2023 New Bengali Story | গুরুতর সন্দেহ | হাসির গল্প ২০২৩

Sharing Is Caring:
2023 New Bengali Story

গুরুতর সন্দেহ – শিবপ্রসাদ পুরকায়স্থ [2023 New Bengali Story]

ভয়ে এমন হিঁচড়ে টেনেছে সুতির মশারির একটা কোণ ছিঁড়ে ফালা। সন্ন্যাসীদের ওপর থেকে ঝাঁপ কাটার মত, তক্তপোষের থেকে মেঝেতে পড়েছে। তারপরে অন্ধকার ঘরের কোথায় যে গা ঢাকা দিল, বোঝার উপায় নেই। ভাগ্যিস ছেলেটা জেগে ওঠেনি। ভয়ে চিৎকার করলে অন্য বিপদ। ওর থামাবে না, না নিজের প্রাণ বাঁচাবে।

রমনীরমণ বুঝতেই পারছে না ব্যাপারটা কী। বউয়ের একী উদ্ভট আচরণ। নিজের বউ যেন নিজের নয়। কেমন পরের মতই। ওর শরীরে অন্য কেউ ভর করেনি তো। হতেও পারে। অত রাতে ফাঁকা মাঠ দিয়ে একা ফেরা উচিত হয়নি। তাও ঘোড়া মারা পুকুরের পাশ দিয়ে। ভাবলে গা শিউরে ওঠে। তখন সন্দেহ হয়েছিল, গুরুত্ব দেয়নি।

মাঘের শীত। গা-হাত-পা ফালা ফালা হয়ে যাচ্ছে। কাউকে কিছু না বলে দোর খুলে ছেলে বউয়ের পাশে শুয়ে পড়েছে। ঘরে জোনাকির মতো টিমটিমের আলো ছিল। তবে, ওই আলোর উৎস খুঁজতে অন্য একটা আলোর দরকার হতো। সেই বিড়ম্বনায় আর যায়নি। একবার ঘরের মধ্যে যখন ঢুকেছে, শোবার যায়গা ঠিক পেয়ে যাবে। বেশি হাতড়াতে হবেনা। তাই হয়েছিল রমনীরমণের ক্ষেত্রে। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে বোঝাপড়া থাকে। একটু আধটু শোয়া খারাপ হতেই পারে। উভয়কেই মানিয়ে নিতে হয়। যেমন ধরো, শীত কুঁকড়ে যাওয়া শরীরে তাপের দরকার। আমরা ছোটবেলায় মা ঠাকুমার গায়ে পা তুলে দিতাম না। তাপ নিতাম না। সেদিন তো কারো কিছু মনে হত না। আজ কেন নয়। অন্তত আজকের বাইরের কনকনে শীত থেকে আসা রাতটুকুর জন্য। সেই দাবী করার অধিকার তাতের মধ্যে থাকতে পারেনা।

বন্ধুর বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিল। গুরুপাক খাওয়াদাওয়া হয়েছে। এতো রাতে বাড়িতে ফিরে শরীর আইঢাই করছিল। কখন ঘুমিয়ে পড়েছে। গভীর ঘুমের মধ্যে ছিল রমনীরমণ। কিছু বিশেষ স্বপ্ন দেখেছিল কি না মনে করতে পারছে না। তবে হ্যাঁ, ঘুমের আগে যে নতুন অনুভূতি অনুভব করেছিল। বউয়ের গা ঘেঁষে শুয়ে মনে হয়েছে। বউয়ের শরীর এতটা পালটে গেল কী করে। সংসারে দিনরাত খেটে খেটে হাড় কখানা সার। এযে দেখছি সেই ছিটে বেড়ার গায়ে খড়ে কাদায় ছোপ দেওয়া। রাতারাতি নরম কদার মতো তুলতুলে শরীর হল কী করে? তবে কি শীতের রাতে অনুভূতিগুলো ভোঁতা হয়ে গেছে। তাই এমন মনে হচ্ছে। ঘুমে চোখ জড়িয়ে আসছিল। বিশেষ পরীক্ষা নিরীক্ষা করেনি। বউ নিশ্চিতে ঘুমুচ্ছিল। বউয়ের দিব্যি করে বলতে পারে, কোন প্রকার বিরক্ত করেনি। তা হলে অমন ছেঁচড়ে উঠল কেন? অজানা প্রশ্ন মনের মধ্যে ঘুরপাক খেয়েই চলেছে।

