Interesting Bangla Golpo Lekha | Best Bengali Story

Sharing Is Caring:

কালো অধ্যায়ের ভেংচি – রানা জামান

অবশেষে রহস্যের সমাধান হতে যাচ্ছে আজকে। তবে কোনো গোয়েন্দা এই রহস্যের সমাধান করেনি। কোনো গোয়েন্দা-ই নিয়োগ দেয়া হয় নি। রহস্যের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাই ভিন্ন ভিন্নভাবে কাজ করে রহস্যের কিনারা করে ফেলেছে! বিস্ময়কর! রহস্যটা খুনের। কয়টা? এখনই সব বলে দিলে গল্প এগোবে কিভাবে!

গাজীপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের একটি রিসোর্ট। নাম আরবান ভিলেজ। একটি কটেজে ছয়জন বসে আছে পরস্পরের দিকে মুখ করে। এরা একে অপরের অতি পরিচিত। ছয়জনের মধ্যে দুজন মহিলা। একই পরিবারের বলা যেতে পারে। সময়মতো জানা যাবে এরা একে অপরকে কতটুকু চিনে, বা কেমন আত্মীয়। প্রত্যেকেই ভাবছে: নিশ্চয়ই সবাই আমার মতো ম্যাসেজ পেয়ে এসেছে। কিন্তু ম্যাসেজটা দিয়েছে কে? কেন এখানে আসতে বলেছে? কী ঘটবে এখানে?

কক্ষটায় সাউন্ডবক্স ও সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে। এই সাউন্ডবক্সের মাধ্যমে কার কণ্ঠ শোনা যাবে? কে দেখবে সিসি ক্যামেরারা মাধ্যমে? সাউন্ডবক্স ও সিসি ক্যামেরার বিষয়ে এই ছয়জনের কেউ কিছু জানে না। আধাঘণ্টা হলো ওরা এখানে এসেছে। এখনো কোনো চা বা নাস্তা আসেনি। সবাই চা’র তেষ্টা অনুভব করছে। তখন বেয়ারা রহিম চা ও টোস্ট নিয়ে ভেতরে ঢুকলো। ওর পেছনে ঢুকলো রিসোর্টের সহকারী ব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান। চা-বিস্কুট ও সহকারী ব্যবস্থাপককে দেখে কপালের ভাঁজ মুছে হাসি ফুটলো।
সহকারী ব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান বললো, ওয়েলকাম স্ন্যাক্স নিয়ে আসতে একটু দেরি হয়ে যাওয়ায় ক্ষমা চাচ্ছি সবার কাছে। কোনো কিছুর প্রয়োজন হলে ইণ্টারকমে জিরো ডায়াল করে চাইলেই হবে। বিল নিয়ে চিন্তা করবেন না। এডভান্স পেমেন্ট করা আছে।

এ কথায় ছয়জনের মাঝে মৃদু গুঞ্জন হলো ক্ষণকালের জন্য। দিলরুবা বললো, কে পেমেন্ট করেছে এসিস্ট্যাণ্ট ম্যানেজার সাহেব?
এসিস্ট্যাণ্ট ম্যানেজার মিজানুর রহমান বললো, আমি জানি না। ম্যানেজার স্যার আমাকে বলেছেন আপনাদের জানানোর জন্য। এই রিসোর্টে আপনাদের অবস্থান শুভ ও আনন্দময় হোক। এখন আমি আসি।
মিজানুর রহমান চলে গেলে রহিম বললো, আমি বাইরেই থাকবো। নাস্তা ও চা খাওয়া শেষ হলে কলবেল টিপলে আমি এগুলো নিয়ে যাবো।

নাদিরা বললো, আমাদের এখানে কেন নিয়ে আসা হলো?
রাজীব বললো, ভালোই হয়েছে। একটা উছিলায় আমরা ছয় ভাইবোন একত্রিত হলাম।
রেফায়েত বললো, এইদিনই বাবার হঠাৎ মৃত্যু হলো। বাবার মৃত্যুর আঘাত সইতে না পেরে মার হার্ট ফেইল করলো।
নাসির বললো, আজ মা-বাবার প্রথম মৃত্যু বার্ষিকী। ভুলে গেলাম কিভাবে?
দিলরুবা বললো, এখানে কেন আসলাম, সেই টেনশনে মনেই ছিলো না আমার!
মকবুল বললো, মধ্য বয়সে বাবার দ্বিতীয় বিয়েটা আমরা কেউ মেনে নিতে পারি নাই। তাই আমরা নতুন মাকে তো ঘৃণা করতামই; বাবার সাথেও কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। বাবা আমাদের জন্য কী করেছেন তা আমরা কেউ ভাবতেও পারি নাই।

পাঁচজন কিছু না বলে তাকালো বড় ভাই মকবুলের দিকে। মকবুল একটা দীর্ঘ শ্বাস গিলে বললেন, দ্বিতীয় বিয়ের আগে বাবা ভাসোলিগেশন মানে ভেসেক্টমি করিয়েছিলেন। বিস্ময়ে সবার চোখ গোল হয়ে গেলো! দিলরুবা বললো, তু-তুমি তা জানলে কিভাবে বড় ভাইয়া?
— বাবার মৃতদেহের পোস্টমর্টেম করার সময় জানা গেছে।
বিস্মিত রাজীব বললো, বাবার মৃতদেহের পোস্টমর্টেম করা হলো কেন বড় ভাইয়া?

