[সেরা বাংলা কবিতাগুচ্ছ ২০২২]
[১ম সেরা]
[মার্চ ১ম সংখ্যা] [পঠন / দর্শন সংখ্যার ভিত্তিতে বিচার]
[১ম সেরা]
[মার্চ ১ম সংখ্যা] [পঠন / দর্শন সংখ্যার ভিত্তিতে বিচার]
রঙ ছটা
- তন্ময় দাস
ডাকেরে বসন্ত জাগিতে দোলে
ডালে ডালে লাগিলো দোল, শিমুলের ফুলে।
বসন্ত খেলিছে দোল আবিরের শনে
মাদোলে উঠিলোরে বোল - মহুয়ার বনে।
মাতিলোরে রং মেখে- মহুয়া, শিমুল
যৌবন সব নামিলোরে, খোঁপায় বেঁধে ফুল।
মাতিলোরে কুহু- কেকা দোলের দিনে
নাচিছেরে রাধিকার সখা - একলা কুঞ্জ বনে।
ঘুঙুর পড়ি পায় - গুঞ্জর তুলি
ছন্দে নাচে দোল পূর্ণিমায় - খঞ্জর ভাঙি।
নিধিবন তায় আনন্দে ধায় - যমুনা ডিঙি।
প্রেয়সী ছোটে তায় -
বসন্ত মঞ্জরির আবির মেখে গায়।
ও বসন্ত, একটু দাড়াও
- তন্ময় দাস
ও বসন্ত তুমি না, প্রেমের চিঠি বাও?
একটি চিঠি আমার জন্যে - তুমি চাও
ভ্রমরের কানে তুমি গুঞ্জর তুলি
মালঞ্চ, মাধবিতে সখা প্রেম বুলি
নিমের ডালের টুনটুনিরে একটু সুধাও।
ও বসন্ত তুমি না, প্রেমের চিঠি বাও?
শূন্য এ হৃদয় পড়ে, বাহারের পাতা পরে
ও বসন্ত বাতাস তুমি, কেন বিরহের গান গাও?
মন আমার অচঞ্চল, চঞ্চল এ ফাগুনে
এ বুকে প্রেম বাও, জ্বলি প্রেম আগুনে।
বন্য বেলি মাতাল, তার সুগন্ধের আবেশে
আমার কেন হাহাকার, পূর্ণ এ বুকে।
ও বসন্ত তুমি না, প্রেমের চিঠি বাও?
তবে কেন এলো না, আমার প্রিয়র নাও?
বসন্তে ফুটলো গোলাপ, বাহারে বাহারে
ও বসন্ত, রেখেছি একটি গোলাপ দেব বলে তারে।
কেউ তো নিলো না ফুল ; দাড়িয়ে আছি পাড়ে
ও বসন্ত একটু দাড়াও ; দিও এ ফুল তারে।
দগ্ধ জ্যোৎস্না
- তন্ময় দাস
ও প্রিয়ে, দগ্ধ আমি তোমার প্রেমের মরীচিকায়
স্তব্ধ চয়নে ব্যাকুল আমি, আমার গোলাপ বাগিচায়।
খোঁপায় তোমার কৃষ্ণচূড়া ; লাজে মরে বকুল।
ও হিয়ে, মগ্ন আমি তোমার দক্ষিণের জানালায়
দক্ষিণ বাতাসে ছুঁতে তোমায় - আমার আঙিনায়।
বেণীর বাঁকে শিমুল তোমার; আহত শালুক।
হিজলের শেষ সীমানায় আমি -
তুমি অন্ত ঢেউ
ক্ষয়িত হৃদয় আমার -
তটে নেয় তো কেউ।
মন আকাশ আমার গুরু গম্ভীর -
অন্তহীন বরিষে
ও প্রিয়ে,
কথা দিয়েও এলে না তুমি
তাইতো ওঠেনি চাঁদ আমার আকাশে।
জ্যোৎস্নার মিলন আজ সাগরের শেষ সীমানায়