রমনীরমণ কিছুতেই তক্তপোষের থেকে মাটিতে পা নামাতে চায়ছে না। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ভয়। যেন হাই-ভোল্টের তার ছিঁড়ে ঘরের মেঝেতে পড়ে আছে। যে মানুষটা একা ফাঁকা মাঠে নিকষ অন্ধকার উপেক্ষা করে, বীরদর্পে বাড়ি ফিরেছে। সেই মানুষটা চার দেয়ালের আবদ্ধ আঁধারে এত ভয়। কপাটের খিল যে খুলবে, সেই সাহসটুকু হারিয়ে ফেলেছ। বাইরে ঘরের দাবায় রমনীরমণের মা শুয়ে। ভয়ের মধ্যে কখন মাকে ডেকেছে হুস নেই। ডাক শুনে মা জেনে গেছে বড়খোকা রাতে বাড়িতে ফিরেছে। মায়ের কোনরূপ সাড়াশব্দ রমনীরমণ ভেতর থেকে শুনতে পায়নি। আর নিজেও টু শব্দ টি করেনি। অবস্থা খুব ভালো বুঝছে না। তার পিছু পিছু পেতনি টেতনি ঘরের মধ্যে ঢোকেনি তো! বউয়ের দেহের মধ্যে ঘিপটি মেরে নেই তো? কী জ্বালায় পড়া গেল। ঘরের মধ্যে তেমন বাড়াবাড়ি করলে যদি ঘাড় মটকে দেয়। নিজের ঘাড় নিয়ে যাখানে সন্দেহ, দুধের পোনার ঘাড়ের আর নিশ্চয়তা কীসের। তুলে আছাড় মারবে না কে বলতে পারে। পেতনির বুক কাঁপবে বলে মনে হয় না। রাত এখন কত হল বোঝার উপায়নি। অশুভ আত্মার একমাত্র ভয় আলো। একবার ভোরের আলো ফুটতে দাও না কোথায় যায় দেখব। তখন এই পুরুষ মানুষের হাতের মুঠোয় থাকতে হবে। যত বড়ই পেতনি হও না কেন। তোমাদের যতো শক্তির প্রকাশ আঁধারে। পুরুষের পরাজয় তো ওখানেই।

রমনীরমণের বন্ধুর বিয়ে ছিল আজ। আর আজকেই ছিলো খুড়তুতো ভাইয়ের বউভাতের অনুষ্ঠান। বাড়ি সুনসান। এখন জেগে আছে ‘এয়েরা’। প্রত্যেক মহিলা সংসার ধর্মে পোড়খেকো। নবদম্পতিকে হাতেকলমে কিছু শিখিয়ে দেওয়ার দায় তাদের থাকে। তারাই হাসি ঠাট্টায় হই-হুল্লোড়ের দিয়ে ফুলসজ্জার ঘর ভরিয়ে রেখেছে। ঘরের পাল্লা ভেজানো থাকলে কি হবে। ফুটো ফাটা দিয়ে আলো আটকানো যায় নাকি। অনেকটা ফুটো নৌকায় কাদা বুজো দেওয়ার মত। এখানেও তেমন অনেক কিছু বাইরে বেরিয়ে আসে বইকি। কানের দোষ দেওয়া যায় না। ফুলসজ্জার রাতে ঘরের মধ্যে যা কিছু হয়, অনেকটা এইরকম। ধরুন দোকান ঘরে নতুন ‘সাটার’ বসালে মিস্ত্রিরা কি করে। লাইনে ভালো করে গিরিস দেয়। হাতল ধরে বেশ কয়েকবার ওঠাতে নামাতে থাকে। যখন খুব সহজে যাতায়াত করছে মনে করে, মালিকের হাতে চাবির গোছা ধরিয়ে দেয়। তালা চিনিয়ে কাজ শেষ করে।