তোরা তো জানিস বাবার মৃতদেহ একরাত রাখা হয়েছিলো হাসপাতালের হিমঘরে। হিমঘরের চার্জে থাকা ডাক্তার বাবার মৃতদেহ দেখে বললেন পোস্টমর্টেম করতে, তাহলে বুঝা যাবে বাবার মৃত্যুর আসল কারণ। চমকে আমি ছুটে গেলাম বাবার ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার হাফিজ ম্লান হেসে বললেন, আমারও তেমন সন্দেহ হয়েছিলো; কিন্তু বলি নাই; কারণ, আপনারা সবাই মৃতের ঔরসজাত সন্তান; আপনারা স্লো পয়জনিং করতে পারেন না; আপনাদের স্টেপ মাদারকে দেখে মনে হয়েছে ও তা করতে পারে না। ডাক্তার হাফিজের কথা শোনে ধাক্কা খেয়ে মনে মনে বললাম: এ কী বলছে ডাক্তার!

মকবুলের কথা শোনে পাঁচ ভাইবোন মাথা নিচু করে ফেললো। পাঁচজনই মনে মনে বলতে লাগলো: কী করলাম আমরা? ক’টা বছর বাবাকে ভুল বুঝে পলে পলে বাবাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিলাম!
ধরা গলায় মকবুল বললো, নতুন মা মৃত্যুর সময় আমাকে বলে গেছেন বিয়ের আগে বাবার শর্ত মোতাবেক উনিও টিউবেক্টমি করিয়ে ছিলেন যাতে কখনো গর্ভ ধারণ করতে না পারেন। ভেবে দেখ এখন, কত অবজ্ঞা আর অবহেলা করেছি নতুন মাকে। ভদ্রমহিলা এখনো বেঁচে থাকলে কতভাবে যে তাঁকে অপমান করতাম আমরা। বাবার মৃত্যুর পরদিনই তিনি হার্ট অ্যাটাকে মারা গেলেন।

দিলরুবা হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করলে সবাই ওর দিকে তাকালো।
মকবুল বললো, কী হলো? তুই কাঁদছিস কেন?
কাঁদতে কাঁদতে দিলরুবা বললো, আমি বাবাকে মেরে ফেলেছি।
তুই কিভাবে বাবাকে মারলি?
বাবাকে স্লো পয়জনিং করার জন্য আমি চা বানানোর দায়িত্বটা নেই। আমি প্রতিবার চায়ে এক ফোঁটা করে বিষ মিশিয়ে দিতাম।
কী বলছিস দিলরুবা!
প্রথম দিনের ঘটনা স্পষ্ট মনে আছে আমার বড়ভাই।

অনেক খোশ মেজাজ নিয়ে আবুল হায়ৎ বিছানায় আধশোয়া হয়ে আছেন। রেহানা মারা যাওয়ায় আর বিয়ে করবেন না ভেবেছিলেন। ছয় সন্তানকে নিয়ে বাকি জীবন কাটিয়ে দেবেন। তিন মেয়েকে বিয়ে দেবার পরে তিন ছেলেকে বিয়ে করিয়ে চলে যাবেন কোনো বৃদ্ধাশ্রমে। কিন্তু দশ বছরে পরে পাল্টে গেলো হিসাব। এক পার্টিতে সেলিনার সাথে পরিচয়টা কিভাবে যে প্রেমের দিকে গড়িয়ে তা তিনি বুঝতেই পারেন নি। বিস্ময়ের ব্যাপার হলো তালাকপ্রাপ্তা মহিলাটা ওঁর সব শর্ত মেনে নিলো! ছয় ছেলেমেয়ে কিছু না বলায় ভেবেছিলেন মেনে নিয়েছে। বিয়ের দিনতারিখ ঠিক হয়ে গেলো। সেই খুশিতেই আবুল হায়াৎ আপন মনে হাসছিলেন।
তখন দিলরুবা ঢুকলো কক্ষে। বিছানায় বাবার পাশে বসে বললো, বাবা, তুমি বাসায় থাকলে সারাদিনে তিন কাপ চা পান করো। আজ হতে আমার বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত তোমার তিন কাপ চা বানানোর দায়িত্বটা আমি নিলাম।
আবুল হায়াৎ মুচকি হেসে বললেন, ঠিক আছে আমার বড় মা!

দিলরুবা বললো, সেই দিন হতে আমি চা-এ বেলেডোনা মিশিয়ে দিতাম।
নাসির ভেউভেউ করে কাঁদতে কাঁদতে বললো, বেলেডোনায় এতো তাড়াতাড়ি মানুষ মরে না। বাবাকে স্লো পয়জনিং করে আমি মেরেছি। এতো বড় পাপ করে ফেললাম আমি!