বসন্তের বাসন্তী তুমি আমার আঙিনায়।
রব জেগে তোমার আশে - পূর্ণিমার দোলের এ রাতে
নিধুবন জেগে রয় যেমন - রাধিকার প্রাতে।
চাঁদ আজ এ রাতে কাম সুরায় মগন
ও প্রিয়ে,
আজো এলে না তুমি -
আজ যখন আমার অন্তিম যাত্রার লগন।
প্রকৃতির খুশি
- তন্ময় দাস
নব দিগন্তে আজি উচ্ছ্বাসিত আলোরে
নতুন আশায় - বায়ুর টানে ক্ষণে ক্ষণে মন নাচেরে।
কোন ক্ষণে - বসন্ত এসেছেরে, ডালে ডালে মুকুলে
কোকিল রে গেয়ে চলে আকুল ব্যাকুলে।
সন সন শব্দে কলরিত গহন বন
ছুটে চলে দূরে আরো দূরে - নিয়ে বায়ুর বাহন।
বসন্তের তরু তলে যায় আশা ছুটে চলে
ঝুরু ঝুরু শব্দে পরে পাতা খসে দলে দলে
উতলা মন - কী যে কারণ, খুঁজে না পাই
বাতাসের তালে তালে দোলেরে মন,
ইচ্ছে হয় সে- আমি এক হয়ে যাই।
কতক ডাক আসে, আয় ছুটে আয়
নতুনের ত্বরে পুরাতনে জানাতে বিদায়।
রবির কিরণ ছটা দ্বারে দ্বারে আসে
ঘুমন্ত বালকেরে দেখে মনে মনে হাসে।
আয় ছুটে - আয় বালক সকালের মাঠে
খেলবে তরুলতা, তুমি - আমি আর চারুলতা
ছড়ায়ে ছিটায়ে রবে পাখির কূজন -
আর, ফুলের সৌরভ হেথা হোথা।
নতুন পল্লবে ঢাকা, দূরের ওই বট শিখা
নাঙল লয়ে দূরের মাঠে যায় যে চাষা
জলের ছল ছল - বয়ে যে যায়
নতুন দিগন্তে আজ বসন্তরে - জাগরে তোরা জাগ
ওরে - সুবোধ বালকের দল,
নিয়ে যা হাসি, খুশি করে ভাগ ভাগ।
চিঠির উত্তরে ফাল্গুন
- তন্ময় দাস
এ ফাল্গুন - অলি গুন গুন
ভ্রমর গুঞ্জরায়
ছাড়ি ছাড়ি রেণু - বাজায়ে বেণু গেয়ে চলে ভ্রমরায়
ফুলে ফুলে অলি- পথ ভোলে খালি আনন্দে আত্মহারায়
রঙ লেগে মনে - প্রেম ক্ষেতে বুনে
জ্বলে প্রেম আগুন
এ ফাল্গুন।
প্রেমিক খেলে যায়, দোলের রং খেলায়
এ দোলনায় - দুলে দুলে যায় - স্মৃতির লহমায়।
একাকী ভেবে যাই - বাঁশবন মর্মরি গায়
হাওয়ায় পাতারা খসে যায় -
অজানা চিঠির খামে।
স্মৃতির কলমের ঘায় -
হৃদয়ের ছেঁড়া পাতায়-
এ লেখা চিঠি, উড়ে চলে যায়-
প্রেমিক পাঠিয়েছে যার নামে।
এই তার গুন - এ ফাল্গুন
যেখানে হাওয়ারা ছোটে
নেচে নেচে গায় বিরহিণীর বেদনায়
তার প্রেমিক আসবে না তার কাছে
আশা নিরাশায় - জল বয়ে যায়,
দুটি আখির ঝরনায়
করে প্রেম খুন -
এ ফাল্গুন।
No comments:
Post a Comment