এক্ষেত্রে তেমন বিদ্যে খাটে না। ভিন্ন মেরুর দুটি ছেলে মেয়ে। তাদের দেহ মন যান্ত্রিক বস্তু নয়। তাড়াহুড়ো করলে চলেনা। জোড়াতালি দেওয়ার কাজ নয়। শিব্রাম চক্কোত্তির গল্পের মত “আস্তে ভাঙো” পথ ধরতে হয়। তাতে কাজ হবার হলে হবে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে উদ্দেশ্য সফল হয়। এয়োতীরা একটা জিনিস বুঝতে পারে, এই জুড়ি কেমন হবে। ধরুন বাবা শিবের মাথায় ফুল বেলপাতা দিলেন। যত তাড়াতাড়ি পড়ে যাবে, মানে তার মনস্কামনা পূর্ণ হল। এক্ষেত্রে ঠিক তার উলটো। উভয়ের অক্ষ প্রত্যঙ্গ একে অন্যর ওপর চাপিয়ে দেয়। যত তাড়াতাড়ি পড়ে যাবে, সোজা কথায় সরিয়ে নেবে। বুঝতে হবে উভয়কে বাগে আনতে কালঘাম ছুটে যাবে। যদি ফুল না পড়ে তবে বিলকুল সবাইকে ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দেওয়া হচ্ছে ধরে নিতে হবে। এখন তেমন অবস্থায় আসেনি। নবদম্পতি ও এয়োতীদের মধ্যে আসর জমে উঠেছে।

রমনীরমণের মা আর চোখ বুজিয়ে থাকতে পারে। ঘরের মধ্যে বড়ছেলে আর সদ্য নতুন বৌমার খুড়তুতো যুবতী বোন। এক বিছানায়। এক ঘরের মধ্যে। ভেতরে কী করতেছে কে জানে বাবা। মায়ের মনে এই ভাবনা চলছে। রমণটা তো একবার মা বলে চেঁচালো। মেয়েটা মুখে রা কাড়েনি। বড়বৌমা এয়ে হয়ে ফুলসজ্জার রাতে হাসিঠাট্টায় মসগুল। সে বেচারা কি করে জানবে, তার ঘরে কী কেল্লা না হচ্ছে। যাই আগে ডেকে আনি গে। উঠোনে দাঁড়িয়ে রমনীরমণের মা। ঘরের ভেতরে ছাপিয়ে যাওয়া গলাটি বড়বৌমার। ভীষণ আমুদে মেয়ে। রমনীরমণের সহধর্মিণী। রমণের মা হাসিঠাট্টা শোনার জন্য আড়ি পাততে ঘুম ভেঙে আসেনি। এসেছে সর্বনাশের খবরটি দিতে। দাবায় উঠে দরজায় ধাক্কা মেরে বলল, বড়বৌমা বেইরে এসো তো।

— কেন মা? দোর একটু ফাঁক করে জানতে চাইল।
— কেন বলতে হবেনে, আগে এসো।
বিমলা বাইরে আসার আগে দলের সবাইকে বলে এলো, আসর চালিয়ে যা। এখুনি ঘুরে আসছি।

বউমা উঠোনে নামতে শাশুড়ি বলল, ওদের ঘর তোমাকে বেঁধে দিতে হবে নে। এখনকার মেয়েরা ঘর বেঁধে আসে। ওদিকে যে তোমার ঘর ভাঙতে বসেছে। আগে নিজেরটা সামলাও। বিমলা বুঝতে পারল না। শাশুড়ি বলল, হ্যাঁ করে আছো কি? তারপরে যেযে যেতে মোটামুটি মূল কথা বুঝিয়ে দিল। বিমলা দম দেওয়া পুতুলের মতো ওইযে চলতে শুরু করল, একেবারে ঘরের ভেজানো কপালের গায়ে ধাক্কা খেয়ে উলটে পড়ার উপক্রম। বালা ধরে নাড়া দেওয়ার আগে ধড়াস করে ভেতর থেকে কেউ খিল খুলে পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে গেল। কোথায় গেল পরে জানলে চলবে।বিমলা ঘরের মেঝেতে হুড়মুড় করে পড়ে যাচ্ছিল সামলে নিল কোনভাবেই।

বিমলা ঘরের ভিতর ঢুকে দেখল স্বামী যেন মহারাজ। খাটের ওপর ধ্যানমগ্ন হয়ে বসে। মুখের অভিব্যক্তি দেখার জন্য টিমটিমেটার পলতে বাড়িয়ে দিল, রাগের বশে অনেকটা। কালি উঠে কাচ কালিতে ঢেকে গেল। বিমলার মনে হল, টিমটিমেটার লজ্জা বোধ আছে। মুখে কালো কাপড় বেঁধে ধিক্কার জানাচ্ছে। কেন অসহায় মেয়ের পক্ষ নিয়ে। হলে ওই রাজসাক্ষী হবে। যাইহোক, মেয়েটা এভাবে গা বাঁচিয় পালাল কেন সেটাই প্রশ্নের। পুরুষ মানুষের দিয়ে বিশ্বাস নেই। বিড়ালের মত এরা ছোঁক ছোঁক করে। জানতে আর বাকিনি। সরাসরি স্বামীর কাছে জানতে চাইল, তুমি মেয়েটার কী করেচো?

