তুমি এলে কৈ
- সুভাষ নারায়ণ বসু
আষাঢ় গেল শ্রাবণ এলো
তুমি এলে না
পথ পানে চেয়ে বসে আছি
আজও দেখা পেলাম না ।
মেঘবালিকারা ভেসে বেড়ায়
সুদূর আকাশে বাতাসে
তোমার খবর দেয়নি তারা
ক্ষণিক এসে আমার পাশে ।
প্রকৃতির বুকে ঝরিছে পড়ে
শ্রাবণের বারিধারা
তোমার বিরহে ব্যকুল মন
কেন জানি দিশাহারা ।
মাঠ ঘাট রাস্তা সবই
বর্ষার জলে থৈ থৈ
নিশুতি রাত করে বিদ্রুপ
তুমি এলে কৈ ।
সাফল্য পেতে
- সুভাষ নারায়ণ বসু
জীবন সংগ্রামে পথে বেড়িয়ে
রাস্তায় হয়েছিল দেখা
পার হতে হবে অনেকটা পথ
তুমি আমি নই একা ।
হাত ছাড়া আর নেই হাতিয়ার
পা ছাড়া নেই যানবাহন
জীবন যুদ্ধে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে
জয় করবো সবাকার মন ।
তখন যদি আসে বাধা
অদৃশ্য কোন সংকেতে
পিছন ফিরে তাকাবো না তবু
এগিয়ে যাব সাফল্য পেতে ।
আশার আলো
- সুভাষ নারায়ণ বসু
তুমি এসে সুইস টিপলে
সারা ঘরময় ছড়িয়ে পড়লো আলো
অন্ধকারে বসে ছিলাম একা
এখন আমার লাগছে ভীষণ ভালো ।
এমনি করে হাজার প্রদীপ জ্বালো
দূর করো আমার সব আঁধার
ঘুচিয়ে দাও সকল মলিনতা
আশার আলো দেখাও আবার ।
তুমি থেকো পাশে চিরকাল
হয়ে মোর ভবের কাণ্ডারি
জীবন সংগ্রামে সহযাত্রী হয়ে
পথভ্রষ্ট এই পথিকের দিশারী ।
দৃশ্যপট
- সুভাষ নারায়ণ বসু
আমি কবি, শিল্পী নই
তা যদি হতাম তাহলে ক্যানভাসে
তুলির টানে, সুন্দর রঙের প্রলেপ দিয়ে
তুলে ধরতাম সেসব ছবি ---
রাঙামাটির দেশে মেঠো পথের গা ঘেঁষে
দূরপাল্লার বাসে যেতে যেতে যা আমাকে নাড়া দেয়
মুগ্ধ বিস্ময়ে দুচোখ ভরে
তাড়িয়ে তাড়িয়ে দেখবার জন্য ।
যেমন,কয়েকটি উলঙ্গ শিশু
সারা গায় ধুলো মেখে ছুটোছুটি করে
মনের আনন্দে খেলা করছে,
একটা ছোট্ট বাচ্চা মায়ের আঁচল ধরে টেনে
খালি বিরক্ত করছে ; মা বকছে শিশুটি কাঁদছে
পর মুহূর্তেই মা তাকে কোলে তুলে নিয়ে
মাতৃদুগ্ধ পান করাচ্ছে মুখে আদরের চুমু খাচ্ছে
আর শিশুটির চোখে মুক্তার মতো জলের ফোঁটা
অথচ কী পরিতৃপ্তির হাসি
যেন ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখার মতো ।
কখনও দেখেছি গাছের ছায়ায় মাদুর পেতে
সারাদিনের খাটাখাটনির পর একদল লোক
মনের সুখে বিড়ি টানতে টানতে তাস খেলছে
শাল মহুয়ার বনের পাশ দিয়ে যাবার সময় আবার দেখেছি আদিবাসী মেয়েরা
পরস্পরের কোমরে হাত দিয়ে ঝুমুর নাচছে ----
কী তার ভঙ্গি !
অদূরে কৃষ্ণচূড়া লালে লাল হয়ে হাতছানি দেয়
নির্বাক দৃষ্টি কাছে টানে
রাঙামাটির পথ ধরে মনের আনন্দে ঘরে ফেরা
দুটি প্রেমের কুসুম ।
এমনি আরো কতো কী দৃশ্যপট হাজির হয়
আবার চোখের নিমেষে মিলিয়ে যায়
শুধু রেখে যায় মনের ক্যানভাসে তার প্রতিচ্ছবি ।
শব্দ
- সুভাষ নারায়ণ বসু
বুকের ভিতর কে যেন হাতুড়ি পেটাচ্ছে
ঢিপঢিপ শব্দ
গড়ে তুলছে শব্দের পাহাড় ।
অথচ একটি শব্দের জন্য
আমি হাতড়ে মরি
তোমার আসার ।
ঘড়ির টিকটিক আওয়াজ
বন্যপ্রাণীর চিৎকার
শব্দের সাগরে ডুবে যাই ।
চমক ভাঙায় মৃদু শব্দ
অন্ধকারের বুক চিরে
তোমার চলে যাবার ।
সব কবিতাই খুব ভালো লাগলো
ReplyDelete