বিস্ময়ে সবাই নাসিরের দিকে তাকালো। মকবুল বললো, তুই আবার স্লো পয়জনিং করলি কিভাবে?
বাবা ফের বিয়ে করছেন শুনে নাসিরের খুব রাগ হলো। ও মনে মনে পণ করলো: বাবা যেদিন সৎ মা নিয়ে আসবেন সেদিন হতে বাবাকে স্লো পয়জনিং করতে থাকবে। কিভাবে? বিয়ের দিন সকালে বাবাকে জাগিয়ে বললো, আজ থেকে আমি তোমার দাড়ি শেভ করে দেবো বাবা।

আবুল হায়াৎ মুচকি হেসে সম্মতি জানালেন। আবুল হায়াৎ একদিন পর পর দাড়ি কামাতেন। নাসির বাবার দাড়ি কামাতে শুরু করলো। প্রত্যেকবার দাড়ি কামানোর সময় থুতনির নিচে সামান্য কেটে যেতো, যা আবুল হায়াৎ বুঝতে পারতেন না। রেজরে লাগিয়ে রাখা বিষ কাটা স্থান দিয়ে ঢুকতে থাকলো শরীরের ভেতরে।
কাঁদতে কাঁদতে নাসির বললো, আমি বাবাকে মেরে ফেলেছি! মহাপাপ করে ফেলেছি মকবুল ভাইয়া!
এবার নাদিরা ফুঁপিয়ে উঠে বললো, তোমাদের স্লো পয়জনিং-এ বাবার মৃত্যু হয় নি, আমি মেরে ফেলেছি বাবাকে!
সবাই চমকে নাদিরার দিকে তাকালো। মকবুল বললো, তুই কী করেছিস?

আবুল হায়াতের ডাল খুব প্রিয়। ডাল থাকলে অন্য কোনো তরকারি না হলেও চলে ওঁর। বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করায় বাবাকে সহ্য করতে পারছিলো না ও। প্রতিশোধ নেবার উপায় খুঁজছিলো। তখন গুগল থেকে সার্চ করে জানতে পারলো মানুষকে স্লো পয়জনিং করে হত্যা করা যায়। বাবাকে ঘৃণার তীব্রতা এতো বেশি ছিলো যে পাপবোধও লোপ পেয়েছিলো ওর মন থেকে। ডালের মধ্যে বিষ মিশাতে শুরু করলো ও।

রাজীব দাঁড়িয়ে ভগ্নকণ্ঠে বললো, আমিও ওদের মতো সমান পাপী মকবুল ভাইয়া! আমিও বাবাকে স্লো পয়জনিং করেছি বড় ভাই!

বাবাকে স্লো পয়জনিং-এ হত্যার পরিকল্পনা নিয়ে রাজীব বাবার হাত ও পায়ের নখ কাটার দায়িত্ব নিলো। সন্তানেরা তাঁকে ভালোবেসে বিভিন্ন সেবার দায়িত্ব নিচ্ছে আবুল হায়াৎ খুশি হয়ে রাজীবে নখ কাটার দায়িত্ব নিলো। প্রতি শুক্রবারে নখ কাটতে হয়। রাজীব নখ কাটার সময় প্রতিবার পায়ের কোনো না কোনো আঙ্গুল সামান্য কেটে যেতো! ঐ কাটা অংশ দিয়ে এক ধরনের বিষ শরীরের ভেতরে ঢুকাতে থাকলো রাজীব।
শেষ রাজীব বললো, আমি স্লো পয়জনিং না করলে হয়তোবা বাবা এভাবে মারা যেতেন না। আমি মহাপাপ করে ফেলেছি মকবুল ভাই!

এবার রেফায়েত চিৎকার করে বললো, আমিও বাবাকে স্লো পয়জনিং করেছি! আমি মহাপাপ করে ফেলেছি!
রেফায়েত ডুকরে কাঁদতে থাকলে সবাই ওর দিকে তাকালো। রেফায়েত যা বললো তা এমন:

রেফায়েতও বাবার দ্বিতীয় বিয়েটাকে মেনে নিতে পারে নি। গুগলে ঘাটাঘাটি করে জানতে পারলো স্লো পয়জনিং করে মানুষকে হত্যা করলে ধরা পড়ার সম্ভাবনা কম থাকে। রেফায়েত সবার ছোট হওয়ায় বাবার খুব আদুরে ছিলো এবং সবসময় বাবার কাছে থাকতো। ও আগে থেকেই বাবার হাত ও পায়ের নখ কেটে দিতো। সে এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে বাবাকে স্লো পয়জনিং করতে লাগলো। মকবুল দাঁড়িয়ে বললো, বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করলেও আমাদের কথা ভেবে সন্তান না নেবার চিরস্থায়ী ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। অথচ বাবাকে না বুঝে সবাই নিজ নিজ অবস্থানে থেকে বাবাকে স্লো পয়জনিং করে তিলে তিলে হত্যা করেছি।

দিলরুবা বললো, তুমি তো কিছু করো নি ভাইয়া।
ম্লান হেসে মকবুল বললো, তোরা জানিস, বাবা ইনসুলিন নিতে খুব ভয় পেতেন। তাই আমি ইনসুলিন দিতাম। আমিও তোদের মতো বাবার হত্যাকারী!
তখন তিনজন কনস্টবল সহ ইন্সপেক্টর জহির কক্ষে প্রবেশ করলেন।
মকবুল একটা মোবাইল ফোন ইন্সপেক্টরের দিকে বাড়িয়ে ধরে বললো, এতে সকলের স্বীকারোক্তি রেকর্ড করা হয়েছে ইন্সপেক্টর সাহেব।