— আমি কি করেছি।

— তুমি ছাড়া আর কে ? কী সোন্দর কথা শোনো, আমি কি করিচি।

— তুমি কি যা তা বলছ।

— যা তাই বলচি। ঘরের মধ্যে কুস্তি করেচ দেখতে পাইনি ভেবেচ। পোথমেই দেখেচি। মশারির দড়ি ছেঁড়া কেন? ছাবালটার মশা কেমড়েচে সেদিকে হুসনি। একেবারে পাগল হয়ে গেচো মেয়েটার পাওয়ার জন্যে।

— তোমার কি হয়েছে বলত?

— আর কী বাকি রেখেচ যে হবে। সোকালে কলে মুখ দেখাতে পারব।

— মুখের কী হয়েছে?

— আমার মুখের আবার কি হবে। তোমার জন্যে তো মুখ দেখাতে পারবুনি।

— আমার জন্য তুমি মুখ দেখাতে যাবেই বা কেন। আমার মুখ থাকতে।

— আর মুখ নেড়ে কথা বলুনি। কলতলার মেয়েরা জানতে চাইলে বলব, আমার মদ্দ কী না ভালো কাজটি করেচে।

— তুমি না বললে ওরা জানবে কি করে?

— আমি একজন মেয়ে হয়ে , একটা মেয়ের এতো বড় ক্ষতি কি করে মুখ বুজে চেপে থাকি বলো। জানাজানি হলে আর বাইরে বে হবে মেয়েটার।

— তাহলে তো তোমার কপাল ভাঙবে।

— কি বললে?

— আমি বলছি কি পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করো। শীতের সময় এসে ঘরে ঢুকে তোমার আর ডাকিনি। হালকা আলোয় মনে হয়েছে মায় পোয় শুয়ে আছো। আমি কাপড় জামা ছেড়ে তোমাদের লেপের মধ্যে ঢুকে পড়ি। কখন ঘুমিয়ে পড়েছি হুস নেই।

— এদিকে হুস থাকবে কেন। পাশে যে একটা মানুষ পোড়া কাঠের মতো পড়ে আছে খেয়াল ছিলনা। একবারের জন্য গায়ে হাতটি দেবার নাম করোনি। তোমার সোঁসারে ঘানি টানতে টানতে গা হাতের কি দেখার হাল আচে। আমার দিকে আর টান থাকবে কেন!

— কে বলেছে তোমার এখনো আগের মত দেখতে নেই।তোমার মধ্যে আলগা চটক আছে। চোখ ফেরাতে পারি না।

— থাক থাক তোমার আর পিরিত দেখাতে হবে নে। ভেতরটা খুলে দেখাতে পারলে দেখাতুম।

— যাই থাক, খোলার নয় যখন খুলতে চেষ্টা কোর না। তোমার ভিতর বাহির বিলক্ষণ আমার জানা আছে। বিয়ের থেকে হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। শেষ কথাটি অবশ্যই মনে মনে আউড়েছে।

— দ্যাখো মন ভোলানোর চেষ্টা করুনি বলে দিচ্ছি। পাশে শুয়ে তফাৎ কিছু মনে হয়নি?

— না বলছি তো। শুইছি আর ঘুইমে পড়িছি।

— একবারটি গায়ে হাত দাওনি?

— দিলে ভালো হতো। দীর্ঘ এই সংসার জীবনের প্রথম ঐতিহাসিক ভুল করতুম। হায়রে কপাল পরশপাথর ছুঁয়ে দেখলুম না কেন। একই অমৃত ভেবেছিলুম।

— যতই কথা ঘোরাও হেস্তনেস্ত একটা করবই। সকলটা হোক।একটা মেয়ে হয়ে আর একটা মেয়ের সব্বানাশ হতে দুবুনি।

— বরং সেই ভালো। যখন প্রতিদ্বন্দ্বী করবে ঠিক করে নিয়েছ।আমার একটু অসুবিধা হবে এই যা। কাঁধ তো খালি রাখোনি। মাথায় তুলে রাখতে হবে এই আর কি।

