গাংশালিকের বুদ্ধি
- গৌতম তালুকদার
আমার শৈশব কেটেছে কুমার নদীর পারে (বর্তমান বাংলা দেশ) মনে পরে গাংশালিকের কথা যখন নদীর জল কমে আসত অল্প অল্প শীতের আমেজ তখন বালি কাটার লোকেরা নদী থেকে বালি কেটে জমা করতো নদীর পারে।
দু-এক দিনের মধ্যেই অল্প রোদে বালি শুকিয়ে যেত। ঝাঁকে ঝাঁকে গাংশালিকের পাল মিষ্টি রোদে বালির উপর মহা আনন্দে খেলা করতো।
কৌতূহলী হয়ে ভাবি এতো শালিক আসে কোথা থেকে! ওদের কিচির মিচির আর খুনসুটি পনা।ভাবলাম একটা শালিক ধরে নিয়ে খাঁচায় রেখে পুষবো। কিন্তু মুশকিল হলো কাছে যেতেই ওরা উড়ে পালায়
গিয়ে বসে নদীর পারে যেখান থেকে অনেক আগেই জলে নেমে মাটি শুকনো হয়ে আছে তেমন উঁচু যায় গাতে, সেখানে অনেক ছোটো ছোটো গর্ত । ধীর পায়ে এগিয়ে যেতেই বসে থাকা ওগুলো উড়ে যায়। একটু পরেই দেখি গর্তে থেকে বেশ কয়েকটা শালিক মাথা বেড় করে
উঁকি দিয়ে দেখছে ঘাড় ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে। কাছে যেতেই ঢুকে যায় আবার বেড়িয়ে আসে।
অনেকক্ষণ চেষ্টা করেও ওদের নাগাল পেলাম না। মাথায় একটা বুদ্ধি আসে।পরের দিন কথাটা পার্থকে বললাম,ও বলল- দারুণ তো ,দুটো তো ধরতেই হবে,কিন্তু ধরবি কী করে?
বললাম, বাড়ি থেকে ধান নিয়ে আর পলো নিয়ে যাবো ওদের গর্তের সামনে ধান ছড়িয়ে পলোর সাথে দড়ি বেঁধে আমরা দূরে থাকব যেই না ধান
খেতে পলোর ভিতরে ঢুকবে অমনি দড়িতে টান দিলেই আটকা পড়বে।ধরে নেবো।হ্যাঁ তাই দারুণ বুদ্ধি বেড় করেছিস।
যেমন কথা তেমন কাজ। আমরা ধান ছড়িয়ে পলো পেতে বসে আছি। কয়েটা শালিক ঘাড় ঘুরিয়ে এদিক সেদিক দেখে নিয়ে পলোর কাছে এসে চড়ে বসে পলোর উপর। পাঠ কাঠি দিয়ে একদিকে উঁচু করে রাখা হয়েছিল পলোর সেটা খুলে পলোটা পড়ে যায়। তখনি উড়াল দিয়ে যে যার গর্তের ভিতরে।অনেক চেষ্টা করেও শালিক আর ধরা গেলো না।প্রায়ই আমাদের বাড়ির উঠানে সকাল দুপুর জোড়া জোড়া শালিকের আনাগোনা। ঠাকুমা বলতেন জোড়া শালিক দেখে যে কাজে সে কাজ শুভ হবেই।
No comments:
Post a Comment