নাকানিচুবানি – রানা জামান

বাইরে হৈ চৈ আনন্দের, আর রোক্সানার মনে উৎকণ্ঠা নিরন্তর। ও কখনো সাহসী হয়ে উঠে, কখনো ভীত। কিছু একটা করা দরকার; কিন্তু সে কিছুই করতে পারছে না। মনে হচ্ছে ওর: ও যেন বাস করছে একটা বিচ্ছিন্ন দ্বিপে। মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়া হয়েছে, ল্যান্ডফোনটাও-কক্ষে একটা টেলিভিশন থাকলেও বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে ওয়াইফাই। কীয়েক্টা অবস্থা!

বেঁচে থাকতে হলে পালাতে হবে, এই সিদ্ধান্তটা নিতে পেরেছে রোক্সানা। কিন্তু পালাবে কিভাবে? দরজায় বাইরে তালা। ও উঠে আলগোছে দরজার ছিটকিনি আটকে দিলো। এবং সাথে সাথে ওর মনে হলো ও অনেকটা হয়ে গেছে স্বাধীন-এখন মা-বাবা বা অন্য কেউ ইচ্ছেমতো ঢুকে ওর মনের উপর খবরদারি করতে পারবে না। ও এমনভাবে কক্ষটাকে দেখলো যেন এই কক্ষে সে এই প্রথম ঢুকেছে। কক্ষটায় একটিমাত্র জানালা। জানালায় গ্রিল দেয়া আছে ও জানে। তবুও সে এগিয়ে গেলো জানালায়। পর্দা সামান্য সরিয়ে গ্রিল ধরে খানিক টেনে দেখলো খোলা যায় কিনা। নিজের পেশির দিকে তাকিয়ে নিজকেই বিদ্রূপ হাসলো রোক্সানা। সরে বিছানায় এসে বসলো। এই কক্ষ দিয়ে দরজা ছাড়া বাইরে যাবার অন্য কোন রাস্তা নেই।

কথাটা মনে হতেই রোক্সানা ঢুকলো বাথরুমে। বায়ুরন্ধ্রটা দেখে মুখটা উজ্জ্বল হয়ে উঠলো ওর। ছুটে গেলো বায়ুরন্ধ্রটার কাছে। স্ক্রু-ড্রাইভার দিয়ে খোলা যাবে। কিন্তু কোথায় পাওয়া যাবে স্ক্রু-ড্রাইভার? চলে এলো শয্যাকক্ষে। বিউটিবক্স খুলে নেল-কাটার নিয়ে দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকালো। সময় নাই! যা করার খুব দ্রুত করতে হবে। কমোডের উপর উঠে বায়ুরন্ধ্রের সকল স্ক্রু খুলে ফেললো একে একে। বায়ুরন্ধ্রের গ্রিলটা খুলে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ছেড়ে মনে মনে বললো: শেষ পর্যন্ত একটা পথ করা গেলো। সে উঁকি দিয়ে নিচে দেখার চেষ্টা করলো-চারতলা থেকে রাস্তার মানুষকে তেমন ছোট দেখা যায় না।

এবার নিচে নামার ব্যবস্থা করতে হবে। বায়ুরন্ধের গ্রিলটা নিচে রেখে দ্রুতই কক্ষে ঢুকলো রোক্সানা। বিছানার চাদরটা ফালিফালি করে মাথায় মাথায় গিট দিয়ে ঢুকলো ফের বাথরুমে। কমোডের গোঁড়ায় একমাথা বেঁধে চাদরের দড়ির বাকিটা বায়ুরন্ধ্র দিয়ে ফেলে দিলো বাইরে।

এখন রোক্সানার সাহস বেড়ে ডিঙ্গিয়ে যাচ্ছে আকাশ। সে ওড়নাটা গায়ে চমৎকার করে পেঁচিয়ে নিলো যাতে দড়ি বেয়ে নামার সময় সমস্যার সৃষ্টি না করে। কিছু টাকাও তো সঙ্গে নেয়া দরকার। এটা ওটা হাতড়ে যা পেয়েছে তা গুঁজে নিলো কোমরে। এবার দুঃসাহসের কাজটা করতে হবে ওকে। শেষবারের মতো বাথরুমে ঢুকার আগে শয্যাকক্ষের দিকে তাকালো রোক্সানা। গত পাঁচ বছর সে এই কক্ষটায় রাত কাটিয়েছে নিজের কক্ষ হিসেবে।

আর কি ফিরে আসতে পারবে এই শয্যাকক্ষে? আবেগে চোখের কোলে চলে এলো অশ্রুবিন্দু। সে হাতের পোছায় অশ্রু মুছে ঢুকে গেলো বাথরুমে। কমোডের উপর দাঁড়িয়ে বাইরে ছুড়ে দেয়া দড়ি টেনে এনে কোমড়ে প্যাঁচানো ওড়নার ভেতর দিয়ে বের করে ফের ছুড়ে দিলো বায়ুবন্ধ্র দিয়ে বাইরে। এবার বায়ুরন্ধ্রে উঠার পালা। বেশ কঠিন কাজ। আগে পা দিতে পারলে সহজ হতো। কিন্তু অনেক উঁচু থাকায় তা সম্ভব না।