— তাই বলি। জল তলে তলে অনেক দূর গড়িয়েচে। কোথায় রাখবে সে জায়গা আগাম ঠিক করে রেখেচ।

— সে তুমি যাই বলো। তোমার বিচারে ফাঁসিতে ঝুলতে রাজি। আসামীর শেষ ইচ্ছা এই কাল রাতটুকু তোমার সঙ্গে কাটাতে দাও। এতদিনের মধুর সম্পর্ক ভুল বোঝাবুঝিতে চিরদিনের মতো চূরমার হয়ে যেতে বসেছে। আমার কাছে তো মৃত্যুর সমান।

— না না। চরিত্তিরহীনের পাশে রাত কাটানোর হীনপবিত্তি মরে গেলেও হবেনে। আমার এক বাপে জন্ম দেচে জেনে রেকো।

— আচ্চা চরিত্রনামক বস্তুটা আজকের হারিয়েছি তোমার মনে হয়? তোমার দিকে তো আঙুল তুলতে পারব না। আসামীর কথা কেউ বিশ্বাস করবেই না।

— অতশত বুঝি না। তোমার সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছে হচ্ছে না। এখেনে দম বন্ধ হয়ে আসতেচে।

— আমারও।

— কি বললে?

— বলছি একটা রাত বরং প্রাণ ভরে মুক্ত বাতাস নিতে পারব। মনটা শক্ত করতে হবে তো গীতার সেই বাণী আউড়ে। তারপর – – – সব শেষ।

বিমলা এক মুহূর্ত আর দাঁড়াল না। ও যা বলে বলুক। বাইরে এসে কপাটে শিকল তুলে দিল। যাতে পালাতে না পারে। দাবায় বসে রাত কাটালো। ফুলসজ্জার আসরে আর যায়নি। এয়েরা আসর শেষ করে নবদম্পতির নিশ্চিতে থাকার ব্যবস্থা করে যে যার মতো চলে গেছে।

সকালে যাবতীয় বাড়ির কাজ সেরেছে বিমলা। মাথার মধ্যে দুশ্চিন্তা। রাতে কতটা বিপদসীমা ছাপিয়ে নদীর জল বয়ে গেছে। গাঙধারিতে জলের দাগ দেখলে বোঝা যাবে। সেটাই লক্ষ্য রাখতে হবে। আগে নতুন বউয়ের খুড়তুতো বোনকে খুঁজে বের করি। কোথাও দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। সন্দেহ আরো ঘোরতর হয়ে উঠল। রাতে কিছু একটা ঘটেছে, মন বলছে।
অনেক রাখঢাক করে নতুন বৌকে কথাটা বলতে বাধ্য হলো। ওরা কী ভাববে। নতুন কুটুমবাড়ির কারো চরিত্রের ঠিক নি। লম্পট প্রকৃতির সবাই। অনেক শান্ত গলায় বলল, বউমা তোমার বোন কোতায়, দেখতে পাচ্চি না তো?

— সে তো বাড়ি গেছে, কেন?

— কিচু বলে যায়নে?

— হ্যাঁ বলে যাবে না কেন।

বিপলার সন্দেহের আর কিছুই নেই। যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। ছিঃ ছিঃ, কী করবে এখন। মনে হচ্ছে যেন পুরুষ মানুষটার গলা টিপে সাবাড় করে দিই। এসব তো মনের কথা। আগ্রহ ভরে জানতে চাইল, তা কিছু বলে গেচে?

— ও-ই তো, কলেজের কী কাগজ জমা দেওয়ার দিন ছিলো। তাই ভোর ভোর চলে গেছে।

— না বৌমা ও ঠিক কথা বলেনি। বড়ো মেয়ে। তাও আবার কলেজে পড়ে। অনেক বোঝে। তাই ব্যাপারটা চেপে গেছে। ওকে বল না রাতে কী হয়েছিল। আমার নাম করে বলো, ভয়ের কিচ্চুটি নেই।

নতুন বউ আবার ফোন করল, ওদিক থেকে উত্তর এলো, কি বলবি বল দিদি।

— দেখ ফোন কাটবি না। রাতে কী হয়েছিল খুলে বলত। বিমলাদিকে বিমর্ষ দেখাচ্ছে। বেশ ভেঙে পড়েছে মনে হচ্ছে।

