ। শীতের দিনের রোদ্দুর নিতে একতলার ছাদে গেলাম। বেশ লাগে তাপ। বিছানার কাঁথা – কম্বল রোদে মেলে এসে খেয়ে নিলাম। যদিও দুপুরের এখন বাকি আছে। আগেই বলেছি এখানকার শীত ভয়ঙ্কর। মুখ, হাত, পা শুকিয়ে কেমন ফাটা ফাটা হয়ে যায়। বাতাসে ভর করে ধুলোয় ভরে আছে জীর্ণ পাতারা, পলাশ গাছে এইবার কুঁড়ি আসি আসি। এসময়ের পলাশ গাছ, কোন ভাবেই দৃষ্টি আকর্ষণের নয়। বৃদ্ধ জরা জীর্ণ। তপ্ত দিনের ছোঁয়া পেলে ওরা যেন নবীন হয়ে ওঠে, পুষ্পে পল্লবে।

একাকীত্ব ঘোচাতে বিকেলে বেরিয়ে পড়ি, গ্রামের পশ্চিম দিকে। এখানকার ভূমি গঠন বেশ মজার। হয়তো কোন কালে মালভূমি ছিল। একটু এগিয়ে গিয়ে দেখা গেল, কচ্ছপের পিঠের মত ভূমির আকৃতি, সামনের কোন গ্রাম দৃষ্টির আড়ালে। আবার উপরে উঠলে , কী সুন্দর ছবির মত দূরের গ্রামগুলো যাবে দেখা। আসলে চড়াই উৎরাই বেয়ে পথচলা এখানকার মানুষের । বিকেলের মরা রোদে দাঁড়িয়ে দূরের ঝালদা গ্রামের পারে সূর্যাস্ত দেখছি। পাখিরা ফিরছে কুলায়।ওই দূরের পথে গরুর গাড়ির সারি। নিত্য দিনের কাজ শেষে তারাও নিজ ঘরমুখো। …. সন্ধ্যার আগে বাসায় ফিরি।
শান্তনুদা এসে গেছে। যাক বাঁচা গেল, রাতের রান্না আমার অন্তত করতে হবে না। তবে শান্তনু দা রাঁধুনি ভালো। এখানে ইলেকট্রিক নেই, হ্যারিকেনের আলো আর কেরোসিনের স্টোভ এই নিয়ে সংসার । তক্তপোষ নয়, দড়ির খাটিয়া পাতা , রাত্রি যাপনের। এখানকার চল। আমার বিছানার খাটিয়া কিনে দিয়েছে ভূষণ মাহাতো। এ পাড়াতে বাড়ি,গল্পের বুড়ো। এখানকার ভাষা বাংলা হলে কি হবে, সে এক অদ্ভুত টান।যেন বাংলা আর হিন্দির মধ্যবর্তী এক বাচিক ।
আমরা ভূষণের ওপর খুব ভরসা করি। টুকি টাকি যা দরকার, ওই হাসিমুখে যোগাড় করে দেয়। আসার পথে শান্তনুদা বাজার করে এনেছে। আরশা থেকে হাঁটা পথে এলে ,একটা বৈকালিক বাজার পড়ে। সেখানে টাটকা সবজি পাওয়া যায়। অবশ্য সেই বাজারে কোন দোকানপাট নেই, গাছপালা ঘেরা এক ছোট জায়গায় বাজার। বিকেলে শুরু,সন্ধ্যায় শেষ।

হ্যারিকেনের আলো জ্বেলে বসে আমরা নানান গল্প করছিলাম, এমন সময় শঙ্কর বাবুর ভাই কিঙ্কর এসে হাজির। সে বললো, – আপনারা আজ তরকারি রাঁধবেন না, মাংস রান্না হচ্ছে বাড়িতে। মাঝে মাঝে ওরা দিয়ে যায় রান্না তরকারি। ভাড়াটিয়া হলেও অতিথি বটে! তো হঠাৎ মাংস ? – মোরগ লড়াইয়ে একটা বিশাল মোরগ জিতেছে দাদা, সেটাই আজ …..। বেশ ভালই, আমরা কেবল চাল চড়িয়ে ভাতটা করবো। মোরগের ঝোল এলেই …..।
বিদ্যুৎ হীন গ্রামের সন্ধ্যা, ঘন আঁধার নামে ক্রমশ। ঝিঁঝিঁ ডাক স্পষ্ট হতে থাকে। শান্তনু দার পুরনো রেডিওতে খবর, গান ইত্যাদি শুনছি। ঘড় ঘড় শব্দ হলেও মোটামুটি শ্রবণযোগ্য ।… রাত বাড়ে ,মোরগের ঝোল আসে কই! স্টোভ – রান্না ভাত শীতের দিনে আস্তে আস্তে ঠান্ডা হয়। মাংস রান্না একটু দেরি হয়, উনুনে রান্না তো। আর মাংসের পরিমাণ অনেক, প্রায় পাঁচ কেজি ওজন হয়েছে মোরগটি। একান্নবর্তী পরিবার শঙ্কর বাবুদের। কৃষিজীবী । তবে অন্য কিছু ব্যবসা আছে, বেশ সচ্ছল। বৃদ্ধ বাবা মা,পাঁচ ভাই আর তাদের স্ত্রী সন্তান। আমাদের দৈনিক ভাত খাওয়ার সময় পার হয়ে গেল। আগের রাতে ট্রেনে করে আসা, চোখে ঘুম আসে।