দুই হাতে বায়ুরন্ধ্রের কিনার ধরে আস্তে আস্তে উপরে উঠে মাথা গলিয়ে দিলো বাইরে। উঁচুকে তেমন উঁচু মনে হচ্ছে না আর। বায়ুরন্ধ্র দিয়ে পুরো শরীর বের করে ঝুলে পড়লো দড়িতে। দড়ি ছেড়ে আস্তে আস্তে নামতে থাকলো নিচের দিকে। হঠাৎ বাথরুমে ঘট করে বিকট শব্দ হওয়াতে উপরে তাকালো রোক্সানা। সরসর করে দড়ি নিচে নামতে থাকায় বেশ ভয় পেয়ে গেলো। দড়ি ছিঁড়ে গেলো নাকি? একটা ঝাঁকি দিয়ে দড়ি নামা গেলো থেমে এবং সাথে সাথে এক ঝাপটা পানি পড়লো ওর মুখের উপর। উপরে তাকিয়ে দেখে কমোডটা আটকে আছে বায়ুরন্ধ্রের মুখে।

ব্রাশ ফায়ার – রানা জামান

মনের সুখে ভাটিয়ালি গাচ্ছে কদ্দুস। ওর বাম হাত লাঙ্গলের কটিতে এবং ডান হাতে একটা বাঁশের চিকন লাঠি। গানের ফাঁকে ফাঁকে হাই হাট হাট বলার সাথে যে বলদ একটু শ্লথ ওটার পাছায় খোঁচা মারছে লাঠি দিয়ে। তাতে বলদের চলার গতি বেড়ে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে তাকাচ্ছে সূর্যের দিকে। দুপুর হবার আগে আরেকটা চাষ দিতে হবে ক্ষেতে। পেট ভরে পান্তাভাত খেয়ে এসেছে; তাই পেট নিয়ে চিন্তা নাই! হুকা টানতে পারলে আরো জোশ পেতো; আশেপাশে কোনো হাল চলছে না, বা কেউ কোনো ক্ষেতে কাজও করছে না- ও-ও হুকা নিয়ে আসেনি। হুকা টানার তৃষ্ণা ভুলতে জোরে ‘ও মাঝি রে!’ গানে লম্বা টান দিয়ে দক্ষিণে তাকিয়ে সামনের পাড়া থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখে থেমে গেলো ওর গান। ও থামায় থেমে গেলো হালও।

দূরে লোকজনের ছুটাছুটি দেখে কদ্দুস ভাবলো সবাই আগুন নিভাতে যাচ্ছে। ওর-ও যাওয়া দরকার। হাল থেকে লাঙ্গলটা খুলে দুই বলদের কাঁধের জোয়াল একটু ঢিলা করে দৌড়াতে শুরু করলো আগুনের উৎসের দিকে। কাছাকাছি গিয়ে উল্টো পরিস্থিতি দেখে বিস্মিত হয়ে একজনকে জিজ্ঞেস করলো, কী ব্যাপার? তোমরা আগুন না বুজাইয়া দৌড়াইয়া এদিকে আইতাছো ক্যান?
দৌড়ানো না থামিয়ে একজন বললো, পাক বাহিনী আয়া পড়ছে। মতিন চাচার বাড়িতে আগুন দিছে। বাড়িত গিয়া বৌ পোলাপান নিয়া পালাও!

কিন্তু কদ্দুস না পালিয়ে এগিয়ে যেতে থাকলো ওদিকে। ও মনে মনে বললো: পাক বাহিনী কী করতাছে দেখতে হইবো! কদ্দুস বাড়িটার কাছাকাছি গেলো। অনেক লোক দাঁড়িয়ে আছে বাড়িটার সামনে।
একজন কথা বলছে সবাইকে উদ্দেশ্য করে, তোমাদের কুনু ডর নাই। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আমাদের ভাই। আমাদের সাহায্য করতে আসছে। মতিন পাকিস্তানের শত্রু। এই গ্রামে পাকিস্তানের আরো কুনু শত্রু থাকলে নাম কও। আইজ আমরা সবাইকে উচিত শিক্ষা দিয়াম।

গ্রামের লোকেরা কেউ কিছু না বললে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মেজর আকরাম পাঠান লোকটির কাছে এসে বললো, কোউ কুচ নেহি বলরাহারে। দ্যান উই উইল কিল অল অব দেম!
মসজিদের ইমাম মৌলানা ছানাউল্যা পায়ে পায়ে এগিয়ে এলো ওদের কাছে। মেজরকে একবার দেখে এগিয়ে গেলো লোকটার দিকে। লোকটাকে ও চিনে। রাউতি ইউনিয়ন বোর্ডের প্রেসিডেন্ট জহির উদ্দিন।
মৌলানা ছানাউল্যা জহির উদ্দিনের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বললো, আফনের ভুল হইতাছে চেয়ারম্যান সাব। এই গেরামে কুনু পাকিস্তানের শত্রু নাই। অহনো কেউ মুক্তিযুদ্ধে যায় নাই।