— ও সব যা ভাবছে কিছুই নয়। দাদাবাবু অনেক রাতে বাড়ি ফিরেছে। কখন ফিরেছে আমিও জানি না।ভেবেছিলাম বিমলাদি শুয়ে আছে ছেলের পাশে। এক লেপের মধ্যে আমার গা ঘেঁষে দাদাবাবুও ঘুমিয়ে পড়েছে। কী মনে করে আমার ঘুম ভেঙে যায়। মুখে হাত দিয়ে আমার সন্দেহ হয়। কানে হাত দিয়ে দেখি কিছু নেই। এয়োতী মেয়েদের নাকে কানে একটু তো সোনা রুপো থাকবে। বুকে হাত দিয়ে দেখি লোভে ভরা। ভীষণ ভয় পেয়ে যাই। মশারি টান মেরে ছিঁড়ে নিচে লাফিয়ে পড়ি। বাপ বেটার মাঝে পড়ে বলির পাঁঠার হাড়িকাঠে আটকে পড়ার অবস্থা। উদ্ধারেল পথ খুঁজে ঘরের কোণে কাঁপতে থাকি।

তখন কি জানি মনে হয়েছে দাদাবাবুও ভীষণ ভাবে ভয়ের মধ্যে আছে। একবার মা বলে আর সাড়াশব্দ নেই। খাট থেকে সশব্দে লাফিয়ে পড়ি। মশারির দড়ি ছিঁড়ে সন্দেহর পরিস্থিতি তৈরি করার দায় অস্বীকার করতে পারব না। কেন ওখানে ঘুমুতে গেলুম তাই ভাবি। বিমলাদিকে বলে দিও, সতীন হওয়ার ভয় নেই। দাদাবাবু কোন প্রকার চরিত্র নাশের চেষ্টা করেনি। বলে দিও দাদাবাবু ভালো মানুষ। সুযোগ বুঝে একসময় ঘুরে আসব।

শিবপ্রসাদ পুরকায়স্থ | Shibaprasad Purakayastha

New Bengali Poetry 2023 | কবিতাগুচ্ছ | মোহিত ব্যাপারী

New Bengali Poetry 2023 | কবিতাগুচ্ছ | বিপাশা চক্রবর্তী

New Bengali Poetry 2023 | কবিতাগুচ্ছ | দেবমঞ্জরী ঘোষ

New Bengali Poetry 2023 | কবিতাগুচ্ছ | রীনা তালুকদার

bengali story new | indian poems about death | 2023 new bengali story | 2023 new bengali story books for child pdf | 2023 new bengali story books for adults | 2023 new bengali story books | bengali story books for child | 2023 new bengali story books pdf | 2023 new bengali story for kids | 2023 new bengali story reading | short story | short story analysis | short story characteristics | short story competition | short 2023 new bengali story definition | short story english | short story for kids | short 2023 new bengali story generator | bengali story 2023 | short 2023 new bengali story ideas | short story length | long story short | long story short meaning | long bengali story | long 2023 new bengali story | long 2023 new bengali story instagram | 2023 new bengali story writing competition | story writing competition topics | story writing competition for students | story writing competition malayalam | story writing competition india | story competition | poetry competition | poetry competitions australia 2022 | poetry competitions uk | poetry competitions for students | poetry competitions ireland | poetry competition crossword | writing competition | writing competition malaysia | writing competition london | bengali story writing | bengali story dictation | writing competitions nz | writing competitions ireland | writing competitions in africa 2022 | writing competitions for high school students | writing competitions for teens | writing competitions australia 2022 | writing competitions 2022 | writing competitions uk | bengali article writing | bangla news article | bengali story news| article writing on global warming | article writing pdf | article writing practice | article writing topics | trending topics for article writing 2022 | what is article writing | content writing trends 2022 | content writing topics 2022 | Bangla Prabandha | Probondho | Definite Article | Article Writer | Short Article | Long Article | Bangla kobita | Kabitaguccha 2022 | Galpoguccha | Galpo | Bangla Galpo | 2023 new Bengali Story | Bengali Article | Shabdodweep Writer | Shabdodweep | Shabdodweep Founder | Shabdodweep Bengali Writer | Shabdodweep Bengali Story | Updated 2023 new Bengali Story | update 2023 new Bengali Story | 2023 new Bengali Story – top list | 2023 new Bengali Story – best story | 2023 new Bengali Story – top story | Best seller – 2023 new Bengali Story | Best seller 2023 – 2023 new Bengali Story | 2023 new Bengali Story – Best book

Leave a Comment