দুজনে মুখ চাওয়া চাওয়ি করছি, খিদেও পেয়েছে। এতই দেরি ! ভাত যে জল হয়ে গেল । …. অবশেষে ভূষণ মারফত মাংসের ঝোল যখন এলো, রাত এগারোটা পার । ‘ কী ভূষণ এত দেরি যে ! ‘ – ‘ পাকা মাল স্যার , দেরি তো হবেই।’ ‘ কোথায় লড়াই ছিল আজ? ‘ ‘ পাশের বীরজালি গ্রামে। আমিও দাদার সঙ্গে ছিলুম। আধ ঘন্টার লড়াই, শেষে ঘায়েল।’ এখন খেতে হবে। ভাতের যোগাড় করে শান্তনুদা। ভাত ঠান্ডা, ঝোল মাঝারি উষ্ণতার। তবে মাংস তো নয়, যেন রবার খন্ড। চিবোতে পারলে হয়। দুজনে মিচকি মিচকি হাসছি,আর চেষ্টা করছি মাংস ভাত গলাধকরণ করার। অনেক কসরত করেও বুড়ো মোরগের মাংস সিদ্ধ হল না ! …. খাওয়া শেষ হল পাতলা ঝোল আর দু টুকরো আলুর দৌলতে। শঙ্কর বাবুদের যত্নের কোন ত্রুটি ছিল না। ওরাও হয়তো বুঝতে পারেনি ,মাংসের ঝোলের এই অবস্থা হবে।

ঘুমের নির্দিষ্ট সময়টা পার হয়ে গেলে, সহজে আসে না ঘুম। সাত পাঁচ ভাবনার স্রোত এসে হাজির হয় । খাটিয়ার বিছানায় এপাশ ওপাশ করতে করতে তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাব এলে, সেই মোরগ টা কখন যে চৈতন্যে ঢুকে গেল! – তার যে মালিক কোলে করে নিয়ে এলো বীরজালি গ্রামের প্রাইমারি স্কুলের মাঠে। যুদ্ধক্ষেত্রে। গোল করে ঘেরা দড়ির বাইরে জনতার ভিড়। কেন্দ্র স্থলে,পায়ে ধারালো ছুরি বাঁধা যুযুধান দুই মনুষ্যেতর প্রাণী। ঝুঁটি ফুলিয়ে আক্রমণের জন্য প্রস্তুত! তারপর শুরু দুরন্ত লড়াই ! জনতা প্রবল উৎসাহে উপভোগ করে ‘ যুদ্ধ ‘ । মোরগের মালিকদের মধ্যে ভীষণ উত্তেজনা আর উদ্বেগের জন্ম হয়। চক চকে অস্ত্রের ফলায় বিকেলের আলো ঠিকরে পড়ে। … আমার চৈতন্যের মধ্যে মোরগ দুটো মানুষ হয়ে গেল, যুদ্ধ আরো ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। তবুও জনতার উল্লাস কমে না, বরং আরো বেড়ে গেল ! যে যুদ্ধ প্রাণ কেড়ে নেয়, সন্তানকে পিতৃ হারা করে, সেই যুদ্ধের জন্য এত উল্লাস মানুষের এই পৃথিবীতে ! মানুষ এত প্রাণঘাতী যুদ্ধ প্রেমী কেন ! ….আচমকা এক যোদ্ধা অস্ত্র ফেলে পালাচ্ছে,পিছনে অন্যজন ধাওয়া করে। ক্ষণিকে, আমিই যেন পালাচ্ছি, পিছনে প্রবল পরাক্রান্ত অস্ত্রধারী ! প্রাণপণে দৌড়েও তার নাগালের বাইরে যেতে পারছি না। কী করি ! আবার ওই অস্ত্রধারী হয়ে গেল সেই বুড়ো মোরগ, যার মাংস আমরা খেলাম। সে যেন রামায়ণের জটায়ু ,আমাকে তাড়াচ্ছে । আমি গৌরাদাগ গ্রামের এগলি সেগলি ঘুরে ঘুরে শঙ্কর বাবুদের বাড়ির উঠোনে এসে হাজির,কোথায় লুকোনো যায়। সে তো আমার পিছু ছাড়ে না। সহসা যেন উঠোন ভর্তি সকালের আলো, সেই আলোর মধ্যে কোথা থেকে শঙ্কর বাবুর ছোট ভাই একটা ধারালো দাওয়ালি নিয়ে হঠাৎ ওই মোরগের গলায় দিল এক কোপ । ….. আমার গোঁয়ানি শুনে শান্তনু দার ঘুম ভাঙলো, আর আমার গায়ে হাত দিয়ে জাগিয়ে দিল। যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচলাম ! তখন কানে এলো, শঙ্কর বাবুদের যোদ্ধা মোরগটা ডাকছে, – কোঁকর কোঁক , কোঁকর কোঁক…..। বুঝলাম রাত শেষে ভোর হল।

কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা | Krishna Kishore Middya

Bangla Galpa 2023 | তাপভ্রষ্ট ধরিত্রী | কৃষ্ণকিশোর মিদ্যা

2023 New Bengali Story | জীবনের জলছবির রঙীন কোলাজ | রম্যরচনা

Bardhaman District Pancham Dol 2023 | পঞ্চম দোল – বসু পরিবার ও দেবকী বসু

Mother’s Day History Information | মাতৃদিবসের উৎপত্তি, তাৎপর্য ও বাঙালি প্রতিক্রিয়া | 2023

বুড়ো মোরগের মাংস | ঘরোয়া পদ্ধতিতে মুরগির মাংস রান্না | মাংস রান্নার পদ্ধতি | আলু দিয়ে মুরগির মাংস রান্না | ব্রয়লার মুরগি রান্না | মুরগির মাংস রান্না ছবি | দেশি মুরগির মাংস রান্না | মুরগির মাংসের উপকারিতা | চিকেন রান্না | মোরগের মাংস রান্না | মোরগ রেসিপিগুলি | শব্দদ্বীপের লেখক | শব্দদ্বীপ | সেরা বাংলা গল্প | গল্প ও গল্পকার | সেরা সাহিত্যিক | সেরা গল্পকার ২০২২ | বাংলা বিশ্ব গল্প | বাংলা গল্প ২০২২

Aged chicken meat story 2023 | Aged chicken meat image | Aged chicken meat video 2023 | Aged chicken meat photo 2023 | Aged chicken meat pdf | Aged chicken meat story pdf | Aged chicken meat video download | Aged chicken meat fry | Aged chicken meat recipe | Aged chicken meat recipe video | Aged chicken meat recipe 2023 | New story – Aged chicken meat | Shabdoweep Founder | Shabdodweep Magazine | Shabdodweep Web Magazine | Shabdodweep Writer | Shabdodweep Poetry | Natun Bangla Galpo 2023 | Natun Bangla Galpo 2023 book | Natun Bangla Galpo 2023 pdf book | Writer – Natun Bangla Galpo 2023 | Top Writer – Natun Bangla Galpo 2023 | Top poet – Natun Bangla Galpo 2023 | Poet list – Natun Bangla Galpo 2023 | Top poetry – Natun Bangla Galpo 2023 | Best seller – Natun Bangla Galpo 2023 | Full pdf book – Natun Bangla Galpo 2023 | Free download pdf – Natun Bangla Galpo 2023 | Audio book – Natun Bangla Galpo 2023 | Video book – Bangla Kabita 2023 | Video poetry – Bangla Kabita 2023 | Audio poetry – Natun Bangla Galpo | New Poetry book | Shabdodweep poetry book | Shabdodweep International Web Magazine | International Bengali poetry | Bengali Poetry publisher | Shabdodweep Publisher | Shabdodweep Publisher 2023 | Shabdodweep Video Publisher | Shabdodweep Audio Book | Shabdodweep Video Book | Shabdodweep Mp3 poetry | Audio Poetry mp3 | Audio Poetry wmv | Video poetry mp4 | Natun Bangla Galpo 2023 video series | Natun Bangla Galpo 2023 – web series | Natun Bangla Galpo 2023 – Latest version | Natun Bangla Galpo 2023 pdf book | web video – Natun Bangla Galpo 2023 | web reader – Natun Bangla Galpo 2023 | pdf reader – Natun Bangla Galpo 2023 | pdf publisher – Natun Bangla Galpo 2023 | Best web series – Natun Bangla Galpo 2023 | new pdf book – Natun Bangla Galpo 2023 | New story book – Natun Bangla Galpo 2023 | Viral video – Aged chicken meat | Trend recipe – Aged chicken meat

Leave a Comment