মেজর আকরাম কিছু কিছু বাংলা বুঝে। সে হোলস্টার থেকে পিস্তল বের গুলি করে দিলো ছানাউল্যাকে। গুলিটা লাগলো ছানাউল্যার কপালের মাঝখানে। তৎক্ষনাৎ ছানাউল্যা মারা গেলেন। ওর লাশটা কাটা কলাগাছের মতো পড়লো জহির উদ্দিনের পায়ের কাছে। ভয় পেয়ে এক চিৎকার দিয়ে দুই পা পিছিয়ে গেলো জহিরউদ্দীন।

তখন দুটো পাঞ্জাবি সেনা আব্দুল মতিন ও তাঁর স্ত্রী কুলসুমকে টেনে নিয়ে এলো বাড়ির বাইরে। কুলসুম মুখে শাড়ির আঁচল দিয়ে কাঁদলেও আব্দুল মতিন নির্বিকার। তিনি তাকিয়ে আছেন জহির উদ্দিনের দিকে।
মেজর আকরাম জহির উদ্দিনকে বললো, আস্ক হিম হোয়ার হিজ সান।

— ইয়েস স্যার!

বলে ভয়ার্ত জহির উদ্দিন এগিয়ে গেলো আব্দুল মতিনের দিকে। আব্দুল মতিনের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করলো, তোমার পোলা কোথায় আছে না কইলে ওরা তোমাদের দুই জনরে মাইরা ফালাইবো। তোমার একটা মাইয়া আছে না? হে কই?

তখন আব্দুল মতিন হাউমাউ করে কেঁদে দিলেন। স্বামীকে ডুকরে কাঁদতে দেখে কুলসুমকে ডুকরে কাঁদতে লাগলেন। কিছু বুঝতে না পেরে জহির উদ্দিন জিজ্ঞেস করলো, কী হইলো? অমন কইরা কান্দাছো ক্যান?
কান্নাজড়িত কণ্ঠে আব্দুল মতিন বললেন, আমার মাইয়াডা ডরায়া উগারের নিচে লুকাইছিলো। ঘরে আগুন দেওয়াতে পুইড়া মইরা গেছে।

আব্দুল মতিনের কথা শুনে মেজর আকরাম এগিয়ে এলো ওঁর দিকে। সামনে এসে জিজ্ঞেস করলো, টোমার ছেলে কোটায়?
আব্দুল মতিন বুঝতে পারলেন পাক বাহিনীর এই সৈন্যরা ওদের মেরে ফেলবে। আগুনে পুড়ে মেয়েটা মারা গেলো। ছেলে যুদ্ধ থেকে বেঁচে ফিরতে পারবে কিনা আল্লাহ জানেন। এরা দেশের শত্রু, বাঙালির শত্রু। অস্ত্র না থাকায় এদের হত্যা করতে না পারলেও ঘৃণা ছুড়তে পারবেন। এই ভাবনা ভাবার সাথে সাথে মন থেকে মৃত্যুভয় উধাও হয়ে গেলো আব্দুল মতিনের।

আব্দুল মতিন প্রতিটি শব্দে জোর দিয়ে বললেন, আমার পোলা শহীদ যুদ্ধে গেছে। দেশের জন্য যুদ্ধ করতে গেছে। মেজর আকরাম হো হো করে হেসে দিলো। হাসি থামিয়ে বললো, তোমার সান আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে কী করিবে? পাকিস্তানি সেনাবাহিনী অনেক অনেক শক্তিশালী। আমাদের কাছে একে ফরটি সেভেন আছে। তোমার সানের কাছে কী অস্ত্র আছে?

আব্দুল মতিন খুব বুদ্ধি খাটিয়ে উত্তর দিলেন। তিনি বললেন, বাংলার দামাল ছেলেদের কাছে সাহস আছে। আর আছে বঙ্গবন্ধুর সাত-ই মার্চের ভাষণ।
মেজর আকরামের রাগ উঠে গেলো চরমে। সে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সৈনিকের একে ফরটি সেভেন রাইফেলটা নিয়ে বেয়নেটটা ঢুকিয়ে দিলো আব্দুল মতিনের পেটে। বেয়নটটা টেনে বের করতেই আব্দুল মতিনের রক্তাক্ত দেহটা পড়ে গেলো সেখানে। এক চিৎকার দিয়ে কুলসুম হানাদার সৈনিকের হাত থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে এদিকে ছুটে আসতে থাকলেন। তখন মেজর আকরাম হুকুম দিলো, ফায়ার!
সাথে সাথে সৈনিকরা কুলসুমকে ব্রাশ ফায়ার করলো। চার সৈনিকের একে ফরটি সেভেনের ব্রাশ ফায়ারে কুলসুমের রক্তাক্ত মরদেহটা আব্দুল মতিনের পায়ের কাছে পড়ে গেলো। চারদিকে দাঁড়িয়ে থাকা গাঁয়ের লোকগুলো হয়ে গেলো হতভম্ব।

না বলা কথা – রানা জামান

যুদ্ধ চলছে, তুমুল যুদ্ধ চলছে ক’দিন যাবৎ; থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে আকবর।একাই চালিয়ে যাচ্ছে যুদ্ধ। নিজের মনের সাথে যুদ্ধ করছে ও। যুদ্ধে ব্যস্ত থাকায় সারারাত ঘুম হয়নি। কিন্তু ঘুম দরকার। সকালে একটা সিডেটিভ খেয়ে গেলো গভীর ঘুমে। কিন্তু ঘুম পুরা হবার আগেই ডাক পড়লো ওর।

সকাল আটটায় বাহির থেকে প্রথম ডাকটা এলো, আকবর…

ঘুম ভাঙল না আকবরের। ভোরের দিকে যে ঘুমের ঔষধ খেয়ে ঘুমিয়েছে, ওর কি এক ডাকে ঘুম ভাঙ্গে? এবার দুটো ডাক এলো; কিন্তু ঘুম ভাঙল না আকবরের।

তৃতীয় ডাক দেবার আগেই আকবরের বড় ভাই নেকাব্বর আলী বাড়ির বাইরে এসে বললেন, এইভাবে ডাকাডাকি না কইরা তুমি ঘরে গেলেই পারো লুৎফর!

লুৎফর বললো, ও এখনো ঘুম থেকে উঠে নাই বড় ভাই?

না লুৎফর!

কী করে রাত জাইগা ও?

কী জানি কী করে! তোমার কী জরুরি দরকার ওরে?

কিছুটা বড় ভাই।

তাহলে ঘরে গিয়া ওরে জাগাও যেভাবে পারো। আমি হাটে যাইতাছি।

নেকাব্বর চলে যাচ্ছেন নিজ গন্তব্যের দিকে। লুৎফর ঢুকলো বাড়ির ভেতরে। আকবরের কক্ষটা আলাদা। আকবরের কক্ষের দরজা ভেজানো। লুৎফর বারান্দায় উঠে আকবরের কক্ষের দরজা খুলে ঢুকলো ভেতরে। আকবর কোলবালিশ আঁকড়ে ধরে উপুড় হয়ে বেঘোরে ঘুমুচ্ছে। ওর গায়ে ধাক্কা দিয়ে ডাক দেবার জন্য ডান হাত বাড়িয়েও ফিরিও নিলো লুৎফর।একটা দুষ্টুমি করার ইচ্ছে জেগে গেলো ওর মনে। সংলগ্ন ওয়াশরুমে ঢুকে মগে করে পানি এনে আকবরের মাথার কাছে দাঁড়িয়ে মুখ টিপে একবার হেসে ঢেলে দিলো মগের পুরো পানি আকবরের মাথায়।

নাকে-মুখে পানি ঢুকায় কাশতে কাশতে ধড়ফড়িয়ে বিছানায় উঠে বসলো আকবর। পানি ঢালার জন্য বকা দিতে যাবে, তখন লুৎফরকে দেখে মুখ বন্ধ করে দুই হাতে মুখমণ্ডলের পানি মুছে বললো, সারারাত ঘুমাতে পারি নাই। তাই ফজরের আগে ঘুমের ঔষধ খেয়ে শুইছিলাম। কী খবর বন্ধু? কোনো জরুরি বিষয়?

সিলভিয়াকে দেখতে আসছে আজ।

সিলভিয়া কে?

লুৎফর আকবরকে মারার জন্য ডান তুলে বললো,সিলভিয়াকে চিনিস না! আমার ছোট বোন!

হঠাৎ ঘুম থেকে উঠলাম, তাই মনে আসছিলো না!

কী হয়েছে ওর?

ওকে দেখতে আসছে আজ।

ওকে দেখতে আসছে মানে?কে দেখতে আসছে? ও আগে ওকে দেখে নাই?

ওর বিয়ে দিতে হবে না? ওকে দেখতেই নেত্রকোণা থেকে ছেলেপক্ষ আসছে।

কথাটা শোনা মাত্রই আকবরের মাথা ঝিম ধরে উঠলো। সে পড়ে গেলো বিছানায়। লুৎফর ভয় পেয়ে গেলো।গায়ে ধাক্কা দিয়ে বুঝতে পারলো জ্ঞান হারিয়েছে আকবর! কী করবে বুঝতে না পেরে একবার দরজা দিয়ে বাইরে তাকালো। কাউকে দেখতে না পেয়ে মগটা নিয়ে ফের ওয়াশরুমে ঢুকলো। এবার মগের পানির পুরোটা গায়ে না ঢেলে এক আঁজলা পানি তুলে ছিটিয়ে দিলো আকবরের মুখে।

আকবর ফের উঠে বসে জিজ্ঞেস করলো, আমি কোথায়?

এবার লুৎফরের রাগ হলো খানিকটা। একটু কণ্ঠ চড়িয়ে বললো, তামাশা করছিস ক্যান? ছেলেপক্ষ দুপুরে আসছে। তোকে নিতে আসলাম সাহায্য করার জন্য। না গেলে না কর, আমি চলে যাবো!

আকবর এবার বললো, আগে ছেলে দেখতে হয়। ছেলে পছন্দ হবার পর না মেয়ে দেখাতে হয়!

ছেলে আমাদের পছন্দ হয়েছে।

আমাকে না নিয়েই সিলভিয়ার জন্য ছেলে দেখে পছন্দ করে ফেলেছিস তোরা! তাহলে আমার দরকার কী! আমি যাবো না!

কী মুস্কিল! আমরা ছেলে দেখি নাই।

এই না বললি দেখেছিস!

ছবিতে দেখেছি।

ছবিতে দেখেই পছন্দ করে ফেললি!কী আশ্চর্য!

সমন্ধটা এনেছে আমার বড় মামা।

যেই আনুক ছেলের খোঁজ-খবর নিয়েছিস?

আজকে ওরা সিলভিয়াকে দেখে যাক, তারপর ছেলের খোঁজ খবর নিতে থাকবো।

তোরা গাড়ি উল্টা চালাতে চাচ্ছিস। এতে আমার সায় নাই!

তোর কী হয়েছে বল আকবর? সেই প্রথম থেকেই না না করে যাচ্ছিস। তুই কি চাচ্ছিস না সিলভিয়ার বিয়ে হোক?

না চাচ্ছি না!

কী বলছিস তুই! তোর ছুটি শেষ হবে কবে?

পরশু?
তুই খুলে বল, কী সমস্যা তোর? তোর জন্য মেয়ে দেখবো?

দরকার নাই!

তাহলে চল।

না..মানে?
আবার মানে মানে করছিস কেন?

ছেলেপক্ষকে আসতে মানা করে দে।

কোনো কারণ ছাড়াই?

আমার না বলা কথা থেকে কারণটা খুঁজে বের কর!

রানা জামান | Rana Zaman

New Bengali Poetry 2023 | কবিতাগুচ্ছ | কল্যাণ সুন্দর হালদার

Best Bengali Poetry 2022 | কবিতাগুচ্ছ | নীলমাধব প্রামাণিক

New Bengali Story 2023| লোকের কথা | মনসুর আলি

Top Bengali Poetry 2022 | সুশান্ত সেন | কবিতাগুচ্ছ

Short bengali story | Bengali story pdf | pratilipi bengali story | Short Stories for Children | English Stories for Kids | Moral Stories for Kids | story in english | story hindi | story book | story for kids | short story | story for girls | short story in english | short story for kids | bangla golpo pdf | Bangla golpo pdf | Bangla golpo story | bangla romantic golpo | choto golpo bangla | bengali story | Sunday suspense golpo | sunday suspense mp3 download | suspense story in hindi | suspense story in english 200 words | Suspense story in english | suspense story in english 300 words | Suspense story examples | suspense story in english 100 words | suspense story writing | very short suspense stories for students | Interesting Bangla Golpo Lekha | Top Bangla Golpo Online Reading | New Read Online Bengali Story | Top Best Story Blogs | Best Story Blogs in pdf | Sabuj Basinda | High Challenger | Famous Bangla Golpo Online Reading | Shabdodweep Read Online Bengali Story | Shabdodweep Writer | Bangla Golpo Online Reading pdf | Famous Story – Interesting Bangla Golpo Lekha | Pdf Interesting Bangla Golpo Lekha | Interesting Bangla Golpo Lekha App | Full Bangla Golpo Online Reading | Bangla Golpo Online Reading Blogs | Best Story Blogs in Bengali | Live Bengali Story in English |Bangla Golpo Online Reading Ebook | Full Bangla Galpo online | Interesting Bangla Golpo Lekha 2024 | New Bengali Web Story – Episode | Golpo Dot Com Series | Interesting Bangla Golpo Lekha Video | Story – Interesting Bangla Golpo Lekha | New Bengali Web Story Audio | New Bengali Web Story Video | Interesting Bangla Golpo Lekha Netflix | Audio Story – Interesting Bangla Golpo Lekha | Video Story – Interesting Bangla Golpo Lekha | Shabdodweep Competition | Story Writing Competition | Bengali Writer | Bengali Writer 2023 | Trending Bangla Golpo Online Reading | Recent Interesting Bangla Golpo Lekha | Top Interesting Bangla Golpo Lekha | Popular New Bengali Web Story | Best Read Online Bengali Story | Read Online Bengali Story 2023 | Shabdodweep Bangla Golpo Online Reading | New Bengali Famous Story | Bengali Famous Story in pdf | Modern Online Bangla Galpo Download | Bangla Golpo Online Reading mp3 | Horror Adult Story | Read Online Bengali Story Collection | Modern Online Bangla Galpo mp4 | Modern Online Bangla Galpo Library | New Bengali Web Story Download | Full Live Bengali Story | Bengali Famous Story 2023 | Shabdodweep Bengali Famous Story | New Bengali Famous Story | Bengali Famous Story in pdf | Live Bengali Story – audio | Bengali Famous Story – video | Bengali Famous Story mp3 | Full Bengali Famous Story | Bengali Literature | Shabdodweep Magazine | Shabdodweep Web Magazine | Live Bengali Story Writer | Shabdodweep Writer | Story Collection – Modern Online Bangla Galpo

Leave a Comment